জুনে পাওয়া যাবে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম
জুন মাস থেকে বাজারে পাওয়া যাবে রংপুরের জনপ্রিয় ও সুস্বাদু ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম। সারাদেশে জনপ্রিয়তার তালিকায় থাকা এই আম জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে গাছ থেকে পাড়া শুরু হবে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূলে বা প্রচণ্ড গরম থাকলে সপ্তাহখানেক আগেও বাণিজ্যিকভাবে বাজারে হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করতে পারবে আমচাষিরা।
কৃষি অফিস বলছেন, গত দুই সপ্তাহের ঝড়-বাতাসে আমের কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলন ভালো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সবকিছু ঠিক থাকলে শুধু হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে এবার ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারবে এ জেলার আমচাষিরা।
এবছর রংপুর জেলায় তিন হাজার পাঁচ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে এক হাজার ৪৫০ হেক্টরে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে শুধু হাড়িভাঙ্গা উৎপাদন হতে পারে পনের হাজার মেট্রিক টন।
এবার হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, কেরোয়া, এছাহাক তেলি, ছাইবুদ্দিন, আশ্বীনি, সাদা নেংড়া, কালা নেংড়া, কলিকাতা নেংড়া, মিশ্রী ভোগ, গোপাল ভোগ, আম রূপালী, সাদা রচি, চোচা, আঁটিসহ হরেক প্রজাতির আম রয়েছে।
দেশের অন্যান্য স্থানের আম শেষ হবার পরই রংপুরের বাজারে আসবে হাড়িভাঙ্গা আম। মৌসুমের শুরুতে হাড়িভাঙ্গার চাহিদা বেশি থাকায় এর দাম কিছুটা বেশি থাকবে। সেক্ষেত্রে প্রতি কেজি হাড়িভাঙ্গা আম ৮০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে পারে।
১৯৯২ সাল থেকে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ করে আসা আব্দুছ ছালাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমি দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ করছি। আমার দেখাদেখি এখন রংপুরে কয়েক লাখ হাড়িভাঙ্গা আমের গাছ রোপণ করেছে আমচাষিরা।'
হাড়িভাঙ্গা আমের সম্প্রসারক হিসেবে পরিচিত এই আব্দুস ছালামের ২৫টি আমের বাগান রয়েছে। জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এই বাগান থেকে তিনি হাড়িভাঙ্গা বাজারের বিক্রি করতে পারবেন বলে বার্তা২৪.কম-কে জানান।
রংপুর কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত সহকারী পরিচালক আবু সায়েম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'দেশের অন্যান্য স্থানের আম শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাড়িভাঙ্গা আম বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসে। জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এই আম বাজরে আসবে।'
তিনি আরও জানান, শুধু হাড়িভাঙ্গা আমই দেরি করে বাজারে আসে না। গৌরমুখি ও বারি-৪ জাতের আম আরও পরে পাকতে থাকে। তবে এই আম বাণিজ্যিকভাবে তেমনটা শুরু হয়নি।'