দেওয়ান হোল্ডিংসের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ভবনের সাইনবোর্ড

ভবনের সাইনবোর্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ‘মহিউদ্দিন টাওয়ার’ নামে বহুতল ভবন নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ দেওয়ান হোল্ডিংস লিমিটেডের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ করেছে জমির মালিকপক্ষ। এ নিয়ে ডেভেলপার কোম্পানির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।

অবিরাম চুক্তিভঙ্গের মাধ্যমে ভবনটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় ফেলে রেখেছে দেওয়ান হোল্ডিংস। ফলে গত পাঁচ বছরেও ভবনের ফ্ল্যাট বুঝে পায়নি মালিকপক্ষ।

জমির মালিকপক্ষের অভিযোগ, দেওয়ান হোল্ডিংস লিমিটেড একটি ভুঁইফোড় কোম্পানি। এটি রিহ্যাব সদস্যভুক্ত কোন কোম্পানি নয়।

উত্তর বাড্ডার ছ-৬৮ নম্বর বাড়ির ১১ কাঠা জমির মালিক পৈত্রিক সূত্রে তিন ভাই খন্দকার মাহবুব আলী, খন্দকার মনোয়ার আলী, খন্দকার মোসাদ্দেক আলী ও তাদের বোন জিনাত আরা বেগম। এ জমিতে ১০ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের জন্য ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর ৫৬/১ পুরানা পল্টনের দেওয়ান হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান মো. আবদুস সাত্তারের সঙ্গে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন তারা।

এরপর ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ঢিমেতালে নির্মাণ কাজ চলায় চুক্তি মোতাবেক সাড়ে তিন বছরে ভবন নির্মাণে ব্যর্থ হয় দেওয়ান হোল্ডিংস। পরে এক বছর দশ মাস সময় বাড়িয়ে দেয় জমির মালিকপক্ষ। তারপরেও নির্মাণ কাজ শেষ করতে না পারায় দ্বিতীয় দফায় ২০১৮ সালের ১২ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। এ সময়েও ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেনি কোম্পানিটি।

মালিকপক্ষের অভিযোগ দেওয়ান হোল্ডিংসের অদক্ষতা ও অবহেলায় দশম তলার ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও রাজউক থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে মাত্র ৭ তলা নির্মাণের। তা সত্ত্বেও কোম্পানিটি অবৈধভাবে অষ্টম তলায় স্থাপনা নির্মাণ করেছে। ভবনে নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করেছে মালিকপক্ষ।

তাদের অভিযোগ, জমির মালিকপক্ষকে ১৮টি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করার শর্ত থাকলেও দেওয়া হয়েছে মাত্র ৬টি। বাকি ১২টি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়নি। অন্যদিকে ডেভেলপার কোম্পানি তাদের প্রাপ্য ১৮ ফ্ল্যাটের ১৬টি এরইমধ্যে বিক্রি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী জমির মালিকপক্ষের ফ্ল্যাট হস্তান্তরে বিলম্বজনিত কারণে ৪৩ লাখ টাকা ভাড়া দিতেও গড়িমসি করছে।

চুক্তিমতে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে সালিশি আদালতে যাওয়ার শর্ত রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করায় এবং পাওনা ৪৩ লাখ টাকা বার বার চাইলেও কর্ণপাত করেননি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান সাত্তার।

শেষ পর্যন্ত গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সালিশি আইন ২০০১ এর অধীনে ঢাকার জেলা জজ আদালতে মামলা করেন জমির মালিক খন্দকার মাহবুব আলীসহ চারজন। ২০ ফেব্রুয়ারি আদালত দেওয়ান আবদুস সাত্তার ও তার স্ত্রীকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।

