নতুন সরকারের ব্যতিক্রমী বাজেট



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা, জাতীয় সংসদ ভবন থেকে
বাজেট অধিবেশনে প্রবেশ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল,  ছবি: সংগৃহীত

বাজেট অধিবেশনে প্রবেশ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

দেশের সংসদীয় ইতিহাসে একটি অনন্য নজির সৃষ্টি হলো। সাধারণত সরকারের আর্থিক আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্বলিত বাজেট দিয়ে থাকেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে কখনোই অর্থমন্ত্রীর ছাড়া অন্য কাউকে বাজেট দিতে দেখা যায়নি।

এবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অসুস্থতার কারণে জাতীয় সংসদে তার পক্ষে বাজেটের সিংহভাগই উত্থাপন করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

সংসদীয় ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রীর বাজেট উপস্থাপনায় অংশগ্রহণের ঘটনা এই প্রথম। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেল ৪টা ১০ মিনিট থেকে ৪টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত মোট আধা ঘণ্টা অবশিষ্ট বাজেট বক্তব্য শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা দীর্ঘক্ষণ টেবিল চাপড়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। তবে হাসপাতাল থেকে সরাসরি সংসদে এসে প্রচণ্ড অসুস্থ অবস্থায়ই প্রথম এক ঘণ্টা বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। এ সময় স্পিকারের পরনে ছিল হলুদ শাড়ি। বাজেট পেশ উপলক্ষে অধিবেশন কক্ষ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। সংসদ গ্যালারি থেকে ভিআইপি লাউঞ্চ সবখানেই ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিজের জীবনের প্রথম বাজেট প্রস্তাবনা পড়তে শুরু করেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। ‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের’ এই শিরোনামে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন শুরু করেন তিনি।

তবে অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো বাজেট বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারছিলেন না অর্থমন্ত্রী। পাশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং 0সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী তাকে বার বার সহযোগিতা করছিলেন। কিন্তু বিকেল ৪টার দিকে একটু বেশিই অসুস্থ হয়ে পড়েন অর্থমন্ত্রী। তিনি চোখে ওষুধ দেওয়ার জন্য স্পিকারের কাছে পাঁচ/সাত মিনিট সময় চান। ওই সময়ে উপস্থিত কয়েকজন চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেন। কিন্তু চোখে ওষুধ দেওয়ার পরও শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বাকি বাজেট বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেন অর্থমন্ত্রী।

এতে অধিবেশনের চিত্রই পাল্টে যায়। সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাকি বাজেট উপস্থাপনের প্রস্তাবকে পূর্ণ সমর্থন জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের বাকি অংশটুকু উপস্থাপনের জন্য স্পিকারের অনুমতি চান। স্পিকার অনুমতি দিয়ে বলেন, ‘আপনি দাঁড়িয়ে বা বসে বাজেট উপস্থাপন করতে পারেন।’

বাজেট উপস্থাপনের জন্য ফ্লোর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থমন্ত্রী খুবই অসুস্থ। তার চোখে অপারেশন হয়েছে। ১৫ মিনিট পর পর তার চোখে ড্রপ দিতে হয়। আমারও চোখে অপারেশন হয়েছে, ঠাণ্ডা লেগেছে। কথা বলতে গেলে কাশি আসে। এটাই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য। তারপরও আপনি (স্পিকার) অনুমতি দিলে বাজেটের বাকিটা আমি উপস্থাপন করব।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাজেট উপস্থাপন শুরু করলে টেবিল চাপড়ে তাকে অভিনন্দন জানান সংসদ সদস্যরা।

তবে বাজেট বক্তৃতার বইয়ের অনেকাংশেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে কিছু বক্তব্য রয়েছে। সেসব অংশ পড়ার সময় প্রধানমন্ত্রী হেসে স্পিকারকে বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার, এটি আমার বক্তব্য নয়, এটি হচ্ছে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য। বাজেট বক্তৃতায় যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে, সেটি আমি পড়ব কি না?’ জবাবে স্পিকার বাজেট বক্তৃতায় যেভাবে রয়েছে সেভাবেই উপস্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী বাজেট উপস্থাপন শেষ করলে স্পিকার বলেন, বাজেটের অপঠিত অংশগুলো পঠিত বলে গণ্য করা হলো।

বাজেট বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী ব্যাগ থেকে ওষুধ বের করে নিজের চোখে নিজেই ড্রপ দেন। সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য, সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতারাও প্রধানমন্ত্রীর আসনের সামনে এসে তার এই দৃঢ়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

উৎসব মুখর পরিবেশ
বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে রীতিমতো উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় জাতীয় সংসদে। অতীতের মতো কোনো রাজনৈতিক দলের বর্জন নেই। বরং নিকট ইতিহাসের মধ্যে এবারই সরকার ও বিরোধী দল মিলে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দেশের ৪৮তম বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শুধু অধিবেশনই নয়, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের এই বাজেট উপস্থাপন প্রত্যক্ষ করতে ভিভিআইপি, ভিআইপি ও দর্শক গ্যালারি সব জায়গাই ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ।

