নতুন মুসলিম দেশ বাংসামরো



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
স্বাধীনতার খবরে আনন্দ মিছিলে বাংসামরোর জনগণ, ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতার খবরে আনন্দ মিছিলে বাংসামরোর জনগণ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জানুয়ারি মাসে বিশ্ব মানচিত্রে স্বায়ত্বশাসিত মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে প্রায় অখ্যাত ও নির্যাতিত মুসলিম জনপদ- বাংসামরো। সংক্ষেপে ‘মরো’। এটি মিন্দানাও অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এর জনসংখ্যা ২ কোটি ৫৬ লাখের মধ্যে ৯২ শতাংশই মুসলিম।

অনেকের কাছে বাংসামরো পূর্ব এশিয়ার ফিলিস্তিন নামে পরিচিত। প্রায় শতবছর ধরে নিপীড়িত এই জনপদের রয়েছে সুদীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। স্পেনিশ ও বৃটিশদের পর মরো মুসলিমরা প্রায় ৫০ বছর ধরে সংগ্রাম করছে ফিলিপাইন সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধিকারের জন্য। এ সংগ্রামে লাখো মরো মুসলিমের জীবনহানি ঘটেছে।

ফিলিপাইনের সবচেয়ে অনুন্নত এলাকা বাংসামরো। এটি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা বলেই হয়তো ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এর প্রতি নজর দেয়নি। বলতে দ্বিধা নেই, স্বাধীনতাকামী মুসলিম জনপদটির জন্য খুব কম দেশই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে এ যাবৎ। উল্লেখ্য, মরোদের দীর্ঘ সংগ্রামের পর এবারই ফিলিপাইন সরকারের প্রেসিডেন্ট দুতার্তে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংসামরো’ স্বায়ত্বশাসিত রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংসামরো অঞ্চলটি খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ। প্রতিরক্ষার জন্য রয়েছে ঈমানদীপ্ত তরুণ মুজাহিদের দল। এরাই নতুন রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। কিন্তু ফিলিপিনো সরকার এ মুজাহিদবাহিনী মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট ভেঙে দিতে চায়। মিন্দানাওয়ের এ অঞ্চলটি অর্থনীতির দিক থেকে দুর্বল। আর্থিক সামর্থ্য মাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। তাতে কী? ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনাময় ব্যপ্তি দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নতুন এই সরকারের প্রধান হচ্ছেন ড. মুরাদ ইবরাহিম। মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের আপোসহীন সংগ্রামী এই নেতা বাংসামরো জনগণের আশার আলো। প্রাণের স্পন্দন। মুরাদ ইবরাহিমের আপোসহীনতা ও দৃঢ় মনোবলের সুফল আজকের বাংসামরোর স্বায়ত্বশাসিত সরকার। মরো জনগণ যেমন উচ্ছ্বসিত ও উদ্বেলিত স্বাধীনতার স্পর্শে, তেমনই মুসলিম উম্মাহও বুকভরা আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে মরো জনপদের দিকে।

দীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনে শাহাদতবরণকারী মরোদের শ্রদ্ধা, নতুন রাষ্ট্রপ্রাপ্তিতে উদ্দীপ্তদেরসহ বাংসামরোর ভাবি প্রেসিডেন্ট মুরাদ ইবরাহিমকেও অভিনন্দন জানেই। সেইসঙ্গে নতুন রাষ্ট্রকে সাফল্যজনকভাবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে উজ্জীবিত মরো নেতৃবৃন্দকে সামলে চলারও পরামর্শ রইল।

এটা গোপন কিছু নয় যে, মরোদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ আছে। আশা করি, তাদের সুদৃঢ় নেতৃত্ব সব প্রতিবন্ধকতা উতরে যেতে সক্ষম হবে। সেই সঙ্গে আশা করি নতুন এই রাষ্টের কাছাকাছি থাকা অন্য মুসলিম দেশ- যেমন ব্রুনাই দারুস সালাম, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের সামর্থবান মুসলিম দেশসমূহও বাংসামরোর সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

   

ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করল মুসলিমরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্বঘোষণা মতে গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি হামলার প্রতি অব্যাহত সমর্থন দেওয়ায় ব্রিটিশ সরকারের ঈদ পার্টি বয়কট করেছেন ব্রিটেনের মুসলিমরা। বয়কটকারী দলে রয়েছেন- ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির রাজনীতিবিদসহ ব্যবসায়ী ও দাতব্য সংস্থার নেতারা।

রাীতি অনুযায়ী ঈদের পর মুসলিমদের জন্য প্রতি বছরই ডাউনিং স্ট্রিট ঈদ পার্টির আয়োজন করে। এবার সোমবার (১৫ এপ্রিল) ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পূর্ব থেকে চলে আসা রীতি অনুযায়ী অনুষ্ঠানে আগতদের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানান। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়েছে, হাউজ অব কমন্সে ইরান প্রশ্নে একটি বিবৃতি প্রস্তুত করতে তাকে ব্যস্ত থাকতে হবে। এ কারণে তিনি এই পার্টিতে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। তার বদলে ব্রিটিশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু মিচেল মুসলিমদেরকে স্বাগত জানান।

সাধারণভাবে এ ধরনের পার্টিতে যত লোক উপস্থিত হয়, সোমবার তার প্রায় অর্ধেক উপস্থিত ছিলেন। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এতে উপস্থিত থাকার জন্য প্রকাশ্যে অনুরোধ করলেও তাতে সাড়া মেলেনি।

আবার যারা উপস্থিত হয়েছিলেন, তাদের অনেকে ফিলিস্তিনি পতাকার ছোট ব্যাজ পরেছিলেন। কেউ কেউ আবার ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ কেফিয়েহ পরেছিলেন।

রক্ষণশীল নেতা ব্যারোনেস ওয়ার্সিসহ গুরুত্বপূর্ণ কেউই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। উল্লেখ্য ওয়ার্সি হলেন ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় প্রথম নারী মুসলিম মন্ত্রী। তিনি গাজার লোকজনের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি প্রকাশ্যে সহানুভূতি প্রকাশ করে থাকেন।

উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, অনুষ্ঠানে তারা কোনো এমপিকে দেখেননি। তবে এমপি প্রার্থীদের কেউ কেউ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে বার্ষিক ইফতার মাহফিলও বয়কট করেছিল মুসলিমরা। সেখানেও ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদ করেছিল মুসলিমরা।

;

ফরজ হজ আদায় না করে উমরা করা ঠিক নয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজ কারা করবেন, উমরা কারা করবেন- এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মনে রাখতে হবে, ইসলামের সমস্ত ইবাদত ফরজ হওয়ার জন্য মৌলিক কয়েকটি শর্ত রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম শর্ত হচ্ছে, তাকে মুসলিম এবং মুমিন হতে হবে। কোনো ব্যক্তির যদি অন্তরের মধ্যে ইমান ও ইসলাম না থাকে এবং তিনি যদি মুসলিম না হয়ে থাকেন অথবা ইসলামের কথা ঘোষণা করে থাকেন এবং ইসলামের ব্যাপারে আন্তরিকভাবে কপটতা রয়েছে, তার ওপর হজ ফরজ না এবং তিনি যদি হজপালন করে থাকেন, তাহলে তিনি হজের ফজিলত পাবেন না।

দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া। এটা বলতে বোঝায় যে, ব্যক্তি দুটি জিনিসের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন এমন। এ ব্যাপারে মতভেদ থাকলেও যেটি বিশুদ্ধ অভিমত হজরত আবু দাউদ (রা.)-এর হাদিস দ্বারা বর্ণিত হয়েছে সে হচ্ছে- ১০ বছর। যদি কেউ এই বয়সে উন্নীত হয়ে থাকে, তাহলে সে হজপালন করে থাকে, তাহলে তার হজ গ্রহণযোগ্য হবে, যেহেতু সে এই বয়সের মধ্যে হজ করতে পেরেছে। এটা হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হলো, সমাজে অনেককেই দেখা যায়- ফরজ হজ আদায় করেননি কিন্তু উমরা পালন করতে যাচ্ছেন। এটা ভুল সিদ্ধান্ত। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে ভুল কীভাবে? ভুল হলো, হজ মৌলিক ইবাদত। আগে হজ। যেহেতু তিনি আল্লাহর ঘরে যেতে পারবেন, তার সামর্থ্য আছে তাহলে তার ওপর হজ ফরজ। হজের জন্য যাবেন আগে হজ করবেন এরপর উমরাপালন করবেন। এটাই নিয়ম। কিন্তু শুধুমাত্র উমরা করতে যাবেন অথচ হজ করলেন না এটা ঠিক নয়। তাহলে তিনি ইসলামের রুকুনের ব্যাপারে গুরুত্ব দেননি। অবজ্ঞা করেছেন। হজ এখানে ফরজ, উমরা ওয়াজিব। তাই আগে হজ। এরপর উমরা। চাইলে একসঙ্গেও করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও আগে হজ করে তারপর উমরা করবেন।

