নগদ টাকার সংকট ষোল ব্যাংকে



মাহফুজুল ইসলাম , সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নগদ অর্থ সংকটে পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৬টি ব্যাংক। আর তাতে ২০১৮ সালে ব্যাংকগুলোর সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা প্রকৃত মুনাফা হওয়ার পর শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, মুনাফার টাকায়, মূলধন ঘাটতি মেটানো হচ্ছে, প্রভিশনিং কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর তার বদলে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দিয়েছে।

তাতে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে শেয়ারহোল্ডার তথা পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। যার প্রভাব পড়ছে প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দামে। শেয়ারহোল্ডার ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা এমনই অভিযোগ করেছে।

ব্যাংকগুলো হচ্ছে- ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক ও আরব বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংক লিমিটেড।

শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ, ব্যাংকগুলো কাগজে-কলমে মুনাফা দেখিছে। তাই নগদ লভ্যাংশ দিতে পারছে না। বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিচ্ছে।

এবি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার রোকন উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘তিন বছর আগে এবি ব্যাংকের ১০ হাজার শেয়ার কিনেছি। গত বছর লভ্যাংশ দেয়নি। এবছরও মুনাফা হয়েছে। কিন্তু ক্যাশ অর্থাৎ নগদ লভ্যাংশ দেয়নি।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই ) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বার্তা২৪.কমকে জানান, ব্যাংকগুলো এখন তারল্য সংকটে চলছে এটা ঠিক। তার একটি প্রমাণ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেওয়া। তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানি এবং বিনিয়োগকারী উভয়ের জন্য ক্ষতিকর।

তার কারণ হিসেবে তিনি জানান, বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিলে কোম্পানির মূলধন বাড়ে। কোম্পানির আর্নিং পার শেয়ারে (ইপিএস) নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা এটা প্রত্যাশা করে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বার্তা২৪কমকে জানান, ব্যাংকগুলো ২০১৮ সালে অতিমূল্যায়িত মুনাফা দেখিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সঠিকভাবে সঞ্চিতি গঠন করা হলে, ব্যাংকগুলো লোকসানে পতিত হবে। আর এই দুরবস্থা আড়াল করতেই কৃত্রিম মুনাফা দেখিয়েছে। আর দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ব্যাংকগুলো অতিরঞ্জিত মুনাফা দেখালেও বাংলাদেশ ব্যাংক এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখে না।

২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে মুনাফার এই টাকার নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ১৩টি ব্যাংক। আর ১৭টি ব্যাংক নগদ অর্থ সংকটের কারণে শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। যার মুনাফার অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকার বেশি। তার মধ্যে ১৬টি ব্যাংকের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এগুলোর বেশির ভাগই গত ২-৩ বছর ধরে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557284585109.gif

প্রতিবেদন অনুসারে, ১৬টি ব্যাংকের মধ্যে বিদায়ী বছর সবচেয়ে বেশি ৫৫৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের। ফলে কোম্পানির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১৭ টাকা।

কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগের বছর ২০১৭ সালেও ২৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল। তবে তার আগের বছর ২০১৬ এবং ২০১৫ সালে যথাক্রমে ১০ ও ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557284647719.gif

এরপরের তালিকায় থাকা ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৪২০ কোটি ২০ লাখ টাকা। তাতে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ০১ টাকা। কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে। এর আগের তিন বছর ২০১৭ সালে ৩০ শতাংশ ক্যাশ (নগদ) লভ্যাংশ, ২০১৬ সালে ৩০ এবং ২০১৫ সালে ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557284710769.gif

অন্যদিকে, সবচেয়ে কম মুনাফা হওয়ার তালিকায় থাকা এবি ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। শেয়ারের ইপিএস দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ০৬ টাকা। অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকটি গত বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এর আগের ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে সাড়ে ১২ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিয়েছে। ব্যাংকটিতে দীর্ঘদিন ধরে নগদ অর্থ সংকট রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557285728593.gif

সাউথইস্ট ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ২৪৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। গত বছরও ব্যাংকটি ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। তবে তার আগের দুই বছর ২০১৬ এবং ২০১৫ সালে যথাক্রমে ২০ এবং ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557284823206.gif

রূপালী ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৪১ কোটি ৪ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে নগদ অর্থ সংকটে রয়েছে। ফলে ২০১০ সাল থেকে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। ২০১৭ সালে ২৪ এবং ২০১৬ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ এগুলো কাগজে কলমে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557285024150.gif

