রাজশাহীতে প্রাণ-তীর-ড্যানিশসহ নিষিদ্ধ ৫২ পণ্যের ছড়াছড়ি



হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ পণ্যের কয়েকটি, ছবি: সংগৃহীত

আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ পণ্যের কয়েকটি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হাইকোর্ট কর্তৃক 'নিষিদ্ধ' ঘোষিত ৫২ ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ি রাজশাহীর দোকানগুলোতে। গত ১২ মে বাজার থেকে ১০ দিনের মধ্যে এসব পণ্য প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেওয়া হলেও এখনো দোকানগুলোতে মজুদ রয়েছে, চলছে বিক্রিও।

বুধবার (১৫ মে) দুপুর সাড়ে ১২টা। রাজশাহীর সাহেব বাজার ১নং গদির মোশাররফ হোসেনের দোকানে কেনাকাটা করতে এসেছেন সাগরপাড়া এলাকার মিলি বেগম। তিনি প্রাণের হলুদের গুঁড়া, কারি পাউডার, লাচ্ছা সেমাই, রূপচাঁদার সরিষার তেল ও মোল্লা সল্টের লবণ কিনে ব্যাগে ভরে রেখেছেন।

ভেজাল পণ্য

নিম্নমান ও ভেজাল হওয়ায় এসব পণ্য নিষিদ্ধ, তবুও কিনছেন কেন? এমন প্রশ্নে মিলি বেগম যেন আকাশ থেকে পড়েছেন! তিনি জানেনই না এসব পণ্য আদালত থেকে নিষিদ্ধ। সামনে দাঁড়ানো দোকান মালিক মোশাররফ হোসেনও দাবি করলেন, তিনি জানেন না কোন কোন পণ্য নিষিদ্ধ। ফলে আদালতের নির্দেশনার পরও দোকান থেকে সেগুলো সরানো হয়নি।

শুধু নগরীর সাহেব বাজারে নয়, নিউমার্কেট, লক্ষ্মীপুর, কোর্ট কাঁচাবাজার, বিনোদপুর, কাজলা, হড়গ্রাম বাজার ঘুরেও দেখা গেছে ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ি। অধিকাংশ ক্রেতা পণ্যগুলো সম্পর্কে জানেন না। অনেক বিক্রেতারও দাবি- তারা পণ্য নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি শুনেছেন, তবে সেটা কোন কোন পণ্য তা জানেন না। আবার অনেকে জানলেও লোকসানের ভয়ে ক্রেতাদের ধোঁকা দিয়ে নিম্নমানের নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করছেন।

প্রাণ-তীর-ড্যানিশসহ রাজশাহীর বাজারে নিষিদ্ধ ৫২ পণ্যের ছড়াছড়ি

নগরীর বড় বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ভেজাল ও নিম্নমান হওয়ায় আদালতে নিষিদ্ধ ৫২টি পণ্য দেদারছে বিক্রি করছেন দোকানিরা। প্রকাশ্যেই পণ্যগুলো দোকানে সাজিয়ে রেখেছেন।

পণ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ড্যানিশের হলুদের গুঁড়া, প্রাণের হলুদের গুঁড়া, তানভির ফুডের ফ্রেশের হলুদের গুঁড়া, এসিআইয়ের ধনিয়ার গুঁড়া, প্রাণের কারি পাউডার, ড্যানিশের কারি পাউডার, সিটি ওয়েলের তীর সরিষার তেল, গ্রিন ব্লিচিংয়ের জিবি সরিষার তেল, শবনমের পুষ্টি সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের রূপচাঁদা সরিষার তেল, প্রাণের লাচ্ছা সেমাই ও মোল্লা সল্টের আয়োডিনযুক্ত লবণ।

প্রাণ-তীর-ড্যানিশসহ রাজশাহীর বাজারে নিষিদ্ধ ৫২ পণ্যের ছড়াছড়ি

নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকা থেকে সাহেব বাজারে কেনাকাটা করতে আসা তাশফিয়া আক্তার বলেন, 'এগুলো দীর্ঘদিন ধরে কিনছি। এখন শুনছি, পণ্যগুলো ভেজাল। তাহলে কিনব কোনটা? নামিদামি কোম্পানির পণ্য যদি ভেজাল হয়, তবে নাম না জানা কোম্পানির পণ্য কিনে কী ভালো মনে খাওয়া যাবে?'

শফিকুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ভেজাল হওয়ায় পণ্য নিষিদ্ধের বিষয়টি জেনেছি। তবে দোকানে আসলে কেনার সময় ভুলে যেতে হচ্ছে। আমি গতকালও রূপচাঁদার সরিষার তেল কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম। বাড়ি থেকে বলল, এটা ভেজালের কারণে নিষিদ্ধ। পরে সেটা বাদ দিয়ে স্থানীয় ব্রান্ডের একটি সরিষার তেল কিনে নিয়ে গেছি।'

ভেজাল পণ্য

রাজশাহীর বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পত্র-পত্রিকা ও টিভিতে তারা দেখেছেন, ৫২টি পণ্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেগুলো আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাজার থেকে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে। তবে কোন কোম্পানির, কি কি পণ্য তা পরিষ্কার করে কিছু জানেন না। সরকার বা কোম্পানির পক্ষ থেকেও তাদেরকে কিছু জানানো হয়নি। তাই তারা বিক্রি বন্ধও করেননি।

নগরীর ‘শাহ আলম অ্যান্ড সন্স’ এর মালিক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘৫২টি পণ্য আদালত বাতিল করছেন, তা আমরা শুনেছি। তবে পরিষ্কার কোনো নির্দেশনা আমরা এখনও পাইনি। তাই কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।’

প্রাণ-তীর-ড্যানিশসহ রাজশাহীর বাজারে নিষিদ্ধ ৫২ পণ্যের ছড়াছড়ি

পিএনপি টেডার্সের মালিক বিদ্যা প্রসাদ বলেন, 'বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। তবে নামিদামি কোম্পানির পণ্য যে ভেজাল, তা আমাদের অবাক করেছে। বুঝে উঠতে পারছি না, এগুলো বাতিল হবে নাকি আবার সবাই বেচতে পারবে। যদি কদিন বাদে সব ঠিকঠাক হয়ে যায়, তবে আমার কেনা পণ্য সরিয়ে ফেললে আমিই লোকসানে পড়ব। তাই এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।'

নগরীর হড়গ্রামের শামীম ভ্যারাইটি স্টোরের মালিক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কতকিছুই তো নিষিদ্ধ হয়, পরে আবার ঠিক হয়ে যায়। এবারও তাই হবে। টাকা দিয়ে কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য কিনেছি। ফেলে দিলে তো আমারই লস (ক্ষতি)। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়!’

বিনোদপুর বাজারের রহমান সন্স মালিক আব্দুর রহমান বলেন, 'যে ৫২টি পণ্য আদালত নিষিদ্ধ করেছে, রাজশাহীর বাজারে তার ২০/২২টি চলে। অন্যগুলো বাজারে নেই বললেই চলে। কেউ কিনতেও চাই না। মূলত প্রাণ, রূপচাঁদা, এসিআই, পুষ্টি, ফ্রেস ও ড্যানিশের পণ্যগুলো বাজারে চলত। সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। আমি দ্রুত সেগুলো সরিয়ে নেব।' আদালতের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদও জানান তিনি।

প্রাণ-তীর-ড্যানিশসহ রাজশাহীর বাজারে নিষিদ্ধ ৫২ পণ্যের ছড়াছড়ি

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন বাজারে দিনভর অভিযান পরিচালনা করছে। জরিমানা করছে, সকলকে সতর্ক করছে। গণমাধ্যমেও বিষয়টি ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। সবাই বিষয়টি এরই মধ্যে অবগত হয়েছেন বলেই আমার বিশ্বাস। তবুও কেউ কেউ যদি দাবি করে থাকে, তারা এখনও জানেন না। তবে বিষয়টি অবগত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রশাসন চেষ্টা করে যাচ্ছে, এখানে যারা ক্রেতা সেই সাধারণ মানুষকে সচেতন এবং বিক্রেতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে। একজন নাগরিক হিসেবে ন্যূনতম দায়িত্বশীল হলে ভেজাল ও নিম্নমানের এসব পণ্য কেউ বিক্রি করবে না বলে আমার বিশ্বাস।'

   

দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ

দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ

  • Font increase
  • Font Decrease

সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় নিহত রাকিব হোসেন (২৪) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ দেশে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নিহতের মরদেহ বেনাপোলে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।

নিহত রাকিব বেনাপোল বন্দর থানার ঘিবা গ্রামের মমিনুর রহমানের ছেলে।

এর আগে, গত ৩ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত রডের নিচে চাপা পড়ে মারাত্মক আহত হয় রাকিব। দীর্ঘ ১৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে তিন সিঙ্গাপুরে মারা যান।

