ভবিষ্যৎ কেবলই মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টালের



আলমগীর হোসেন

  • Font increase
  • Font Decrease

ভাবলে রূপকথার মতো লাগে! প্রযুক্তি দুনিয়ার ২০০৫ সাল পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের কথা চিন্তা করলে এখনও বিস্মিত হতে হয়। মোবাইল এলো, ইন্টারনেটের জাল ধীরে ধীরে ছেয়ে ফেলল বিশ্ব প্রকান্তারে মহাবিশ্ব। জীবন-যাপন, শিক্ষা, ব্যবসা, সমাজ প্রভৃতির চিরায়িত ধ্যান-ধারণা কীভাবে পাল্টে দিলো ও গেলো তা ব্যাখ্যা-বাহুল্য।

সাংবাদিক হিসেবে সংবাদমাধ্যমই আমাদের দিন-রাত। অন্তর্জালের প্রভাব থেকে এ মাধ্যমটিও যে রেহাই পায়নি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবার বিশ্বাস ছিলো, প্রিন্ট মিডিয়ার সূর্য্য কোনোদিনও অস্ত যাবে না! ব্যক্তিগতভাবে এ মাধ্যমটিতে প্রায় ৪০ বছর কাটিয়েছি বলে সম্পর্কটি নাড়ির।

দেখতে হলো, একদা সিংহের মতো প্রতাপশালী প্রিন্ট-মিডিয়ার অস্ত এবং ডিজিটাল-মিডিয়ার উদয়। অন্যরা যেটি বুঝতে পাঁচ-দশ বছর লাগিয়ে দিলো, পুব আকাশে ডিজিটাল মিডিয়ার লালচে আভা টের পেয়ে যাই আরও আগেই। নানান দেশে ঘোরার অভিজ্ঞতাও এক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে বৈকি। ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করি বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন নিউজপোর্টালের।

ধীরে ধীরে বেলা বাড়লো। নতুন সূর্য্যের তাপ বেড়েছে। তখনও সংবাদমাধ্যমের হর্তা-কর্তারা দ্বিধান্বিত— প্রিন্ট না অনলাইন মিডিয়া? কেউ প্রিন্ট-মিডিয়া আঁকড়ে থাকল, কেউ নৌকা ভাসালো নতুনের পথে। ২০১০-২০১৫ সালের মধ্যেই উত্তর পেয়ে গেলো দু-পক্ষই। বিশ্বের সব ঐতিহ্যবাহী ও প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলো একে একে ছাপা পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে ডিজিটাল মিডিয়ার পথে পা বাড়াতে বাধ্য হলো। বাংলাদেশেও এর ব্যতয় ঘটল না।

এরপরও একটি প্রশ্ন সামনে এসেই যাচ্ছিল— অনলাইন মিডিয়াই কী সংবাদমাধ্যমের একমাত্র ভবিষ্যৎ? এরও যুৎসই উত্তর দিয়ে দিলো একটি সমীক্ষা।

আন্তর্জাতিক চ্যানেল এইচবিও’র ‘লাস্ট উইক টু নাইট’ নামক এক অনুষ্ঠানে উপস্থাপক জন অলিভার প্রিন্ট মিডিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে এক রিপোর্ট উপস্থাপনা করেন। রিপোর্টে তিনি দেখান, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিজিটাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন থেকে রাজস্ব আদায় করেছে দুই (২) বিলিয়ন ডলার, যেখানে এই একই সময়ে প্রিন্ট মিডিয়া লোকসান করেছে ৩০ বিলিয়ন ডলার।

এটি কেবলই যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব। বাকি বিশ্বের চিত্র আমরা সহজেই আন্দাজ করতে পারি।

সুতরাং, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে বসে, এই আলাপ করা এখনও বোকামি ও পশ্চাৎপদ যে, অনলাইন মিডিয়াই সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ! এ আলোচনার অবসান ঘটেছে সেই ২০১৪-১৫ সালেই। কাজেই আগামী বিশ্বের সংবাদমাধ্যম ও এই কেন্দ্রিক ব্যবসা যে এই অনলাইনমাধ্যমেই, তা বুঝতে রকেট সায়েন্স পড়া লাগে না।

/uploads/files/089c4geeNZ2Eg3bHuGRa7Ohgu4BxotSjNBSYMQNd.png

একটা কথা বেশ প্রচলিত, বিশ্ব এখন হাতের মুঠোই! মজার ব্যাপার হলো, এই বাক্যটির দিনও শেষ। বিশ্ব এখন এক আঙুলের ছোঁয়ায়। প্রযুক্তির ভাষায় বললে, বিশ্ব আসলে ‘হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস’র স্ক্রিনে। হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস বলতে, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ফ্যাবলেট প্রভৃতি। এখনকার দিনে ল্যাপটপও আসলে সেকেলে।

