সরল বিশ্বাসে কিছু করলে অপরাধ নয় বলেছি : দুদক চেয়ারম্যান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
'দুর্নীতি দমনে আইনজীবী এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় দুদক চেয়ারম্যান

'দুর্নীতি দমনে আইনজীবী এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় দুদক চেয়ারম্যান

  • Font increase
  • Font Decrease

সরল বিশ্বাসে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করা কাজ কোনো অপরাধ নয় সম্প্রতি দেওয়া এমন বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, 'এ ব্যাপারে আমার উত্তর একেবারে সহজ। একটি প্রশ্নের বিপরীতে আমি যে উত্তর দিয়েছিলাম সেখানে আমি দুর্নীতি শব্দটি উচ্চারণ করি নাই। আপনারা দেখেতে পারেন। দুর্নীতি কিভাবে আসলো আই হ্যাভ নো আইডিয়া। যারা এনেছেন সেটা তাদের দায়, মোটেও আমার দায় নয়।'

শনিবার (২০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে 'দুর্নীতি দমনে আইনজীবী এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।

১৯ জুলাই সচিবালয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এটা সবার জন্য যে সরল বিশ্বাসে সরকারি কর্মকর্তারা কিছু করলে সেটা কোনো অপরাধ নয়, সরল বিশ্বাসে যদি আপনি কোনো কাজ করেন, এবং সেটা যদি বড় কিছুও হয় তাও কোনো অপরাধ নয়। তিনি বলেন, পেনাল কোডেই বলা আছে যে, সরল বিশ্বাসে কৃতকর্ম কোনো অপরাধ নয়, জেনারেল একসেপশন বলে এটাকে। কিন্তু আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে সরল বিশ্বাসে আপনি এ কাজটা করেছেন।'

এ প্রসঙ্গে আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, 'আমি কোনো ব্যাখ্যা দিতে প্রস্তুত নই। কারণ আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন পরিষ্কার করতে। আমি পরিষ্কার করেছি ওখানে।'

দুর্নীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, 'অনেকেই বলেন সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিদের কিছু করা হয় না। আমার জানামতে আন্ডার প্রসিকিউশন, আন্ডার ইনভেস্টিগেশন এর নামে ইনকোয়ারিতে ১০ থেকে ১৫ জন রয়েছেন সরকার দলীয়। এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক দলে রয়েছে ১৫ জন, আরেক দলে রয়েছে ১২ জন, আরেক দলের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ইন কোয়ারিতে আছে প্রায় ২৫ জন। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন আমলা রয়েছে সচিব থেকে শুরু করে জয়েন সেক্রেটারি পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন আছে। ইনভেস্টিগেশনের সময় তথ্য প্রকাশ হলে সেটি বিব্রতকর হয়ে পড়ে। সেজন্য সব তথ্য জানিয়ে দেওয়া একটু অসুবিধার বিষয়। এরপরও কিভাবে যেন সেই তথ্য পাচার হয়ে যায়। সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, সেই দায় আমার।'

ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক আকাশ থেকে উড়ে আসে নাই। এখানে যারা কাজ করেন তারা কিন্তু বিদেশ থেকে আসে নাই। আমরা সবাই এই সমাজের মানুষ। আমরা সবাই এই মাটির সন্তান, এই পরিবেশের প্রোডাক্ট। এই সমাজেরই অংশ। সমাজের অন্যান্য জায়গায় যা হয়, আমার এখানে তা হয় না কথাটা সঠিক নয়। ছোট গাছ উপড়ে ফেলার যতটা সহজ, বট গাছ উপড়ে ফেলা অনেক কঠিন। তাই বলে যে আমরা বট গাছ ধরছি না তা নয়।

এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'আপনারা সংবাদ পরিবেশন করবেন যাতে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না হয়। ব্যক্তি ক্ষতি হোক অসুবিধা নাই। কারণ, প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের, সরকারের নয়। আমাদের ব্যর্থতা আছে। সে ব্যর্থতা কাটানোর জন্য কি করা যায় সেটা আপনারা বলুন। সবার সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া দুর্নীতি দমন সম্ভব না।'

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল-ইসলাম, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. নিজামুল হক।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট অ্যাড. মনজিল মোরসেদ।

   

