জাকাত বিষয়ক কিছু ভুল, যা থেকে বেঁচে থাকা জরুরি



মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাসুম, অতিথি লেখক

  • Font increase
  • Font Decrease

জাকাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাই তা সঠিকভাবে আদায় করা জরুরি। নামাজ যেমন সঠিকভাবে আদায় করতে হয়, তেমনি জাকাতও সঠিকভাবে আদায় করতে হবে।

এখানে জাকাত আদায়ে বহুল প্রচলিত কিছু ভুলত্রুটি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো। যেন আমরা এসব ভুল থেকে সহজে বেঁচে থাকতে পারি।

১. জাকাতবর্ষ কবে পূর্ণ হয় তা যথাযথভাবে হিসাব না রাখা। শুধু প্রতি রমজানে জাকাত আদায় করা, এটা ঠিক না। কারণ, বাস্তবে যদি রমজানের আগেই আপনার জাকাতবর্ষ পূর্ণ হয়ে থাকে তাহলে রমজানের আগের দিনগুলোর জাকাত অনাদায়ী থেকে যাবে।

তাই করণীয় হলো- চিন্তা-ভাবনা করে হিসাব করে চন্দ্র বর্ষ অনুযায়ী জাকাতবর্ষ ঠিক করা।

২. যথাযথ হিসাব না করে অনুমান করে জাকাত আদায় করা। এটাও ঠিক না। নামাজ যেমন অনুমান করে পড়া যায় না। তেমনি জাকাতও অনুমান করে আদায় করা যায় না। এতে জাকাত অনাদায়ী থেকে যেতে পারে। তাই যথাযথ হিসাব করে জাকাত আদায় করা জরুরি।

৩. অনেকের ধারণা, নগদ টাকার জাকাত আদায়ে স্বর্ণের নেসাব ধর্তব্য হবে। সুতরাং সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের মূল্যে নগদ ক্যাশ না পৌঁছলে জাকাত দিতে হবে না। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। নগদ ক্যাশে রূপার নেসাব ধর্তব্য হয়। এমনকি সাড়ে সাত ভরির কম স্বর্ণের সঙ্গে যদি নগদ ক্যাশ থাকে তাহলে সেক্ষেত্রেও স্বর্ণের নেসাব ধর্তব্য নয়; বরং রূপার নেসাব ধর্তব্য হবে। তবে হ্যাঁ, কারও কাছে যদি কেবল স্বর্ণ থাকে, এর সঙ্গে জাকাতযোগ্য অন্যকোনো সম্পদ না থাকে তাহলে কেবল সেক্ষেত্রে স্বর্ণের নেসাব ধর্তব্য হবে।

৪. অনেকের ধারণা, প্রতি টাকায় এক বছর অতিক্রান্ত হতে হবে। এটিও একটি ভুল ধারণা। জাকাত আদায় আবশ্যক হওয়ার জন্য প্রতি টাকায় স্বতন্ত্র এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া জরুরি না। যেদিন জাকাতবর্ষ পূর্ণ হবে সেদিন হাতে নগদ টাকা যা থাকবে সবগুলোর আড়াই পার্সেন্ট জাকাত হিসেবে আদায় করতে হবে। এমনকি একদিন আগে যে টাকা হাতে এসেছে এরও জাকাত দিতে হবে।

৫. জাকাত হিসাবে বাজারে প্রচলিত জাকাতের শাড়ি ও লুঙ্গি আদায় করা ঠিক না। প্রথমতঃ জাকাত হিসেবে নগদ ক্যাশ আদায় করা নিয়ম। কারণ এর মাধ্যমে জাকাতগ্রহীতা তার সব ধরনের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। দ্বিতীয়তঃ এসব কাপড় থাকে খুবই নিম্নমানের। যা খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, অতএব এ থেকে বিরত থাকা উচিত।

৬. অনেকের ধারণা জাকাত আদায় করলে সম্পদ হ্রাস পায়। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। সুদ সম্পদ বৃদ্ধি করে এ ধারণা যেমন সঠিক নয়, তেমনি জাকাত সম্পদ হ্রাস করে এটাও ঠিক নয়। সম্পদের মালিক আল্লাহ। তিনি আমাদের সম্পদ দান করেন। তিনি স্বয়ং ঘোষণা দিয়েছেন, জাকাতে সম্পদ হ্রাস হয় না; বরং বৃদ্ধি পায়।

৭. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জাকাত প্রদান ঠিক না। এতে জাকাতের উপযুক্ত কাউকে মালিকানা প্রদান করে জাকাত আদায় করা হয় না। অতএব এভাবে জাকাত দিলে তা আদায় হবে না।

৮. মসজিদের দান বাক্সে বা নির্মাণ কাজে জাকাত দেওয়া যাবে না। তাতে জাকাত আদায় হবে না।

৯. মাদরাসার নির্মাণ কাজ, মাদরাসার উস্তাদদের বেতন-ভাতা বাবদ জাকাত প্রদান করা যাবে না।