নোটিশের জবাব না দেওয়ায় আদালত মামলাটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পরে গত ১৩ মে জেলা জজ আদালত ভবনের কোন ফ্ল্যাট বা অংশ অন্যত্র কোনভাবে যেন হস্তান্তর না করতে পারে এ জন্য উভয়পক্ষের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (স্থিতাবস্থা) নির্দেশ দেন। এ স্থিতাবস্থা মেয়াদ বাড়ানোয় তা এখনও বলবত রয়েছে। আগামী ২৬ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

সালিশি আদালতে মামলা দায়ের করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দেওয়ান সাত্তার। তিনি হুমকি-ধামকি দিলে জমির মালিক খন্দকার মনোয়ার আলী বাড্ডা থানায় দেওয়ান সাত্তারের বিরুদ্ধে জিডি করেন। জিডির পরেও হুমকি অব্যাহত থাকায় জমির অপর অংশীদার খন্দকার মাহবুব আলীর ছেলে খন্দকার মাহফুজ আহমেদ বাদী হয়ে দেওয়ান সাত্তার, তার সাইট ম্যানেজার মো. আতিকুর রহমান (সবুজ) ও মো. রেজাউল করিমের (রেজা) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আর হুমকি দেওয়া হবে না এমন মুচলেকা দিয়ে অব্যাহতি পান দেওয়ান সাত্তার ও অন্যরা।

খন্দকার মাহবুব আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, নির্ধারিত সময়ে ভবনের কাজ শেষ করতে পারেনি দেওয়ান হোল্ডিংস। দুই দফায় সময় বাড়ানোর পরেও ভবনটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমরা চাই তারা দ্রুত নির্মাণ শেষ করে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করুক। ভাড়া বাবদ আমাদের পাওনা ৪৩ লাখ টাকা দিতে হবে। আর ভবনের প্রয়োজনে গুণগতমানের সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের যন্ত্র প্রকৌশল শাখায় চাকরি করতেন দেওয়ান আবদুস সাত্তার। ২০১০ সালে অবসরের পর তিনি ডেভেলপার কোম্পানি দেওয়ান হোল্ডিংস প্রতিষ্ঠান করেন। কোম্পানির চেয়ারম্যান দেওয়ান আবদুস সাত্তারের স্ত্রী।

যথাসময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না করা প্রসঙ্গে দেওয়ান আবদুস সাত্তার বলেন, আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেছেন, তাই কাজ করতে পারছি না।

স্থিতাবস্থা গত ১৬ মে জারি হয়েছে, গত ৫ বছরে কেন কাজ শেষ হয়নি তার সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে স্বীকার করেছেন, নানাবিধ সমস্যার কারণে নির্ধারিত সময়ে ভবনের কাজ শেষ করা যায়নি।

   

বাবুলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় খুন হন মিতু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্ত্রী মাহমুদা খানম ওরফে মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পাশেই আরেকটি রুমে ওঠেন ভারতীয় এক নারী। সেই নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পরপর দুবার বাবুলকে দেখে ফেলেন মিতু। আর এজন্যই মানসিক অত্যাচার এবং পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এসব তথ্য দেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার বড় মেয়ে মাহমুদা খানম মিতুর বিয়ে হয়। তখন বাবুল আক্তার বেকার ছিল। বিবাহের পর একেবারে শুরু থেকে তাদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না, মোটামুটি ছিল। পরে পুলিশে যোগদান করেন। এরপর কক্সবাজারে এসপি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) হিসেবে বদলি হয়। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন বাবুল।

তিনি আরও বলেন, একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠে। পাশের রুমে ওই নারীও ওঠে। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে। তখন মিতু তাকে জিজ্ঞেস করে, সে এখানে কি করছে? বাবুল মিতুকে বলে বিদেশে যাবার জন্য ল্যাপটপে কাজ করছে। তাদের দুজনকে এ অবস্থায় দেখে মিতুর খুব খারাপ লাগলো। সে কিছুক্ষণ ওখানে ছিল। বাচ্চারা একা থাকায় মিতু তাদের রুমে চলে আসে। বাচ্চারা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সেও ঘুমিয়ে পড়ে।