ইসলামের বিধানে হজ আর উমরার বিধান সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনো ব্যক্তি উমরা আদায় করার পর যদি তার কোনো শারীরিক অক্ষমতা দেখা দেয়, কিন্তু যদি হজ তার ওপর ফরজ হয়ে যায়, তাহলে তিনি তার পক্ষ থেকে বদলি হজ করাবেন। হজ ফরজ হওয়ার যে বিধান আছে, সেটি যদি তার ওপর প্রযোজ্য হয়, তাহলে তাকে অবশ্যই হজ করতে হবে।

কোনো ব্যক্তি উমরা আদায়ের পর তিনি যদি শারীরিক ও আর্থিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন, সে ক্ষেত্রে যদি তার ওপর হজ ফরজ না হয়ে থাকে, তাহলে তিনি উমরা করার জন্য সওয়াব পেয়ে যাবেন, তাকে হজ করতে হবে না।

উমরা করলেই হজ করতে হবে- এই কথা একেবারেই ভুল। উমরা করলে তিনি উমরার সওয়াব পাবেন। আর হজ যদি তার ওপর ফরজ হয়, তাহলে তিনি হজ আদায় করবেন। যদি এ সামর্থ্য তার কোনো কারণে হারিয়ে যায়, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ হবে না।

;

১৬ জুন হতে পারে কোরবানির ঈদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে, ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। বাংলাদেশের এক দিন আগে ১০ এপ্রিল সৌদি আরবে পালিত হয় ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল ফিতরের ঠিক দুই মাস দশ দিন পর ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ পালনের নিয়ম। সে হিসেবে এবার ঈদুল আজহা হতে পারে ১৬ জুন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী এবার (২০২৪ সালে) ১০ জিলহজ বা ঈদুল আজহা হতে পারে জুন মাসের ১৬ তারিখ।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশে আরবি মাসের গণনা শুরু হলেও বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের পরের দিন ঈদুল ফিতরা কিংবা ঈদুল আজহা পালন করা হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখ। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।

ইসলামমতে, মহান আল্লাহ মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করার নির্দেশ দেন। আদেশের পর তিনি তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) কে কোরবানি করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে আল্লাহতায়ালা খুশি হন এবং শিশু ইসমাইলের পরিবর্তে দুম্বা কোরবানি হয়।

এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত পশু কোরবানি করেন। শেষনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের আগে যুগে যুগে সব শরিয়তে কোরবানির বিধান চালু ছিল।

সামর্থ্যবান ব্যক্তির শর্তসাপেক্ষে কোরবানি করা ওয়াজিব। ১০ থেকে ১৩ জিলহজের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হলে কোরবানি করা ওয়াজিব। অর্থাৎ এই সময় কারও কাছে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা থাকলে অথবা এর মূল্যের সমপরিমাণ সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত থাকলে কোরবানি করতে হবে।

নবী কারিম (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিনে কোরবানি করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত। কোরবানির জন্তুর শরীরের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে কোরবানিদাতাকে একটি করে সওয়াব দান করা হবে। কোরবানির পশুর রক্ত জবাই করার সময় মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায়। -মেশকাত

কোরবানির বিনিময়ে সওয়াব পেতে হলে অবশ্যই কোরবানি হতে হবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে।

;