১০. রমজানের হাফেজদের তারাবির বিনিময়ে হাদিয়ার নামে জাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে না। কারণ, হাফেজ সাহেব জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত নাও হতে পারেন। আর উপযুক্ত হলেও এতে পারিশ্রমিকের গন্ধ আছে। তাই তারাবির নামাজ পড়ানোর উপলক্ষ্যে তাকে জাকাত দেওয়া যাবে না। অবশ্য জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে রমজানের আগে পরে দেওয়া যাবে।

১১. অনেক নারী তাদের ব্যবহৃত স্বর্ণ-রূপার অলংকারের জাকাত আদায় করেন না। এটা মোটেও ঠিক না। এ ব্যাপারে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যেসব নারী স্বর্ণ-রূপার অলংকারের জাকাত প্রদান করে না; তাদেরকে কেয়ামতের দিন আগুনের অলংকার পরিধান করানো হবে। অতএব এ ব্যাপারে নারীদের পাশাপাশি পিতা ও স্বামীদের সচেতন হওয়া আবশ্যক।

১২. কাজের বুয়াকে জাকাত দেওয়া ভুল। অনেকে ঈদের সময় জাকাতের টাকা থেকে তাদের বেতন বাড়িয়ে দেয়। তারা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলেও তা বৈধ নয়। কারণ পারিশ্রমিক বাবদ জাকাত আদায় করা যায় না। হ্যাঁ, তাদেরকে জাকাত দিতে হলে বেতন-বোনাস বাদ দিয়ে স্বতন্ত্রভাবে দিতে হবে (যদি তারা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হয়)।

১৩. ঋণ হিসেবে সুদের অংশও বিয়োগ করা একটি ভুল। ঋণ বা দেনা হিসাবে সুদ থাকলে সেটা বিয়োগ দেওয়া যাবে না। যেমন, কেউ কারও কাছ থেকে এক লাখ টাকা সুদে করজ নিয়েছে। তাকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। তাহলে সে জাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে কেবল এক লাখ টাকা বিয়োগ দিতে পারবে। বিশ হাজার নয়।

১৪. সুদি উপার্জন বা উপার্জনের পুরোটাই সুদি। যদিও সুদের অর্থে জাকাত নেই। এর পুরোটাই সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দানযোগ্য। তদুপরি পুরোটা দান সম্ভব না হলে জাকাত আদায় করে যাওয়া উচিত। এতে কিছু হলেও দান হবে।

১৫. জাকাত আদায়ে নিজ আত্মীয়দের মাঝে যারা উপযুক্ত তাদেরকে খুঁজে খুঁজে বের করে জাকাত দেওয়া উচিত। অনেকেই এ ব্যাপারে অবহেলা করেন, এ বিষয়ে সতর্কতা কাম্য।

১৬. অনেকে লোক দেখানোর জন্য গরীবদের লাইনে দাঁড় করিয়ে জাকাতের শাড়ি-লুঙ্গি প্রদান করেন। এটি মোটেও ঠিক না। জাকাত একটি ইবাদত, আর সব ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য করতে হয়। অন্য কারও জন্য নয়, নাম কামানোর উদ্দেশ্যে কৃত ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন না।

১৭. যে কোনোভাবে খরচ করা জাকাত আদায়ের জন্য যথেষ্ট নয়। অনেক বিত্তশালী মনে করেন, আমরা তো বিভিন্ন উপলক্ষ্যে খরচ করে থাকি। অসহায়দের মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকি। অফিসের কোনো কর্মচারী অসুস্থ হলে চিকিৎসা খরচ বহন করি। এভাবে পুরো বছর বহু আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয়। সুতরাং আমাদের জন্য আলাদা করে জাকাত দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা ও খামখেয়ালি। মনে রাখতে হবে, জাকাত একটি ইবাদত। এটি আদায়ের জন্য স্বয়ং আল্লাহতায়ালা এর নিয়ম-নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কী ধরণের সম্পদ থেকে কী পরিমাণ জাকাত দিতে হবে এবং কোথায়, কাদেরকে দিতে হবে সবই নির্ধারিত। এসব নিয়ম-কানুন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে জাকাতের নিয়তে সম্পদ খরচ করাকে জাকাত বলে। নিজের খুশিমতো জনকল্যাণমূলক কোনো কাজে খরচ করা বা ব্যক্তিগতভাবে কাউকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া এটি একনিষ্ঠতার সঙ্গে হলে নিঃসন্দেহে তা বড় সওয়াবের কাজ। কিন্তু জাকাত আদায়ের জন্য জাকাতের মাসায়েল অনুসারে পাই-পয়সার হিসাব করে জাকাত আদায় করতে হবে।

১৮. অনেকে জাকাত আদায়ের দিন কেবল মোটা অংকের নগদ ক্যাশে হিসাব করেন। জামার পকেটে বা মানি ব্যাগে যে ভাংতি কিছু টাকা থেকে যায় তা হিসাবে নিয়ে আসা হয় না। ফলে দেখা যায়, এই খুচরা টাকাগুলোর জাকাত অনাদায়ী থেকে যাচ্ছে। অথচ জাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে নিয়ম হলো- পাই পাই হিসাব করে জাকাত আদায় করা।

