চোরাচালানের চলন্ত স্বর্গ!



মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা বাই মৈত্রী এক্সপ্রেস: ভারতের সীমান্ত পয়েন্ট গেদে হয়ে বাংলাদেশের দর্শনা সীমান্ত পয়েন্ট পার হলো- মৈত্রী এক্সপ্রেস। ভ্রমণ ক্লান্তির ঘুম থেকে আড়মোড়া দিয়ে উঠে টয়লেট যাবো ভেবে বের হলাম।

কেবিন থেকে বের হলে পথরোধ করে রেলওয়ে পুলিশ। জানতে চায়, কোথায় যাবেন? টয়লেটের কথা শুনে চেয়ার সিটের বগির বাথরুমে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বললেন, এখানকার টয়লেটগুলো বন্ধ।

ওদিকে রেলের দরজার দিকে বেশ হট্টগোল। এগিয়ে গিয়ে দেখা গেলো, ট্রেনের দরজা ও বাথরুমের সামনে ঠাসাঠাসি করে ভারতীয় পণ্যের লাগেজ, বস্তা ও গাট্টি রাখা। সাধারণ যাত্রীদের বাথরুম যাওয়া বন্ধ। পণ্যের গাট্টির সামনে ব্যবসায়ী ও পুলিশ আর্থিক লেনদেনে ব্যস্ত। দেখে বুঝতে অসুবিধা হলো না, এগুলো ভারত থেকে আনা চোরাচালান পণ্য। ট্রেনের গতি কমিয়ে রেল পুলিশের সহায়তায় চোরাকারবারিরা একের পর এক গাট্টি-বস্তা ফেলছে ট্রেন থেকে।

 

দায়িত্বরত রেল পুলিশ (উপ-পরিদর্শক) মনিরের কাছে ‘কি হচ্ছে’ -জানতে চাইলে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ভারতীয় কাস্টমসকে ম্যানেজ করে মাল এনেছে আমাদের কিচ্ছু করার নেই। আপনি ভেতরে যান।’

প্রতিবেদকের সঙ্গে কথোপকথনের সময় এক চোরাকারবারির আকুতি, ‘স্যার আমার কাছে আর টাকা নেই, তিন হাজারই নেন।’ সাধারণত পুলিশের ইউনিফর্মের সঙ্গে বুকে নাম লেখা থাকে। কিন্তু দায়িত্বপালনরত ওই পুলিশের নেমপ্লেট গায়েব। এমতাবস্থায় ওই পুলিশ সদস্য জানায়, ‘তোরে না বলছি, পাঁচ হাজার দে- ম্যানেজ করে দেবো।’ চোরাকারবারি দাবী, ‘তাহলে মির্জাপুরে একটু স্লো কইরেন, গাট্টিগুলো ফেলবো।’

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ট্রেনে এভাবে অবাধে চলছে চোরাচালানি। সপ্তাহে দু'দিন চলাচলকারী এ ট্রেনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে কোটি কোটি টাকার চোরাই পণ্য। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সামনে রোজার ঈদকে কেন্দ্র করে বহুগুণে বেড়েছে এ চোরাচালান।

চোরাচালানের কাজে সহায়তা করছে ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, শুল্ক কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ রেল পুলিশ। চোরাকারবার পরিচালনা করতে দুই দেশের কর্মকর্তা নিজেদের মধ্যে ‘সখ্যতা’ গড়ে তুলেছেন। দেখে মনে হবে, দু’দেশের পুলিশ, কাস্টমস ও রেল কর্মকর্তারা চোরাচালানের জন্য ‘মৈত্রী বন্ধনে’ আবদ্ধ হয়েছেন।

চলন্ত মৈত্রী ট্রেনে কথা হয় কয়েকজন চোরাকারবারির সঙ্গে। তারা জানায়, ২০-২৫টি সিন্ডিকেট চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে। সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে দুই দেশের ট্রেন চালক, টিটি, অ্যাটেনডেন্টরা জড়িত। তাদের ইশারায় দর্শনা বর্ডার পার হওয়ার পর ঈশ্বরদী, মির্জাপুর ও টঙ্গিসহ বিভিন্ন স্থানে ২ থেকে ৫ মিনিট করে ট্রেন স্লো করা হয়। এ সময় পণ্যের গাট্টি, লাগেজ দ্রুত গতিতে ফেলে দেওয়া হয়। আরেকদল পণ্য সংগ্রহ করে নেয়।

চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতরা ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় পাসপার্ট নিয়ে খালি হাতে ভারতে প্রবেশ করে। ফেরার সময় ট্রেনে অবৈধভাবে পণ্য ওঠায়। পরে আবার সাধারণ যাত্রীর মতোই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চোরাচালানের সঙ্গে দু’দেশের লোকই জড়িত। ১৫ মে মঙ্গলবার ১০-১২ জন ভারতীয় অবৈধ ব্যবসায়ী দেখা যায়। যারা ট্রেনে করে মালামাল এপারে পৌঁছে দিয়ে ওইদিন রাতেই বাসে করে ফের কলকাতা ফেরত যাবেন।

