উত্তরাধিকার সম্পদ থেকে কাউকে বঞ্চিত করা পাপ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
উত্তরাধিকার সম্পদ থেকে কাউকে বঞ্চিত করা পাপ, ছবি: সংগৃহীত

উত্তরাধিকার সম্পদ থেকে কাউকে বঞ্চিত করা পাপ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সন্তানরা দেখাশোনা করে না এবং ভরণ-পোষণের খরচ দেয় না। এমতাবস্থায় রাগ করে সন্তানদেরকে বঞ্চিত করে সমুদয় সম্পত্তি স্ত্রীর নামে লিখে দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।

ইসলামের বিধান হলো, সম্ভাব্য কোনো ওয়ারিসকে বঞ্চিত করে সমুদয় সম্পত্তি কাউকে দিয়ে দেওয়া অবৈধ। সন্তান কর্তৃক বাবার খোঁজ না নেওয়া ও তাকে না মানা অন্যায়। কিন্তু এ কারণে তাদেরকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে দেওয়া যাবে না।

সন্তানদের কর্তব্য, পিতামাতার দেখাশোনা করা ও খোঁজ-খবর রাখা এবং তাদের অবাধ্য না হওয়। পিতামাতার অবাধ্যতাকে হাদিসে কবিরা গোনাহ বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু বাকরা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় কবিরা গোনাহের কথা বলে দিবো না? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই (বলে দিন)। বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, পিতামাতার অবাধ্য হওয়া...। –সহিহ বোখারি: ৫৯৭৬

উল্লেখ্য, মিরাস হচ্ছে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার মৃত্যুপরবর্তী সম্পদ বণ্টনের পদ্ধতি। বান্দার উচিত এতে নিজ থেকে হস্তক্ষেপ না করা এবং এমন কিছু না করা, যাতে তার সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী পুরোপুরি বঞ্চিত হয়।

অবশ্য কখনও কোনো সন্তানের অবাধ্যতা চরম পর্যায়ে চলে গেলে সেক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে ভুক্তভোগী নিজে কোনো ফতোয়া বিভাগে গিয়ে অবস্থা বর্ণনা করে তাদের মাসয়ালা অনুযায়ী আমল করবে।

   

ইতিহাস বদলে দেওয়া বদর যুদ্ধের প্রেক্ষাপট



মাওলানা আবদুল জাব্বার, অতিথি লেখক, ইসলাম
বদর যুদ্ধে যেখানে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তাঁবু ছিল সেখানে পরে এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে, নাম মসজিদে আরিশ, ছবি : সংগৃহীত

বদর যুদ্ধে যেখানে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তাঁবু ছিল সেখানে পরে এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে, নাম মসজিদে আরিশ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুসলিম ইতিহাসের প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ বদর। দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান মদিনার উপকণ্ঠে বদর নামক স্থানে মুখোমুখি হয় মুসলিম ও কুরাইশ বাহিনী। ঐতিহাসিক এ যুদ্ধ ছিল অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের লড়াই। ইসলাম ও মুসলিমদের অস্তিত্বের সংগ্রাম। বদর যুদ্ধে আল্লাহতায়ালা অসম প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মুসলিম বাহিনীকে বিজয় দান করেন। অস্তিত্বের সংকট থেকে মুসলিম উম্মাহকে মুক্তি দিয়ে অমিত সম্ভাবনার দুয়ারে পৌঁছে দেন।

৬২৪ খ্রিস্টাব্দ তথা দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান সংঘটিত হয়েছিল ইসলামে চিরস্মরণীয় ও গৌরবময় অধ্যায় বদর যুদ্ধ। এটি ছিল সত্য ও মিথ্যার, হক ও বাতিলের, মুসলিম ও কাফেরদের মধ্যকার ঐতিহাসিক যুদ্ধ, ইসলামের প্রথম যুদ্ধ। মদিনার অদূরে অবস্থিত একটি কূপের নাম ছিল বদর। সেই সূত্রে এই কূপের নিকটবর্তী আঙিনাকে বলা হতো বদর প্রান্তর। এই বদর প্রান্তরেই মহান আল্লাহ তার প্রিয় হাবিব নিরস্ত্র মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তার সঙ্গীদের বিজয়ী করেছিলেন হাজার সশস্ত্র যোদ্ধার মোকাবেলায়।

