মেঘপাহাড়ের ডাক-৯

কোহ রামহাহ ও কিনরেম ফলস



মাহমুদ হাফিজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চেরাপুঞ্জিতে গাড়ি থেকে প্রথম যে জায়গাটিতে নামলাম, তাকে অফবিট স্পট বললেই বেশি মানায়। এর নাম কোহরামহাহ বা মোট্রপ। কোহ রামহাহ আসলে দুইশ ফুট উচ্চতার এক দানবীয় গোলা আকৃতির পাথর। ওপরের শীর্ষটা গম্বুজের মতো। তলদেশ থেকে দুইশ ফুট উঁচু গোলাকার পাথর। পাহাড়ের ঢালে এমন একটি জায়গায় তা প্রাকৃতিকভাবে স্থাপিত হয়ে আছে, যার পাশে একই আকৃতির আরও দুটি ছোট পাথর, মধ্য দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ঝর্ণার কলধ্বণি। জঙ্গলময় পাহাড়ি গিরি থেকে অবিরাম নেমে আসছে এই পানি। কোহ রাহমাহ বা পিলার রকের পাশ গড়িয়ে পড়ছে কয়েকহাজার ফুট নিচে। নিচে ঘনজঙ্গলময় দূর্গম প্রাকৃতিক নৈসর্গ। অদূরে চোখের সামনে বাংলাদেশের সমতলে বয়ে যাওয়া নদী।

আমাদের হোস্ট-কাম গাইডগণ বলছেন, ‘বাংলাদেশে এই উচ্চতার সমান্তরালে মেঘ জমে থাকে। এখানে বাংলাদেশ দেখার জন্য যারা আসেন, মেঘ থাকলে তারা পরিষ্কার দেখতে পান না। তোমাদের ভাগ্য ভাল, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ওপর মেঘ নেই।‘ গাড়ি চালক, এককাঠি সরেষ। আগ বাড়িয়ে বলল, ‘ওই যে বাঁয়ের দিকে একটু দূরে তাকান, সাদা সাদা বিল্ডিং, ওইটাই সিলেট।‘ দেখলাম সত্যিই তো সিলেট দিব্যি দেখা যাচ্ছে অদূরে। আর আমাদের নিচে জঙ্গলের ভিতর থেকে বাংলাদেশমুখো স্রোতস্বিনী ছুটে চলেছে সমতল বাংলাদেশের দিকে, তা জাদুকাটা নদী হয়ে ছাতক, কোম্পানিগঞ্জের ভূগোল মাড়িয়ে পৌঁছেছে সুরমায়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/18/1560864337506.jpg

কোহ রামহাহ’র ঝর্ণার ওপর তৈরি করা হয়েছে ছোট্ট কংক্রিটের কালভার্ট। তা সংযুক্ত করেছে একবিঘার মতো আয়তনের একটি উঁচু টিলাকে। এর চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনি। এটা ভিউপয়েন্ট। ভিউপয়েন্ট বা প্রেক্ষণবিন্দু হলেও তা কেবল বাংলাদেশের সমতল,পাশ থেকে কোহ রামহাহ রক দেখা আর জঙ্গলময় প্রকৃতি ছুঁয়ে সমতল থেকে উড়ে আসা মেঘলা বাতাস উপভোগ। আরও বাড়িয়ে বলতে গেলে ঝর্ণার উৎসের কলধ্বণি শুনে মাতোয়ারা হওয়া। নিচে গড়িয়ে যাওয়া অবিরাম জলধারার উৎসের ভিত্তি করে তৈরি হচ্ছে যে নয়নাভিরাম জলপ্রপাত, তা দেখতে হলে যেতে হবে অন্য ভিউ পয়েন্টে। মানুষের দেখার চোখটি এরকমই। একেকজন যেমন একেকভাবে কোনকিছু দেখে। তেমনি একেক জায়গা থেকে কোন দৃশ্য একেকভাবে দেখা যায়। আমরা কোহ রামহাহ পাথর আর বাংলাদেশ ভিউপয়েন্ট দেখতে এসেছি, জলপ্রপাত নয়। যাহোক আমাদের পর্যটক দল ছোট্ট কালভার্টের ওপর দাঁড়িয়ে নানাভঙ্গিতে ছবি তোলে। ব্রিজের নিচ দিয়ে ছুটে চলা ঝর্ণার পানিকে যতোটা ক্যামেরার ভিউয়ের ভেতর আনা যায় তার কসরত করতে থাকে।  নানা স্পটে দাঁড়িয়ে নানা ভঙ্গিতে ছবি তোলে।  