মৈত্রী ট্রেনের টিকিট পেতে হাজারো ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। সেখানে কলকাতা থেকে ফিরতি ট্রেনের ৮০ শতাংশ কেবিন চোরাকারবারিদের দখলে থাকে। ২০ শতাংশ সাধারণ যাত্রীরা হাতে। দুই দেশের কাস্টমসকে ম্যানেজ করে অবৈধ এসব ব্যবসায়ী কেবিন ভর্তি করে পণ্য ওঠায়। বগিগুলোর অবস্থাও প্রায় একই।

চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ভারতের ব্যবসায়ী সামির। কলকাতার খিদিরপুরের বাসিন্দা। সামির বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটা চলে একটা সিস্টেমের ওপর। এখানে দুই দেশের পুলিশ, কাস্টমস, রেলের চালক ও টিটিসহ নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা জড়িত। এমনকি টিকিট পর্যন্ত তারা ম্যানেজ করে দেয়।'

সামির আরও জানায়, মালের দামের ওপর নির্ধারণ করা হয় ঘুষের পরিমাণ। এক লাখ টাকার পণ্যের বিপরীতে অসাধু কর্মকর্তারা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ টাকা ঘুষ নেয়। অনেক সময় আলাপ-আলোচনা করে টাকা কম-বেশ করা যায়।

এ সব বিষয়ে কথা হয় ঢাকা কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) ওথেলো চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ট্রেনে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাই। কাস্টমস কর্মকর্তারা চোরাকারবারিদের সঙ্গে জড়িত না। রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব হচ্ছে। অনিয়ম করে যেখানে-সেখানে ট্রেন স্লো করা হচ্ছে।’

প্রতিবেদকের মৈত্রী ট্রেনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলে, তিনি বলেন, ‘হয়তো আপনি অন্যকোনো বগিতে ছিলেন, এ জন্য অভিযান দেখেননি। আমরা চেষ্টা করি। এরপরও অনিয়ম আটকানো অনেক সময় সম্ভব হয় না।'

২০০৮ সালে ভারতের কলকাতা ও বাংলাদেশের ঢাকার মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হলে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হতো ভারতের সীমান্তে গেদে ও বাংলাদেশের দর্শনায়। যাত্রীদের সুবিধা ও চোরাচালান বন্ধ করতে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ট্রেনে ওঠা -নামার সময় ঢাকা রেলওয়ের ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন ও কলকাতা রেল স্টেশনে (চিৎপুর) কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় । এতে যাত্রী হয়রানি কিছুটা কমলেও চোরাচালান বন্ধ হয়নি।

এমসি/এমএইউ/

   

জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

মাথার ওপর বৈশাখের কাঠফাটা রোদ। সেটি উপেক্ষা করে ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ের চারপাশ ঘিরে অসংখ্য দর্শকের হৈ-হুল্লোড়। রেফারির বাঁশি বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো শক্তির লড়াই। দাঁতে দাঁত চেপে, মাথায় মাথা লাগিয়ে শুরু হলো বাঘা শরীফ ও রাশেদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই।

ঘামে ভিজে, রোদে পুড়ে অস্থির। তবু যেন ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’। কিন্তু থামতে যে হবেই! ৩১ মিনিটেও কেউ কারও পিঠ রিংয়ের বালুতে ছোঁয়াতে পারেনি। তবে শেষমেশ আর না পেরে হার মেনে নেন রাশেদ বলী। এর মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এই বলীখেলা পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।

১১ রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে রেফারি বাঘা শরীফের হাত উঁচিয়ে বললেন, ‘ওই এবারের আবদুল জব্বার বলীখেলার চ্যাম্পিয়ন’। মন ভাঙলেও মেনে নেন কুমিল্লারই আরেক বলী রাশেদ।

একটা সময় জব্বারের বলীখেলা মানেই ছিল কক্সবাজারের দিদার বলীর হাতে ট্রফি। রেকর্ড ১১ বারের চ্যাম্পিয়ন দিদার ২০১৭ সালে অবসরে যাওয়ার পর থেকে আসল দ্বৈরথটা হচ্ছে জীবন ও শাহজালালের মধ্যে। ২০১৯ সালের বলীখেলায় ফাইনালে জীবনকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলেন শাহজালাল। পরেরবার শিরোটা পুনরুদ্ধার করেন জীবন। এরপর গতবার শোধ নেন জীবন। তবে এবার দুজনেই নাম প্রত্যাহার করেন।

যুবসমাজকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। সময়ের ব্যবধানে লালদীঘির মাঠে বসা ‘জব্বারের বলীখেলা’ হয়ে উঠেছে এই জনপদের অন্যতম আকর্ষণ। শুধু কি তাই? বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলাটিও বসে এখানে। কিন্তু করোনার থাবা এই আনন্দ-উৎসব থামিয়ে দিয়েছিল ২০২০ সালে। এরপর গত বছরও এই মেলা হয়নি একই কারণে। এবারও ঐতিহাসিক এই আয়োজনের ভবিষ্যৎ ঝুলছিল সুতার ওপর। শেষ পর্যন্ত সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় তিন বছর পর বলীখেলা দেখল নগরবাসী।

