পাবনায় নতুন অতিথি ‘পাতি সরালি’



আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, পাবনা, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শীতের সকালে দ্রুতগতির পথচারিদের কানে এসেছে কিচিরমিচির শব্দ। উত্তরের তীব্র হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করেই এক ঝাঁক পাখি ডানা মেলে এসেছে এ শহরে। যান্ত্রিক কোলাহল আর ইট পাথরের শহরে তখনো শুরু হয়নি জনমানুষের কর্মব্যস্ততা। এ শহরেই এখন এরা নতুন অতিথি।

‘পাতি সরালি’ ভিন্ন জায়গা থেকে উড়ে এসে জায়গা করে নিয়েছে পাবনা শহরের নয়নামতি এলাকার পাশ দিয়ে অবস্থিত কচুরিপানা পূর্ণ এক জলাশয়ে। পথচারিরা যাবার সময়ে হঠাৎ পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে। ওড়াওড়ি, ছুটোছুটি, খুনসুটি আর মনের সুখে সাঁতার খেলায় ব্যস্ত থাকে এক ঝাঁক পাতি সরালি পাখি।

স্থানীয়রা জানায়, পাবনা শহরের নতুন অতিথি এখন তারা। অন্য এলাকা থেকে উড়ে আসা এই পাখির নাম পাতি সরালি। অতিথি আগমনের এই মনোরম দৃশ্যের দেখা মিলছে পাবনা পৌর শহরের ১২ নং ওয়ার্ডের নয়নামতিতে।

তারা আরও জানায়, যান্ত্রিক শহরে এখন এই নতুন অতিথিদের কোলাহলেই ঘুম ভাঙছে তাদের। তাদের মতে, গেল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) পাখিগুলো এই শহরে অবস্থান করেছে। তবে পাতি সরালিরা ঠিক কবে নাগাদ এ শহরে এসেছে এটা তাদের কাছে স্পষ্ট নয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/11/1547216465148.jpg

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতকালে বাংলাদেশে যে সকল পাখি দেখা যায় তার মধ্যে এই পাতি সরালি অন্যতম। এটি ছোট সরালি বা গেছো হাঁস নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম Lesser Whistling Duck বৈজ্ঞানিক নাম Dendrocygna javanica। এটি মূলত দেশি বা আবাসিক পাখি। তবে শীতকালে লোকালয়ে দলবদ্ধভাবে এদের দেখা মেলে। এজন্য অনেকেই একে পরিযায়ী পাখি ভেবে ভুল করে। দেশি পাখি হলেও শীতকালে ভারত, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে উড়ে এসে এদেশে আবাস গড়ে তোলে এই পাখি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বড় বড় দালান। মাঝে ছোট্ট একটা জলাশয়। কচুরিপানাপূর্ণ এই জলাশয়েই নির্ভয়ে ঘুরছে এক ঝাঁক পাখি। কেউ সাঁতার কাটছে, কেউ অন্যের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতেছে। একটু পর পর কিছু পাখি উড়ে জায়গা পরিবর্তন করছে। সামান্য শব্দ হলেই উড়ে যাচ্ছে দল বেঁধে। ওদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত পুরো এলাকা। বাড়ির ছাদ বা বারান্দা থেকেই এলাকাবাসীরা উপভোগ করছে সেই মনোরম দৃশ্য।

পাখি দেখতে গিয়ে কথা হয় এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আব্দুলাহ শাফির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় অতিথি পাখির সমাগম ঘটলেও পাবনা শহরে এবারই প্রথম এদের বিচরণ দেখলাম। শহরের যান্ত্রিক শব্দের বদলে এখন সকালে ঘুম ভাঙে ওদের কোলাহলে। ওরা যেন নিরাপদে এখানে থাকতে পারে তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। পাখি শিকারি বা বাইরের কারো দ্বারা ওদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে সচেতনতা তৈরি হয়েছে।

পাবনা বন্য প্রাণি সংরক্ষণ আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক ও আলোকচিত্রী এহসান আলী বিশ্বাস জানান, এই পাখি দেশি প্রজাতির হলেও পাবনার জন্য তারা অতিথি ও দেশীয় সম্পদ। পাখি শিকারের বিরুদ্ধে সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রচারণা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে এই সম্পদ রক্ষা করতে হবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/11/1547216491659.jpg

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘শীতের এই সময়ে পাবনার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে অতিথিসহ দেশি পাখির বিচরণ ঘটে। তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা রাজশাহী বন্যপ্রাণি বিভাগ ও পুলিশের সহায়তায় মাঝে মাঝেই শিকার বিরোধী অভিযান পরিচালনা করি। তবে লোকবলের অভাবে এটা সব সময় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।’

