রমজানে চাঁদাবাজি আর মূল্য নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ চান ব্যবসায়ীরা



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে মূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে বলে মত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন, আমদানি, মজুত অবস্থা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আজ বুধবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা বৈঠকে দ্রব্য মূল্যের নিয়ন্ত্রণের জন্য মন্ত্রণালয়কে সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। এছাড়াও সড়ক পথে চাঁদাবাজি বন্ধ, যানজটে পণ্য নষ্ট হওয়ার সমাধান, জাল টাকা প্রতিরোধ ও বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ের মতামত দেন।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আশ্বস্ত হতে চাই রমজান মাসে ভোগ্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে। প্রয়োজনে বিশেষ ব্যবস্থা নেবো, তবুও পণ্যের বাজার মূল্য বাড়তে দেবো না।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/27/1553706319528.jpg

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রমজানে মাংসের দাম বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। দেশের বাইরে থেকে মাংস আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ কিন্তু বাজার আমদানি করা মাংসে সায়লাব হয়ে যাচ্ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা গেলেই বাজারে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। যথাযথ ব্যবস্থা নিলে গরুর মাংস ৩০০ টাকায় নামিয়ে আনা সম্ভব। 

বৈঠকে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘রমজানের আগেই বাজারে তেজী ভাব লক্ষ করছি। ১২০ টাকায় ব্রয়লার মুরগী পাওয়া যেতো, সেটি এখন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। ১০০ টাকার নিচে বাজারে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।’

তেলের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, ‘সিস্টেমে এসে হোলসেলার যদি ৫০ পয়সা অথবা একটাকা লাভ করে, খুচরা ব্যবসায়ী যদি পাঁচ টাকা লাভ করে তাহলে বাজারে এক পয়সাও তেলের দাম বাড়বে না। যারা রিটেইলার, তারা যদি বলে আমরা পাঁচ টাকায় খুশি তাহলে আর সমস্যা থাকে না।’ 

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাফেজ মো: এনায়েতুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমানেসব পণ্যই পর্যাপ্ত আছে। সুতরাং দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। শুধু নিয়ন্ত্রণটা ঠিক রাখতে হবে, পরিবহন ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে আনলে কোনো সমস্যা থাকবে না।’

বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি শফি মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের কাছে যে পরিমাণ মাল মজুদ আছে, তাতে মূল্য বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে রমজানে নতুন কোনো ভালো মানের ছোলা আমদানি করলে দুই-চার টাকা বাড়তে পারে।’

বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব শফিউল ইসলাম বলেন, 'চট্টগ্রামের বিভিন্ন গোডাউনে মাল স্টক করা হচ্ছে। তারা যেই দামে বিক্রি করছে, সেই দামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদেরও বিক্রি করতে হয়। কার কাছে কী পরিমাণ স্টক আছে সেটি সরকার জানে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/27/1553706376687.jpg

ঢাকা মহানগর ফল আমদানি রফতানিকারক ও আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক সিদ্দিকী বলেন, ‘পর্যাপ্ত পরিমাণ খেজুরের মজুদ আছে। দাম গতবারের তুলনায় কমেই বিক্রি করব, বেশি দামে বিক্রি করব না। গতবার বিক্রি করেছিলাম ৬৫ থেকে ৭৫ টাকার মধ্যে। সাধারণ মানুষ জাহিদী খেজুর (ভেজা খেজুর) খায়।’

পেঁয়াজ আমদানিকারক মো: হাফিজুর রহমান বলেন, ‘পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে সমস্যা হবে না। পেঁয়াজ এখন উঠতে শুরু করেছে। তবে অতি বৃষ্টি হলে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হয় না। ভারত থেকে বছরে ১০ লাখ টনের অধিক পেয়াজ আমদানি করতে হয়।’ 

