সাতক্ষীরার অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
সাতক্ষীরার সাত উপজেলায় ভোট গ্রহণ রোববার (২৪ মার্চ)। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা।
শনিবার (২৩ মার্চ) থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছানো হচ্ছে। তবে সাত উপজেলার ৫৯৭টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৪৯৭টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা। ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেন্দ্রসহ সর্বত্র সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে ভোট গ্রহণে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
নির্বাচনের দিন ছয় স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে ঢাকা থাকবে সাতক্ষীরা। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে কোনো রকম অরাজকতা সহ্য করা হবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাজ্জাদুর রহমান বলেছেন, কেন্দ্র দখলের চিন্তা যদি কেউ করে, আর আমরা যদি সেটা জানতে পারি, এমনকি কারো যদি বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনাও থাকে, তাহলে সে জীবন নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবে না।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ১৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৩১ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ২৩ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে শুধু দেবহাটা উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওজিয়ার রহমান (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি) ছাড়া সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীই আওয়ামী লীগ অথবা অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা:
এখানে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কলারোয়া উপজেলায়:
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিন পদেই লড়ছেন দুইজন করে প্রার্থী।
তালা উপজেলা:
এই পরিষদের নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দুইজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজনসহ মোট ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আশাশুনি উপজেলা:
চেয়ারম্যান পদে দুইজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে।
দেবহাটা উপজেলা:
চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা:
চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শ্যামনগর উপজেলা:
দুই পদের বিপরীতে লড়বেন মোট ১০ জন প্রার্থী। এখানে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৩৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে ১২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ। তালা উপজেলার ৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৬টি ঝুঁকিপূর্ণ, কলারোয়া উপজেলার ৭৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬৫টি ঝুঁকিপূর্ণ, দেবহাটা উপজেলার ৪০টি কেন্দ্রের মধ্যে ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ, আশাশুনি উপজেলার ৮৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬৯টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, কালিগঞ্জ উপজেলার ৭৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫২টি ও শ্যামনগর উপজেলার ৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৪টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাজ্জাদুর রহমান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেন্দ্রে বাড়তি পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া মোবাইল টিম সব সময় প্রস্তুত থাকবে। এক হাজার ৮৬৪ জন পুলিশ সদস্য তিন স্তরে নিরাপত্তা দেবেন। এর বাইরে আনসার, বিজিবি এবং র্যাবের সমন্বয়ে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।