পাখি পর্যবেক্ষক ও কুষ্টিয়া বার্ড ক্লাবের সভাপতি এস আই সোহেল জানান, পাতি সরালি নিশাচর স্বভাবের আবাসিক পাখি। দিনে জলমগ্ন ধানক্ষেত ও বড় জলাশয়ের আশপাশে দলবদ্ধভাবে জলকেলি আর খুনসুটিতে ব্যস্ত থাকলেও রাতে খাবারের সন্ধানে চরে বেড়ায়। এদের প্রধান খাবার পানিতে থাকা গুল্ম জলজ উদ্ভিদ, শস্যদানা, ছোট মাছ, ব্যাঙ, শামুক, কেঁচো ইত্যাদি।

তিনি জানান, পাখিটির মাথা, গলা ও বুক বাদামি, কালো পা এবং ঠোঁট ধূসর-কালচে রঙের। পিঠে হালকা বাদামির ওপর নকশা আঁকা ও লেজের তলা সাদা। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি দেখতে একই রকম। প্রজনন মৌসুমসহ অন্য সময় এরা জুটি বেঁধে পৃথকভাবে দুর্গম বিল-হাওরে বসবাস করে। তাই শীত ব্যতীত এদের একত্রে বেশি দেখা যায় না। পাতি সরালির ওজন প্রায় ৫০০ গ্রাম, দৈর্ঘ্য ৪৫ সেন্টিমিটার। সাধারণত এদের ডানা ১৮.৭ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৪ সেন্টিমিটার এবং লেজ ৫.৪ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।

   

জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিচ্ছেন ৮০ বলী, লোকারণ্য লালদীঘি মাঠ 



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈশাখের কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করে শুরু হলো ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল চারটা ২৫ মিনিটে বলীখেলার ১১৫ তম আসর শুরু হলেও দুপুর থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে লালদীঘি মাঠ।

এবারের বলীখেলায় অংশ নিতে অন্তত ১০০ জন বলী আসেন। তাদের মধ্যে ৮০ জনকে নিবন্ধন করে আয়োজক কমিটি। প্রথম রাউন্ড শেষে চ্যালেঞ্জ রাউন্ড হয়। এরপরই হবে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।

যুবসমাজকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। সময়ের ব্যবধানে লালদীঘির মাঠে বসা ‘জব্বারের বলীখেলা’ হয়ে উঠেছে এই জনপদের অন্যতম আকর্ষণ। শুধু কি তাই? বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলাটিও বসে এখানে। ১৯০৯ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একবছর বাদ দিলে প্রতিবছর এই মেলা হয়ে আসলেও করোনার থাবা এই আনন্দ-উৎসব থামিয়ে দিয়েছিল ২০২০ সালে। পরের বছরেও এই মেলা হয়নি একই কারণে। ২০২২ সালেও ঐতিহাসিক এই আয়োজনের ভবিষ্যৎ ঝুলেছিল সুতার ওপর। শেষ পর্যন্ত সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সড়কের মাঝখানে অস্থায়ীভাবে রিং তৈরি করে আয়োজন করা হয় বলীখেলায়। গত বছর থেকে বলীখেলা ফিরেছে নিজের পুরনো ঠিকানা-লালদিঘী ময়দানে। এবারও সেখানেই হচ্ছে শতবর্ষী এই আসর।

বলীখেলাকে কেন্দ্র করে মাঠের আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে বৈশাখী মেলা।

;

বন ডাকাতদের জন্যই পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়: জিএম কাদের



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার কুমারখালী বাঁধবাজার থেকে মাদুলিয়া পর্যন্ত সড়কের ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্তে উষ্মা প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাতিল ও বিগত দিনে একই সড়কের গাছ কাটার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে বলেছেন, গণমাধ্যমে প্রকাশ ২০২৩ সালে ঐ সড়কের ১০ হাজার গাছ কেটেছে বনবিভাগ। সম্প্রতি একই সড়কে আরো ৩ হাজার গাছ কেটেছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় জনসাধারন ও পরিবেশবীদদের মতামত উপেক্ষা করে ঐ সড়কে আরো প্রায় ৩ হাজার গাছ কাটার জন্য নম্বরিং করেছে বনবিভাগ। এর চেয়ে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত আর হতে পারে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশে ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকার কথা। কিন্তু আমাদের আছে ৯ শতংশের কম। এভাবে বনাঞ্চাল নিধন করার কারণেই দেশ আজ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন যে আজ অতিষ্ঠ, যথেষ্ট গাছপালা থাকলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যেত।

