‘মেথরের ছেলে বইল্যা ইশকুলে পড়তে পারি নাই’



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর(ময়মনসিংহ)
হরিজন সম্প্রদায়ের রিকশাচালক নয়ন বাশফোড়, ছবি:বার্তা২৪.কম

হরিজন সম্প্রদায়ের রিকশাচালক নয়ন বাশফোড়, ছবি:বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ইশকুলে (ইস্কুলে) গেলে কেলাসের (ক্লাসের) কেউ কথা কয় না। একলগে বেঞ্চে বইতে দেয় না। কিছু জিগাইলে ‘মেথর’ বইলা গালি দেয়। হুদাই আমার লগে কাইজ্জ্যা (ঝগড়া) করে, মারতে চায়। স্যারের কাছে কইলেও বিচার করে না। বিস্কুট দিয়া বাড়িত পাডাইয়া দেয়। ঠিকমতো পড়াইতো না। আমরাতো  গরিব। ভালা ইশকুলে পড়নের টেকা নাই। তাই টু পর্যন্ত পইড়া ইশকুল ছাইড়া দিছি। অহন পেটের দায়ে রিকশা চালাই”।

বার্তা২৪.কমের কাছে কথাগুলো বলছিল হরিজন সম্প্রদায়ের রিকশাচালক নয়ন বাশফোড়(১৩)। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের গো-হাটা সংলগ্ন হরিজন কলোনিতে। তার বাবা মৃত মিন্টু বাশফোড়।

স্থানীয় ঘোষপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নের সময় বর্ণবৈষ্যমের শিকার নয়নের পড়াশোনার ইতি ঘটে।

সোমবার বিকালে রিকশাচালক নয়নের দেখা মেলে গৌরীপুর পৌর শহরের হাতেম আলী সড়কে। রিকশা নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিল নয়ন। ইশারায় ডাক দিতেই জিজ্ঞাসা করেন কই যাইবেন বাবু।

যাত্রীর অপেক্ষায় থাকতে থাকতে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে গল্প হয় নয়নের।

বার্তা২৪.কমকে নয়ন বলেন, আমি ছোট থাকতেই বাবা মইরা গেছে। হেরপর মা পৌরসভার কাম কইর‌্যা (পরিচ্ছন্নতা কর্মী) অনেক কষ্ট কইর‌্যা আমগো সংসারডা চালাইছে। আমরাও অভাবে মইধ্যে খাইয়্যা-না খাইয়্যা বড় অইছি। ইচ্ছা ছিলো লেহাপড়া কইর‌্যা চাকরি করমু। তয় মেথরের ছেলে বইলা ইশকুলে পড়তেই পারলাম না। ইশকুল ছাড়নের পর মা কইতো বাড়িত বইয়্যা থাকলে খাইবি কি। টেকা কামানির একটা পথ বাইর কর। হেরপর থেইক্যা ভাড়ায় রিকশা চালানি ধরছি। তয় এই ছোড শইল লইয়্যা রিকশা চালাইতে মেলা কষ্ট অয়।

নয়নের মা মালতী বাশফোড় পেশায় পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী। তার পরিবারের চার ভাই-বোনের মধ্যে বড় ভাই ফকিরা বাশফোড় ও বড় বোন রাধা বাশফোড় বিয়ে করে আলাদা হওয়ার পর পরিবারকে সাহায্য করে না। দ্বিতীয় ভাই রাখাল বাশফোড় পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করে। ছোট ভাই মুন্না বাশফোড় ইশকুলে না পড়তে পেরে বাড়িতেই থাকে।

প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রিকশায় যাত্রী নিয়ে ছুটে চলেন নয়ন। দিনশেষ তার আয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।  সেখান থেকে রিকশার মালিককে ১৫০ টাকা দিতে হয়। বাকি যে টাকা থাকে সেখান ৫০ টাকা নিজের জন্য রেখে বাকিটা মায়ের হাতে তুলে দেন নয়ন।

বার্তা২৪.কমকে নয়ন বলেন, রিকশা চালানির সময় ইশকুলের পোলাপাইন আমারে দেখলেই টিটকারি মাইরা কয় ‘মেথরের ছেড়া রিকশা চালায়’। আবার আমি ছোড (ছোট) বইল্যা অনেক পেসেঞ্জার (যাত্রী) ধমক দিয়া ভাড়া কম দেয়। তহন খুব খারাপ লাগে। মনে মনে ভাবি কেউ যদি আমারে লেহাপড়ার খরচ দিতো, তাইলে আমি সত্যিই রিকশা চালানি ছাইড়্যা ইশকুলে ভর্তি হইতাম।

নয়নের সঙ্গে  কথা বলতে বলতে সূর্যটা তখন অস্ত যাওয়ার অপেক্ষায়। এমন সময় একযাত্রী এসে বললেন, ‘এই ছেলে রিকশা চালক কোথায় গেছে বলতে পারো? কথার রেশ টেনে নয়ন বলেন, আমিই চালক, কোথায় যাবেন বাবু? বিস্মিত হয়ে যাত্রী নয়নকে বললেন, তোমার তো এই বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা। তুমি রিকশা চালাও কেনো বাবা?। নয়নের সোজাসাপটা জবাব ইশকুলে তো মা ভর্তি করছিল। তয় মেথরের ছেলে বইল্যা ইশকুলে পড়তে পারি নাই। অহন পেটের দায়ে রিকশা চালাই”।

 

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;