দেশের ৪৮তম বাজেট পেশ উপলক্ষে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের সরব উপস্থিতি ছিল সংসদ অধিবেশনে। উৎসব মুখর পরিবেশে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।

শুরুতেই অর্থমন্ত্রী নিজের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে পুরো সময় না দাঁড়িয়ে মাঝে মধ্যে বসে বাজেট উপস্থাপন করার অনুমতি চান স্পিকারের কাছে। স্পিকার তাকে অনুমতি দিলে শুরুতেই অর্থমন্ত্রীর অনুরোধে বাংলাদেশ শীর্ষক একটি দীর্ঘ প্রমাণ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। প্রামাণ্যচিত্রে পাকিস্তান আমলে বাঙালি জাতির ওপর বৈষম্য, শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম, দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা অর্জন, পরবর্তী স্বৈরশাসকদের দুঃশাসন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তিন মেয়াদে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির সোপানে অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরা হয়।

এদিকে বাজেট বক্তৃতার আগে সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি বছর বাজেট উত্থাপনের আগে রেওয়াজ অনুযায়ী এই বৈঠকটি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন পাওয়ার পর বাজেট বিলে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

উৎসব মুখর সংসদে বাজেট বক্তৃতা শুনতে আসেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সংসদে নিজ কক্ষে বসে বাজেট উপস্থাপন প্রত্যক্ষ করেন তিনি। এর আগে রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভবনে স্বাগত জানান সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাড়াও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা জেনারেল (অব.) তারেক সিদ্দিকী,পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চোধুরী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, কূটনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাজেট বক্তৃতা দেখেন।

pm
অসুস্থ থাকায় অর্থমন্ত্রীর হাত ধরে রাখেন একজন (বায়ে), ডানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: সংগৃহীত

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কালো সুটকেস হাতে বেলা পৌনে ৩টায় বাজেট অধিবেশনে প্রবেশ করেন অর্থমন্ত্রী। মঙ্গলবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে সরাসরি সংসদ ভবনে আসেন অর্থমন্ত্রী। তারপরও তার চেহারায় ছিল উচ্ছ্বাস। বাজেট বক্তৃতার মাঝে মাঝে সরকারি দলের সদস্যরা টেবিল চাপড়ে অর্থমন্ত্রীকে উৎসাহ যোগান।

কঠোর নিরাপত্তা
বাজেট পেশ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বৈধ পাস ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি সংসদ ভবন এলাকায়। এমনকি দর্শক গ্যালারিতে পাস ইস্যুতেও ছিল কড়াকড়ি। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য পুরো ভবনে নিরাপত্তার ঘেরাটোপ গড়ে তোলেন। বাজেট বক্তৃতার পরে আমন্ত্রিত অতিথিরা যাতে নির্বিঘ্নে বের হতে পারেন সেজন্য সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার পিজিয়ন হলের গেটটিও খোলা রাখা হয়। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও করা হয় আলাদাভাবে।

অর্থ বিল উত্থাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাজেট বক্তৃতা শেষ হলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাঁড়িয়ে অর্থ বিল- ২০১৯ সংসদে উত্থাপন করেন। সরকারের আর্থিক প্রস্তাবগুলো কার্যকর এবং কিছু আইন সংশোধনের লক্ষ্যে বিলটি উত্থাপন করা হয়। সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিলটি আগামী ৩০ জুন পাস হবে। এর আগে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্য ৪৫ ঘণ্টা আলোচনা করবেন।

   

সরবরাহ বাড়ায় কমেছে পেঁয়াজের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে যখন ঊর্ধ্বগতি তখন স্বস্তির বার্তা হয়ে এসেছে পেঁয়াজের দাম। গেলো কয়েক সপ্তাহে যেখানে পেঁয়াজের ঝাঁজে ক্রেতাদের নাজেহাল অবস্থা। সেই পেঁয়াজ এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সুলভ মূল্যে। মূলত দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় এবং ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণার পর থেকে নেমে এসেছে পেঁয়াজের দাম।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৯০-১০০ টাকা তা মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কম দামে। বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রকারভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা যা পাইকারি বাজারে ৩০-৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন গত কয়েক সপ্তাহে সবকিছুর দামে যে আগুন লেগেছিল তা মনে হয় কিছুটা কমতে শুরু করেছে। যদিও অসাধু ব্যবসায়ীরা যা ব্যবসা করার তা করে ফেলেছে। সবার বাসায় এখন পর্যাপ্ত পেঁয়াজ, আলু ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। তাই ক্রেতাদের আনাগোনা বাজারে কমে যাওয়ায় কমেছে জিনিসপত্রের দাম।

শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি শশা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০। ক্যাপসিকাম ২৫০-৩০০ টাকা। বেগুন প্রতি কেজি ৫০-৬০, লেবুর হালি প্রকারভেদে ২০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০, করলা ৬০-৭০, টমেটো ৫০-৬০ কেজি, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিছ ৪০টাকা, বাঁধাকপি ৪০, ফুলকপি ৫০ এবং কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা দরে।

পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আগের দামেই পাওয়া যাচ্ছে সকল মাছ

এছাড়া আলু ৪০ টাকা প্রতি কেজি, আদা ২২০, রসুন ২০০, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, পেয়াজ ৪০-৪৫ টাকা , ধনেপাতা ৬০ টাকা কেজি।

হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা নিরব জানান, গত সপ্তাহের চাইতে এই সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা কম। মূলত আমদানি বাড়ার কারণে দাম কমেছে পেঁয়াজ সহ সকল শাক সবজির দাম। আগে ৮০ টাকার নিচে সবজির গায়ে হাত দেয়া যেতো না। কিন্তু এখন তা ৩০ থেকে ৪০ টাকায় নেমে এসেছে।

আরেক ব্যবসায়ী আমান হোসেন জানান, বেগুন ব্যবসায়ীরা এবার ধরা খাইছে। রমজানের প্রথম দুই দিনে বেগুন নিয়ে যে সিন্ডিকেট হইছিলো তাতে পাবলিক ক্ষেপে গিয়ে বেগুন কেনা কমাইয়া দিছে তাই প্রথম দুই দিনে বেগুন ১২০ টাকা করে পাইকারি বিক্রি হলেও এখন তা প্রকারভেদে মাত্র ১০-৩০ টাকা পাইকারিতে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ঈদের আগে আর কোন জিনিসের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নাই আশাকরি।

এদিকে মাছের বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র। বাজারে ক্রেতা কম থাকায় এবং মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আগের দামেই পাওয়া যাচ্ছে সকল মাছ।

বাজারে প্রতি কেজি কাচকি পাওয়া যাচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। এছাড়া বেলে মাছ ৫০০, ফলি ৫০০, কোরাল ৭০০, পাবদা ৪৫০, লইট্টা ৩০০, বোয়াল ৬০০, আইর ৮০০, রুই ৩৫০, চিতল ৮০০, পাঙ্গাশ ২০০ তেলাপিয়া ২২০, বড় চিংড়ি ১০০০, রুপচাঁদা ১৩৫০, এবং ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে।

;

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলার সংকটের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বেশষ গণনায় দেশের রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে তা ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৫৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত ২১ মার্চ সঞ্চিত বিদেশি অর্থের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের গণনা পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। যা শুধু প্রকাশ করা হয় না, শুধুমাত্র আইএমএফকে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ওই হিসাবে বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মিটবে।

অর্থাৎ, পণ্য কেনা বাবদ মাসিক প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার করে দায় পরিশোধ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বাংলাদেশেরও সেই পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে।

;

ইসলামী ব্যাংকে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সহযোগিতায় “বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ.ব.ম ফারুক, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম মেহেদী। অনুষ্ঠানে প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করার বিষয়ে যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করেছে দুই দেশ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করে বাংলাদেশ ও চীন।

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো এবং মূল্য সংযোজনের হার অন্যতম। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওই সব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলে ওই সকল দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।

কবে নাগাদ এফটিএ সই হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এখনো চুক্তি হয়নি। এখন আলোচনা শুরু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে পারলে ভালো। যদি না হয় আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনা শেষ না হলে ততোদিন যেন আমাদের এলডিসি হিসাবে এই সুবিধাগুলো তাঁরা দেয় এর জন্য বলবো।

চুক্তির ফলে বাংলাদেশ কি ধরনের সুবিধা পাবে এ বিষয়ে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টের বাইরে আরও কিছু পণ্য আছে। রাষ্ট্রদূততের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন আম ও পাটজাত পণ্যের অনেক সম্ভাবনা আছে। তারপর হস্তশিল্পের বিষয় আছে।

তিনি বলেন, এছাড়া আরও পণ্য আছে। আমরা ইতোমধ্যে চামড়া রপ্তানি করছি। আমরা মানসম্মত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারি। চীনে ১৪০ কোটি মানুষ। সেখানে যদি আমরা বৈচিত্র্য পণ্য নিয়ে যেতে পারি, বড় বাজার। চুক্তি হয়ে গেলে বিনিয়োগ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা প্রধানত তৈরি পোশাক রপ্তানি করি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা চীনে ৬৭৭ মিলিয় মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি। বিপরীতে চীন থেকে ২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এখন চীন বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। এফটিএ সই হওয়ার পর বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বাংলাদেশ চীনে আম, কাঠাল, আলু, পাটপণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এফটিএ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

;