বিবৃতিতে বলেন, অন্যদিকে রাজধানীতে সড়ক ও ভবন তৈরীর জন্য ইতোমধ্যেই দেদারছে কেটে ফেলা হয়েছে হাজার গাছ। অপরিকল্পিত ও আত্মঘাতি এমন সিদ্ধান্তে রাজধানী বসবাসের অনুপযোগি হয়ে আছে। পরিবেশবীদদের মতে রাজধানীতে ২০ শতাংশ বনাঞ্চল থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ২ শতাংশ। প্রয়োজন হলে গাছ না কেটেও সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্ত করা সম্ভব। তাই কারনে-অকারনে বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে।

আগে বন থেকে গাছ চুরি হতো, এখন বনে ডাকাতি শুরু হয়েছে। বন ডাকাতদের জন্যই পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়। বনখেকো ও বনদস্যুদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের মুখোমুখি করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

;

ভার পেয়ে মওকা খুঁজলেন মাউশির ডিজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উকিল নোটিশ



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ভার পেয়ে মওকা খুঁজলেন মাউশির ডিজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উকিল নোটিশ

ভার পেয়ে মওকা খুঁজলেন মাউশির ডিজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উকিল নোটিশ

  • Font increase
  • Font Decrease

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)র মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে ভারপ্রাপ্ত হয়েছিলেন অধিদপ্তরের কলেজ প্রশাসনে পরিচালক প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী। এ সময়ে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করে উচ্চতর পদটি পাওয়ার চেষ্টাই করার কথা ছিলো তার। কিন্তু সেটা না করে মওকা বুঝে অর্থ আত্মসাৎ করে নিয়েছেন এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে উকিল নোটিশ। বলা হচ্ছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির বড় অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই অধ্যাপক।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির বর্তমান সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর শাহেদুল খবির ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে গত দুই বছর ধরে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ছয় বছরে দুই পদে দায়িত্ব পালনের সময়ে সমিতির সাধারণ তহবিল ও বিশেষ তহবিল খাতের অর্থ জনতা ব্যাংকের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে তুলে বিভিন্ন কাজে ব্যয় করেন। যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এছাড়া সারাদেশের বিভিন্ন কলেজ থেকে চাঁদা আদায়সহ সমিতির নানাখাতের আয় ও ব্যয়ের হিসাব নিয়ে সদস্যদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ফলে অনেকটা চাপের মুখে শাহেদুল খবিরের নিজের লোক হিসেবে পরিচিত প্রফেসর আ ন ম শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে অডিট কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি সমিতির ব্যাংক হিসাব ও আয়-ব্যয়ের অডিট করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকার গড়মিল খুঁজে পায়।

আর সেই অডিটের সূত্র ধরে শাহেদুল খবিরকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সমিতির সাধারণ সদস্য খাগড়াছড়ি জেলার রামগর সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক।

এই শিক্ষকের পক্ষে আইনি নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. শাহীন আলী।

এই নোটিশে শাহেদুল খবিরের পাশাপাশি তার সঙ্গে আর্থিক অনিয়মে জড়িত জড়িত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর খান রফিকুল ইসলাম, সমিতির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বর্তমানে ওএসডি হয়ে চট্টগ্রাম জেলার স্বন্দীপের হাজী আব্দুল বাতেন কলেজে সংযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক মো. শওকত হোসেন মোল্ল্যা, সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমানে ওএসডি হয়ে একই কলেজে সংযুক্ত ব্যাবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল আহমেদকে একই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সমিতির একাধিক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রফেসর নাসরিন বেগম ও আইকে সেমিলউল্লাহ খন্দকার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দায়িত্বে ছিলেন। তাদের মেয়াদে এক কোটি ৯ লাখ টাকা পরবর্তী কমিটি অর্থাৎ ২০১৬ সালে নির্বাচিত সভাপতি আই কে সেলেমউল্লাহ খন্দকার ও মহাসচিব প্রফেসর শাহেদুল খবিরের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে যান। ২০১৬ সালের সমিতির ১২৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। একটি আই কে সেলেমউল্লাহ খন্দকারের প্যানেল, অন্যটি শাহেদুল খবিরের প্যানেল। এই নির্বাচনে সেলেমউল্লাহ খন্দকার সভাপতি নির্বাচিত হন। তার প্যানেলের আর কেউ নির্বাচিত হতে পারেন নি। বাকি ১২২ পদে শাহেদুল খবিরের প্যানেল নির্বাচিত হয়। ফলে কমিটিতে সেলেমউল্লাহ খন্দকার একা হয়ে যান। এই সুযোগে মহাসচিব হিসেবে শাহেদুল খবির ও তার প্যানেলের কোষাধক্ষ্য মুন্সিগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও নায়েমের সাবেক উপ-পরিচালক খান রফিকুল ইসলাম মিলে সভাপতিকে পাশকাটিয়ে সমিতির সকল ব্যাংক একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এই সুযোগে ২০১৬ থেকে ২০১২২ সাল পর্যন্ত দুজনের স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। সারাদেশের কলেজগুলো থেকে গত ৬ বছর ধরে তারা চাঁদা তুলেছেন। এই সময়ে কোন কলেজ কতটাকা চাঁদা দিয়েছে। এই টাকা কি ভাবে খরচ করা হয়েছে। পূর্বের হিসাবের সঙ্গে বর্তমান হিসাবের কোনো ধারাবাহিকতা তারা রক্ষা করেন নি।

