আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান ও ইভিএমে ভোট হওয়ার কারণে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (৫ মে) সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে এ ভোটগ্রহণ।
সকাল থেকে নগরীর গাঙ্গিনারপাড়, নতুনবাজার, আকুয়া, সানকিপাড়া এলাকার বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটাররা লাইন ধরে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন এবং ইভিএমের মাধ্যমে সহজেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ পদ্ধতিতে দ্রুত ভোট হওয়ায় বেশি সময় লাইনেও দাঁড়াতে হয়নি ভোটারদের। স্বল্প সময়েই ভোট দিতে পেরে খুশি ভোটাররা।
২৭ নং ওয়ার্ডের মোমেনশাহী ইসলামীয়া একাডেমি এন্ড কলেজের প্রিজাইডিং অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইভিএমে ভোট হওয়ার কারণেই সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। ব্যালটে ভোট হলে কোনো না কোনো বিচ্ছিন্ন বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। কিন্তু এ নির্বাচনে স্বাচ্ছন্দ্যে ও নির্ঝঞ্ঝাটভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। ভোট গণনা করে অল্প সময়ের মধ্যেই এর ফলাফল পাওয়া যাবে।
মসিকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাই শুধুমাত্র কাউন্সিলর পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২৪২ জন ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
বাগেরহাটের মোংলায় তীব্র দাবদাহের সঙ্গে অসহনীয় রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মোংলার জনজীবন। তীব্র এ গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদ গাহ মাঠে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন ধর্ম প্রাণ মুসলিমরা।
মোংলা উপজেলা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে এবং পৌর কর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে এ নামাজে সব শ্রেণি-পেশার অন্তত দুই হাজার মুসল্লি অংশ নেন।
ইসতিসকার নামাজে ইমামতি করেন মোংলা ইমাম পরিষদের সভাপতি ও বি এল এস মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা রেজাউল করিম। নামাজ শেষে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে চলা দাবদাহ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া হয়।
নামাজে আসা মুসল্লী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ও প্রধান শিক্ষক এসএম মহিউদ্দিন বলেন, 'সারাদেশের মতো মোংলাতেও অসহনীয় গরম পড়েছে। অনেকদিন ধরেই বৃষ্টি হওয়ার কথা, কিন্তু হচ্ছে না। তীব্র গরমে শুধু মানুষ না পশু পাখিরাও কষ্ট পাচ্ছে। সে জন্য রাসুল (সা.) এর সুন্নত অনুযায়ী দুই রাকাত ইসতিসকার নামাজ আদায় করলাম, বৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া চাইলাম।'
ইসতিসকার নামাজ পড়ানো ইমাম হাফেজ মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রচন্ড গরম, তার ওপর বৃষ্টি নাই। ফলে ফসল নষ্ট হচ্ছে। সাধারণ মানুষের চলাফেরা, ইবাদাত বন্দেগি করতেও সমস্যা হচ্ছে। যে কারণে আমরা আজ বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করলাম। আল্লাহর কাছে চাওয়া তিনি আমাদের নামাজ কবুল করবেন এবং বৃষ্টি দিবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান জসিম, চালনা বন্দর আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা রুহুল আমীন, কোরবান আলী আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা গোলাম মোস্তফা, মোংলা উপজেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুর রহমানসহ পৌর শহরের সবকটি মসজিদের ইমাম ও সাধারণ মুসল্লীরা।
শৈশবে ছুটে বেড়িয়েছেন গ্রামের পথে প্রান্তরে। অথচ এখন হাঁটার শক্তি নেই, পারেন না দাঁড়াতেও। কোথায় যেতে হলে কারো সাহায্য নিতে বা প্লাস্টিকের টুল টেনে করতে হচ্ছে চলাফেরা। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নে হরিপুর গ্রামের একই পরিবারের শারীরিক প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোন। এ চার ভাই-বোনের বয়স যখন ১০ থেকে ১২ বছর পর থেকেই হাত-পা ছোট, চিকন ও শরীর বাঁকা হয়ে পড়ে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন ৩৩ বছর বয়সী আব্দুল হাকিম, ৩১ বছর বয়সী আলমগীর, ৩০ বছর বয়সী সালমা ও ২৭ বছর বয়সী আব্দুর রহমান। কিন্তু চার ভাই বোনের জীবনে ছন্দপতন ঘরে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সের পর থেকেই। বয়স বাড়লেও বাড়েনি তাদের আর উচ্চতা। আস্তে আস্তে তাদের হাত-পা ছোট, চিকন ও বাঁকা হয়ে পড়ে, তারা হয়ে যান শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। পরে অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখালেও কোন লাভ হয়নি। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে দেখাতে পারেনি ভালো কোন ডাক্তারও। ছেলে-মেয়েদের এমন অবস্থা দেখে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন মা। এরপর চার ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য তাদের বাবা আবারো বিয়ে করেন। বর্তমানে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে না পারায় তাদের দৈনন্দিন কাজে কাজে সহায়তা করেন সৎ-মা মো. কমলা। নিজের সন্তান না হলেও প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোনকে নিজের সন্তানের মতোই পরম আদরে দেখাশোনা করছেন তিনি। এইভাবেই সংগ্রাম করে জীবন-জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবারটি।
