ফাইনালে সাকিবের খেলার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি!
সাকিব আল হাসানের ইনজুরি সম্পর্কে বিসিবির আপডেট এমন, সাকিব বৃহস্পতিবার বিশ্রামে কাটিয়েছেন। ডাবলিনের সময় বিকেল বেলা বাংলাদেশ দলের ফিজিও থিলান চন্দ্রমোহন তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন।
বিকালে চন্দ্রমোহন সেই পরীক্ষা শেষে একটা রিপোর্ট দিলেন। তার সেই রিপোর্টের পুরোটাই এমন, ‘বুধবার আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ব্যাটিংয়ের সময় সাকিব বাম পিঠে পেশির খিঁচুনির চোটে পড়েছেন। তার ইনজুরি নিয়ে পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া চলছে। শুক্রবারের ফাইনাল ম্যাচে সাকিব খেলতে পারবেন কিনা তা সেটা ম্যাচ শুরুর সকালে জানা যাবে।’
সাকিবের ইনজুরি সম্পর্কে বিসিবির আনুষ্ঠানিক এই সিদ্ধান্তই জানান দিচ্ছে-ইনজুরির ধরনে তেমন বড় আশঙ্কার কোনো কিছু নেই। আর তাই স্ক্যান বা এক্সরে করানোর প্রয়োজন হয়নি।
লম্বা সময় ধরে ক্রিকেট খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সাইড স্ট্রেইন বা পিঠের এই চোট খুব নতুন কোন ইনজুরি নয়। বাংলাদেশ দলের পেস বোলার রুবেল হোসেনেরও এই চোটের অভিজ্ঞতা আছে। সেই চোটের কারণে রুবেল হোসেন ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে খেলেননি। তবে চলতি তিনজাতি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে রুবেল হোসেন খেলেছেন।
স্পোর্টসের ফিজিওরা বলছেন-পিঠের এমন চোট নিয়েও অনেক ক্রিকেটার খেলে থাকেন। যারা একটু মানসিকভাবে শক্তপোক্ত তারা এসব চোট নিয়েও মাঠে ঠিকই নেমে পড়েন। তবে এসব ক্ষেত্রে পুরো ব্যাপারটা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট সেই ক্রিকেটারের ওপর। তিনি যদি মনে করেন এই চোটের চাপ নিয়েও আমি খেলতে পারব তাহলে দলের ফিজিও তাকে খেলার অনুমতি দেন।
সেই সূত্রে বলা ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবারের ফাইনালে খেলার বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ এককভাবে নির্ভর করছে সাকিবের সিদ্ধান্তের ওপর। ব্যথাটা আছে সাকিবের এখনো। তবে সৌভাগ্যের বিষয়টা হলো তার এই ইনজুরি বড় কোনো সমস্যার তৈরি করছে না। স্নায়ুর কোনো তন্তু ছিড়ে যায়নি। সাকিব যদি খেলার দিন ফিট থাকেন তবে খেলতে পারবেন। ম্যাচের দিন সকাল পর্যন্ত সাকিবের জন্য দল অপেক্ষা করবে। এই সময়ের মধ্যে সাকিব যদি নিজে জানান তার কোনো সমস্যা নেই, তাহলে তাকে রেখেই একাদশ ঠিক হবে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘুমও ভাঙ্গে সাকিবের ব্যথা নিয়েই। তবে সাধারণত টানা কয়েক ঘণ্টা বিশ্রামে থাকলে এরকম ব্যথা কমে যেতে পারে। এমনও হতে পারে ম্যাচের দিন সকালেও সাকিবের ব্যথা থাকতে পারে। তবে সাকিব যদি মনে করেন সেই ব্যথা সয়ে তিনি খেলতে পারবেন তাহলে তো সমস্যার সমাধান। আর যদি মনে করেন, খেললে তার ব্যথা আরও বাড়তে পারে এবং সেটা ম্যাচের মাঝপথে তার দলের জন্য আরও বড় সমস্যার তৈরি করবে-তখন সাকিব হয়তো ফাইনাল থেকে নিজেকে সরিয়েও নিতে পারেন। এই দুটি বিষয়কে সিদ্ধান্তের পরিমাপক মানলে বলা যেতে পারে ফাইনালে সাকিবের খেলার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি!
এই বিষয়ে বার্তা২৪.কম-কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্পোর্টস ফিজিও জানিয়েছেন, ‘এমনসব ইনজুরি নিয়ে খেলা ক্রিকেটাররা অনেক সময় ব্যথা থেকে সাময়িক মুক্তি পাওয়ার জন্য ব্যথানাশক ইনজেকশন নেন। তবে সাকিব যদি এই ম্যাচে ইনজেকশন নিয়ে খেলেন তাহলে সেটা পরবর্তীতে তার জন্য আরও বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সামনে বিশ্বকাপ। সেই টুর্নামেন্টে পুরোদুস্তর ফিট সাকিবকে পাওয়াটা বেশি জরুরি। তাই সাকিব যদি এই ম্যাচে খেলেনও তবে তাকে যেন ইনজেকশন না নিতে হয়।’
-সাইড স্ট্রেইন হওয়ার কারণ কি?
এটা আসলে পেশিতে টান পড়া যাকে বলে, খিঁচুনি, তাই। রাতে ঘুমালেন ঠিকই কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন সাইড স্ট্রেইনের যন্ত্রণায় পিঠের পেশিতে ব্যথা হচ্ছে। এমনও হতে পারে শটস খেলতে গিয়ে একটু বেশি শক্তি খরচ হওয়ায় পেশিতে টান পড়ল। সাকিবও সম্ভবত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে এমন সমস্যায় পড়েন।