হজযাত্রীদের পরামর্শ দিতে ৫৫ আলেমকে সৌদি পাঠাচ্ছে সরকার



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের লোগো, ছবি: সংগৃহীত

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের লোগো, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজপালন বিষয়ে ধর্মীয় পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ৫৫ সদস্য বিশিষ্ট ওলামা-মাশায়েখদের একটি দল গঠন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় খরচে হজযাত্রীদের প্যাকেজে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান সাপেক্ষে ওলামা-মাশায়েখদের হজপালনে এবারই প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হলো।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শিব্বির আহমদ উছমানি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ওলামা-মাশায়েখদের হজ পালনের বিষয়টি জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ৪ ও ৫ আগস্ট ফ্লাইট প্রাপ্তি সাপেক্ষে ওলামা-মাশায়েখদের দলটি সৌদি আরবে যাবেন। ২৩ আগস্ট তারা দেশে ফিরে আসবেন। রাষ্ট্রীয় খরচে হজ সফর হিসেবে গণ্য হবে। মনোনীত আলেমদের কোরবানি নিজ খরচে করতে হবে। মক্কা-মদিনায় তাদের ভ্রমনসূচি হজ কাউন্সিলর কর্তৃক নির্ধারিত হবে, তারা নিজ অর্থায়নে হলেও স্ত্রী-সন্তানসহ গমন করতে পারবেন না।

সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের প্রতি ৪৫ জনে একজন গাইড নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য এজেন্সিগুলো গাইড নিয়োগ করে নিজ উদ্যোগে। এমতাবস্থায় এসব আলেম কীভাবে হজযাত্রীদের পরামর্শ দেবেন সেটা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়নি।

৫৫ জনের তালিকায় থাকা আলেমদের অধিকাংশই বিভিন্ন বড় বড় কওমি ও আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল। তালিকায় চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ৮ জন ও গোপালগঞ্জ জেলা থেকে ১১ জন স্থান পেয়েছেন। তালিকায় কওমি মাদরাসার সরকারি স্বীকৃতি প্রাপ্ত সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার একাধিক সদস্য রয়েছেন। তালিকায় থাকা আলেমরা হলেন-

মাওলানা আশরাফ আলী (কো-চেয়ারম্যান হাইয়াতুল উলইয়া), মাওলানা আবদুল হালিম বোখারি (প্রিন্সিপাল, পটিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম), মুফতি রুহুল আমীন (প্রিন্সিপাল, গওহরডাঙ্গা মাদরাসা, গোপালগঞ্জ), মাওলানা জাফর আহমদ (প্রিন্সিপাল, ঢালকানগর মাদরাসা, ঢাকা), মাওলানা ইয়াকুব আলী খন্দকার (সুপারিনটেন্ডেন্ট, চমকপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা, কিশোরগঞ্জ), মাওলানা শাহ মোহাম্মদ তৈয়ব, মুহতামিম জিরি মাদরাসা, চট্টগ্রাম), মাওলানা আনাস মাদানী (আল্লামা শফির ছেলে ও হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক), মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস (মহাসচিব, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া, ঢাকা), মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ (ইমাম, শোলাকিয়া ঈদগাহ, কিশোরগঞ্জ), মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী (প্রিন্সিপাল, জামিয়া ওবায়দিয়া নানুপুর, চট্টগ্রাম), মাওলানা মুসাদ্দিক বিল্লাহ আল মাদানী (চরমোনাই পীরের ভাই ও প্রিন্সিপাল, চরমোনাই আলীয়া মাদরাসা, বরিশাল), মাওলানা সৈয়দ মো. শরাফত আলী (প্রিন্সিপাল, শর্ষিনা আলিয়া মাদরাসা, পিরোজপুর), মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন (প্রিন্সিপাল, আকবর কমপ্লেক্স মিরপুর, ঢাকা), মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ (মুহতামিম, শায়েখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা)।

আরও পড়ুন: হজে চিকিৎসকদের সহায়ক গানম্যান-গাড়িচালক!

