ছেলেবন্ধুদের বাড়িতে আনায় স্কুলছাত্রীর জরিমানা, মারধর
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ছেলে বন্ধুদেরকে বাড়িতে নিয়ে এসে গল্প করার দায়ে এক স্কুলছাত্রীকে ৪০ হাজার টাকা ও তার ছেলে বন্ধুদেরকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন স্থানীয় মাতবররা।
জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ঐ স্কুলছাত্রীকে লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন মাতবররা। পরে পরিবারের স্বজনরা ঐ স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনার পর স্কুলছাত্রীর বাবা আব্দুল সাত্তার বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট গ্রাম্য মাতবরসহ মোট ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এজাহারনামীয় একজনসহ মোট তিন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। তবে ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামিরা ধরা পড়েনি।
আব্দুল সাত্তার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, তার মেয়ে স্থানীয় এমএ রাজ্জাক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় সে তার তিনজন ছেলে বন্ধুকে নিয়ে বাড়িতে আসে। পরে আপ্যায়নের জন্য তাদেরকে বিস্কুট খেতে দিয়ে গল্পে মেতে উঠে। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই এলাকার কয়েক জন যুবক ঘরের বাইরে থেকে তাদেরকে তালাবদ্ধ করে রাখে।
পরে ঐ রাতেই গ্রাম্য মাতবররা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পিয়াজচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে স্কুলছাত্রীকে ৪০ হাজার ও ছেলে বন্ধুদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ঘটনার তিন দিন পরে মাতবররা ঐ স্কুলছাত্রীকে বাড়ির পাশের রাস্তায় বেদড়ক মারধর করেন। পরে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন ঐ ছাত্রী।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হরিরামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদ হাসান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এ বিষয়ে মানবাধিকারকর্মী আইনজীবী দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘সালিশে মারধর করার কোনো এখতিয়ার কারো নেই।’ এটি একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা জানিয়ে তিনি এর তিব্র নিন্দা জানান।