পরিবারটিকে সহায়তায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান স্থানীয়রা।
প্রতিবন্ধী আব্দুর রহমান ও আলমগীর বলেন, আমাদের বয়স যখন ১০ বছর পর্যন্ত আমরা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলাম। বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতাম, আড্ডা দিতাম, হাটে-বাজারে যেতাম। অনেক স্মৃতি ছিল। এখন ছোটবেলার কথা মনে পড়লে কষ্ট হয়, অনেক সময় কান্নাও করি। ভবিষ্যতে আমাদের দেখবে কে? বাইরের কোন মানুষজন আমাদের চার ভাই-বোনের চলাফেরা দেখলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবে না।
তারা আরও বলেন, আমরা চার ভাই বোন অনেক কষ্ট আর সমস্যার মধ্য দিয়ে বেঁচে আছি। চলাফেরা করা যায় না টুল টেনে না হলে হামকুর পেরে কোনরকম চলাফেরা করতে হয়। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ভালো না হওয়ায় কোন অসুখ হলে ঠিকমতো ওষুধও কিনে খেতে পারি না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বা কোন বিত্তবান মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়ালে একটু উপকার হতো।
তাদের প্রতিবন্ধী বোন সালমা বলেন, ১০ বছরের পর থেকে আমি আর স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারি না। টুল নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। আমার ভাইদের চেয়ে আমার কষ্ট আরও বেশি। সব সময় অসুখ-বিসুখ লেগে থাকে।
সৎ-মা মোছা. কমলা বলেন, আমার বিয়ে হয়ে এখানে আসার পর থেকেই তাদেরকে টুল টেনে চলাফেরা করতে দেখছি। তাদের সব কাজ আমাকেই করে দিতে হয়। তাদের কথা চিন্তা করে নিজে কোন সন্তান নিইনি। নিজের সন্তানের মতই তাদেরকে সেবাযত্ন করে যাচ্ছি। আমার এই চার সন্তানদের পাশে কেউ দাঁড়ালে তাদের জন্য খুব ভালো হতো।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তাদের বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিতে বলেছি। এছাড়াও চিকিৎসা মাধ্যমে তাদেরকে ভালো করা গেলে চিকিৎসার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
বগুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে বগুড়া রেল স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের আনুমানিক বয়স ৬০ থেকে ৬৫ বছর হবে বলে পুলিশের ধারণা। তিনি ভবঘুরে ছিলেন বলে জানিয়েছেন বগুড়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খাইরুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি বোতল ও প্লাস্টিকের জিনিস বস্তায় ভরে ট্রেনে উঠার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বস্তা বড় হওয়ায় তিনি উঠতে পারছিলেন। এসময় ট্রেন ছেড়ে দিলে তিনি ট্রেনের নিচে পড়ে চাকার সাথে আটকে যান। ওই অবস্থায় তাকে সরকারি আজিজুল হক কলেজ গেইট পর্যন্ত ট্রেন টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়। রেলওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ খাইরুল ইসলাম বলেন, সকাল ১০টায় সান্তাহারগামী কলেজ ট্রেনে উঠতে গিয়ে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধ কাটা পড়ে মারা গেছেন। জানতে পেরেছি তিনি ভবঘুরে ছিলেন। তবে তার পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে রাখা হয়েছে।
ডিএমপির ইন্টিলিজেন্স পুলিশিং বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয়
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে ও পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ইন্টিলিজেন্স ভিত্তিক পুলিশিং বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রশিক্ষণ কর্মশালাটির উদ্বোধন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ (জিআরএসপি) আয়োজিত দুই দিনব্যাপি কর্মশালাটি চলে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এবং বুধবার (২৪ এপ্রিল)। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে দুই দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মোট ৬২ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, 'ডিএমপিকে আধুনিক ও সর্বশেষ কলাকৌশল সম্পর্কে আপডেট রাখা এবং প্রশিক্ষণ দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আমি নিশ্চিত যে, এই কর্মশালা, আমাদের অফিসারদের সক্ষমতা আরও উন্নত করবে এবং ঢাকার নাগরিকদের জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য সাহায্য করবে।
জিআরএসপি’র সিনিয়র রোড পুলিশিং উপদেষ্টা রাসেল নাইমান প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি পরিচালনা করেন। যুক্তরাজ্য পুলিশের বিভিন্ন পদে ৩০ বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন তিনি। কর্মশালায় বৈশ্বিকভাবে অনুশীলন করা ‘সেফ সিস্টেম এপ্রোচ’ অনুসারে সড়ক নিরাপত্তার ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হয়। এই প্রশিক্ষণের ফলে পুলিশ কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক ও জাতীয় রোড পুলিশিং কৌশলগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করার মাধ্যমে সড়ক-সংঘর্ষজনিত মৃত্যু ও হতাহত কমাতে সক্ষম হবেন।
কর্মশালা প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে রাসেল নাইমান বলেন, 'এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুলিশ অফিসারদের সক্ষমতা বাড়বে। তারা তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং সড়কে মৃত্যু হ্রাসে যথাযথ ভূমিকা নিতে পারবে।