কয়েকটি তথ্য দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে, গোটা বিশ্বে বর্তমানে স্মার্টফোন তথা মাল্টিমিডিয়া ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪.৭৬ বিলিয়ন অর্থাৎ ৪৭৬ কোটি। এবার বিশ্বের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে মিলিয়ে নিন।

ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন বলছে, ২০১৭ সালের জুন মাস অব্দি বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩.২ বিলিয়ন অর্থাৎ ৩২০ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর আওতাধীন।

আর আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৮৪.৫৪ মিলিয়ন (মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত) এবং মোবাইল ফোন সাবস্ক্রিপশন ১৪১.৬৭৯ মিলিয়ন (অক্টোবর ২০১৭ পর্যন্ত), তথ্য বিটিআরসি’র।

খুব সহজেই ধারণা করা যায়, আগামীর সংবাদ মাধ্যম ও এই কেন্দ্রিক ব্যবসা কোনদিকে যাবে ও কীভাবে হবে। উল্লিখিত, ‘হাতের মুঠোই গোটা বিশ্ব’র মতো অনলাইনই সংবাদমাধ্যমের ভবিষ্যৎ সেটিও প্রযুক্তিগত জায়গা থেকে সেকেলে হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তির এই এক ভালো দিক, সদা অগ্রগামী। আজকের আইফোন-৮ এর কাছে কালকের আইফোন-৭ সেকেলে। কাজেই বর্তমান সংবাদমাধ্যম কেবল অনলাইন হলেই হবে না, হতে হবে মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টাল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাল্টিমিডিয়ার আধুনিক সব সুবিধাই তাতে যোগ করতে করতে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই সেটি হবে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকা সংবাদমাধ্যম।

কেমন হতে হবে মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টাল

সহজ কথায়, মাল্টিমিডিয়া অর্থাৎ বহমুখী মাধ্যমের সুসমন্বয় ও কার্যকরী ব্যবহার। টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও, অ্যানিমেশন, হাইপার লিংক, পপআপ , ইন্টারেক্টিভ অপশন প্রভৃতি হলো এক একটি মিডিয়াম। এই সব সুবিধাই থাকতে হবে নিউজপোর্টালে।

তীব্র গতিশীল দৈনন্দিন জীবন-যাপনে এখন কারও সেই সময় নেই যে এক হাজার ওয়ার্ডের একটি লেখা বসে বসে পড়বে। হোক তা সে অনলাইনের। সেই জায়গাটি দখল করেছিল, স্থিরচিত্র। তাকে হটিয়েও জায়গা করে নিচ্ছে ভিডিও। দুই মিনিটের ভিডিওতে যদি পাঠক এক হাজার ওয়ার্ডের আদ্যপান্ত নিউজ পেয়ে যায় তাহলে কেন সে আধ ঘণ্টা সময় ব্যয় করবে! এবং করছেও না!

ভিডিও স্ট্রিমিং মিডিয়া ইউটিউবের দিনপ্রতি ভিউয়ার প্রায় ৪০ মিলিয়ন। আরেক জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট নেটফ্লিক্সে প্রতিদিন ১২৫ মিলিয়ন ঘণ্টা ভিডিও স্ট্রিমড্ হয়। ইউটিউব যেখানে ফ্রি, নেটফ্লিক্সে সেখানে টাকা খরচ করে দেখতে হয়। তাও মানুষ দেখছে। ইতোমধ্যেই স্রেফ ‘ভিডিও’ একাই গোটা বিশ্বের সংবাদমাধ্যম ও ব্যবসা ওলটপালট করে দিয়েছে। অন্যসব ক্ষেত্রের কথা না-ই-বা বললাম।

এই প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে, বিবিসি, সিএনএন, এপি, এএফপি, রয়টার্সের ইত্যাদির মতো প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলো ইতোমধ্যেই ভিডিও-নিউজ দেওয়া শুরু করে দিয়েছে। শুধুই কী তাই? আধুনিক মাল্টিমিডিয়ার সব সুবিধাই তাদের সাইটে রয়েছে এবং দিনকে দিন নতুন নতুন সব যোগ করে চলেছে।