তালিকায় আরও আছেন- মাওলানা ইয়াহিয়া মাহমুদ (প্রিন্সিপাল, দারুল উলুম রামপুরা বনশ্রী, ঢাকা), মুফতি মোহাম্মদ আলী (মুহতামিম, আফতাবনগর মাদরাসা, ঢাকা) মুফতি মোহাম্মদ ইয়াহিয়া (প্রধান মুফতি, লালবাগ মাদরাসা, ঢাকা), মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী (মাওলানা মাহমুদুল হাসানের মেয়ের জামাই ও মুহাদ্দিস, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী, ঢাকা), মাওলানা শামসুল হুদা খান (মুহতামিম, হিলি মাদরাসা, দিনাজপুর), মুফতি সাইফুল ইসলাম (প্রিন্সিপাল, বড় কাটারা মাদরাসা ও মেয়ের জামাই মুফতি আমিনী রহ.) মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু (প্রিন্সিপাল, গহরপুর মাদরাসা সিলেট), মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন (মাও. ফরিদ উদ্দিন মাসউদের ছেলে ও প্রিন্সিপাল, ইকরা বাংলাদেশ ঢাকা), মাওলানা মো. আবদুর রাজ্জাক (অধ্যক্ষ, মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসা, ঢাকা), মাওলানা মোহাম্মদ ওসমান গনি (মুহাদ্দিস, দারুন্নাজাত কামিল মাদরাসা, ঢাকা) মাওলানা রেজাউল করিম (শিক্ষক, পটিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম), মাওলানা আবুল কাশেম ফজলুল হক (উপাধ্যক্ষ, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা), মাওলানা মোঃ নজরুল ইসলাম আল মারুফ (প্রিন্সিপাল, জামিয়া হোসাইনিয়া কামিল মাদরাসা, মহাখালী, ঢাকা), মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ (উপাধ্যক্ষ. সরকারি আলিয়া মাদরাসা, ঢাকা), মাওলানা শোয়াইব (শিক্ষক, জিরি মাদরাসা, চট্টগ্রাম)।

মাওলানা শওকত আলী কাসেমি (মুহতামিম, বাগিবাড়ি হাফিজিয়া মাদরাসা, নরসিংদী), মুফতি মিনহাজ উদ্দিন (ইমাম, চকবাজার শাহী মসজিদ, ঢাকা), মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম আলী (মুহতামিম, বাহিরদিয়া মাদরাসা, ফরিদপুর), মুফতি শামসুদ্দোহা (প্রিন্সিপাল, জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম, মৌলভীবাজার), মাওলানা মো. মুহিব্বুল হক (প্রিন্সিপাল জামিয়া দরগা সিলেট), মাওলানা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (ইমাম ও খতিব জমিয়াতুল ফালাহ চট্টগ্রাম), মাওলানা মোস্তাক আহমেদ (প্রিন্সিপাল, দারুল উলুম মাদরাসা খুলনা), মাওলানা মোহাম্মদ নোমান (প্রিন্সিপাল, দারুল উলুম মাদরাসা, কুমিল্লা), বিশিষ্ট বক্তা মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা সৈয়দ অহিদুজ্জামান (প্রিন্সিপাল, জামিয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া, মিরপুর-পল্লবী), মাওলানা উসামা আমিন (শিক্ষক, গওহরডাঙ্গা মাদরাসা, গোপালগঞ্জ), মাওলানা ওয়াসিউর রহমান (প্রিন্সিপাল, জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া চট্টগ্রাম), মাওলানা মোঃ মাসুম বিল্লাহ (ইমাম, লোহাগড়া কেন্দ্রীয় মসজিদ, নড়াইল), হাফেজ মাওলানা মুফতি আবু সালেহ মোহাম্মদ উল্লাহ (ইমাম, মিরপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ), মাওলানা মোঃ আব্দুর রহমান (ইমাম, গোপালগঞ্জ জেলা মারকাজ মসজিদ), মুফতি হাফিজুর রহমান (ইমাম, গোপালগঞ্জ কোর্ট মসজিদ), মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাজি (ইমাম, ঘাগর বন্দর মসজিদ, গোপালগঞ্জ), মাওলানা মোঃ মাহদী হাসান (মুহতামিম, কয়খা মাদরাসা গোপালগঞ্জ), মুফতি শুয়াইব ইবরাহিম (মুহাদ্দিস, ভবানীপুর মাদরাসা গোপালগঞ্জ)।

মুফতি আব্দুল্লাহ মোকাররম (মাও. আবদুর রহমান হাফেজ্জির ছেলে ও শিক্ষক মাখজানুল উলুম মাদরাসা, ময়মনসিংহ), মাওলানা আকতার হোসেন (খতিব, গাজীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ), মাওলানা নাসির আহমাদ (মুহতামিম, লক্ষীপাশা মাদরাসা, নড়াইল), মাওলানা ইসরাফিল হোসেন (ইমাম, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ), মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস (ইমাম, ডাকবাংলো মসজিদ কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ), মাওলানা মোহাম্মদ জাকারিয়া (মুহতামিম, ছোট দক্ষিণপাড়া, হস্তপল্লী শামসুল উলুম মাদরাসা, গোপালগঞ্জ) ও মাওলানা আবুল কালাম (মুহতামিম, কাজুলিয়া মাদরাসা গোপালগঞ্জ)।

আলেম-উলামাদের এই দল ছাড়াও বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জেদ্দা, মক্কা ও মদিনায় সহায়তা করতে সরকার বেশ কয়েকটি টিম গঠন করে সৌদি আরব প্রেরণ করেছে। ওই দলগুলো হলো- হজ চিকিৎসক দল, হজ প্রশাসনিক দল, হজ কারিগরি দল ও হজ চিকিৎসক দলের সহায়ক দল।