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অতিরিক্ত সচিব (বাণিজ্যক পরিচালক) মীর জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে উৎপাদিত ৭৯ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন ও আমদানি পর্যায়ে ৮৪ হাজার ৬৭৫ মেট্রিক টন চিনি আছে। মোট এক লাখ ৬৪ হাজার ৫২৫ মেট্রিক টন চিনি আছে। রমজানে বাজারে ছাড়ার জন্য যা পর্যাপ্ত। তাই চিনির দাম বাড়ার কোনো সম্ভবনা নেই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রতিনিধি জানান, টার্গেট আছে তিন লাখ হেক্টরের বেশি সবজি উৎপাদন করার। সেটি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। যখনই সবজি উৎপাদন শুরু হবে বাজারে সবজির দাম কমে যাবে। আগামী একমাসের মধ্যে বাজারে সবজির দাম অনেকটাই কমে যাবে।’

চাঁদাবাজির বিষয়ে পুলিশ জিরো টলারেন্সে থাকবে জানিয়ে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি এস এম রুহুল আমিন বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে নির্দেশনা দেওয়া আছে। রমজানে আরও বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া থাকবে। এ ব্যাপারে পুলিশ জিরো টলারেন্সে থাকবে। ব্যবসায়ীদের বলতে চাই, চাঁদাবাজির ঘটনা কোথাও ঘটলে নিকটবর্তী পুলিশকে অবহিত করুন। লোকাল থানা ব্যবস্থা না নিলে এসপির কাছে যান। লোকাল পুলিশ-এসপি ব্যবস্থা না নিলে পুলিশ সদর সদফতরে স্পেশাল সেল থাকবে, সেখানে অভিযোগ করতে পারবেন।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/27/1553706344270.jpg

বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, 'ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ভোগ্য পণ্যের দামের চেইনটা যদি দেখভাল করা যায়, তাহলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি হবে না। এটা গুরুত্বসহকারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেখব। আর স্তরভিত্তিক মূল্য চেইনের বিষয়ে ব্যবসায়িরাও একমত হয়েছেন। ফলে রমজানে ভোগ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা দেখছি না।'

সভায় বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় দত্ত, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালসহ এনবিআর, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

   

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল



রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ভোজ্য তেলের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক-ভ্যাট) প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু, ভোজ্য তেলের ‘যৌক্তিক মূল্য’ নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায় নির্ধারিত মূল্যের চাইতেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। দাম নেবার কারণ জানতে চাইলে দায়সারা উত্তর ব্যবসায়ীদের।

গতকাল (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

সংবাদ সম্মেলনে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ৮১৮ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা করা হয়েছে।

তবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের কোন তোয়াক্কা করছে না দোকানীরা।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হলেও লিটার প্রতি ১৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা করে। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা বিক্রি করার কথা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। তবে ভিন্ন চিত্র ছিলো ৫ লিটারের বোতলজাত তেলের দামে। সরকারের বেঁধে দামের চাইতেও প্রতি ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম মূল্যে ৮০০ টাকা করে বিক্রি করছেন দোকানীরা।

সরকারের বেঁধে দামে তেল বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে রাব্বি ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী লুতফুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, গতকাল কি ঘোষণা হইছে তেলের দাম কমছে নাকি বাড়ছে তা ভালো করে জানিনা। তবে শুনছি ফেছবুকে টিভিতে। আমাদের দোকানে যে তেল আছে তা আগের দামে কেনা। তাই আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন তেল আসলে আবার নতুম দামে বিক্রি করবো। খোলা তেলে ১৮ টাকা বেশি নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ যে বললাম আগের দামে কেনা। আমি তো নতুন দামের চাইতে ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম নিচ্ছি এখনো। কিন্তু খোলা তেল আমার আগের দামে কেনা তাই ১৮ টাকা বেশি নিতেছি। দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলে যতো দ্রুত দাম বাড়ে কিন্তু দাম কমানোর ঘোষণা এলে কমেনা কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বড় বড় পাইকারদের কাজ। তারা সিন্ডিকেট করে। কিন্তু আমাদের এমন সুযোগ নেই। আমরা এক দুই টন মাল সর্বোচ্চ কিনি। কখনো আরও কম কিনি।