এর ফলে সমিতির সাধারণ সদস্যদের মাঝে কমিটির নানা খাতের ব্যয় ও আয়ের বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে সমিতির ক্ষমতাশীন নেতাদের এমন অন্যায়ের প্রতিবাদ জানালে চলতি বছরের মার্চ মাসের ৭ তারিখ দুটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি ২৪ দিন পর গত ৩১ মার্চ অডিট প্রতিবেদন জমা দেয়। দুটি কমিটির প্রধান ছিলেন দুজন অধ্যাপক। তারা এই হিসাব ও ব্যাংক বিবারণ দেখে নিজেরাই বিব্রত। ফলে অনেকটা অনিচ্ছা সত্যেও সভাপতির নিজেদের লোকদের করা অডিটেও ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার গরমিল উল্লেখ করা হয়।

সমিতির সদস্যদের আরও অভিযোগ, সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে নিজেদের ক্ষমতাধর ভেবে কমিটির সভাপতি ও তার নেতৃত্বাধীন নেতারা কোনো নিয়ম মানছেন না। এছাড়া বর্তমান কমিটির ভোটেও নয়-ছয়ের অভিযোগও করছেন অনেকে।

অডিটে অংশ নেওয়া একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অডিট কমিটির কাছে উপস্থাপন করা বেশিরভাগ ভাউচারে কাটাকাটি করা হয়েছে। ব্যয়ের খাত উল্লেখ নেই। এমন কি লাখ লাখ টাকা খরচ করা হলেও তার খাত বা ভাউচার দেখাতে পারেন নি। ফলে বিসিএস ক্যাডারের পেশাজীবি একটি সংগঠনের সদস্যদের কোটি কোটি টাকার ব্যয়ের হিসাব রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের বড় ধরনের অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। এতে অডিট কমিটির প্রধানসহ সবাই হতবাক হয়েছেন।

এ দিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসে বিসিএস ক্যাডার–বৈষম্য, পদোন্নতিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানসহ বিভিন্ন দাবিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারাদের প্রায় ১৫ দিন কর্মবিরতি পালন করেন। এই কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশে শিক্ষকদের ১৫ দিন কর্মবিরতির নেপথ্যে ছিলেন শাহেদুল খবির। তিনি পদোন্নতি এনে দেওয়ার নামে অনেকটা চাপ প্রয়োগ করে বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের শেষ সময়ে নির্বাচনের আগে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। যদিও পরবর্তীতে তার পদ নিয়ে টানাটানি শুরু হলে তিনি আন্দোলন থেকে সরে আসেন এবং শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে বলেন। সেই সময়ে আন্দোলনের বিষয়ে শাহেদুল খবির গণমাধ্যমে নানা বক্তব্য দিয়েছিলেন। বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে খুঁজে যার সত্যতা পাওয়া যায়।