/uploads/files/M5uwo9zBnAhwrCP9ZBNgwvLTwhUq199pzn2tIRLL.jpeg

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ ব্যবহার করছে সাইটে। কোনো নতুন পাঠক সাইটের একটি নিউজ পড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই পপআপ ও হাইপার লিংকে হাজির করে দিচ্ছে তার রুচি-পছন্দ অনুযায়ী আরও নানা খবর। ধীরে ধীরে রিডারের ডাটাবেজও তৈরি করে ফেলছে সে। বিভিন্ন সময় নোটিফিকেশন দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে, এই নিউজটি বোধহয় আপনি মিস করে যাচ্ছেন।

কাউকে আর বলে বোঝাতে হবে না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর প্রভাবের কথা। এগুলো এতো এতো জনপ্রিয় হওয়ার একটাই কারণ, একই সঙ্গে মাল্টিমিডিয়া সুযোগ-সুবিধা এবং ইন্টারেকটিভ অপশন। কার্যকরী ইন্টারেকটিভ অপশন থাকতে হবে, আধুনিক নিউজপোর্টালেও।

প্রচলিত নিউজ রিপোর্টারের ধারণা বদলে দিতে পারে এটি। যে কেউ, যেকোনো জায়গা থেকে নিউজসহ ছবি-ভিডিও পাঠিয়ে দিতে পারে নিউজরুমে। ইতোমধ্যেই ফেসবুকে আমরা এর সফল প্রয়োগ দেখেছি। মিশরে গোটা একটা গণঅন্দোলন তৈরি ও পরিচালিত হয়েছে শুধু ফেসবুক দিয়েই। কাজেই আধুনিক নিউজপোর্টালকে হতে হবে বহু কাজের কাজী অর্থাৎ মাল্টিটাস্কার ও মাল্টিসার্ভিসেস পোর্টাল।

এখনও পুরাতনপন্থী অনেক বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন যাদের এখনও সন্দেহ, অনলাইন মিডিয়ায় অর্থ আসবে তো? তাদের জন্য স্ট্যাটিস্টা পোর্টালের একটি তথ্য, ২০১৭ সালে কেবল ডিজিটাল অ্যাডভার্টাইজে খরচ করা হয়েছে ২২৯.২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। ভাবা যায়!

মাল্টিমিডিয়া সংবাদমাধ্যমের অন্যতম দাবিদার হিসেবে সদ্যই যাত্রা শুরু করলো ‘বার্তা২৪’। বাংলার, বাঙালির সংবাদ সারথি হয়ে এটি কাজ করে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই যাত্রায় সবার সহযোগিতা ও শুভকামনা মিলবে বলে আশা রাখে বার্তা২৪।

 

   

স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিকের হুমকিতে ২ সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীন স্বামী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিকের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন স্বামী

স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিকের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন স্বামী

  • Font increase
  • Font Decrease

স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক ইমরানের হুমকিতে দুই সন্তান নিয়ে অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন সিলেট নগরীর কুয়ারপাড় ইঙ্গুলাল রোডের ফুল মিয়ার ছেলে মো. রাজন। এ নিয়ে তিনি সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) দায়ের করেছেন। জিডিতে দুই শিশুসন্তানসহ নিজের নিরাপত্তা চেয়েছেন রাজন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেও তিনি সন্তানসহ নিজের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে রাজন জানান, ১২ বছর আগে একই এলাকার সুরুজ মিয়ার মেয়ে শাহানা বেগমকে (২৮) তিনি বিয়ে করেছিলেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স ১১ বছর।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আমার স্ত্রীর অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সন্দেহ হলে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সে নগরীর লালাদিঘিরপাড়ের ২৭নং বাসার এরশাদ মিয়ার ছেলে ইমরানের (২৮) সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত। এ অবস্থায় তার সাথে আমার ঝগড়াঝাঁটি লেগেই ছিল। এক পর্যায়ে গত ১৪ এপ্রিল ইমরান আমার কাছে আসে এবং শাহানাকে তালাক দিতে চাপ দেয়। আমি তা অস্বীকার করলে সে আমার দুই সন্তানসহ আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি শঙ্কিত হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি দায়ের করি।

সংবাদ সম্মেলনে রাজন আরও অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীকে গত ১৪ এপ্রিল ইমরান নিয়ে গেছে এবং তার বোনের কাছে রেখেছে। সে তাকে প্ররোচিত করে আমার জিডির বিপরীতে আমার এবং শাহানার ফুফাতো ভাই ফকির এবং তার বন্ধু বদলের বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ করে আবার তা প্রত্যাহারও করেছে।

