ক্রেতাদের বিশ্বাস ভাঙলো সুপারশপ স্বপ্ন!
ঢাকা: রাজধানী ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন বড় বড় শহরে ক্রেতাদের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে পরিচিত সুপারশপ স্বপ্ন । স্বপ্নের পণ্যের মান ও পরিমাপ নিয়ে কোনো দিনই ক্রেতাদের মনে সন্দেহ ছিল না। তাই দেশের অন্য যেকোন সুপারশপ থেকে একটু বেশি দাম দিয়েই ক্রেতারা স্বপ্ন থেকে পণ্য কিনে থাকেন।
কিন্তু লাখো ক্রেতাদের এই বিশ্বাস ও আস্থা ভঙ্গ করলো প্রতিষ্ঠিত সুপারশপ স্বপ্ন। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য মজুদ, ওজনে কম ও নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সুপারশপ স্বপ্নকে দশ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাব-১ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (২০ মে) রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত সুপারশপ স্বপ্নের আউটলেটে র্যাব-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযানটি চালানো হয়েছে। পরে তিনি এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এই জরিমানা করেন।
র্যাব-১ সূত্রে জানা যায়, অভিযানের প্রথমেই বের হয়ে আসে স্বপ্নের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির রহস্য । আউটলেটটির ফ্রিজে ৩০০ ক্যান মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয় খুঁজে পান। এই ক্যানগুলোতে ২-৩ মাসের মেয়াদ বাড়ানোর আলগা স্টিকার লাগিয়েছিল স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ।
এরপরই সবার সামনে আসে অস্বাস্থ্যকর পবিবেশে খাবার রাখার দৃশ্য। আউটলেটির একটি ফ্রিজে বিপুল পরিমাণে পচা ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বের করেন র্যাবের সদস্যরা। রমজানে কেজিপ্রতি গরুর মাংসের দাম সিটি করপোরেশন থেকে ৪৫০ টাকায় বেঁধে দিলেও স্বপ্ন তা ৫৫০ বিক্রি করছে বলেও অভিযানে বের হয়ে আসে।
র্যাব-১ সূত্রে আরও জানা যায়, সুপারশপ স্বপ্নের পণ্যের পরিমাপ ও ওজন নিয়ে ক্রেতাদের আস্থার কোনো কমতি ছিল না এতো দিন। কিন্তু সেখানেও ক্রেতাদের এতো দিন ঠকিয়ে আসছিল স্বপ্ন। পেঁয়াজের প্যাকেটের গায়ে দুই কেজি লেখা থাকলেও ওজন করে মিলে মাত্র এক কেজি ৭০০ বা ৮০০ গ্রাম। বাকি ২০০-৩০০ গ্রাম হাওয়া!
সুপারশপ স্বপ্নের এমন জালিয়াতি ও আস্থা ভঙ্গের ঘটনাটি অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্যরাও যেনো বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
এ বিষয়ে র্যাব-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, সুপারশপ স্বপ্ন সবার কাছেই একটি আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা। ফলের ক্রেতারা অনেক দাম দিয়েই এখান থেকে পণ্য কিনেন। কিন্তু তারা আজ সেই বিশ্বাস নষ্ট করেছেন।
মেয়াদ ছাড়া পাওয়া পণ্য জব্দ না করে নষ্ট করা হয়েছে। তাদেরকে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সব অব্যবস্থাপনা ঠিক না করলে ফের জরিমানা করা হবে বলেও তিনি জানান।