‘বাবাকে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে যুদ্ধে যাই’



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মুক্তিযুদ্ধের বছর ১৯৭১ সালে আমি গৌরীপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। তখন আমি ডিগ্রি ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। একদিন শনিবার বাবাকে বললাম পাশের গ্রামে বেড়াতে যাচ্ছি। এরপর কাপড়ের ব্যাগ গুছিয়ে ঘরে থাকা দশ টাকা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে পায়ে হেঁটে বিজয়পুর সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারত যাই। ভারতের মেঘালয় প্রদেশে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকায় যুদ্ধ করি। এরপর ৫ নভেম্বর গৌরীপুর ফিরে আসি। ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গৌরীপুর হানাদার মুক্ত করি।’

১৯৭১ সালে দেশ রক্ষার যুদ্ধে যাওয়ার গল্পটা এভাবেই বার্তা২৪.কমের কাছে তুলে ধরেন সেদিনের বিশ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ।

আবুল কালামের বাড়ি উপজেলার বেকারকান্দা গ্রামে। তার বাবা মৃত জোবেদ আলী সরকার। মা মৃত আমেনা বেগম। দুই ভাই চার বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ জেলা শহরের জজ কোর্টে আইন পেশায় আছেন। দাম্পত্য জীবনে তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।

শনিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে পৌরশহরে হাতেম আলী রোডস্থ আবুল কালামের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসে কথা হয় এ প্রতিনিধির। কথা প্রসঙ্গে যুদ্ধদিনের নানা ঘটনা তুলে ধরেন তিনি। আবুল কালাম বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই ভাষণ শোনার পর আওয়ামী লীগ নেতা হাতেম আলী মিয়া এমসিএর নেতৃত্বে আমরা ২০-২৫ জনের একটি দল সংঘবদ্ধ হই। ২৬ মার্চ যুদ্ধ শুরু হয়। ১৬ এপ্রিল হাতেম আলী ভাইয়ের নির্দেশে আমরা কয়েকজন সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাটের কুদরত আলী মণ্ডল এমসিএর কাছে যাই অস্ত্র আনার জন্য। কিন্তু কুদরত ভাই অস্ত্র না দিয়ে ভারত চলে যান। তাই খালি হাতে ফিরতে হয় গৌরীপুর।

এদিকে গৌরীপুর ফিরে জানতে পারি হাতেম আলী তার লোকজন নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে ভারত চলে গেছেন। মন খারাপ হয় আমার। কিন্তু আমি দমে যাওয়ার পাত্র নই। ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল আমি বাবাকে জানাই পাশের গ্রামে বেড়াতে যাচ্ছি। এরপর কাপড়ের ব্যাগ ও দশ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে ভারতের পথে রওনা হই। আমার সঙ্গে আরও ছিলেন স্থানীয় কনু মিয়া, নূরুল আমিন ও একটি হিন্দু ছেলে। পথিমধ্যে দূর্গাপুর থানার কাকুড়াকান্দা গ্রামে পৌঁছালে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারী আমাদের গতিরোধ ও মারধর করে বেঁধে রেখে মালামাল লুট করে।

এর একদিন পর দুষ্কৃতিকারীদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে দূর্গাপুরের বিজয়পুর সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের বাঘমারা বিএসএফ ক্যাম্পে যাই। সেখানে গিয়ে দেখা হয় গৌরীপুরের হাতেম আলী ভাই, ফজলুল হক, ডা. এম এ সোবহান, নজমুল হুদা এমসিএ, তোফাজ্জল হোসেন চুন্নু, হাসিম ভাইসহ পরিচিত অনেকের সঙ্গে। সেখান থেকে মেঘালয় ক্যাম্পে গিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেই। ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় দক্ষতা থাকায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আমি দোভাষীর দায়িত্ব পালন করতাম।

যুদ্ধের প্রশিক্ষণ শেষে আমিসহ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সশস্ত্র দল মেঘালয় সীমান্তের জক্স গ্রামে আস্তানা করি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ওই দলটির কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন তোফাজ্জল হোসেন চুন্নু। ভারত থেকে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে প্রায়ই পাকিস্তানি ক্যাম্পে হামলা করে আস্তানায় ফিরে আসতাম।