সার্বিক পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত রাজন যখন-তখন ইমরান ও তার পক্ষের লোকজনের হামলার শঙ্কায় শঙ্কিত। তিনি তার নিজের এবং দুই ছেলে-মেয়ের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থানীয় ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিকন্দর আলী ও ১১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রকিব বাবলুসহ পুলিশ প্রশাসন এবং সচেতন এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

;

আশুলিয়ার গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, আহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
আশুলিয়ার গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, আহত ২

আশুলিয়ার গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, আহত ২

  • Font increase
  • Font Decrease

সাভারের আশুলিয়ায় একটি ফ্ল্যাটে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২ জন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা জোন-৪ এর উপসহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আশুলিয়ার কুঁরগাও এলাকায় শামসুদ্দিনের মালিকানাধীন ৫ তলা বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ফ্ল্যাটটি তামিম ইলেক্ট্রনিক্স নামে একটি দোকানের গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হত।

দগ্ধরা হলেন, পাবনা জেলা আমিনপুর থানা রাজনারায়ণপুর গ্রামের মতিন মোল্লার ছেলে সুমন মোল্লা (৩০)। তিনি তামিম ইলেকট্রনিক্সের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। এবং ওই বাড়ির ২য় তলার ভাড়াটিয়া মাজেদা বেগম (৫৫)।

দগ্ধ সুমনের ভাই সুজন মোল্লা বলেন, আমার ভাইয়ের শরীরের ৪৩ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আর ওই নারীর কি অবস্থা জানি না। আমার ধারণা তার অবস্থা আরও খারাপ।

তামিম ফার্নিচারের মালিক রাকিবুল ইসলাম বলেন, ওই ফ্ল্যাটে কোনো সিলিন্ডার ছিল না। ফ্ল্যাটে আমার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সুমন কোনো কাজে গিয়েছিল, তখন আগুনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া আহত নারী সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় আহত হয়েছে বলে শুনেছি। ৩ রুমের ওই ফ্ল্যাটে কিছু কিচেন র‍্যাক আর ম্যাট্রেস রাখা ছিল।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুনের খবর পেয়ে জিরাব ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে তার আগেই আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় আনুমানিক দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ১০ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা জোন-৪ এর উপসহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমরা অল্প আগুন পেয়েছি। সেটুকুই নির্বাপণ করা হয়েছে। আমরা পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। প্রাথমিক ধারণা, গ্যাস লিকেজ থেকে এ আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

;

কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম হ্রদ হিসেবে পরিচিত রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে দেশীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি ও অবমুক্ত করা মাছের পোনার স্বাভাবিক বৃদ্ধির লক্ষে ২৫ এপ্রিল থেকে আগামী তিন মাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে সকল প্রকার মৎস্য আহরণ-বিপণনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক আয়োজিত এক জরুরি সভায় হ্রদে মাছ ধরা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় জানানো হয়, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি ও অবমুক্ত করা মাছের পোনার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন মাসের জন্য মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আগামী ২৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ২৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে সব ধরনের মাছ আহরণ, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।

সভায় জানানো হয়, মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে কাপ্তাই হ্রদে অবৈধভাবে মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার পাশাপাশি নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।

মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে রাঙামাটির স্থানীয় বরফ কলগুলো বন্ধ রাখার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল প্রায় ২৫ হাজার তালিকাভুক্ত জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে।

সভায় রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, রাঙামাটিস্থ বিএফডিসি ব্যবস্থাপক, জেলার মৎস্য কর্মকর্তা আধির চন্দ্র দাশ, মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়াসহ মৎস্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

লাভ বেশি হওয়ায় ঘাস চাষ বেড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে বেড়েছে মাংসের উৎপাদন ও গ্রহণের হার। মাংসের সে চাহিদার প্রায় শতভাগ পূরণ হচ্ছে দেশীয় উৎস থেকে। আর সে চাহিদা পূরণে বেড়েছে পশু উৎপাদনও। তবে পশু পালনের ফাঁকা জমি ও প্রাকৃতিক ঘাস কমে যাওয়ায় বেড়েছে ঘাসের বাণিজ্যিক চাষ।

খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় অনেক কৃষকই এখন ঝুঁকছেন বাণিজ্যিক ঘাস চাষে। এতে করে কম খরচ ও কম পরিশ্রমে বেশি লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। বাড়ছে পশু উৎপাদন, মাংসের চাহিদা মেটাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে দেশ।