এছাড়া শাহেদুল খবিরের অন্যতম সহযোগী শওকত হোসেন মোল্যার সন্দ্বীপ হাজী আব্দুল বাতেন কলেজে বদলি হলেও তিনি বিগত তিন বছর কলেজে যান না। কলেজে না যেয়েও কলেজ অধ্যক্ষের সহযোগিতায় বেতন তুলছেন। তিনি শাহেদুল খবির চৌধুরীর নিজের লোক হওয়ায় কর্মস্থলে দীর্ঘদিন না গেলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এই শাহেদুল খবির চৌধুরীর যোগসাজশে নোয়াখালী সরকারি কলেজের যাবতীয় অনিয়ম দুর্নীতি শিক্ষক হয়রানি হচ্ছে। শিক্ষা সচিব নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার ও উপাধ্যক্ষ লোকমান ভূঞাঁ এর বিরুদ্ধে পৃথক তদন্তের আদেশ দিলেও তদন্ত আটকে রেখেছেন শাহেদুল খবির চৌধুরী। সারাদেশে শিক্ষায় দুর্নীতিবাজদের গুরু শাহেদুল খবির চৌধুরী। কেউ অনিয়ম করে ধরা পড়লেও তার কারণে কোন তদন্ত হয় না। তদন্ত হলেও সেই প্রতিবেদনের কাগজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় না। এমন কি কুমিল্লা বোর্ডের চিঠি জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার তদন্তও আটকে আছে অদৃশ্যের বাধায়।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদফতরে চাকরি করে একই অধিদফতরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির একজন সাধারণ সদস্য। সে হিসেবে এই সমিতির আর্থিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব জানার অধিকার আমার আছে। কারো ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নয় সমিতির সকল সদস্যদের মতো আমিও সমিতির আর্থিক হিসাব চাইতে পারি। সে জন্যই সম্প্রতি অডিটে উঠে আসা আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে জড়িতদের আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি। সমিতির কোটি কোটি টাকা ক্ষমতার জোরে তারা আত্মসাৎ করেছেন। এমন কি জোর করে কোষাধ্যক্ষের কাছ থেকে চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার কথাও আমরা ফেসবুকে দেখতে পাই। ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার যৌক্তিকতা কোথায় আছে? একজন ক্যাডার সার্ভিসের কর্তকর্তা হিসেবে তারা এই কাজ করতে পারেন না। যদি আমার নোটিশের উপযুক্ত জবাব তারা দিতে না পারেন, বৈধ কাগজ না দেখাতে পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে।

অধিদফতেরর মহাপরিচালককে আইনি নোটিশ পাঠানোর কারণে হয়রানির আশঙ্কা করছেন কি না জানতে চাইলে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, আমি ২০১৮ সাল থেকে হয়রানির শিকার। মাউশির ১০ স্কুল প্রকল্পের দূর্নীতি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সেই সময়ে আমি অভিযোগ দিয়েছিলাম। সেই অভিযোগে ৯ জনের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি জানতেল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। অথচ আমাকে ওএসডি করে রাখা হয় দুই বছর। সেখান থেকে নোয়াখালী সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। সেখানেও পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল, ফলাফল টেম্পারিং করে টাকা নেওয়া, শিক্ষার্থী ভর্তিতে ব্যাপক দূর্নীতি নিয়ে দুদক ও শিক্ষা সচিবের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। সেখানেও দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং আমাকে খাগড়াছড়ি বদলি করা হয়। আমি এতেও ভীত নই। আমি জানি হয়রানির শিকার হবো। তবে আমি যতদিন বেঁচে আছি দূর্নীতির সঙ্গে আপষ করবো না। শুধু তাই নয় আমার এসিআরে বিরূপ মন্তব্য করে আমার পদোন্নতি আটকে দেওয়া হয়েছে। আমার জুনিয়রদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাই আমি থেমে যাবো না। তাদের বিচার না হলেও বরং মানুষ জানুক তারা কিভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দিচ্ছে।

এ দিকে যার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ সেই শাহেদুল খবিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। টানা দুই দিন তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি উত্তর দেন নি।

;

মাগুরাতে বৃষ্টি প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ আদায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মাগুরা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহ ও খরা থেকে মুক্তি পেতে রোদের মধ্যে মাগুরায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলার শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া সিদ্দিকিয়া আহম্মদীয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ময়দানে এ নামাজ আদায় করেন প্রায় দুই শতাধিক মুসল্লি।

এতে ইমামতি করেন খামারপাড়া বাজার জামে মসজিদের ইমাম কাজী আবুল হাসান। নামাজ শেষে দোয়া পরিচালনা করেন শ্রীপুর সরকারি এম সি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আব্দুল কাদের সিদ্দিকী।

নামাজ অংশ নেয়া মুসল্লিরা বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ হাহাকার করছে। মহান আল্লাহ কোনও কারণে আমাদের ওপরে নারাজ হয়েছেন। এ কারণে বৃষ্টিবর্ষণ বন্ধ রেখেছেন। আমরা আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। আজকে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বর্ষণের জন্য মুসল্লিদের সাথে নামাজ আদায় করেছি। নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি এবং গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করেছি।

;