গভীর রাতে আবারও আপত্তিকর অবস্থায় দেখার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, রাত ৩টার দিকে মিতুর ঘুম ভেঙে যায়। তখনও বাবুল আক্তার মিতুর রুমে ছিলেন না। মিতু আবার ওই নারীর রুমে গেলে তাদের দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। মিতু রুমে এসে কেঁদে কেঁদে আমাকে ফোন দেয়। তখন আমি তাকে বলি, তুই চলে আয়। মিতু তখন বলে, আমার ছেলে-মেয়েরা আমাকে খারাপ মনে করবে। তাই আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি।

সাক্ষ্য দেওয়ার সময় শাহেদা মোশাররফ বলেন, বাবুল আক্তার বিদেশে (মিশনে) থাকার সময় তিন-চারবার বাংলাদেশে আসেন। তবে দেশে ফিরলেও তিনি বাসায় অর্থাৎ মিতু কিংবা ছেলেমেয়েদের কাছে যাননি। মিশন শেষ করে তিনি চীনে চলে যান। সেখানে বসেই বাবুল মিতুকে মারার পরিকল্পনা করেন।

মিতুর একটি ব্যবসা ছিল। ব্যবসার তিন লাখ টাকা দিয়ে মিতুকে খুন করে। মিতু মারা যাওয়ার পর বাবুল আক্তার আমাদের বাসায় ওঠে। ছয়মাস আমাদের বাসায় ছিল সে। সেখানে বসে সে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ২৪ জুন (২০১৬) বাবুল আক্তারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর বাবুল সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে আসে। আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করি, চাকরি ছাড়লে কেন? তখন সে বলে, মিতু খুন হওয়ার কারণে আমাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। আমি তাকে বলি, তোমার চাকরি ছাড়ার বিষয় কি মিতুর খুনের বিচারের জন্য?, বলেন তিনি।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করার জন্য মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে দেয়। একথা বলেছে মুসার স্ত্রী। মুসার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি মিতুকে খুন করেছ? তখন মুসা তার স্ত্রীকে বলে, আমি খুন না করলে বাবুল আক্তার আমাকে ক্রসফায়ার দেবে। বাবুল আক্তার আমাদের বলেছিল, মিতুর খুনের আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে। আমি ক্রসফায়ার দিতে বলেছি।

শাহেদা আরও বলেন, আসামি ওয়াসিম, আনোয়ার গ্রেফতার হয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই ভোলা ধরা পড়ে। গ্রেফতার হওয়ার পর সে আদালতে জবানবন্দি দেয়- বাবুল আক্তারের নির্দেশেই মিতুকে খুন করেছে মুসা। মিতু মারা যাওয়ার দেড় মাস পর সে যে বাসায় ছিল ওখানে মিলাদ পড়ানোর জন্য আমরা চট্টগ্রাম আসি। এর কিছুদিন পর আসামি কালু ও শাহজাহান গ্রেফতার হয়। আমরা চট্টগ্রাম আসার পরে অবস্থা দেখে মনে হয়েছে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও নিজেই মিতু হত্যার মামলা করল। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমার স্বামীকে বলে, আপনারা বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১২ মে মিতুর বাবা বাবুল আক্তারকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করলেন।’

মারা যাওয়ার ১৫ দিন আগে (২০১৭ সালে) মিতুর মা শাহেদাকে ফোন করেন বাবুল আক্তারের মা। ফোন করে তিনি বলেন, বেয়াইন, মিতুকে আমার ছেলে (বাবুল) খুন করেছে। তাকে আপনি মাফ করে দেন। তখন আমি তাকে (বাবুলের মা) বলি, বাবুল মরলে কি এ কথা আপনি বলতেন? এসব আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বলেছি।