ঘটনার সূত্রপাত
মদিনায় বইতে থাকা ইসলামের বসন্তের হাওয়া মক্কার কাফেরদের বেশ ভাবিয়ে তুলেছিল। না জানি কখন এই হাওয়া দমকা হাওয়ায় রূপ নিয়ে তাদের উড়িয়ে নিয়ে যায়, কিংবা তাদের ব্যবসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই মুসলমানদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অর্থ জোগান ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ক্রয় করার উদ্দেশ্যে আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে মক্কার একটি বিশাল বাণিজ্য কাফেলা শামে গিয়েছিল। মক্কার প্রতিটি ঘর থেকে প্রত্যেকের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দিয়ে গঠন করা হয়েছিল ৪০ জন সশস্ত্র অশ্বারোহী যোদ্ধার পাহারায় এক হাজার মালবাহী উটের একটি বাণিজ্যিক বহর।

বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিল মুসলমানরাও। তাই যখন তারা শাম থেকে ব্যবসা শেষে অস্ত্র নিয়ে ঘরে ফিরছিল, তখন তাদের ওপর হামলা করার সিদ্ধান্ত হলো। মুসলমানদের আত্মরক্ষার্থে হামলা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না। বিষয়টি আবু সুফিয়ান টের পেয়ে দ্রুত সাহায্যের জন্য মক্কায় খবর পাঠায়। তবে খবরটি ছিল, মুসলমানরা আবু সুফিয়ানের কাফেলার ওপর হামলা করেছে। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ আবু জাহেলের নেতৃত্বে এক হাজার সশস্ত্র যোদ্ধার এক বিশাল বাহিনী মদিনা আক্রমণের জন্য বের হয়। অথচ মুসলমানরা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে আসেনি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধু আবু সুফিয়ানকে আটকানো।

এই যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পেছনে যেসব বিষয় প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছিল তা ছিল নাখলার খণ্ডযুদ্ধ, কাফেরদের রণপ্রস্তুতি, আবু সুফিয়ানের অপপ্রচার, যুদ্ধপ্রস্তুতির জন্য অহি লাভ ও মক্কাবাসীর ক্ষোভ ইত্যাদি। আর পরোক্ষ কারণ হিসেবে দেখা হয়, মদিনা শরিফে সাফল্যজনকভাবে ইসলাম সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কুরাইশদের হিংসা, আবদুল্লাহ বিন উবাই ও ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, কুরাইশদের যুদ্ধের হুমকি, তাদের বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা, কাফেরদের আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা, ইসলামের ক্রমবর্ধমান শক্তির ধ্বংসসাধন এবং রাসুল (সা.)-কে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার কাফেরদের অশুভ বাসনা।

যুদ্ধের ফলাফল ও প্রভাব

ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। মহান আল্লাহ এই যুদ্ধকে ‘ইয়াওমুল ফুরকান’- সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য স্পষ্টকারী দিন বলে আখ্যা দিয়েছেন। আল্লাহর এই নামকরণ থেকেই বদর যুদ্ধের প্রভাব ও ফলাফল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। মূলত প্রতিষ্ঠিত শক্তি কুরাইশদের বিরুদ্ধে সদ্যঃপ্রসূত মদিনার ইসলামি রাষ্ট্রের জন্য বদর ছিল অস্তিত্বের লড়াই। বদর যুদ্ধের বিজয় ছিল মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রথম রাজনৈতিক স্বীকৃতি। এ যুদ্ধই ইসলামি রাষ্ট্রের পথচলার গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছিল। বদর যুদ্ধের পূর্বাপর অবস্থা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এই যুদ্ধ শুধু মদিনা নয়; বরং সমগ্র আরব উপদ্বীপে মুসলিম উম্মাহর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছিল।