অপহরণের শিকার ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে চট্টগ্রামে বদলি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানের রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়ার পর নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ বিবেচনায় তাকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শাখার ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রুমা শাখার সিনিয়র অফিসার (ক্যাশ) নারায়ন দাশকে রুমার শাখা ব্যবস্থাপনার (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব দিয়েছে সোনালী ব্যাংক।

গত ২ এপ্রিল রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলা সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা করে পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র গ্রুপ কেএনএফ। ওই সময়ে ব্যাংকের ভল্ট খুলতে না পেরে হামলাকারীরা ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ৪ এপ্রিল তাকে উদ্ধার করা হয়।

সোনালী ব্যাংকের গত ৯ এপ্রিলের দপ্তর নির্দেশ নং-১৩/২০২৪ এর তথ্যমতে, রুমা শাখা, বান্দরবানের নেজাম উদ্দীনকে কর্ণফুলী শাখা, চট্টগ্রামের ম্যানেজার (সিনিয়র অফিসার) ও যুগ্ম-জিম্মাদার (সাধারণ) করা হয়। কর্ণফুলী শাখার ম্যানেজার মু. রেজাউর রহমানকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) চট্টগ্রামের কে. বি বাজার শাখায় এবং কে. বি বাজার শাখার ম্যানেজার হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে (প্রিন্সিপাল অফিসার) প্রিন্সিপাল অফিস, পটিয়ার (চট্টগ্রাম) প্রিন্সিপাল অফিসার হিসাবে বদলি করা হয়।

সোনালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) এর মহাব্যবস্থাপক মো. মুসা খান বলেন, রুমা শাখায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা ও অপহরণের ঘটনার পর তিনটি শাখার কার্যক্রম স্থগিত করে বান্দরবান শাখার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অপহরণের পর উদ্ধার হওয়া রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়েছে। রুমার শাখার সিনিয়র এক কর্মকর্তাকে শাখাটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে আমরা দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে রুমাসহ অপর শাখাগুলোর কার্যক্রম পুরোদমে চালু করতে কাজ করছি।

;

যশোরে নাশকতা মামলায় মুক্তি পেলেন বিএনিপির ৫১ নেতা-কর্মী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নাশকতা মামলায় মুক্তি পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুসহ ৫১ নেতা-কর্মী। জামিনে মুক্তি পেয়েই দলীয় নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন নেতৃবৃন্দ।

উচ্চ আদালতে জামিনে থাকা নেতাকর্মীদের বৃহস্পতিবার যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নেতা-কর্মীদের পক্ষে জামিন শুনানিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন, আইনজীবী দেবাশীষ দাস। শুনানি শেষে বিচারক শেখ নাজমুল আলম নেতাকর্মীদের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে জামিনের কাগজপত্র যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের পাঠানো হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকাল ছয়টার দিকে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ নেতৃবৃন্দ মুক্তি লাভ করেন। মুক্তি পাওয়া অন্যান্য নেতাকর্মীরা হলেন, জেলা বিএনপির সদস্য মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি প্রমুখ।

এদিকে প্রিয় নেতার জামিনের সংবাদ পেয়েই বেলা তিনটা থেকে দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের বাইরে অপেক্ষা করেন। যশোরে আটটি উপজেলা ও পৌরসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকেও দলীয় নেতা-কর্মীরা ছুটে আসেন। সেখানে উল্লেখ যোগ্য নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিলেন, যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য গোলাম রেজা দুলু, মো. মুছা, মিজানুর রহমান খান, একে শরফুদ্দৌলা ছোটলু, সিরাজুল ইসলাম, নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মদ প্রমুখ।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তি পর দলীয় নেতাকর্মীরা কারাগারের প্রধান ফটকের বাইরে মিছিল স্লোগান দিতে থাকেন। সেখান থেকে মিছিল সহকারে নেতৃবৃন্দ অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বাস ভবেন যান। সেখানে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমাদেরকে বারবার মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে জনগণের মুক্তির জন্য দেশ নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাজপথের চলমান আন্দোলন স্তব্দ করা যাবে না। আমাদের অসংখ্য সহযোদ্ধা খুন, গুম শিকার এবং পঙ্গত্ব বরণ করেছেন। দলের ৫০ লাখ নেতাকর্মী মিথ্যায় মামলার শিকার হয়ে কারাবরণ করেছেন। কিন্ত আমাদের আন্দোলন স্তব্দ হয়নি। তিনি বলেন, কারাপ্রকষ্ঠে নতুন করেন শপথ নিয়েছি আগামীদের দিনের রাজপথের আন্দোলন চূড়ান্ত লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে যাব না ইনশা আল্লাহ। এসময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বক্তব্য রাখেন।