এদিন দুপুর ১২টায় চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর প্রথমে সাক্ষ্য দেন অবসরে যাওয়া পুলিশ পরিদর্শক মহিউদ্দিন মাহমুদ। যিনি ঘটনার সময় নগরের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে ছিলেন। এরপর সাক্ষ্য দিতে কাঠগড়ায় দাঁড়ান শাহেদা মোশাররফ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসপি বাবুল ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোন কূলকিনারা করতে না পারায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল।

পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন। তবে সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই পুনরুজ্জীবিত হয়। ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ওই বছরের ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন সাক্ষ্য দেন।

;

কেএনএফ'র সাথে সম্পৃক্ততা, রুমা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৭ জন কারাগারে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানে রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় কেএনএফ'র সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে রুমা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ভান মুন নুয়ান বমসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বান্দরবানের কোর্ট ইন্সপেক্টর একে ফজলুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন, ভান মুন নুয়ান বম (৩৩), লাল নুন নোয়াম (৬৮), লাল দাভিদ বম (৪২), চমলিয়ান বম (৫৬), লাল পেক লিয়ান (৩২), লাল মিন বম (৫৬), ভান বিয়াক লিয়ান বম (২৩)। তারা সবাই রুমার মুনলাই পাড়ার বাসিন্দা।

এরআগে সোমবার (২২ এপ্রিল) রুমার মুনলাই পাড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী।

এ পর্যন্ত কেএনএফ সদস্য সন্দেহে মোট ৭৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী রয়েছেন।

এদিকে, বান্দরবানের রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ভান মুন নোয়াম বমকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হ‌য়ে‌ছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অং ছাইং উ পুলু ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হো‌সেন মানিকের যৌথ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পুলু মারমা বলেন, কেএনএফের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, এজন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

;

পদে থেকেই উপজেলায় প্রার্থী হতে পারবেন ইউপি চেয়ারম্যানরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পদত্যাগ না করেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক।

কুষ্টিয়া ও সিলেটের দুটি উপজেলা নির্বাচনের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আদেশ দিয়েছেন আদালত।

;

কুমিল্লায় পারভেজ হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যা মামলায় একই উপজেলার কালিবাজার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সেকান্দার আলীসহ ১৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার আদালত।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান এ রায় দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন- বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১১ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন ও ৩ পলাতক রয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার ধনুয়াখালী এলাকার মৃত হাজী মো. আব্দুর রহমানের ছেলে মো. সেকান্দর আলী (৬৪), একই এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে মো. শাহীন (৩৯), সৈয়দপুর এলাকার আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন (৩২), কমলাপুর এলাকার মো. মোজাম্মেল হকের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২১), যশপুর এলাকার মৃত আহমেদ আলীর ছেলে মফিজ ভান্ডারী, কমলাপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার মো. জয়নাল মাস্টারের ছেলে মো. কায়সার (৩২), কমলাপুর এলাকার মৃত মনিরের ছেলে মো. রিয়াজ (৩৩), মনশাসন এলাকার শফিক মেম্বার এর ছেলে বিল্লাল, কমলাপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমান এর ছেলে কামাল হোসেন, কালির বাজার ইউনিয়নের আবদুল ওহেদ এর ছেলে মো. ইব্রাহীম খলিল (৪৫), রায়চোঁ এলাকার ইমদাদুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান, সৈয়দপুর এলাকার মৃত হাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে জয়নাল আবেদীন, বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে আব্দুল কাদের, নারায়নসার এলাকার মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে আনোয়ার।

মামলার তথ্যমতে, ২০২০ সালের ১০ জুন কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের কমলাপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে কবরস্থান সংলগ্ন বাগানে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা পারভেজকে নির্মমভাবে হত্যা করে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী এবং তার বাহিনীর ক্যাডারেরা।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, এই চাঞ্চল্যকর পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে এজাহারে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করে। এই ঘটনায় চারজন আসামির ১৬৪ ধারা জবানবন্দি ও ৩১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত ১৪ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। রায়ের সময় ১৪ জন আসামির মধ্যে ১১ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বাকী ৩ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।

;