   

দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে যে আয়াতে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, মানুষ সবসময়ই তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অভাব নিয়েই দুনিয়ায় এসেছে। দুইভাবে মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে কিংবা বিপদে পড়ছে। এক. মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিকমতো চিহ্নিত না করা। দুই. ভুল পথে চাহিদা মেটানোর প্রবণতা।

এই দুই বিপদজনক পথ সঠিকভাবে অতিক্রমের জন্যই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নবীরা মানুষকে শিক্ষা দিতেন। যেমন কোরআনের বক্তব্য যদি মানুষ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার শক্তিসামর্থ্য যেমন বাড়বে তেমনি পরিত্রাণ পাবে এবং যেকোনো বিপদ বা ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে নাজাত পাবে।

কোরআন মাজিদের সুরা হাদিদের ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো- বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

বর্ণিত আয়াতটি আমাদের কাছে জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেছে এভাবে-
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এই- প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ।

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কোরআন মাজিদ বলে যে, এ সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী।

প্রকৃতপক্ষে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘মানুষ যখন শিশু থাকে তখন সে খেলা করে, সে তার যৌবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে অতিবাহিত করে, তার যৌবনে সে পৃথিবীর সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যে মগ্ন থাকে এবং তার মধ্য বয়সে ও বার্ধক্যে সে অহংকার এবং সম্পদ ও সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়!’

তাই পৃথিবীটা একটা খেলা। এমতাবস্থায় খেয়াল রাখা, কোনোভাবেই ধোঁকায় না পড়া। আমরা যদি কোনো উচ্চ অবস্থানে পৌঁছি তাহলে অহংকারী না হওয়া, যদি পতন ঘটে কিংবা অবস্থা নীচের দিকে চলে যায়- তাহলেও নিরাশ না হওয়া।

আয়াতে বর্ণিত পাঁচটি বিশেষ শব্দ দিয়ে মানবজাতির জন্য তাদের বাস্তবতাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে এর প্রতিটিই হচ্ছে একেকটি ফাঁদ এবং মানুষ এসবে জড়িয়ে পড়ে।

;

৯ বছর পর উমরার সুযোগ পেলেন ইরানিরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৯ বছরের বিরতির পর পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের নাগরিকরা পবিত্র উমরা পালনের জন্য তেহরান থেকে পবিত্র মক্কা নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল সোমবার পবিত্র উমরা পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবারও সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। আর উভয় দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল চীন।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এ ছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ছিল প্রায়ই অনেক বেশি।

গত বছর সম্পর্ক পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ইরানিরা শুধুমাত্র হজপালন করতে সৌদি আরব যেতে পারত।

রয়টার্স বলছে, তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে ৮৫ জন উমরাযাত্রীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ বিন সৌদ আল আনজি।

;

পানি ও বৃষ্টির জন্য ইস্তেসকার নামাজ জরুরি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বৃষ্টির জন্য ইস্তেসকার নামাজ আদায় করা হয়েছে, ছবি : বার্তা২৪.কম

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বৃষ্টির জন্য ইস্তেসকার নামাজ আদায় করা হয়েছে, ছবি : বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রচণ্ড দাবদাহ ও পানি সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালার দরবারে তওবা-ইস্তেগফার, প্রার্থনা ও ইস্তেসকার নামাজ আদায় জরুরি।

প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে সারাদেশ। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে মরু-কারবালার মতো তীব্র পানি সঙ্কট। অনাবৃষ্টি ও শুষ্ক বৈরি আবহাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। হিটস্ট্রোকে ইতোমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে একডজন মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। রাজধানী ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে ৬ থেকে ৭ ফুট করে। বরেন্দ্র অঞ্চলে ১১০ ফুট থেকে ১২০ ফুট নিচে নেমে গেছে কোথাও কোথাও। ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির। খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে। পশু-পাখিরাও পড়েছে নিদারুণ কষ্টে। এমন দুর্যোগ অব্যাহত থাকলে তার ভয়াবহ পরিণতি কোথায় গিয়ে পৌঁছবে তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।

মনে রাখতে হবে, একমাত্র দয়াময় আল্লাহতায়ালাই এই মহাবিপদ থেকে পরিত্রাণ দিতে পারেন। তিনিই অনতিবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে পারেন স্বাভাবিক অবস্থা। তাই আমাদের উচিৎ তার দ্বারস্থ হওয়া। সব ধরনের পাপের কাজ পরিত্যাগ করে গোনাহের জন্য একনিষ্ঠভাবে তওবা করা। তিনি রহমতের ভাণ্ডার। তার কাছে কাতরভাবে প্রার্থনা করা রহমত কামনায়।

অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য ইসলামে রয়েছে ইস্তেসকার নামাজের ব্যবস্থা। মুমিন-মুসলমান হিসেবে দেশের সর্বত্র এ নামাজের ব্যবস্থা করে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে সকাতরে প্রার্থনা জানানোর এখনই সময়।

‘ইস্তেসকা’ অর্থ পানি প্রার্থনা করা। অনাবৃষ্টিতে মানুষ ও জীবজন্তুর কষ্ট হতে থাকলে আল্লাহর দরবারে পানি প্রার্থনা করে দোয়া করা সুন্নত। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, নবী কারিম (সা.) বৃষ্টির প্রার্থনার সময় বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি তোমার বান্দাকে এবং তোমার জীব-জানোয়ারকে পানি দান করো।

‘ইস্তেসকা’ নামাজ আদায়ের পদ্ধতি
এলাকার সব মুসলমান পুরুষ বালক ও বৃদ্ধদেরসহ গরু, ছাগল নিয়ে পায়ে হেঁটে, অবনত মস্তকে মিনতির সঙ্গে খোলা মাঠে উপস্থিত হতে হয়। এরপর উপযুক্ত ইমামের পেছনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। এ নামাজে আজান-ইকামত নেই। ইমাম উচ্চস্বরে কেরাত পড়বেন এবং সালাম ফেরানোর পর ঈদের খুৎবার ন্যায় দুইটি খুৎবা পাঠ করবেন। এরপর কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত প্রসারিত করে মুসল্লিদের নিয়ে আল্লাহর দরবারে রহমতের পানির জন্য মোনাজাত করবেন।

উল্লেখ্য, মাঠে যাবার পূর্বে দান-সদকা করা উত্তম।

;

দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার দোয়া



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার দোয়া, ছবি : সংগৃহীত

দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার দোয়া, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হাদিসের ভাষ্য মতে, মহান আল্লাহ কেয়ামতের আগে দাজ্জালকে পাঠাবেন। সে এসেই পৃথিবীতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবে। ধোঁকা ও প্রতারণায় মানুষের ঈমান ছিনিয়ে নেবে। তার ভয়াবহ ফেতনা সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হজরত আদম (আ.) থেকে কেয়ামত কায়েম হাওয়া পর্যন্ত দাজ্জালের ফেতনার চেয়ে কোনো ফেতনা বড় নয়।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) তার ফেতনার বিষয়ে সতর্ক ছিলেন। উম্মতের জন্য দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন।

দোয়াটি হলো- (উচ্চারণ) : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি, ওয়া মিন আজাবিন্নারি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কবরের শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এ দোয়া পাঠ করতেন। -সহিহ বোখারি : ১৩৭৭

দাজ্জাল এখন কোথায়?
হজরত ফাতেমা বিনতে কায়েস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে দাজ্জালের অবস্থানের কথা বর্ণিত হয়েছে। দীর্ঘ হাদিসের সারাংশ হলো, একদিন নামাজ শেষে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবি হজরত তামিম দারি (রা.)-এর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা বর্ণনা করেন। তারা নৌভ্রমণে বের হয়ে ঘটনাচক্রে একটি দ্বীপে উপনীত হয়েছিল। সেখানে দাজ্জাল ও তার গুপ্তচরের সঙ্গে কথোপকথন হয়েছিল।

হাদিসের শেষাংশে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মনে রেখো, দাজ্জাল শাম কিংবা ইয়েমেনের কোনো সাগরে নেই। সে পূর্বের কোনো এক স্থানে আছে। এ কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। -সহিহ মুসলিম : ৭১১৯

দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের স্থান
হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের বলেছেন, দাজ্জাল পূর্বাঞ্চলীয় কোনো স্থান থেকে বের হবে। স্থানটির নাম হলো খোরাসান। কিছু কওম তার অনুসরণ করবে। তাদের চেহারা হবে স্তরবিশিষ্ট ঢালের মতো। -জামে তিরমিজি : ২২৩৭

দাজ্জালের নিষিদ্ধ এলাকা
হজরত আনাস (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মক্কা-মদিনা ছাড়া পৃথিবীর সব জনপদে দাজ্জাল বিচরণ করবে। কেননা এই দুই শহরের প্রতিটি রাস্তায় ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পাহারাদারিতে নিয়োজিত থাকবে। অবশেষে দাজ্জাল মদিনার এক নিকটবর্তী স্থানে অবতরণ করবে। তখন মদিনায় তিনবার ভূকম্পন হবে। যার ফলে প্রত্যেক মুনাফেক ও কাফের মদিনা থেকে বের হয়ে তার নিকট চলে যাবে। -সহিহ মুসলিম : ৭১২৩

আল্লাহতায়ালা সবাইকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

;