ছাত্রলীগের ৫ কর্মীর বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মারধরের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কর্মচারীর জামাতাকে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মীর বিরুদ্ধে। ছিনতাইকালে তিন ছাত্রলীগকর্মী কর্মচারীদের কাছে হাতে নাতে ধরা পড়লেও পালিয়ে যান অপর দুই ছাত্রলীগকর্মী।
শনিবার (৩০ মার্চ) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে ছিনতাই ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
আটককৃত তিন ছাত্রলীগ কর্মী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৪ তম ব্যাচের সঞ্জয় ঘোষ, ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের রায়হান পাটোয়ারী ও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল রাজী। এছাড়া পালিয়ে যাওয়া দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শাহ মুসতাক সৈকত ও দর্শন বিভাগ ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোর্কারম শিবলু।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সঞ্জয় ঘোষ, রায়হান পাটোয়ারী ও আল রাজী জাবি ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানার অনুসারী। এছাড়া মোর্কারম শিবলু বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের ফুফাতো ভাই ও ছাত্রলীগ কর্মী। এছাড়া সৈকতও তার অনুসারী।
ভূক্তভোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার ভোরে বিশমাইল এলাকায় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী আলমগীর হোসেনের জামাতা মনির সরদার। এমন সময় আটককৃতরাসহ মোট পাঁচ জন মনিরকে ধরে সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ সহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন।
এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার জন্য দৌড় দেন মনির। এরপর তারা ধাওয়া দিয়ে তাকে আটক করে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে নিয়ে যান। সেখানে তারা তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা করেন এবং বেধড়ক মারধর করেন। পরে তারা মনিরের স্ত্রীর কাছে মুঠোফোনে এক লাখ টাকা দাবি করেন।
এ বিষয়ে মারধর ও ছিনতাইয়ের শিকার মনির বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বিশমাইলে রাস্তার ঢাল বেয়ে নামার সময় আমার পথের সামনে এসে দাঁড়ান ওরা। পরে আমাকে ধরে ইজিবাইকে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে নিয়ে যায়। এ সময় আমার স্ত্রীকে ফোন করে টাকা দাবি করে ও মাদক ব্যবসায়ী প্রমাণ করার চেষ্টা করে।
অভিযুক্ত সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘আমি জুনিয়রদের ফোন পেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে যাই। আমি বিষয়টি জানতাম না। গিয়ে দেখি, ওরা তাকে মারধর করেছে। তবে ছিনতাই ও মুক্তিপন দাবি করা হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘বিষয়টা আমি শুনেছি। ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনেরও দায়িত্ব আছে। তবে আমি সঞ্জয়কে ছাড়া বাকিদের চিনি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। আগামীকাল বিকেলে জরুরি ডিসিপ্লিন বোর্ড বসবে। তারপর কালকেই সিন্ডিকেট বসবে সেখানে তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’