আরেক ব্যবসায়ী খাদিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোসলে উদ্দিন বলেন, ৫ লিটারের তেলের বোতলে যে দাম ৮০০ টাকা দেয়া সেই দামে বিক্রি করছি। এছাড়া এক লিটারের বোতলের দাম ১৬৩ টাকা দামে বিক্রি করছি। তবে খোলা তেল আমার কেনা ছিলো ১৬৩ টাকা করে তাই আমি ১৬৪/১৬৫ টাকা দামে বিক্রি করতেছি। খোলা তেল ১৪৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করছে কিন্তু সেটা কি ভালো নাকি মন্দা জানিনা। যে দামে কিনি তার থেকে এক দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করি।

একটি সিকিউরিটি গার্ডের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আলতাফ হোসেন। তার কাছে খোলা তেল কতো নিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৬৫ টাকা নিলো। খোলা তেলে দুই টাকা কমে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে জানেন কিনা প্রশ্ন করলে আলতাফ হোসেন বলেন, ভাই এসব খবর দিয়ে তো কোন কাজ হয়না। দাম বাড়লে তখন ব্যবসায়ীরা পারলে আরও বাড়িয়ে নেয়। অথচ কমলে তিন মাসেও দাম কমার খবর থাকেনা। আপনার সামনেই তো বেশি নিলো কিছু করার আছে বলেন? আমি এক লিটার তেল নিতে আসছি। এখন এদের সাথে কি দাম নিয়ে ঝগড়া করবো।

আরেকজন ক্রেতা সজিব মোল্লা বলেন, বাজারে সব কিছুর দাম বাড়ে তবে খোলা তেলের দাম কমাইছে শুনে ভালো লাগলো। তবে দুই টাকা দাম কমায় তার প্রভাব আসলে বাজারে পরেনি। তাছাড়া লোক দেখানো বাজার মনিটরিং করে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কখনো সম্ভব না। একদিকে ব্যবসায়ীদের উপর ট্যাক্স বসাইবেন। জরিমানা করবেন আবার বলবেন দাম কমাইতে তারা কিভাবে দাম কমাবে। জীবনে শুনছেন কোনকিছুর দাম বাড়লে তা আবার কমে সহজে।

;

শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রায় চিনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের করা গবেষণায় এ তথ্য মিলেছে। শিশুদের খাবারে যাতে চিনি যুক্ত করা না হয় এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মানদণ্ড পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকারক বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া বিএসটিআই’র পক্ষ থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য কোম্পানি নেসলে বেশ কয়েকটি দেশে শিশুদের জন্য তৈরি করা দুধ ও সিরিয়াল পণ্যগুলোতে বাড়তি চিনি ও মধু যুক্ত করে, যা স্থূলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক নীতিমালার লঙ্ঘন। নেসলের শিশুখাদ্যে বাড়তি চিনি যুক্ত করার আইন লঙ্ঘনের এই ঘটনা কেবল এশিয়ান, আফ্রিকান এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক থেকে একজন শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার পরিবেশন করা হয়, তাতে প্রায় ৩ দশমিক ৩ গ্রাম বাড়তি চিনি উপস্থিতি আছে।

পাবলিক আই বলছে, নেসলে সুইজারল্যান্ডে বাজারজাত করা তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনও চিনি ব্যবহার করে না। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোতে সেরেলাকে বাড়তি চিনি যুক্ত করে তারা।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নেসলের শিশুখাদ্য পণ্যের বিষয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গবেষণায় পাওয়া ফল একটি বৈজ্ঞানিক প্যানেলের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া যুগান্তরকে বলেন, খাদ্যে ভেজাল কিংবা দূষণের কারণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সব সময় ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। এক গবেষণায় নেসলের দুটি পণ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে। এটা আমরা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। বিএসটিআই’র মানদণ্ডে পরিমাপ করব। সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা সামনে এলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে পণ্য দুটি বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সুপারিশ করব। এছাড়া মামলা করারও সুযোগ আছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নেসলে ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্রর সঙ্গে কথা বলেছে। ওই মুখপাত্র বলেছেন, তারা গত পাঁচ বছরে নেসলের শিশুখাদ্যে যোগ করা চিনির পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়েছে। এছাড়া আরও কমিয়ে আনার বিষয়ে তারা পণ্যগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ভারতে নেসলের ১৫টি সেরেলাক শিশুখাদ্য থেকে একটি শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় তাতে গড়ে প্রায় ৩ গ্রাম চিনি থাকে। একই পণ্য জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে বিক্রি করা হচ্ছে বাড়তি চিনি ছাড়াই। অন্যদিকে ইথিওপিয়া ও থাইল্যান্ডে এই চিনির পরিমাণ প্রায় ৬ গ্রাম।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই সূত্র জানায়, এটি অন্য দেশের তৈরিকৃত পণ্য। তবে এগুলো আমাদের দেশের মানদণ্ড অনুযায়ী এক নাও হতে পারে। সেরেলাক ও নিডো যদি দেশের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী মান ঠিক রেখে পণ্য তৈরি করে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যেহেতু একটি প্রতিবেদনে ক্ষতির বিষয়টি এসেছে, তাই এই বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে দেখা হবে। যদি কোনো ক্ষতিকারক কিছু থাকে, তাহলে পদক্ষেপ নেব।