এবার আবদুল জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিতে ৮৪ জন বলী নিবন্ধন করেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ বছরের তরুণ যেমন ছিল, তেমনি ছিলেন ৭০ বছরের বলীও। প্রথম রাউন্ডে শখের বশে খেলতে আসা বলীরা অংশ নেন। এরপর হয় চ্যালেঞ্জ রাউন্ড। এই রাউন্ড থেকেই জয়ী হয়ে বাঘা শরীফ, রাশেদ, রাসের ও সৃজন চাকমা যান সেমিফাইনালে।

সেমিফাইনাল শেষে ফাইনালে মুখোমুখি হন বাঘা শরীফ ও রাশেদ। ফাইনালে দুই দুরন্ত বলীর লড়াইয়ে এক প্রস্থ নাটকও হলো। ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ে শক্তির লড়াইয়ে কেউ কাউকে ফেলতে পারছিলেন না। দুজনের মধ্যে বেশ কয়েকবার ধাক্কাধাক্কিও হলো।

পিঠ নিচে ফেলতে না পারলেও অবশ্য বাঘা শরীফ বারবারই পরাস্থ করেন রাশেদতে। খেলার ১১ মিনিটের মাথায় রাশেদ বলে আর ফেরে উঠতে না পেরে সরে দাঁড়ান।

কুমিল্লার হোমনা বাসিন্দা বাঘা শরীফ মাংস বিক্রেতা। কাজের ফাঁকে যে টুকু অবসর মিলে তার পুরোটা দেন বলীখেলায়। কুমিল্লার অন্যতম সেরা বলী হিসেবে পরিচিতি আছে তার। সেজন্য তার নাম হয়ে দাঁড়ায় বাঘা শরীফ।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাঘা শরীফ বলেন, প্রথমবারের মতো অংশ নিলাম। আর প্রথমবার অংশ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হলাম। যারা সুযোগ করে দিয়েছেন। সামনের আসরগুলোতে আরও শিরোপা চাই।

;

দুই দপ্তরের অনাদায়ী অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

খাদ্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুই দপ্তরের অডিট আপত্তির বিরুদ্ধে নির্দেশনা দিয়েছে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। এই দুই দপ্তরের অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তির প্রমাণক সাপেক্ষে নিষ্পত্তিসহ অনাদায়ী অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশনা দিয়েছে কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২য় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ এমপি। কমিটির সদস্য ফয়জুর রহমান, মো. মুজিবুল হক, মো. জাহিদ মালেক, ফজিলাতুন নেসা, সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, নূর মোহাম্মদ, আখতারউজ্জামান, এস. এ. কে একরামুজ্জামান, মো. রেজাউল হক চৌধুরী ও মো. নজরুল ইসলাম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন খাদ্য অধিদপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের কমপ্লায়েন্স অডিট রিপোর্ট নম্বর ৩৫/২০২১ এ অন্তর্ভুক্ত অডিট আপত্তির অনুচ্ছেদ নং- ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬, ০৭, ০৮ এবং ০৯ এর বিষয়ে আলোচনা ও প্রমাণক সাপেক্ষে নিষ্পত্তিসহ অনাদায়ী অর্থ আদায়পূর্বক সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের রিপোর্টভুক্ত অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তিগুলোর মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিষ্পত্তির জন্য প্রমাণকসহ মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে প্রেরণের পরে সিএজি কর্তৃক নিষ্পত্তির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সিএজি কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, খাদ্য অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সিজিডিএফ কার্যালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;

এক দিনের ব্যবধানে আরও কমল স্বর্ণের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একদিন না যেতেই আবারও স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বৃহস্প‌তিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মি‌নিট থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।

ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ দাম এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৬, ৮ ও ১৮ এপ্রিল স্বর্ণের দা‌ম বা‌ড়ি‌য়ে‌ছিল বাজুস। এর ম‌ধ্যে ৬ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল দুই হাজার ৬৫ টাকা। পরে ২০ এপ্রিল ৮৪০ টাকা কমানোর একদিন পর ২১ এপ্রিল আবার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।

এর দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২০৯৯ টাকা ও ২৫ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণ ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দিল বাজুস। অর্থাৎ তিন দিনে ভ‌রি‌তে স্বর্ণের দাম ক‌মেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।

;

টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪টি জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দু'হাত ভরে তাঁর বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনি এদেশের মেহনতি মানুষ তাঁদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে। মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) মন্ত্রী রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) আয়োজিত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা-সহ ১৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ডিপিডিটি'র মহাপরিচালক মোঃ মুনিম হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশ এখন কোন খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।

সিনিয়র শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় আমরা ২০১৩ সালে 'ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করি এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করি। বিশেষ অতিথি বলেন, আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একইসঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি, ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবস্থা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করা হয়। সেগুলো হলো যথাক্রমে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা। এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।

;