টাকার বিনিময়ে ছেলে হত্যার তথ্য গোপন করে বাবা
মাত্র দুই লাখ টাকার বিনিময়ে আসামি আল-আমিন (৩৮) ও শামীমের (৩৫) সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছেলে হত্যার তথ্য গোপন করে নিহত রুবেলের বাবা নাজিমউদ্দিন।
বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় র্যাব মিডিয়া সেন্টারে খিলগাঁও ইদারকান্দি গ্রামের চাঞ্চল্যকর রুবেল হত্যার এই রহস্য সাংবাদিকদের জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক এমরানুল হাসান।
এমরানুল হাসান বলেন, 'ভিকটিম রুবেল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে রুবেলের বাবা দাবি করেন। ঘটনার দিনই রুবেলের বাবা বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় অপমৃত্যুর মামলা করে। মামলার প্রাথমিক অনুসন্ধানে ভিকটিম রুবেলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।'
র্যাবের-৩ এর অধিনায়ক বলেন, 'মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার পর র্যাব রুবেলের বাবাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে। রুবেলের বাবা নাজিমুদ্দিন ভয় পেয়ে সত্য ঘটনা খুলে বলেন। তিনি পরবর্তীতে জানান, তার পুত্র রুবেল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়নি। তাকে প্রকৃতপক্ষে হত্যা করা হয়েছে।'
ভিকটিম রুবেলের বাবা নাজিম উদ্দিনের বরাত দিয়ে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, 'তাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় শামীম ও আল আমিনের নির্মাণাধীন ঘরে চুরি করতে যায় রুবেল। এ সময় টের পেয়ে শামীম ও আল আমিন রুবেলের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে। তখনই মারা যায় রুবেল। ভিকটিম রুবেল মারা যাবার পর, ভয় পেয়ে রুবেলের বাবা নাজিমউদ্দিনকে ডেকে পাঠান দুই ভাই শামীম ও আল আমিন। পরে ২ লাখ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাবার নাটক সাজায় তারা। টাকার বিনিময়ে পুত্র হত্যার তথ্য গোপন করতে রাজি হয় রুবেলের বাবা।'
এমরানুল হাসান আরও জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে, র্যাব আল আমিন (৩৮) ও শামীম (৩৫) কে আটক করে। পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে, তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।
অন্যদিকে ভিকটিম রুবেল, ওই দুই ভাইয়ের ঘরে ঢোকার বিষয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রুবেল মাদকসেবী ছিল। নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য সে বিভিন্ন সময় চুরি করত। ইতিপূর্বে চুরির ঘটনায় তার গ্রামে বিচার-সালিশ হয়েছে। ঘটনার দিন রাতে রুবেল চুরি করার উদ্দেশ্যেই দুই ভাইয়ের ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। ঘরের দরজা খুলে রুবেলের সাথে ধস্তাধস্তি এক পর্যায়ে লোহার রড দিয়ে রুবেলের মাথায় আঘাত করে শামীম। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।