সুদের টাকা না পাওয়ায় মরদেহ দাফনে বাধা!
পাবনার চাটমোহর উপজেলায় সুদে নেয়া ধারের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক দিনমজুরের মরদেহ দাফনে বাধা দিয়েছেন জামাত আলী নামের এক সুদ ব্যবসায়ী।
রোববার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের জগাতলা গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মৃতের মরদেহ দাফন করা হয়।
জানা গেছে, জগাতলা গ্রামের দিনমজুর শহিদুল ইসলাম (৩৫) এলাকার জামাত আলী নামের এক সুদ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। আসল টাকা পরিশোধ করতে না পারলেও ইতোমধ্যে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো সুদ পরিশোধ করেছিলেন। কিন্তু গত রোববার পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের বাইপাসে কাঠ বোঝাই ট্রাক চাপায় তিনি মারা যান।
এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে ওইদিন বিকেলে শহিদুলের ইসলামের মরদেহ নেয়া হয় তার নিজ গ্রামে। তার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর সময় বাধা দেন জামাত আলী। খবর পেয়ে মূলগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ইউপি) রাশেদুল ইসলাম বকুল গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিকে আনেন। পরে শহিদুল ইসলামের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়।
এদিকে, ওইদিন এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় শহিদুল ইসলামসহ একই এলাকার তিনজনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত শহীদুল ইসলামের চাচাতো ভাই আব্দুর রহমান বলেন,‘নিহত শহীদুল ইসলাম তার মৃত্যুর আগে জামাত আলীর কাছ থেকে সুদে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। শহীদুল হতদরিদ্র হওয়ায় আসল টাকা পরিশোধ করতে না পারলেও প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা টাকা সুদ পরিশোধ করেছেন।’
তিনি অভিযোগ করেন বলেন,‘দীর্ঘদিন ধরেই জামাত আলী জগাতলা গ্রামে সুদের কারবার করে আসছেন। এ এলাকাসহ এর আশপাশের মানুষ তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জামাত আলী প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কথা বলতে সাহস পায়না ভুক্তভোগীরা।’
মূলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘দাফনে বাধা দেয়ার খবর পেয়েই ছুটে এসেছি। বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। ঘটনাস্থলেই সুদ ব্যবসায়ী জামাত আলীকে কঠিনভাবে সতর্ক করা হয়েছে। গ্রামবাসীকে সুদ ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’