২০১৮ সালে মুনাফা বাড়া বাকি ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রিমিয়ার ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ২২৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮৪ টাকায়। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ২৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৭৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ওয়ান ব্যাংকের ১৪১ কোটি ০৪ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩৮৪ কোটি ৯৬ লাখ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১২৪ কোটি ৭৪ লাখ এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557284999075.gif

এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ১২৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের ১৬৪ কোটি ৬৬ লাখ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ২৬৫ কোটি ৬৪ লাখ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ১৫৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে। আর সেই টাকার বিপরীতে ব্যাংকগুলো শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড (এমটিবি), রুপালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

তবে সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি মো. কামাল হোসাইন মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে জানান, ক্লাসিফাইড লোনের প্রভিশনিং করতে গিয়ে বোনাস শেয়ার দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ড. খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদও জানান, মুনাফার টাকায় ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতি মেটাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ক্যাপিটাল বাড়াচ্ছে। ফলে কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিচ্ছে।

   

ইসলামী ব্যাংকের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে। ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম-এর সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মে ২০২৪। এ ছাড়া সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সাথে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।

;

টেন মিনিট স্কুলের কোর্স ফি বিকাশ পেমেন্টে ১৫% ক্যাশব্যাক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিকাশ অ্যাপ থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল-এর নির্দিষ্ট কোর্স নিয়ে পেমেন্ট করলেই গ্রাহকরা পাচ্ছেন ১৫% ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক, সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত। বিকাশ অ্যাপের হোম স্ক্রিনের সাজেশনস সেকশন থেকে ‘টেন মিনিট স্কুল’ সিলেক্ট করে ৩০ জুন পর্যন্ত অফারটি গ্রহণ করা যাবে।

টেন মিনিট স্কুল-এর লাইভ কোর্স, স্পোকেন ইংলিশ, আইইএলটিএস, ফ্রিল্যান্সিং এর মতো ভাষা শিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ইংলিশ মাস্টার্স, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো বান্ডেল কোর্স, বুয়েট, মেডিকেল, ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার কোর্স, এসএসসি-এইচএসসি প্রস্তুতি ও অনলাইন ব্যাচের জন্য একাডেমিক কোর্স, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সহ নানা ধরনের কোর্স নিতে পারবেন বিকাশ গ্রাহকরা এই অফারের আওতায়।

অফারের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে https://www.bkash.com/campaign/10minuteschool-bkash-offer লিংকটিতে।

 

;

এক দিনের ব্যবধানে ফের কমল সোনার দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে সোনার দামের উত্থান-পতন অব্যাহত আছে। একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমছে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকায়। নতুন এ দাম আজ বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম কমেছে, সে জন্য সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, ২৩ এপ্রিল সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর গত ২১ এপ্রিল ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।

তার আগে, ২০ এপ্রিল সোনার দাম ক‌মিয়ে‌ছিল বাজুস। যা ওইদিনই কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা।

;

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিচ্ছে ৩ মেগা প্রকল্প



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন মেগা প্রকল্প বাংলাদেশের জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিতে যাচ্ছে। মেগা প্রকল্প তিনটি হলো, এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং), বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্প এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্প।

এর মধ্যে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ইতোমধ্যেই অপারেশনে এসেছে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন চলতি বছরেই শেষ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

এখন ভোক্তার হাতে জ্বালানি তেল পৌঁছাতে বহুঘাট ঘুরতে হবে না। আবার বৃষ্টি-বাদল কিংবা হরতাল, ধর্মঘটেও জ্বালানি তেল সরবরাহ থাকবে নির্ভার। শুধু কী নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চয়তা, তাও নয়, এক এসপিএম বছরে সাশ্রয় করবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা! কমে যাবে জ্বালানি তেলের সিস্টেম লসও।

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে পাল্টে দিচ্ছে মেগা তিন প্রকল্প

এজন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপন করা হয়েছে, এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন। এতদিন আমদানি করা জ্বালানি তেলের জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করতো। সেখান থেকে লাইটার জাহাজে করে রিফাইনারি ট্যাংকে পৌঁছাতে সময় লাগত ১১, ১২ দিন। এসপিএম হওয়ায় সমপরিমাণ তেল পরিবহনে সময় লাগবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এতে করে মাদার ভেসেলের ওয়েটিং চার্জ এবং লাইটারেজ জাহাজের পরিবহন খরচ আর থাকছে না।

মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে স্থাপন করা হয়েছে, ভাসমান বয়া। সেই বয়া থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের পৃথক দুটি পাইপলাইন পৌঁছে গেছে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে। একটি ক্রড অয়েল সঞ্চালনের জন্য। আরেকটি দিয়ে সফলভাবে ডিজেল পরিবহন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে বয়াতে এসে নোঙর করবে মাদার ভেসেল। সেখান থেকে পাাইপলাইনের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টায় তেল পৌঁছে যাবে চট্টগ্রামের জ্বালানি তেলের প্রধান স্থাপনায়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনা সাশ্রয়ী ও টেকসই করতে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) কার্যকরী অবদান রাখবে। প্রকল্পটি চালু হলে বছরে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২শ ২০ কিলোমিটার পাইপলাইনে পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ৬টি বিশালাকৃতির স্টোরেজ ট্যাঙ্ক; যার মাধ্যমে বাংলাদেশের তেল মজুত সক্ষমতা পৌঁছে গেছে নতুন এক উচ্চতায়।

এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বড় জাহাজ থেকে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ দিন সময় লাগে। কখনো কখনো এই তেল খালাস করতে আরো সময় লেগে যায়। বিশেষ করে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়লে তখন খালাস করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জাহাজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তির চেয়ে বেশি সময় লাগায় কখনো কখনো জরিমানা গুণতে হতো। এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ডিজেল ও ক্রুড অয়েল খালাস করা সম্ভব হবে। এতে একদিকে যেমন জাহাজ ভাড়া কমে আসবে, অন্যদিকে তেল পরিবহনে সিস্টেম লস ও নানান ধরনের চুরিও প্রতিরোধ সম্ভবপর হবে।

বাংলাদেশ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে না। গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে প্রাপ্ত কনডেনসেট থেকে পেট্রোল এবং ৪০ শতাংশের মতো অকটেন জোগান আসে। বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে জোগান দেওয়া হয়। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করা হয়, নদীপথে। কিন্তু নদী বন্দরগুলোতে নাব্যতার অভাবে বড় বড় জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। সে কারণে নির্ভর করতে হয় লাইটারেজ জাহাজের ওপর।

মেগা প্রকল্প বদলে দিচ্ছে জ্বালানি তেল পরিবহনের ব্যবস্থা

মাদারভেসেল থেকে লাইটার বা ছোট জাহাজে করে তেল আনা হয়, বিপিসি’র (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ডিপোতে।

বিপিসি থেকে আবার জাহাজে করে তেল দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে রেলের ওয়াগন এবং ট্যাংকলরিতে করেও তেল পৌঁছাতে নানান রকম ঝাক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ ও অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। সেখানেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।

অবশেষে, ঢাকা-চট্টগ্রাম তেলের পাইপলাইন করার কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে প্রাক-সমীক্ষা শেষ হলেও নানা কারণে নির্ধারিত গতিতে চলতে পারেনি প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ২শ ৩৭ কিলোমিটার, কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার, ফতুল্লা থেকে থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। পাইপলাইনটি চালু হলে বছরে ৬৫ কোটি টাকা পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছে বিপিসি।

প্রকল্পের আওতায় ২শ ৩৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চট্টগ্রাম ডেচপার্স টার্মিনাল ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রিসিভিং পয়েন্টের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। ডিসেম্বরের আগেই পাইপলাইনটি চালু করার বিষয়ে আশাবাদী জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।

অন্যদিকে, দেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থা ছিল খুবই জটিল ও বহুঘাট, হাত ঘুরে। লাইটারেজে করে তেল নেওয়া হতো। এছাড়াও ট্যাংকলরি, আরেকটি রুট হচ্ছে রেলওয়ের মাধ্যমে পৌঁছানো। এখন সেখানেও পরিবর্তন এনেছে, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন।

দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ৩ হাজার ৬শ ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ ৩১.৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের সময়কাল ছিল ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইপলাইনটি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইনের কারণে উত্তরাঞ্চলের দৈনিক অতিরিক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। সহজে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করা, উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় কম খরচে এবং দ্রুততম উপায়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে এই পাইপ লাইনের কারণে।

;