এদিকে দলীয় নেতাকর্মীদের জামিন শুনানিতে অংশ নেন, অ্যাড. মো.ইসহক, আমিনুর রহমান, অ্যাড. এম এ গফুর, অ্যাড. নুরুজ্জামান খান, অ্যাড. মোস্তফা কামাল মিন্টু, অ্যাড. সুদিপ্ত কুমার ঘোষ প্রমুখ।

উল্লেখ্য দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকে রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ কর্মসূচি পুলিশি তান্ডবে পন্ড হয়ে যাওয়ার পর থেকে, দলটি শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করে। দেশব্যাপী সেই আন্দোলন তুঙ্গে থাকা অবস্থায় সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন এক তরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। সেই এক তরফা প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে দলটি দেশব্যাপী তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখে। সেই কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে। তারপরও দলীয় নেতাকর্মীর আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে পুলিশের দায়েরকৃত কথিত নাশকতা মামলার উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর গেল ৩১ মার্চ তারা নি¤œআদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই দিন আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে আদালতে প্রেরণ করেন।

;

স্বস্তির ছুটির পর অস্বস্তির লোডশেডিংয়ে নাকাল চট্টগ্রামবাসী



রেদ্ওয়ান আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
স্বস্তির ছুটির পর অস্বস্তির লোডশেডিংয়ে নাকাল চট্টগ্রামবাসী

স্বস্তির ছুটির পর অস্বস্তির লোডশেডিংয়ে নাকাল চট্টগ্রামবাসী

  • Font increase
  • Font Decrease

‘রমজানে তীব্র লোডশেডিংয়ে নামাজ, ইফতার, বিশেষ করে সেহরি রান্নায় ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। তবে ঈদের দিন এবং তার দুয়েকদিন পর পর্যন্ত সেভাবে লোডশেডিং হয়নি। কিন্তু গত দুইদিন ধরে তাপমাত্রা যেমন বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিংও। একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে সহজে আসছে না। দিনে কোনোরকম কাটানো গেলেও রাতে ভ্যাপসা গরমের সাথে যুক্ত হচ্ছে মশার উৎপাত। ফলে বিষণ্ন হয়ে উঠছে আমাদের জীবনযাত্রা।’

এভাবেই তীব্র লোডশেডিংয়ে গ্রামাঞ্চলের নেতিবাচক পরিস্থিতিতে নিজেদের বিপর্যস্ত দিনলিপির বিবরণ দিচ্ছিলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাসিন্দা তানভীর সিকদার।

কেবল সাতকানিয়া নয় ঈদের ছুটি শেষ হতে না হতেই নগরসহ চট্টগ্রামের সকল উপজেলাতেই লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত গণমানুষ। অধিকাংশ এলাকায় দিনে আট থেকে দশবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটছে। মধ্যরাতেও লোডশেডিং হওয়ায় প্রচণ্ড গরমে বাসিন্দারা রাতে ঘুমাতে পারছেন না। এ যেন চট্টগ্রামবাসীকে দেওয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ঈদ উপহার।

গত ৯ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারিভাবে ঈদ ও বাংলা নববর্ষের ছুটি থাকায় চট্টগ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল না। মানুষ স্বস্তিতে ঈদ ও নববর্ষ উদযাপন করেছেন। কিন্তু গত ১৫ এপ্রিল অফিস–আদালত খোলার সাথে সাথেই লোডশেডিং শুরু হয়েছে আবার।

এদিকে বৈশাখের শুরুতেই চট্টগ্রামে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। বৈশাখের কাঠফাটা রোদের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। রেহাই পাচ্ছে না প্রাণীকুলও। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তীব্র গরমের মাঝে প্রকৃতিতে বাতাসের মাত্রা কমে যাওয়ায় অস্বস্তি আরো বাড়ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে চট্টগ্রামে দিনদিন লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বলেন, ‘সারাদিনে পাঁচ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। দিনে-রাতে কম করে দশ-বারোবার বিদ্যুৎ যায়। একবার গেলে এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে আসে।’