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/18/1560864406471.jpg

আমি আর ভ্রমণসঙ্গী কামরুল হাসান কবিতা লিখি। প্রকৃতির অপত্যস্নেহের মধ্যে নেমে আমরা কোথাও হারিয়ে গেছি। ছবি তোলার হৈচৈ ছেড়ে আমরা দু’জন দুদিকে মগ্ন। আমি পানির কলতান শুনে টিলার বেষ্টনি পেরিয়ে আরেকটু ঢালুতে নেমে যাই। আবিস্কার করি টিলার নিচে ও আশপাশের খাদ দিয়ে অন্তহীন পানি নেমে যাওয়ার কলকল শব্দ। এটি কোহ রাহমাহ’র কাছ দিয়ে নামা ঝর্ণার চেয়ে আলাদা। এই পানিও কোন স্পটে গিয়ে হয়তো তৈরি করেছে চমৎকার জলপ্রপাত। খ্যাত জলপ্রপাত এর উৎসে অনতিক্রম্য গিরিখাদের ভেতর দিয়ে নেমে আসে যেসব নাম না জানা জলধারা, তার প্রত্যেকটিকে তো আর আলাদা নামে ডাকা যায় না ! আসলে প্রকৃতি অন্তহীন, অধরা, অবারিত। চলছে নিজস্ব ধারায়। নামের ছকে বেঁধে মানুষকে একে করে তুলেছে বাণিজ্যিক।

কোহ রামহাহ ভিউপয়েন্টে বাংলাদেশ দেখতে দেখতে এই প্রাচীন দানবীয়  পাথরটি সম্পর্কে খাসিদের প্রচলিত বিশ্বাস সম্পর্কে বলতে থাকেন আমাদের হোস্ট স্ট্রিমলেট ডেখার। তিনি শিক্ষিত গুণী মানুষ। খাসিদের ইতিহাস-সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান টনটনে। বলেন, ‘এই পাথর ছিল এক লোভী শয়তানের মালিকানাধীন। অতি লোভে সে মানুষের সমস্যা তৈরি করতো। তার থেকে মুক্তির জন্য লোকজন তাকে আয়রন ও ধারালো নখ মিশ্রিত খাবার খেতে দেয়। এই খাবার খাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। তার ফেলে যাওয়া ঝুড়িটি পরে এই  মহাপাথরের আকৃতি ধারণ করে’। গাড়ির কাছে উঠে আসার সময়ও দেখি, ডেখারের বলা ইতিহাসটি সাক্ষ্য দিচ্ছে  রাস্তার ওপর টানানো একটি সাইনবোর্ডেও।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/18/1560864429525.jpg

জায়ান্ট রকে আমরা কোন পূজার  সামগ্রী দেখলাম না। পাহাড়ের ঢালু, দূর্গম রাস্তা পেরিয়ে এখানে খুব কম পর্যটক আসে। নৈসর্গিক শোভাময় জায়গাটি পর্যন্ত রাস্তা, নিরাপত্তা বেষ্টনি, ঝর্ণার ওপর ছোট কালভার্ট বানিয়ে পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যেই সীমিত রেখেছে খ্রীষ্ট ধর্ম অনুসারী খাসিরা। তা দেখতে দেখে ভ্রমণতৃষ্ণা মেটানোর  ক্ষেত্রে ধর্মের ভেদাভেদ নেই।

কোহ রামহাহ পাহাড়-জঙ্গলের যে লোকেশনে, এর খুব কাছেই ভারতের সপ্তম বৃহত্তম জলপ্রপাত কিনরেম। পাহাড়ের ওপর থেকে একহাজার এক ফুট উচ্চতা ধারণ করে জলপ্রপাতটি ঘনঅরণ্যে  হারিয়ে যাচ্ছে।  ঢেউ খেলানো পাথুরে পাহাড়গাত্রে এটি তিনটি স্তুর তৈরি করেছে। ফলে এর সৌন্দর্য প্রলম্বিত। প্রথম স্তর থেকে চোখ সরিয়ে দ্বিতীয়টিতে সবশেষে এর তৃতীয় স্তরটির ঝলধারা গভীর অরণ্যে গিয়ে পড়ছে দেখা যায়। সোহরা-শেলা সড়ক আরও নিচে নেমে আবার ওপরে উঠে এঁকেবেঁকে এই জলপ্রপাতের তৃতীয় স্তরের ওপর দিয়ে চলে গেছে। প্রপাতের জলধারাকে অবাধ করতে রাস্তার ওপর বানানো হয়েছে সেতু। দূর্গম সড়কটি চলে গেছে বাংলাদেশের হালুয়াঘাট সীমান্ত পর্যন্ত। সারাক্ষণই এর ওপর দিয়ে গাড়ি, ট্রাক চলাচল করে। যাওয়ার আসার পথে সেতুর ওপর গাড়ি থামিয়ে বা গতি কমিয়ে যাত্রী ও চালকরা জলঝর্ণাটিকে একনজর দেখে নেয়। ব্রিজের সঙ্গে নিচে নামার সিঁড়ি ।  বড় বড় পাথরের মধ্যে এসে পড়ছে কিনরেমের পানি ফেনিলশুভ্র পানি। যারা এই স্পট ধেকে কিনরেম উপভোগ করতে চান, তারা পানিও ছুঁয়ে দেখতে পারেন। তবে এখান থেকে শেষের স্তরটিই কেবল দৃষ্টিগোচর হয়।

