ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাড়িয়ে নিউজিল্যান্ড ২৩৭
একটা ব্যাটিং জুটিই বদলে দিলো নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের চেহারা! ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাড়িয়ে বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনের নিউজিল্যান্ডের ২৩৭ রানের স্কোর কি ম্যাচ জেতার মতো হলো? লাঞ্চ বিরতিতে স্কোরবোর্ডের দিকে তাকিয়ে সেই প্রশ্নটা উঠতেই পারে!
তবে যে কায়দায় তারা শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ২৩৭ রান জমা করতে পেরেছে সেটাই নিউজিল্যান্ড ইনিংসের সৌন্দর্য! ২৬.২ ওভারে ৮৫ রানে ৫ উইকেট হারানো দল ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ২৩৭ রান দেখে আপাতত স্বস্তি খুঁজতেই পারে।
শুরুর চার ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিনজনই সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হওয়ার পর নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন নিজের খেলা বদলে ফেলেন। রানের চেয়ে উইকেটে টিকে থাকাই তখন বেশি জরুরি। সেই কাজই করেন তিনি। উইলিয়ামসন সেই সময় কাটিয়ে যখন বড় রানের দিকে যাবেন-তখনই আউট! ৪১ রানে উইলিয়ামসন ফিরতে পরের দিকে ব্যাটসম্যান বলতে তখন মাত্র দুজন- জিমি নিশাম ও কলিন ডি গ্রান্ডহোম। তবে শেষের এই দুজনেই ব্যাট হাতে যা করলেন তাতেই এজবাস্টনের পেস বোলিং সহায়ক উইকেটে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো সঞ্চয় তুলে নিলো নিউজিল্যান্ড, সম্ভবত।
যে উইকেটে নিউজিল্যান্ডের মতো সুশৃঙ্খল ব্যাটিং লাইন আপের দলের রান তুলতে হাঁসফাঁস করতে হয়েছে, সেখানে আজীবন বিশৃঙ্খল হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানের ব্যাটিং খুব সহজেই ‘পার’ পাবেন কিভাবে?
আর তাই নিউজিল্যান্ডের ২৩৭ রানের মাঝারি মানের স্কোরও এই ম্যাচে প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের জন্য যে অনেক বড় কিছু!
৮৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ডকে পথ দেখান জিমি নিসাম ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। দুই অলরাউন্ডার হাফসেঞ্চুরি করেন। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজনে যোগ করেন ১৩২ রান। তাও আবার মাত্র ২১.২ ওভারে। এই জুটির রান রেট ৬.১৮! জুটিতে যোগ হওয়া রানে দুজনের অবদানও একেবারে সমানে সমান, ৬৪ করে। মুলত এই দুজনের ব্যাটিংই দলকে শুধু উদ্ধারই করলো না; নিয়ে গেলো স্বস্তিকর উচ্চতায়। জিমি নিসাম ৫ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ১১২ বলে অপরাজিত থাকেন ৯৭ রানে।
ম্যাচে নিজের প্রথম বলেই উইকেট পেয়ে পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির নাটকীয় পরিস্থিতির তৈরি করেন। পাওয়ার প্লে’তে ৩ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড হঠাৎ যেন পথহারা! আরেক বাঁহাতি পেসার শাহীন আফ্রিদি তার নিখুঁত নিশানা ও দুর্দান্ত গতিতে নিউজিল্যান্ডের শুরুর ব্যাটিং এলোমেলো করে দেন। টানা সাত ওভারের স্পেলে শাহীন আফ্রিদি তিন উইকেট তুলে নেন। এসময় তার বোলিং বিশ্লেষণ ছিলো ৭-৩-১১-৩!
পাকিস্তানের আরেকবার বিখ্যাত বাঁহাতি ওয়াসিম আকরামের বিশ্বকাপ স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছিলেন শাহীন আফ্রিদি এই ম্যাচে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউজিল্যান্ড : ২৩৭/৬ (৫০ ওভারে, মনরো ১২, উইলিয়ামসন ৪১, টেলর ৩, লাথাম ১, নিসাম ৯৭*, গ্র্যান্ডহোম ৬৪, স্যান্টার ৫, শাহীন আফ্রিদি ৩/২৮, আমির ১/৬৭, শাদাব খান ১/৪৩)।