১৯. জাকাতকে ট্যাক্স মনে মূর্খতা বৈ কিছুই নয়। জাকাতের সঙ্গে ট্যাক্সের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। এ দু’টির মাঝে মৌলিক পার্থক্যগুলো হলো-

-জাকাত একটি খালেস ইবাদত।
-জাকাত আদায়ের খাত সুনির্ধারিত, যা ট্যাক্সে নেই।
-জাকাতের খাত ফকির-মিসকিন। অথচ ট্যাক্সের সুবিধা ভোগ করে সম্পদশালী ব্যক্তিবর্গ।
-ট্যাক্স আসে ইনকামের ওপর (ইনকাম ট্যাক্স)। অথচ জাকাত আসে জাকাতযোগ্য সম্পদের মূলে।
-জাকাতের মাধ্যমে আখলাকের পরিশুদ্ধি ও সম্পদের পবিত্রতা অর্জন করা উদ্দেশ্য হয়। এর সঙ্গে ট্যাক্সের কোনো মিল নেই।

মোটকথা, জাকাত ও প্রচলিত ট্যাক্স মোটেও এক নয়। এ দু’টির মাঝে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে।

এছাড়া জাকাত আদায়ে আরও অনেক ভুলত্রুটি হয়ে থাকে। আমাদের উচিত প্রথম কয়েক বছর বিজ্ঞ কোনো আলেমের সঙ্গে বিস্তারিত পরামর্শ করে জাকাত আদায় করা। তাহলে এসব ভুলত্রুটি থেকে বেঁচে থাকা যাবে- ইনশাআল্লাহ।

   

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;

গরমে মুমিনের আমল



মুফতি উমর ফারুক আশিকী
গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব! আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে। আল্লাহতায়ালা তখন তাকে দুইটি নিশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিশ্বাস শীতকালে আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো।’ -সহিহ বোখারি : ৩২৬০

মুমিন বান্দারা দয়াময় আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী হয়ে গ্রীষ্মের এই গরম সময়ে অফুরন্ত সওয়াব লাভের জন্য বেশ কিছু আমল করতে পারেন। আশা করা যায়, মহান আল্লাহর দয়ায় পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে- ইনশাআল্লাহ।

তওবা করা : মানুষের পাপের কারণে মানুষের ওপর নানা ধরনের বিপদাপদ আসে, তাই প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে আনতে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করার কোনো বিকল্প নেই।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘আর বলেছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

ইবাদতে গাফিলতি না করা : গরমের কারণে ইবাদত-বন্দেগিতে গাফিলতি না করা। কারণ জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার গরমের চেয়ে বহুগুণে উত্তপ্ত। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘পেছনে থাকা লোকগুলো আল্লাহর রাসুলের বিপক্ষে বসে থাকতে পেরে খুশি হলো। আর তারা অপছন্দ করল তাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করতে এবং তারা বলল, ‘তোমরা গরমের মধ্যে বের হয়ো না।’ বলো, জাহান্নামের আগুন অধিকতর গরম, যদি তারা বুঝত।’ -সুরা তওবা : ৮১

পিপাসার্তকে পানি পান করানো : হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাদ ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, (এক দিন) আমি (নবীজিকে) বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন সদকা উত্তম? তিনি বলেন, পানি পান করানো। -সুনানে নাসায়ি : ৩৬৬৫

চলমান গরমের সময় শহরেরে বিভিন্ন স্থানে পথচারীদের জন্য ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা রাখা হয় বিভিন্ন অফিস, দাতব্য সংগঠন কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে। এটা অত্যন্ত ভালো কাজ, সওয়াবের কাজ।

কেউ পানি চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে নিষেধ করেছেন নবী কারিম (সা.)। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে, যা কেউ চাইলে না দিয়ে তাকে বিদায় দেওয়াটা ঠিক নয়?

তিনি বলেন, পানি, লবণ ও আগুন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি, কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেওয়া যাবে না? তিনি বলেন, হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করল, সে যেন ওই আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করল।
যে ব্যক্তি লবণ দান করল, ওই লবণে খাদ্য যতটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করল। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করল এবং যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করল। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৪৭৪

অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো : তীব্র গরমে অনেক সময় মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়োবৃদ্ধরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য বাইরে যেতে পারেন না, তখন তাদের সাহায্য করার মাধ্যমে সদকার সওয়াব মেলে।

হজরত আবু জার (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টিসম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথ থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। -জামে তিরমিজি : ১৯৫৬

পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া : গরমে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও কষ্টে পড়ে। তাই মানুষের উচিত তাদের পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়; সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল, কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, পানির পিপাসা কুকুরটাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে ওড়নার সঙ্গে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো), এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হলো। -সহিহ বোখারি : ৩৩২১

গরমের কারণে দুনিয়ার এই হাহাকার পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে, মহান রবের সন্তুষ্টি পেতে বর্ণিত আমলগুলো বেশি বেশি করা জরুরি।

 

;

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;