নিহত রাকিবের চাচা মিলন হোসেন জানান, গত ৩ এপ্রিল রাকিব কনস্ট্রাকশনের কাজ করার সময় রড চাপায় গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাকিবের বাবা মমিনুর রহমান জানান, সংসারের হাল ধরতে এক বছর হলো রাকিব সিঙ্গাপুর গিয়েছিল। সে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতো। গত ৩ এপ্রিল প্রতিদিনের মতো সে কাজে যায়। এক পর্যায়ে ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে ভবনের উপরে তোলার সময় তার ছিঁড়ে রডের নিচে চাপা পড়ে রাকিব। পরে তাকে সিঙ্গাপুর সিভিল ডিফেন্স ফোর্সের উদ্ধারকারীরা এবং সহকর্মীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘ ১৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ২০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সে মারা যায়।

বেনাপোল পোর্ট থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মফিজ বলেন, সিঙ্গাপুরে নিহত রাকিব আমার ইউনিয়নের ঘিবা গ্রামের বাসিন্দা। তার পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি সে সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় মারা গেছে। তার মৃতদেহ বৃহস্পতিবার রাতে দেশে আনা হয়েছে।

;

প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায়, যুবক গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রীর অশ্লীল ছবি সংরক্ষিত মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভোর রাতে উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বড় রাজাপুর গ্রামের লাল মিয়া মাঝি বাড়ি থেকে নুরুল ইসলামকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়।

নুরুল ইসলাম সেনবাগ উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের ৮ িনম্বর ওয়ার্ডের শ্যামেরগাঁও গ্রামের আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে।

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগীর স্বামী আমেরিকা প্রবাসী। ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি মোবাইলে সমস্যা দেখা দিলে ভিকটিম মোবাইল ঠিক করতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারের আরডি শপিং মলে যায়। অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম নিজেকে মোবাইল মেকানিক পরিচয় দিয়ে গৃহবধূর মোবাইল ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে নেয়। একপর্যায়ে ভিকটিমের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ ও ভিকটিমের মোবাইল ফোনের গ্যালারি থেকে ব্যক্তিগত ছবি কৌশলে তার মোবাইলে ট্রান্সফার করে নিয়ে যায়।

পুলিশ আরও জানায়, এরপর ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভিকটিম সম্মানহানির ভয়ে ও তার সংসার টিকানোর জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়। এতে সে সন্তুষ্ট না হয়ে বাকি আরও আড়াই লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় ভিকটিমকে তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নুরুল ইসলাম ভিকটিমের ছবি ও নাম ব্যবহার করে টিকটক আইডি খুলে ব্যক্তিগত ছবি ছেড়ে দেয়। বিষয়টি ভুক্তভোগীর নজরে আসলে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। একই সাথে ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি ও তার নাম এবং ছবি ব্যবহার করা টিকটিক আইডি সংরক্ষিত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

;

টিউবওয়েল আছে পানি নেই!



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুলালী সরকারের ছয় সদস্যের পরিবার। নিজেদের টিউবওয়েল থাকলেও বেশ কয়েকদিন ধরে পানি উঠছে না। ফলে সীমাহীন কষ্টে ভুগছে পরিবারটি। একদিকে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ অন্যদিকে পানির জন্য হাহাকার। সবকিছু মিলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে দুলালী সরকারের পরিবারের জীবনযাত্রা। পানির অভাব মিটাতে ছুটছেন এদিক-ওদিক। কিন্তু কোথাও মিলছে না একফোঁটা পানি।

শুধু দুলালী সরকারের পরিবারই নয়। পানির জন্য এমন চিত্র রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির সাতটি ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবারের। তীব্র তাপপ্রবাহ এবং শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এই ভোগান্তি বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

বালিয়াকান্দি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ভৌগোলিক কারণে বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলাটি ভিন্ন। আশেপাশের অঞ্চল থেকে এই অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ স্তর নিম্নমুখী। যে কারণে প্রতি বছর পানির স্তর ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি নিচে নেমে যাচ্ছে। বালিয়াকান্দিতে মোট পরিবারের সংখ্যা ৫০ হাজার। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৫টি পরিবারের জন্য কমপক্ষে একটি টিউবওয়েল থাকা জরুরি।

সে অনুযায়ী বালিয়াকান্দিতে প্রয়োজন প্রায় ১০ হাজার টিউবওয়েল। কিন্তু সরকারিভাবে ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৬০টি সাবমার্সিবল ও ২০১৯ সাল থেকে ৫২০টি তারা টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য।

ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেসব টিউবওয়েল বসানো হয়েছে সেগুলোতে এখন আর পানি ওঠছে না। পানি না ওঠার কারণ হিসেবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বলছে- বালিয়াকান্দিতে বর্ষা মৌসুমে পানির স্তর থাকে ১৫ থেকে ২২ ফুট নিচে। আর শুষ্ক মৌসুমে বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সেটা নেমে দাঁড়ায় ৩২ ফুট নিচে। ব্যক্তিগত উদ্যেগে বসানো ৬ নং টিউবওয়েলগুলো পাম্পিং ক্ষমতা ২০ থেকে ২৪ ফুট। যার কারণে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পানি থাকে না। শুধুমাত্র সরকারিভাবে বসানো তারা ও সাবমার্সিবল টিউবওয়েল পানি থাকে।

পানির জন্য হাহাকার

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সরেজমিন সদর ইউনিয়নের পাইককান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বাড়িতেই প্রায় টিউবওয়েল রয়েছে, থাকলেও বেশির ভাগ টিউবওয়েলে নেই পানি। কোন কোন টিউবওয়েলে সকাল ও সন্ধ্যার পর কিছু পরিমাণ পানি উঠছে। যেখানে সরকারি সাবমার্সিবল ও তারা পাম্প রয়েছে সেখান থেকে অনেকেই সংগ্রহ করছে পানি।

এদিকে বৈশাখ মাসে কোন বৃষ্টি না হওয়ায় বৃষ্টির জন্য বালিয়াকান্দির বিভিন্ন এলাকাতে বিশেষ নামাজ ও প্রার্থনার আয়োজন করছেন মুসল্লিরা।

পাইককান্দি গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোর্তবা রিজু বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রায় এক সপ্তাহ হতে চললো বাড়ির টিউবওয়েল থেকে পানি উঠছে না। ৫০টি চাপ দেওয়ার পর এক গ্লাস পানি উঠছে। পানির অভাবে নানা ধরণের সমস্যায় ভুগছে তার পরিবার। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধ নারীরা অনেক কষ্টে রয়েছেন জানান তিনি।

বহরপুর ইউনিয়নের ইলিশকোল গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান কামরুল বার্তা২৪.কমকে জানান, পানির অভাবে নিজেরা তো কষ্টে আছেনি। এর থেকেও বেশি কষ্ট পাচ্ছে পশুপাখি। তার বাড়ির হাঁস-মুরগিগুলো পানির জন্য হাঁফাচ্ছে। তীব্র রোদ ও প্রচন্ড গরমের মধ্যে পানি না থাকার প্রভাব মানুষের পাশাপাশি পড়ছে পশুপাখি ও গাছপালার ওপর।

নবাবপুর ইউনিয়নের মেছুয়াঘাটা এলাকার কৃষক রহিম মিয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, পানি না ওঠায় তিনি মাঠে ফসল চাষ করতে পারছেন না। এখন পুরো পাট চাষের উপযুক্ত সময়। জমিতে সেচ দিয়ে পাটের চারা রোপন করতে হবে। পানি না ওঠায় তিনি পাটের বীজ রোপন করতে পারছেন না।

নিরাপদ পানির নিশ্চয়তার জন্য সরকারের কাছে ১০ হাজার টিউবওয়েলের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে জানিয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বার্তা২৪.কমকে জানান, বালিয়াকান্দির ৬০ শতাংশ পরিবারে এখন পানির অভাব রয়েছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এ অঞ্চলের ভূগর্ভস্ত পানির স্তরের ওপর প্রভাব পড়ছে।

প্রতি বছর পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলো আরও কঠিন হয়ে পড়বে। নিরাপদ পানি ও শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি পেতে হলে পরিকল্পনা করে টিউবওয়েল স্থাপন করতে হবে। এখন থেকে যারাই টিউবওয়েল স্থাপন করবেন তারা অবশ্যই সাবমার্সিবল অথবা তারা টিউবওয়েল স্থাপন করবেন। এ সকল টিউবওয়েল কমপক্ষে ১৬০ ফুট নিচের স্তরের পানি তুলতেও সক্ষম।

তিনি আরও বলেন, এখন থেকে টিউবওয়েল স্থাপন করলে আগামী ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত পানির জন্য কোন চিন্তা থাকবে না।

;

থাই রাজা-রানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাওচাউয়ুয়া ও রানি সুথিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষ্মণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থাইল্যান্ড সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডুসিট প্রাসাদের অ্যামফোর্ন সাথার্ন থ্রোন হলে রাজা ও রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানিয়েছে, সাক্ষাতে তারা কুশল বিনিময় করেন এবং দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার থাইল্যান্ডে আসেন।

এর আগে, সকালে জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন।

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার আগ্রহপত্রসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করবে।

বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ড সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারে, শক্তি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে পারে।

;