১৯৭১ সালের ২৫ জুন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মুরারি আমাদের নিয়ে বিজয়পুর পাকিস্তানি ক্যাম্প আক্রমণের পরিকল্পনা করে। ২৬ জুন ভোর ৬টায় বিজয়পুর বাঘমারা এলাকার মধ্যবর্তী পাহাড়ে আমরা ৭২ জন মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি দল ভারী অস্ত্র, গোলাবারুদসহ সশস্ত্র অবস্থান নেই। সাড়ে ৬টায় দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। অর্ধশতাধিক পাকসেনা মারা যায়। একটি গাছের আড়াল থেকে আমি ও সহযোদ্ধা সন্তোষ পাকবাহিনীদের লক্ষ্য করে গুলি করছিলাম। এ সময় পাকবাহিনীর একটি মর্টার শেল সন্তোষের মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় সে। ওই যুদ্ধে অর্ধশতাধিক পাকসেনা আমাদের হাতে মারা যায়। আমরা জয়ী হয়ে বিজয়পুর ক্যাম্পে লাল সবুজ পতাকা ওড়াই। তবে প্রতিকূল পরিবেশের কারণে সেদিন সন্তোষের মৃতদেহ ধর্মীয় রীতিনীতি ছাড়াই পুড়িয়ে ফেলতে হয়েছিল।’

কথা প্রসঙ্গে আবুল কালাম বলেন, ‘বিজয়পুর ক্যাম্প দখলের কিছুদিন পর দূর্গাপুর থানার কলসিন্দুর গ্রামে আমার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাকবাহিনীর ওপর হামলা চালায়। ওই যুদ্ধে নয়জন পাকসেনা মারা যায়। আগস্ট মাসে আমরা তোফাজ্জল হোসেন চুন্নুর নেতৃত্বে দূর্গাপুরের ঘোঁষগাও গ্রামে পাকিস্তানি ক্যাম্পে হামলা চালাই। দেড়ঘণ্টার যুদ্ধে আমাদের দুজন মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ হারায়।’

জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৫ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল নিয়ে গৌরীপুর আসেন আবুল কালাম। পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকাররা তখন গৌরীপুর থানায় অবস্থান করে মুক্তিযোদ্ধাদের গতিবিধি পাকবাহিনীকে অবহিত করত।

আবুল কালাম বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম ও আমাদের দল যৌথ অভিযান পরিচালনা করে গৌরীপুর থানা দখল করি এবং লাল সবুজ পতাকা ওড়াই। তখন পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে। অনেকে পালিয়েও যায়। হানাদার মুক্ত হয় গৌরীপুর।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর পাকবাহিনী যেন এলাকায় না ঢুকতে পারে সেজন্য ৮ ডিসেম্বর রাতে গৌরীপুর-ময়মনসিংহ রেলপথের একটি ব্রিজ ও ৯ ডিসেম্বর গৌরীপুর-ময়মনসিংহ সড়কপথের গুজিখা ব্রিজ বোমা মেরে ধ্বংস করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেই। ১০ ডিসেম্বর ব্রহ্মপুত্র নদী পাড় হয়ে জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ময়মনসিংহ হানাদার মুক্ত করি।’

আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ ১৯৭২ সালে ডিগ্রি, ১৯৭৬ সালে এমএ পাস করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি এলএলবি কোর্স সম্পন্ন করে আইন পেশায় যুক্ত হন। একই বছর তিনি গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। আইন পেশার পাশাপাশি তিনি বর্তমানে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গৌরীপুর শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

   

এসি বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত ধারণা ফায়ার সার্ভিসের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর আগারগাঁও শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউতে থাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ধারণা ফায়ার সার্ভিসের।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন।

তিনি বলেন, দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর আমাদের ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান চালায়। তবে আমরা কোনো ভুক্তভোগীকে পাইনি। আগুন লাগার পরপরই আইসিইউতে থাকা সবাইকে সরিয়ে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বজনরা।

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধরণা করছি আইসিইউর ভেতরে এসি ছিলো। সেটা থেকে হয় তো আগুন লেগেছে। তবে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে।

তিনি আরও বলেন, আগুনের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু ভালো আছে। পাশাপাশি আইসিইউ রুমে যে অক্সিজেন সংযোগ ছিলো সেটি আগুনের কারণে পুড়ে যায়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় অক্সিজেন লাইনটি বন্ধ করা হয়েছে।

;

গাংনীতে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ ৫ মাদক কারবারি আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,মেহেরপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরের গাংনী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ মাদক কারবারীকে আটক করেছে। এদের কাছ থেকে ১১৫ বোতল ফেনসিডিল ও ৪০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জব্দ করা হয়েছে নগদ ১৫০০ টাকা ও মাদক কারবারে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল। 

বৃহষ্পতিবার রাতে পুলিশের পৃথক পৃথক টীম কয়েকটি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।

