আ'লীগের প্রচার সম্পাদকের মানবেতর জীবন



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্মৃতিচারণা ও নিজের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন নূরুল হক, ছবি: বার্তা২৪

স্মৃতিচারণা ও নিজের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন নূরুল হক, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

'৫০ বৎস্যর ধইর‌্যা দল করি। সুবিধা চাই নাই, কিন্তু প্রাইপ্যডাও তো পাইলাম না। অভাবে পইর‌্যা তিন মাইয়্যার লেহাপড়া বন্ধ অইলো। কেউ সাহায্য করে নাই। ছোড মাইয়্যাডা যাও লেহাপড়া করছিল। কিন্তু টেকার অভাবে ইন্টারের ফরম ফিলাপ হয় নাই। ২০০৮ এর ইলেকেশনের পর ক্যাপ্টিন সাব মন্ত্রী হইয়্যা কইল্যো আমারে ঘর কইর‌্যা দিবো। কিন্তু পাই নাই। বয়স অইছে, ভাতা নাই। বাইচ্যা আছি না মইর‌্যা গেছি, কোনো নেতা খবর লয় না। দলের কথা না বাদই দিলাম গরিব মানুষ হিসেবেও তো আমি কিছু পাইলাম না। তাই বুইর‌্যা বয়সে পান-বিড়ি বেইচ্যা সংসার চালাই।'

বার্তা ২৪.কমের কাছে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নূরুল হক (৬৬)। তার বাড়ি উপজেলার পৌর শহরের বাড়িওয়ালাপাড়া মহল্লায়। সে ওই গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে পৌর শহরের সিনেমা হলে মোড়ে ফুটপাতে নূরুল হকের সাথে কথা হয় বার্তা২৪.কমের

তিনি বলেন, 'সংগ্রামের (স্বাধীনতা যুদ্ধ) আগে থেইক্যা আওয়ামী লীগ করি। একাত্তুরে যহন যুদ্ধ শুরু হইলো তহন আমি টেনিং লওনের লেইগ্যা ইন্ডিয়া রওনা হইলাম। পূর্বধলা গিয়া হোনলাম টেনিংয়ে লোক নেয়া বন্ধ। এলাকায় ফিরা আইলাম। যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন অইলো। মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী (এমসিএ) ভাইয়ের প্রেসে কাম নিলাম। আওয়ামী লীগও করতাম তার লগেই। পচাত্তুরে যহন বঙ্গবন্ধুরে মাইরা ফেললো। ভয়ে তহন কেউ আওয়ামী লীগের নাম লইতো না। তহন আমরা হাতেম ভাইয়ের লগে থাইক্যা আওয়ামী লীগ করছি। পুলিশের দৌড়ানি খাইয়্যা বেড়াইছি। কিন্তু দল ছাড়ি নাই। কিন্তু নিজের টেকা, মোটরসাইকেল ও লাডির জোর না থাহায় অহন আমরার মতো কর্মীরে কেউ দাম দেয় না।'

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/01/1548994548544.jpg

১৯৭৭ সালে গৌরীপুর পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন নূরুল হক। ৮১ সালে পৌর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৮৬ সালে সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হন। এখনো তিনি এই পদে বহাল আছেন।

দাম্পত্য জীবনে নূরুলের স্ত্রী ও ৩ মেয়ে রয়েছে। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। বর্তমানে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িওয়ালা পাড়ার ছোট্ট একটি বাড়িতে তিনি থাকেন।

কথা প্রসঙ্গে জানা গেলো, ২০০৭ সালে হাতেম আলী মিয়ার প্রিন্টিং প্রেস বন্ধ হওয়াতে জীবিকার তাগিদে পৌর শহরের সিনেমা হলে মোড়ের ফুটপাতে চৌকি বিছিয়ে পান-বিড়ির ব্যবসা শুরু করেন নূরুল । প্রতিদিন ২ হাজার বিক্রি হলে তার লাভ ২০০ থেকে ২২০ টাকা। এই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।

নূরুল হক বলেন, 'এহন বয়স অইছে। শরীলে মেলা রোগ-পীড়া। কিন্তু ঘরে বইয়্যা থাকলে তো কেউ ভাত দিবো না। আমার আর আমার বউয়ের ডেলি ৬০ টেকার ওষুধ লাগে, চাউল-ডাইল কিনতে হয়। কিন্তু যে টেকা কামাই করি হেইডা দিয়া তো অহনি সংসার চলে না। কয়দিন পরে যহন বিছনাত পরবাম তহন আমরা বুড়া-বুড়িরে কেডায় দেখবো? ভাতাডা পাইলেই তো উপহার অইতো।'

এরই মাঝে সন্ধ্যা নেমেছে। সড়কে জ্বলে ওঠেছে নগরবাতি। এমন সময় নূরুলের কথার সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জুয়েলের সাথে।

তিনি বলেন, '৭৫ পরবর্তী সময়ে দলের দুর্দিনে নূরুল হক ভাইয়ের মতো কর্মীরা অন্যায়-নির্যাতন সহ্য করে আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছেন। এরপর দীর্ঘদিন দল ক্ষমতায় থাকলেও হাইকমান্ড থেকে সে কোনো সাহায্য পায়নি। বর্তমানে সে কষ্টে জীবনযাপন করছে।'

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের কথার রেশ টানতেই নূরুলের চোখে জল। কান্না ভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, 'অনেক দিন ধইর‌্যাই তো কষ্টে আছি। পত্রিকায় যহন দেহি নেত্রী শেখ হাসিনা দুস্থ মাইনস্যের সাহায্য করতাছে, তহন নিজের কথা ভাইব্যা খুব খারাপ লাগে। মনে মনে ভাবি আমার খবরডা যদি নেত্রীর কাছে পৌঁছাইত। তাইলে তো নেত্রী আমার জন্য কিছু হইলেও করতো।'

 

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;