মনে পড়ে, ইউরোপের বৃহত্তম জলপ্রপাত সুইজারল্যান্ডের সাফাউজেনে অবস্থিত রাইনফলের কথা। রাইনফল সংলগ্ন রাজপ্রাসাদের নাম স্কলসি লাউফেন ক্যাসেল। এই নামেই ছোট্ট স্টেশনও। দ্রুতগামী ট্রেন রাইনফল দর্শনাকাঙ্খী যাত্রীদের জন্য একমিনিটের বিরতি দেয় স্কলসি লাউফেনে। প্রাসাদের নিচ দিয়ে নির্মিত সুরঙ্গপথ পার হয়ে ট্রেন রাইন নদীর সেতু অতিক্রম করে যায়। রাইন নদীর পানি পাহাড়ে বাঁক নিয়ে আকস্মিক তৈরি করেছে জলপ্রপাত। নদী অতিক্রম করে ট্রেন মূহুর্তে গিয়ে থামে নৈহাউজেন স্টেশনে। সেতু পার হওয়ার সময় জলপ্রপাতের কলধ্বণি আর ফেনায়িত শুক্র জলরাশি দেখে যাত্রীরা ঘোরের মধ্যে পড়ে। রাইনফল অবশ্য চেরাপুঞ্জির মতো প্রাকৃতিক না। একে কেন্দ্র করে খানাপিনা, রাফটিং, পাটাতনে দাঁড়িয়ে উৎক্ষিপ্ত ফেনিল শুভ্র পানি ছোঁয়া, ছবি তোলার মতো বাণিজ্যিক প্যাকেজের মধ্যে আটকে দেয়া হয়েছে।

আমরা কিনরেম দর্শনে গেল পাশ্ববর্তী থাংখারাং পার্কে। আধ কিলোমিটারের মতো সমতল রাস্তা দিয়ে পাহাড়ের দিকে গেলেই থাংখারাং। বড়সড়ো চত্ত্বরের পাশে গুটিকয়েক হস্তশিল্পের দোকান। পার্কের প্রবেশপথে টিকেট কাউন্টার। দশ টাকা করে এন্ট্রি ফি, ক্যামেরার জন্য বাড়তি টাকা। পাঁচ হেক্টরের বেশি আয়তনের থাংখারাং পার্কের শেষ মাথায় লুকআউট ডেক। বলতে পারি দৃশ্য পাটাতন। এর বেষ্টনিগুলো বাংলাদেশের পতাকা লাল-সবুজ রঙে রঞ্জিত। কিনরেম ফলসকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে যারা ছবি-সেলফি তুলতে চায়, তাদের জন্য জায়গাটি আদর্শ। এখান থেকে বাংলাদেশও দেখা যায়। আমাদের সঙ্গী কন্যা, জায়া, জননীদের আর পায় কে! তাঁরা ছবি সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমরাও তাই।

পার্কে ঢোকার মুখে জলিকে একটি ক্যাপ কিনে দিয়েছিল খাসি হোস্ট বাখিয়া মুন। ইতোমধে তাঁর সঙ্গে বেশি ভাব হয়েছে জলির। ক্যাপের রঙ তাঁর পছন্দ না হলেও দোকানেও ভিন্নরঙা ক্যাপ ছিল না।  প্রসঙ্গ উঠতেই স্ট্রিমলেট ডেখার নিজের মাথার হলুদাভ ক্যাপটি খুলে জলির মাথায় পরিয়ে দিলো। জলি মহাখুশি।

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;