আটককৃতরা হচ্ছেন- গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের ছাদের আলীর ছেলে স্বপন (৩৮) ও আয়ুব আলীর ছেলে লিটন (৪০), পলাশী পাড়ার মৃত সুজা উদ্দীনের ছেলে টেফেন ওরফে খালিদ মাহমুদ (৩০), আলমডাঙ্গার নগর বোয়ালিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মামুনর রশীদ (৩০) ও ছাতিয়ান গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে স্বজল (২৭)। এদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু সাপেক্ষে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মাদক পাচার রোধে গাংনী থানা পুলিশ অভিযানের অংশ হিসেবে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নামে মাদকের মামলাসহ আদালতে সোপর্দ করা হবে।

;

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা চার দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতিদিনই যেন তাপমাত্রার পারদ ক্রমেই উপরে উঠছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। বৃষ্টি না হওয়ায় এ তাপপ্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। 

এদিকে, তীব্র তাপদাহে প্রাণীকূল ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও যেন তীব্র গরমে বিপর্যস্ত। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে সচেতনতামূলক মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন ১২ এপ্রিল থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়ে চলতি মৌসুমের রেকর্ড ভাঙছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৯ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত
 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ জেলায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, আজ চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা হ্রাস পাবে। তবে আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে তার সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, এ জেলার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই গরমে হিট স্ট্রোকের ঝু্ঁকি থাকে, তাই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে আমরা জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সচেতনতামূলক মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছি।

এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে স্থবিরতা।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, কড়া রোদ ও গরম থেকে বাঁচতে অনেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার নির্জন পরিবেশ খুঁজে বাতাসের জন্য প্রকৃতির দিকে চেয়ে আছেন। তবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ তীব্র গরম উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন।

আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন মোটরসাইকেলের হাটে বাইক বিক্রি করতে আসা জসিম উদ্দীন নামের এক যুবক জানান, বাইক নিয়ে হাটে এসে পড়েছি বিপাকে। একে তো খোলা মাঠে হাট, মাথার ওপর সূর্য দাউদাউ করে জ্বলছে। রোদ আর গরমে মনে হচ্ছে শরীর একেবারে পুড়ে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে ছাতাও নিয়ে আসা হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদরের ডাব বিক্রেতা শমসের মন্ডল জানান, এই তীব্র গরমে তার ডাবের চাহিদা ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ ডাব তিনি বাজারে নিয়ে আসেন, সবই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। মানুষ একটু স্বস্তি নিতে ও শরীর ভালো রাখতে ডাবের পানি পান করছেন।

এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, গরমের সাথে হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত শয্যা সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। শয্যা সংকুলান না হওয়ার রোগীরা বারান্দা ও করিডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এই চিকিৎসক পরামর্শ হিসেবে বলেন, তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠান্ডাজাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। এসময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।

;

বরিশালে ট্রাক ভর্তি আলু লুটের মামলার আসামি গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ট্রাক ভর্তি আলু লুটের মামলার আসামি সাইফুল ইসলামকে (৪৩) গ্রেফতার করেছে জেলার গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতর বিরুদ্ধে ডাকাতি ও প্রতারণার একাধিক মামলা রয়েছে। 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল মোল্লা জানান, রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার তাজহাট থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামি সাইফুল বরিশালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো। পুলিশ সুপারের এমন বার্তা পাওয়ার পর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নবীনবরন পরিবহনের একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাইফুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া এলাকার আব্দুল মাজেদের ছেলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাজহাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমান জানান, গত ৪ এপ্রিল রংপুরের রিয়াজ নামের আলু ব্যবসায়ী সাতক্ষীরার একটি ট্রাকের মাধম্য আলু প্রেরণের জন্য সাইফুল ইসলামের ট্রাক ভাড়া করেন। পরবর্তীতে ট্রাকে ২৩৫ বস্তা আলু ভর্তি করে পাঠানো হয়।

পরেরদিনও সাতক্ষীরায় আলু না পৌঁছানোর কারণে মোবাইল ফোনে সাইফুলের সাথে যোগাযোগের পর তিনি নানা তালবাহানা শুরু করেন। এমনকি ব্যবসায়ীর কাছে ট্রাকের যে কাগজপত্র দেওয়া ছিলো তাও ভুয়া। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।

জিল্লুর রহমান আরও জানান, বুধবার ভোলা থেকে ট্রাক চালক মোক্তার হোসেন খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয় এবং অপর আসামি সাইফুলকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

;