জানা যায়, আগে যেখানে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ও পরিবারের সবাই মিলে পরিশ্রম করেও ফসল উৎপাদনে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকাও টিকতো না, এখন ঘাস চাষে ফল হচ্ছে তার উলটো। বছরে এক বিঘা জমিতে মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ করেই আয় হচ্ছে ১৮-২০ হাজার টাকা। প্রতি বর্ষার পরে একবার ঘাস লাগিয়ে দিলেই তা পশুকে খাওয়ানো যাচ্ছে ৮-৯ মাস। প্রতিবার কাটার পর একবার করে সার প্রয়োগ করলেই ঘাস বড় হচ্ছে দ্রুত, ফলে দরকার হচ্ছে না বাড়তি পরিশ্রম বা টাকা খরচের।


ঘাস চাষিরা জানান, বর্তমান সময়ে ফসল চাষে অনেক ক্ষেত্রেই গুনতে হচ্ছে লোকসান। অন্যদিকে ঘাস চাষ সহজ ও লাভজনক হওয়ায় ফসলের বদলে ঘাস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। গরুর জন্য চাষ করা এসব ঘাসের মধ্যে আছে নেপিয়ার ও চাল্লা (স্থানীয় গরুর ঘাসের নাম) জাতীয় ঘাস। আবার গো-খাদ্যের তুলনায় ঘাস খাওয়ানোই খরচ কম হওয়ায় আগ্রহী হচ্ছেন খামারিরাও।

ফলে জেলার নবীনগর, বাঞ্ছারামপুরসহ প্রায় সব উপজেলায় বেড়েছে ঘাস চাষ। পশুপালনেও আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। ফসল ফলানোর পাশাপাশি একটি-দুটি গরু চাষে হচ্ছেন স্বাবলম্বী। আবার এসব এলাকায় প্রবাসী কর্মী বেশি থাকায়, প্রবাস জীবন শেষে সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে অনেকেই গড়ে তুলছেন গরুর খামার, স্বপ্ন দেখছেন স্বাবলম্বী হওয়ার।


সম্প্রতি নবীনগরের ছলিমগঞ্জ ইউনিয়নে গরুর খামার দিয়েছেন সৌদি ফেরত সফিক মিয়া। প্রায় ৬ বছরের প্রবাস জীবন শেষ করে গত বছর দেশে ফিরেন তিনি। উদ্যোক্তা মনোভাব ও গরুর খামারে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নই এই পথে নিয়ে আসে তাকে। ২২টি গরু দিয়ে শুরু করা তার এই খামারের জন্য নিজস্ব প্রায় এক একর জমিতে ঘাস চাষ করেছেন তিনি। চাষ করা সে নেপিয়ার ও চাল্লা দিয়েই পূরণ হচ্ছে গরুর খাবারের চাহিদা।

প্রথমবারের মতো গরু পালন শুরু করলেও সামনের কোরবানি ঈদে সে গরু বিক্রি করে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন জানিয়ে গরু খামারি সফিক মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে গরুর খাবারের যে দাম তাতে করে গরু থেকে লাভ করাটা অনেকটায় দুরূহ। তবে নিজস্ব জমিতে ঘাস চাষে কমেছে সে গো-খাদ্যের চাহিদা। গরুও পাচ্ছে তাজা ঘাসের পুষ্টি। আলহামদুলিল্লাহ্, এতে করে আমার গরুর গ্রোথও ভাল।’

সফিক বলেন, ‘আমি যে ঘাস চাষ করেছি, তাতে করে আরও দুই মাস নিশ্চিন্তে গরুকে খাওয়াতে পারবো। এরপর বর্ষা আসলে কিছুটা সমস্যা হবে। তখন অনেকটাই গো-খাদ্য ও খড়ের উপর নির্ভর করতে হবে। তবে এর আগেই যেহেতু অধিকাংশ গরু কোরবানিতে বিক্রি করে দিবো, তাতে আমাকে সমস্যায় পড়তে হবে না।’

স্থানীয় আরেক কৃষক জাকির হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘সবজি-ফসল কইরা কোনো লাভ নাই। ঘরের সবাই মিইলা যেই কষ্ট করি হেই তুলনায় দাম পাই না। এরপরে আবার ট্রাক্টর খরচ, সারের টেহা (টাকা), নিরানি (আগাছা পরিস্কার) সব মিলাইয়া অনেক টেহা খরচ হয়। অনেক সময় আবার ফসল মাইরও যা। কিন্তু গরুর ঘাস করলে কিচ্ছুই লাগে না। একবার খালি পারা দিয়া লাগায় দেই, আর মাঝে মধ্যে একটু সার দেই। ২-৩ হাজার টেহা খরচ করলে বছরে কোনো কষ্ট ছাড়াই এক বিঘা জমিতে ২০-২২ হাজার টেহা আয় অয় (হয়)।’

;