;

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ঈদ পরবর্তীত বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নিত্য পণ্যের দাম চড়া। ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও ঊর্ধ্বমুখী শাক সবজি ও মাছের দাম। বিশেষ করে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কাওরান কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

কাওরান বাজারের খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আজকে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা কেজি, রসুন ২০০-২২০ টাকা কেজি, আদা ২০০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ৮০-১২০ টাকা কেজি, ধনেপাতা কেজি ১০০টাকা আর আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। লেবুর হালি ৩০-৪০ টাকা।

এছাড়া শবজির বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও দাম আগের মতোই চড়া ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নাই। মিষ্টি কুমড়া ৪০, মুলা ৫০-৬০, পটল ৭০ _১২০, বেগুন ৬০ টাকা,বরবটি ৮০,  জালি প্রতি পিছ ৬০ টাকা, ভেন্ডি ৬০ টাকা কেজি, টমেটো ৫০ শশা ৫০, লাউ প্রতি পিস ৭০-৮০ করলা ১২০ টাকা, করলা ৬০-৭০, বাধাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, গাজর ৬০, ক্যাপসিকাম ৪৫০ টাকা।

তবে মাছ মাংসের বাজারে দাম এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানায় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ক্রেতারা বলছে মাছের গায়ে হাত দেয়া যায় না। বাজারে আজকে দেশি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা কেজি, মলা মাছ ৭০০ টাকা কেজি, নদীর চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা কেজি, এবং চাষের চিংড়ি ৭০০টাকা কেজি, আইর মাছ ৮০০টাকা কেজি,কাতল ৭০০ টাকা, দেশি বড় বোয়াল ১২০০ টাকা, কোরাল মাছ ১০০০ টাকা। আর ৫০০গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা কেজি।মুরগী ২১০ টাকা, গরু ৭৫০-৭৮০ টাকা,

কল্যাণপুর থেকে কাওরান বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন সুফিয়া বেগম। তিনি জানান ৫ হাজার টাকা নিয়ে এসেছি বাজারে। মাত্র ৫ জনের সংসারের বাজার করতে ইতিমধ্যে বাজারের প্রায় অর্ধেক টাকা শেষ হয়েছে শুধু মাছ কিনতে। এখনো সবজি ও ঘরের অন্যান্য বাজার করা বাকি। আগে যেখানে মাত্র ৩ হাজার টাকায় সপ্তাহের পুরো বাজার শেষ হয়ে যেতো সেখানে এখন ৫ হাজার টাকা দিয়ে কোনমতে টেনেটুনে সংসার চালাতে হচ্ছে তাকে। কাওরান বাজারে কিছুটা কম দামে কিনতে আসলে দামের পার্থক্য এলাকার বাজারের চাইতে খুব একটা কম না। তবে টাটকা পণ্য পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায় বলে তিনি জানান। বাজারের  ভয়াবহ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুইজনে মিলে কামাই করেও এখন অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে সংসারের চাহিদা মেটাতে।

কাওরান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী লতিফ বার্তা২৪.কম’কে জানান, বাজারে সরবরাহ আছে কিন্তু চাহিদার তুলনায় কম। তাই বেড়েছে সকল মাছের দাম। দেশি মাছের চাহিদা বেশি থাকায় তার দাম একটু বেশি। তবে চাষের মাছের দাম আগের মতোই আছে।

;

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে একভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

;