ঐতিহাসিকরা মনে করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হিজরতের পর মদিনায় যে ইসলামি রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হয়েছিল, তার প্রকৃত প্রতিষ্ঠা বদর প্রান্তে বিজয়ের মাধ্যমেই হয়েছিল। এই বিজয়ের আগে মদিনার মুসলিমরা ছিল একটি ধর্মীয় সম্প্রদায় মাত্র। কিন্তু কুরাইশদের মতো প্রতিষ্ঠিত শক্তির বিরুদ্ধে সামরিক বিজয় এই ধারণা পাল্টে দেয় এবং আরব উপদ্বীপে মদিনার মুসলিমদের একটি রাজনৈতিক পক্ষের মর্যাদা এনে দেয়। শুধু তা-ই নয়, বদর যুদ্ধ আরবের বহু মানুষের হৃদয়ের সংশয় দূর করে দেয় এবং তারা ইসলাম গ্রহণের সৎসাহস খুঁজে পায়। এ ছাড়া অসম শক্তির বিরুদ্ধে এই অসাধারণ বিজয় মুসলিম উম্মাহর জন্য অনন্ত অনুপ্রেরণার উৎস।

আরবের অমুসলিমদের ওপরও বদর যুদ্ধের প্রভাব ছিল অপরিসীম। বদর যুদ্ধে কুরাইশ বাহিনীর ৭০ জন নিহত হয়। তাদের বেশির ভাগই ছিল শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ও খ্যাতনামা আরব বীর। আবু জাহেল, উতবা ইবনে রাবিয়া, শায়বা ইবনে রাবিয়া, ওয়ালিদ ইবনে মুগিরা, নদর বিন হারেস ও উমাইয়া বিন খালাফের মতো কুরাইশ নেতাদের করুণ মৃত্যু তাদের হৃদয়াত্মাকে কাঁপিয়ে দেয় এবং তাদের চোখ থেকে অহমিকার পর্দা সরে যায়। কারণ সমকালীন ইতিহাসে কুরাইশ গোত্রের এমন বিপর্যয় আরবরা দেখেনি।

এ ছাড়া বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর বিজয় কুরাইশদের অবাধ বাণিজ্য এবং আরবের অন্যান্য গোত্রের ওপর অন্যায় প্রভাব খাটানোর পথ বন্ধ করে দেয়। মদিনার উপকণ্ঠে ডাকাতি ও লুণ্ঠনের যে ধারা যুগ যুগ ধরে চলে আসছিল- যার পেছনে কুরাইশ নেতাদের সহযোগিতা ও প্রশ্রয় ছিল, তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মুসলিম বাহিনীর এই বিজয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে মদিনা ও আশপাশের সর্বস্তরের মানুষ। তারা স্বাগত জানায় সত্যপক্ষের এই মহান বিজয়কে।

;

পটিয়া মাদ্রাসার ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পটিয়া মাদ্রাসা ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলন, ছবি : সংগৃহীত

পটিয়া মাদ্রাসা ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত ১৪ ফেব্রুয়ারির মজলিসে শুরাকে অবৈধ আখ্যায়িত করে এই শুরার মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে মহাপরিচালক করে শতবর্ষী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পটিয়া মাদ্রাসার ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাবেক কৃতি শিক্ষার্থী, শুভানুধ্যায়ী ও নিপীড়িত শিক্ষক-ছাত্রদের সমন্বয়ে গঠিত পটিয়া মাদ্রাসা ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদ নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান মিলনায়তনে ঐতিহ্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পটিয়া মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত বিতর্কিত মজলিসে শুরায় উপস্থিত মুরব্বিরা মহাপরিচালক মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামযাহর প্রতি সুবিচার করেননি। তারা মাওলানা ওবাইদুল্লাহর কোনো বক্তব্য শ্রবণ কিংবা আত্মপক্ষ সমর্পণের সুযোগ দেননি। এর ফলে তাদের প্রতি অভিভাবকসুলভ যে আস্থা ও বিশ্বাস জাতির ছিল, তা ক্ষুন্ন হয়েছে মন্তব্য করে নেতৃবৃন্দ বলেন, পটিয়া মাদ্রাসায় বর্তমানে যে ব্যক্তিকে মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয়েছে তিনি একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এহসান এসের চেয়ারম্যান হিসেবে গরিব গ্রাহকদের শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দুই ডজন মামলা বিচারাধীন রয়েছে। পটিয়া মাদ্রাসায় ছাত্রদের ফুঁসলিয়ে যে নজিরবিহীন সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানো হয়েছে, মুরব্বিরা সেগুলোকে অনুমোদন দিয়েছেন এবং অপরাধীদের রক্ষা করেছেন।