বিশ্বজুড়ে হালাল বিনিয়োগ কেন বাড়ছে?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিশ্বে বেড়েছে শরিয়াসম্মত পদ্ধতিতে বিনিয়োগের আগ্রহ, ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বে বেড়েছে শরিয়াসম্মত পদ্ধতিতে বিনিয়োগের আগ্রহ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে শুরু হওয়া বয়কট আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগে। অনেকে অর্থ ব্যয় বা বিনিয়োগের আগে তাদের অর্থ কোথায় যাচ্ছে, সে বিষয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। এ অবস্থায় বেড়েছে ‘শরিয়াসম্মত’ পদ্ধতিতে বিনিয়োগের আগ্রহ, যা বিশ্বব্যাপী গতি এনেছে ‘হালাল’ অর্থনীতিতে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে হালাল অর্থনীতির বাজারমূল্য আগামী বছর ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে। ২০১৫ সালে এই হালাল অর্থনীতির বাজারমূল্য ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার। অর্থাৎ আট বছরে এর আকার দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ২০২১ সালে হালাল অর্থনীতির বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলার। এ খাতের বিশ্লেষকেরা বলছেন, চার বছরের মধ্যেই এই বাজার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

গত বছর প্রকাশিত জেনারেল কাউন্সিল ফর ইসলামিক ব্যাংকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনসের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা বলছে, বিগত এক দশকে বৈশ্বিক ইসলামিক তহবিলের বাজার ৩০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি ডলার এখন বিশ্বব্যাপী ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। এই পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে যে হালাল বিনিয়োগ ও সুযোগ উভয়েরই চাহিদা বেড়েছে।

হালাল বিনিয়োগের একটি উদাহরণ হলো- ইসলামি ব্যবসায় অর্থায়ন। এই ব্যবসা মুনাফা ভাগাভাগি মডেলের ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। আরও আছে শরিয়াসম্মত বিমা এবং সুকুক, যা মালিকানা নির্দেশ করে এমন একটি ইসলামিক আর্থিক সার্টিফিকেট। সুকুক বন্ডধারীরা একটি ব্যবসার আংশিক মালিকানা লাভ করেন, ফলে মুনাফার অংশ পান।

গোল্ডম্যান স্যাকস ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছিল যে, ২০৭৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০টি বড় অর্থনীতির মধ্যে ৫টি অর্থনীতির দেশে ৮৫ কোটির বেশি মুসলমান জনগোষ্ঠী থাকবে। এই দেশগুলো হলো- ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও মিসর।

যেহেতু জনসংখ্যা বাড়বে, তাই বাড়বে আর্থিক পণ্যের চাহিদা। ২০২৩ সালের স্টেট অব দ্য গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২–২৩ অর্থবছরে শরিয়াসম্মত বিনিয়োগে ২ হাজার ৫৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এক বছরে এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২৮ শতাংশ। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দিনারস্ট্যান্ডার্ড প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

বিশ্লেষকদের মতে, মানুষ এখন সাবধানী, ফলে তারা নৈতিকতার সঙ্গে বিনিয়োগ করছেন। হালাল বিনিয়োগ এর একটি বড় অংশ। বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এটি বাড়ছে। আগে লোকজন খুঁজত হালাল কোনটি। হারাম না হলেই তারা খুশি হতো। এখন শুধু হালাল নয়, এটি তাদের মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের সঙ্গে যায় কি না, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বিভিন্ন পণ্য বর্জন আন্দোলনের ফলে তারা এখন আরও বেশি সচেতন। কোনো জিনিস হালাল হতে পারে, তবে আপনি হয়তো সেটা ব্যবহার করতে চান না, কিংবা এর সঙ্গে জড়িত হতে বা এতে বিনিয়োগ করতে চান না।

হালাল বিনিয়োগে দখলদার ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধের প্রভাব দেখা গেছে। যেসব পণ্য-ব্র্যান্ড ইসরায়েল ও গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধকে সমর্থন করছে বলে ভোক্তারা মনে করছেন, সেসব ব্র্যান্ড বর্জন করার একটি প্রচারণা এখন চলছে। হালাল বিনিয়োগের চাহিদা বাড়ার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে কাজ করছে।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হালাল বিনিয়োগ অনেক দিন ধরেই বাড়ছে। তবে এ ধরনের বিনিয়োগ আরও জোরেশোরে বেড়েছে গত ছয় মাসে।

;