লোডশেডিং নিয়ে দুর্ভাবনায় আছেন বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল গ্রামের সেচপাম্প মালিক মোহাম্মদ আশরাফ। তিনি বলেন, ‘১০ শতাংশ জমিতে সেচ দিতে বিদ্যুতের জন্য পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এর মধ্যে আবার তিন-চারবার বিদ্যুৎ চলে যায়। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটাবো তা নিয়ে টেনশনে আছি।’

পিডিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের (বিতরণ) তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং করা হচ্ছে নগরের বাকলিয়া ও কল্পলোক আবাসিক এলাকায়। এলাকাটি নগরের ঘনবসতিপূর্ণ জনপদগুলোর একটি। এর বাইরে পাথরঘাটা, স্টেডিয়াম, ষোলশহর, কালুরঘাট, বাকলিয়া, মাতারবাড়ি , আগ্রাবাদ, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, রামপুর, নিউমুরিং বিদ্যুৎ সরবরাহকেন্দ্রগুলোতেও বেশ লোডশেডিং হচ্ছে।

শহরের বাইরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ইউনিট- ফৌজদারহাট, হাটহাজারী, মোহরা, বাড়বকুণ্ড, সন্দ্বীপ, পটিয়া, সাতকানিয়া, দোহাজারীতে তিন-পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।

এদিকে পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে ৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। ৮টি কেন্দ্রে নামমাত্র উৎপাদন হচ্ছে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। মাতারবাড়ি সহ হিসেব করলে চট্টগ্রামে চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। চট্টগ্রামে এখন গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা সাড়ে ১৩শ’ থেকে প্রায় ১৫শ’ মেগাওয়াটের কাছাকাছি। গত ১৫ এপ্রিল অফিস খোলার দিন চট্টগ্রামে ১২০ মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং ছিল। এর আগে ১৪ এপ্রিল কোনো লোডশেডিং ছিল না।

অন্যদিকে বিদ্যুৎখাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চাহিদার চেয়ে গ্যাসের সরবরাহ কম। তাই গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। এতে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। বিদ্যুৎ খাতে দিনে গ্যাসের চাহিদা ২৩২ কোটি ঘনফুট। এবার গ্রীষ্মে পিডিবি অন্তত ১৫০ কোটি ঘনফুট সরবরাহের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এখন সরবরাহ করা হচ্ছে এর অনেক কম। ফলে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকের বেশি বসিয়ে রাখতে হচ্ছে।

পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে উৎপাদন ভালো হচ্ছে। গত পরশুদিনও বেলা ১২টা পর্যন্ত ১৭৫৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। চাহিদা ছিল ১৩৭৫ মেগাওয়াট। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে দুপুরে পাওয়া গেছে ১২৯৮ মেগাওয়াট। দিনে লোডশেডিং ছিল ৭৭ মেগাওয়াটের মতো।

প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী আরও বলেন, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত পিজিসিবি জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ মেঘনাঘাটে চলে যাচ্ছে। এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ এখনো আমরা রিসিভ করতে পারছি না। মাত্র ৩শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা রিসিভ করতে পারছি।

ভোক্তা-অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘সরকারি তথ্যের চেয়ে বাস্তবে আরও বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা পাওয়া যাচ্ছে না, তবুও বাড়তি উৎপাদন সক্ষমতার মূল্য দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।’

;

ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মো. সুলতান (৫৫) নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিক এ হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১৬নং ক্লাস্টার থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে, সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে ১১৬নং ক্লাস্টারে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮নং ক্লাস্টারের মৃত মো.আব্দুল আলীর ছেলে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ভাসানচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুর হোসেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮নং ক্লাস্টারে বসবাস করতেন। ১১৬নং ক্লাস্টারের খালি জায়গায় তিনি সবজি চাষ করতেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার তার ছেলে ১১৬নং ক্লাস্টারে বাবাকে সকালের নাশতা দিয়ে যান। এরপর দুপুর সোয়া ১টার দিকে একই স্থানে তার ছেলে বাবার জন্য দুপুরের ভাত নিয়ে যান। ভাত নিয়ে গিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে তখন ছেলে তার বাবাকে ১১৬নং ক্লাস্টারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে সে তার বাবার গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিলে অন্য ক্লাস্টারের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

এসআই নুর হোসেন আরও বলেন, পিছনের দিক থেকে গলা কেটে তাকে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

;