সেগুনবাগান তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা কমপ্লেক্সের পরিচালক হাফেজ মোহাম্মদ তৈয়বের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ফটিকছড়ি জামিয়া ইসলামিয়া বায়তুল হুদার মুহতামিম ও জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার মজলিসে শুরার সদস্য হজরত মাওলানা এমদাদুল্লাহ নানুপুরী, শোভনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আলীম, জামিয়া দারুল মাআরিফ চট্টগ্রামের সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা নুরুল আমীন মাদানি, পটিয়া পৌরসভার সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ ইবরাহীম, ছনহারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন, মাওলানা আবদুল আজীজ, মাওলানা আমিনুর রশীদ পটিয়াবী, মাওলানা কুতুবুদ্দীন, মাওলানা হোসাইন আহমদ ও মাওলানা উজাইরুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ২৮ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলার পর বিভিন্ন নিপীড়িত শিক্ষক-ছাত্রসহ মাওলানা জামালুদ্দীন, মাওলানা বোরহানুদ্দীন, মাওলানা সগির আহমদ চৌধুরী, হোযাইফা মালিক, জুবাইর ও সোহরাব হোসেন আইমন।

এক প্রশ্নের জবাবে নেতৃবৃন্দ বলেন, হেফাজতে ইসলাম বা পটিয়া মাদ্রাসার কারও সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব বা পছন্দ-অপছন্দ নেই। হেফাজতে ইসলামের কতিপয় নেতা পটিয়ার ঘটনায় যে অনাধিকার চর্চা ও অনৈতিক হস্তক্ষেপ করছেন তা তাদের ব্যক্তিগত, এতে হেফাজতের সাধারণ কর্মি-সমর্থকদের কোনো সমর্থন নেই। উপর্যুক্ত ব্যক্তিবর্গ হেফাজতকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করছেন বলে নেতৃবন্দ মন্তব্য করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, যারা এই হস্তক্ষেপ করছেন তাদের নিজেদের মাদ্রাসায় কোনো শুরা নেই, পরিবারতন্ত্রই সেখানে নিয়ম, আয়-ব্যয়ের হিসাব নেই, কোনো নিয়মশৃঙ্খলা নেই। অনেকে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার সুযোগ্য পরিবারকে অন্যায়ভাবে বিতাড়িত করে দখলদারিত্ব কায়েম করে আছেন। কিন্তু পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক হবেন যোগ্যতার ভিত্তিতে, নিয়ম ও সংবিধানের আলোকে। পরিবারতন্ত্র, দখলদারিত্ব ও সন্ত্রাসী হামলা করে দুর্নীতিবাজদের পদায়ন পটিয়া মাদ্রাসার ঐতিহ্যের পরিপন্থী।

সংবাদ সম্মেলন থেকে পটিয়া মাদ্রাসায় সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি নতুন শুরা গঠনের নামে প্রহসনমূলক সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সেই সঙ্গে সরকার, প্রশাসন ও সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ জনগণের প্রতি আমাদের দাবি হলো-

পটিয়া মাদ্রাসা ইত্তেহাদুল মাদারিসের সংবিধান অনুযায়ী নিয়মাতিন্ত্রক ও বৈধ মজলিসে শূরার মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্বারা পরিচালনার ব্যবস্থা। ২৮ অক্টোবর (২০২৩) মাদ্রাসায় সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামযাহর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের সত্যতা যাছাইয়ে নিরপেক্ষ নিরপেক্ষ কমিটি গঠন। তদন্তে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি জানানো হয়, পক্ষপাতদুষ্ট মুরব্বিদের বিভিন্ন মাদ্রাসায় আধিপত্যবাদী কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং সন্ত্রাসে উস্কানি ও ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এবং মাদ্রাসার স্থাবর সম্পত্তিতে জবরদখল, দুর্নীতি ও মধ্যস্বত্ত্বভোগের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী দোকান, মার্কেট ও ভাড়া বাসাসমূহের ভাড়া নির্ধারণ করে সুচারু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাদ্রাসার প্রাপ্য হক যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠা করা।

;

২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে: ধর্মমন্ত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে: ধর্মমন্ত্রী

