নওগাঁয় এক পরিবারের চার প্রতিবন্ধী ভাই-বোন, মানবেতর জীবনযাপন
শৈশবে ছুটে বেড়িয়েছেন গ্রামের পথে প্রান্তরে। অথচ এখন হাঁটার শক্তি নেই, পারেন না দাঁড়াতেও। কোথায় যেতে হলে কারো সাহায্য নিতে বা প্লাস্টিকের টুল টেনে করতে হচ্ছে চলাফেরা। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নে হরিপুর গ্রামের একই পরিবারের শারীরিক প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোন। এ চার ভাই-বোনের বয়স যখন ১০ থেকে ১২ বছর পর থেকেই হাত-পা ছোট, চিকন ও শরীর বাঁকা হয়ে পড়ে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন ৩৩ বছর বয়সী আব্দুল হাকিম, ৩১ বছর বয়সী আলমগীর, ৩০ বছর বয়সী সালমা ও ২৭ বছর বয়সী আব্দুর রহমান। কিন্তু চার ভাই বোনের জীবনে ছন্দপতন ঘরে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সের পর থেকেই। বয়স বাড়লেও বাড়েনি তাদের আর উচ্চতা। আস্তে আস্তে তাদের হাত-পা ছোট, চিকন ও বাঁকা হয়ে পড়ে, তারা হয়ে যান শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। পরে অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখালেও কোন লাভ হয়নি। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে দেখাতে পারেনি ভালো কোন ডাক্তারও। ছেলে-মেয়েদের এমন অবস্থা দেখে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন মা। এরপর চার ভাই-বোনকে দেখাশোনার জন্য তাদের বাবা আবারো বিয়ে করেন। বর্তমানে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে না পারায় তাদের দৈনন্দিন কাজে কাজে সহায়তা করেন সৎ-মা মো. কমলা। নিজের সন্তান না হলেও প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোনকে নিজের সন্তানের মতোই পরম আদরে দেখাশোনা করছেন তিনি। এইভাবেই সংগ্রাম করে জীবন-জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবারটি।
পরিবারটিকে সহায়তায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান স্থানীয়রা।
প্রতিবন্ধী আব্দুর রহমান ও আলমগীর বলেন, আমাদের বয়স যখন ১০ বছর পর্যন্ত আমরা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলাম। বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতাম, আড্ডা দিতাম, হাটে-বাজারে যেতাম। অনেক স্মৃতি ছিল। এখন ছোটবেলার কথা মনে পড়লে কষ্ট হয়, অনেক সময় কান্নাও করি। ভবিষ্যতে আমাদের দেখবে কে? বাইরের কোন মানুষজন আমাদের চার ভাই-বোনের চলাফেরা দেখলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবে না।
তারা আরও বলেন, আমরা চার ভাই বোন অনেক কষ্ট আর সমস্যার মধ্য দিয়ে বেঁচে আছি। চলাফেরা করা যায় না টুল টেনে না হলে হামকুর পেরে কোনরকম চলাফেরা করতে হয়। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ভালো না হওয়ায় কোন অসুখ হলে ঠিকমতো ওষুধও কিনে খেতে পারি না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বা কোন বিত্তবান মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়ালে একটু উপকার হতো।
তাদের প্রতিবন্ধী বোন সালমা বলেন, ১০ বছরের পর থেকে আমি আর স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারি না। টুল নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। আমার ভাইদের চেয়ে আমার কষ্ট আরও বেশি। সব সময় অসুখ-বিসুখ লেগে থাকে।
সৎ-মা মোছা. কমলা বলেন, আমার বিয়ে হয়ে এখানে আসার পর থেকেই তাদেরকে টুল টেনে চলাফেরা করতে দেখছি। তাদের সব কাজ আমাকেই করে দিতে হয়। তাদের কথা চিন্তা করে নিজে কোন সন্তান নিইনি। নিজের সন্তানের মতই তাদেরকে সেবাযত্ন করে যাচ্ছি। আমার এই চার সন্তানদের পাশে কেউ দাঁড়ালে তাদের জন্য খুব ভালো হতো।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তাদের বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিতে বলেছি। এছাড়াও চিকিৎসা মাধ্যমে তাদেরকে ভালো করা গেলে চিকিৎসার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
বগুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু
বগুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে বগুড়া রেল স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের আনুমানিক বয়স ৬০ থেকে ৬৫ বছর হবে বলে পুলিশের ধারণা। তিনি ভবঘুরে ছিলেন বলে জানিয়েছেন বগুড়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খাইরুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ব্যক্তি বোতল ও প্লাস্টিকের জিনিস বস্তায় ভরে ট্রেনে উঠার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বস্তা বড় হওয়ায় তিনি উঠতে পারছিলেন। এসময় ট্রেন ছেড়ে দিলে তিনি ট্রেনের নিচে পড়ে চাকার সাথে আটকে যান। ওই অবস্থায় তাকে সরকারি আজিজুল হক কলেজ গেইট পর্যন্ত ট্রেন টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়।
রেলওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ খাইরুল ইসলাম বলেন, সকাল ১০টায় সান্তাহারগামী কলেজ ট্রেনে উঠতে গিয়ে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধ কাটা পড়ে মারা গেছেন। জানতে পেরেছি তিনি ভবঘুরে ছিলেন। তবে তার পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে রাখা হয়েছে।
ডিএমপির ইন্টিলিজেন্স পুলিশিং বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে ও পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ইন্টিলিজেন্স ভিত্তিক পুলিশিং বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রশিক্ষণ কর্মশালাটির উদ্বোধন করেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ (জিআরএসপি) আয়োজিত দুই দিনব্যাপি কর্মশালাটি চলে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এবং বুধবার (২৪ এপ্রিল)। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে দুই দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মোট ৬২ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, 'ডিএমপিকে আধুনিক ও সর্বশেষ কলাকৌশল সম্পর্কে আপডেট রাখা এবং প্রশিক্ষণ দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আমি নিশ্চিত যে, এই কর্মশালা, আমাদের অফিসারদের সক্ষমতা আরও উন্নত করবে এবং ঢাকার নাগরিকদের জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য সাহায্য করবে।
জিআরএসপি’র সিনিয়র রোড পুলিশিং উপদেষ্টা রাসেল নাইমান প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি পরিচালনা করেন। যুক্তরাজ্য পুলিশের বিভিন্ন পদে ৩০ বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন তিনি। কর্মশালায় বৈশ্বিকভাবে অনুশীলন করা ‘সেফ সিস্টেম এপ্রোচ’ অনুসারে সড়ক নিরাপত্তার ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হয়।
এই প্রশিক্ষণের ফলে পুলিশ কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক ও জাতীয় রোড পুলিশিং কৌশলগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করার মাধ্যমে সড়ক-সংঘর্ষজনিত মৃত্যু ও হতাহত কমাতে সক্ষম হবেন।
কর্মশালা প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে রাসেল নাইমান বলেন, 'এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুলিশ অফিসারদের সক্ষমতা বাড়বে। তারা তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং সড়কে মৃত্যু হ্রাসে যথাযথ ভূমিকা নিতে পারবে।
সীতাকুণ্ডে রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের রেলক্রসিংয়ে ইঞ্জিন ত্রুটির কারণে থেমে আছে মালবাহী ট্রেন। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটে তীব্র গরমে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটার দিকে বারইয়ারহাট পৌরসভার রেলক্রসিং মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে।
চিনকি আস্তানা রেলস্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা সিরাজুর ইসলাম বলেন, রেলের ইঞ্জিন বসে গেছে, মেরামত করা হচ্ছে। অতিদ্রুত মেরামত করে সচল করা হবে। গাড়ি পারাপার ব্যাহত হওয়ায় সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সীতাকুণ্ডে মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।