২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে: ধর্মমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল
মডেল। বিশ্বের ৩৫ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। আমাদের এই অগ্রযাত্রার মূল নিয়ামক স্বাধীনতা।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল ১০টায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক আলোচনা সভা ও বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি
এসব কথা বলেন।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিলো সোনার বাংলা গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার
কাজ করে যাচ্ছেন। সবাই মিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নকে সার্থক করে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মুঃ আঃ হামিদ জমাদ্দার। সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মহা.
বশিরুল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিচালক মোঃ হাবেজ আহমেদ। এতে অন্যান্যের মধ্যে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মোঃ ফজলুর রহমান, প্রতিটি জেলা উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক মো. নজিবর রহমান, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক এ এস এম শফিউল আলম তালুকদার, পরিচালকবৃন্দ ও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম।অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।

;

ভিক্ষুকদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে আরব আমিরাত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভিক্ষুকদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে আরব আমিরাত, ছবি : সংগৃহীত

ভিক্ষুকদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে আরব আমিরাত, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ২০২ জন ভিক্ষুককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাইয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশের ভিক্ষাবিরোধী বিশেষ অভিযানে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন তারা।

বুধবার (২৭ মার্চ) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস দুবাই পুলিশের কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার আলী সালেম আল সামসির বরাতে জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিক অর্থ পাওয়ার আশায় ট্যুরিস্ট ভিসায় গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করছিলেন আটককৃত এসব ভিক্ষুক। মূলত তারা পেশাদার ভিক্ষুক নন। তবে রমজানে ধনীরা দুস্থদের সহায়তা করে থাকেন, এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে প্রতারণা করছিলেন তারা।

জানা গেছে গ্রেপ্তার হওয়া ২০২ জন ভিক্ষুকের মধ্যে ১১২ জন পুরুষ, আর বাকি ৯০ জন নারী।

দুবাই পুলিশের তথ্যমতে, যারা নির্দেশনা অমান্য করে ভিক্ষা কর ধরা পড়বেন, তাদের ৫ হাজার দিরহাম (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় লাখ টাকা) জরিমানা দিতে হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের ৩ মাসের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হবে। আর যারা অন্য দেশ থেকে সাধারণ মানুষকে এনে ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশায় নামাবে, তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ দিরহাম জরিমানা করা হবে।

দুবাই পুলিশের কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার আল সামসি অনুরোধ করেছেন, সন্দেহজনক কাউকে ভিক্ষা করতে দেখলে যেন তাদের অবহিত করা হয়। এই কর্মকর্তার মতে, বেশিরভাগই ভিক্ষুকই বানানো গল্প বলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন।

এমন প্রতারণার ঘটনাও সামনে এসেছে। সম্প্রতি নারীর পোশাক পরিধান করে মহিলার ছদ্মবেশে মসজিদের বাইরে ভিক্ষা করার সময় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দুবাইয়ের পুলিশ। তবে লোকটির নাম ও দেশের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। লোকটি পুলিশের কাছে বলেছে নারী ভিক্ষুকরা বেশি সহানুভূতি পায় বলে বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারে। তাই আরও বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য একজন নারীর ছদ্মবেশে সে এ কাজটি করেছিল।

দুবাই পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশনের জেনারেল ডিপার্টমেন্টের সন্দেহভাজন এবং অপরাধমূলক ঘটনা বিভাগ বলেছে, লোকটি বোরকা এবং নেকাব আবৃত একজন মহিলার ছদ্মবেশে দুবাইয়ের একটি মসজিদের বাইরে ভিক্ষা করার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৫ মার্চ দেশটির ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।

দুবাইয়ে ভিক্ষাবিরোধী কঠোর আইন রয়েছে। দেশটিতে এমনিতেই ভিক্ষাবৃত্তি একেবারেই নিষিদ্ধ। সেখানে ভিক্ষা নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে ভিক্ষা না দিতেও উদ্বুদ্ধ করা হয়।

আর রমজান মাসে ভিক্ষা করার দায়ে পাঁচ হাজার দিরহাম জরিমানা ও তিন মাস জেলের বিধান রয়েছে আরব আমিরাতে। তারপরও একশ্রেণির লোক ভিজিট ভিসায় এসে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করে। বিশেষ করে পবিত্র মাহে রমজানকে পুঁজি করে ভিজিট ভিসায় এসে এ ভিক্ষাবৃত্তি বেশি করা হচ্ছে বলে পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসে।

;