নবজাতকের ১৮ ভাষা



মরিয়ম সুলতানা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
নির্দিষ্ট কিছু আচরণ শিশুদের ভাষা হিসেবে কাজ করে

নির্দিষ্ট কিছু আচরণ শিশুদের ভাষা হিসেবে কাজ করে

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্ভবত পৃথিবীর প্রায় সকল মা-বাবার জন্য সবচেয়ে হতাশাজনক অভিজ্ঞতা হলো নবজাতকের ভাষা বুঝতে না পারা। শিশু কথা বলতে না পারা পর্যন্ত তার মনোভাব বুঝে ওঠা আসলেই ভীষণ কঠিন এক কাজ। কখনো তো একে অসম্ভব বলেও মনে হতে পারে। কিন্তু শিশু কী বলতে চাইছে, তার ঠিক কী প্রয়োজন; এটা বোঝা নাকি আবার ততটা কঠিনও নয়, যতটা আমরা ভাবি। শিশুর হাসি, কান্না এবং আরো কয়েকটি লক্ষণ আছে যা তাদের বিকল্প ভাষা হিসেবে কাজ করে। অনেক মা-বাবারাই হয়তো তা বুঝতে পারেন না বা লক্ষ করেন না।

শিশুর কান্না, শব্দ, অঙ্গভঙ্গি ঠিক কী অর্থ বহন করছে; প্রিসিলা দান্সতানের বিখ্যাত “দান্সতান বেবি ল্যাঙ্গুয়েজ” তত্ত্ব আপনাকে তা মুহূর্তেই বুঝতে সহায়তা করবে এবং আপনার সাথে আপনার শিশুর যোগাযোগকে আরো সহজ করে দেবে। যদিও “দান্সতান বেবি ল্যাঙ্গুয়েজ” বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। তবে ২০০৬-এর নভেম্বরে ‘অপেরা উইনফ্রে শো’র হাত ধরে এই তত্ত্ব তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। বিজ্ঞানীরা সংশয় পোষণ করতেই পারেন কিন্তু প্রিসিলা দান্সতান বাজি ধরে বসে আছেন—অনেক মা বাবা তার এই তত্ত্বের সাথে একমত হবেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/14/1563098052713.jpg
প্রিসিলা দান্সতান ◢

 

উপায় ১ | শিশুর কান্নার ধরন

ক্ষুধার কান্না : শুরুতে শিশু মৃদুভাবে কাঁদে। কিন্তু যখন তার কান্না কেউ শোনে না অথবা তাকে খাওয়ানোও হয় না, তখন সে গগনবিদারী কান্না জুড়ে দিতে পারে। আপনি যদি দেখেন আপনার শিশু তার মাথা ঘোরাচ্ছে, মুখ দিয়ে টিক টিক জাতীয় শব্দ করছে, নিশ্চিত থাকুন এটা ক্ষুধার কান্না।

ডাকার কান্না : যদি দেখেন আপনার শিশু থেমে থেমে ৫-৬ বার কাঁদছে এবং প্রতিবার কান্নার মাঝে ২০ সেকেন্ড করে অপেক্ষা করছে, এর অর্থ আপনার শিশু অপেক্ষা করছে যেন তাকে কোলে তুলে নেওয়া হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ না আসে, নির্দিষ্ট বিরতিতে তার এই কান্নাকাটি চলতেই থাকে।

ঘুমানোর কান্না : আমরা যখন অতিরিক্ত ক্লান্ত থাকি, আমরা কিছুটা ভেঙে পড়ি, একটু ঘুমাতে চাই। শিশুদের ক্ষেত্রেও তাই। যখন তারা ঘুমাতে চায় কিন্তু পারে না, তখন তারা তাদের দুই চোখ বন্ধ করে কাঁদতে থাকে, কখনো কানও ঘষতে পারে।

ব্যথার কান্না : এই কান্না অবিরাম চলতে পারে এবং অন্যান্য কান্নার চেয়ে অনেক বেশি জোরালো হতে পারে। শিশু যত বেশি ব্যথার মধ্যদিয়ে যাবে, কান্নার আওয়াজও তত বেশি জোরালো হবে। কিন্তু শিশু যখন ক্লান্ত থাকে এবং কাঁদার শক্তি পায় না, তখন তাদের কান্না ক্লান্তিকর এবং নিস্তেজ মনে হতে পারে।

অস্বস্তির কান্না : যখন শিশুর কান্না একঘেয়ে মনে হয় এবং সে অবিরাম কাঁদতেই থাক; এর অর্থ, হয় তার অতিরিক্ত গরম লাগছে, না হয় ঠান্ডা লাগছে, অথবা তার ডাইপার পরিবর্তন করা দরকার। এসময় শিশু অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার কারণে ধনুকের মতো করে শরীর বাঁকাতে পারে।

শরীরবৃত্তীয় কান্না : শারীরিক অস্বস্তির (পেটে ফাঁপা, মূত্র কিংবা মলত্যাগ) জন্য এই কান্না হয় ক্লান্তিকর এবং তারস্বরের।

পরিবেশগত কান্না : সবচেয়ে বিড়ম্বনাপূর্ণ কান্না হলো এটা। উপরের সবগুলোই কোনো না কোনো কিছু সম্বন্ধে ধারণা দেয়। কিন্তু এ বেলায় আপনার শিশু যদি একটু বিরক্ত কিংবা হতাশ বোধ করে, পরে সে তার সেই হতাশা কিংবা বিরক্তি প্রকাশের জন্য নিরলসভাবে কাঁদতেই থাকবে।

উপায় ২ | শিশুর নড়াচড়া

মুষ্টিবদ্ধ : আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন, যখন শিশু ক্ষুধার্ত থাকে তখন তার হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় থাকে। যদি আপনি সময় মতো তার সেই মুষ্টিবদ্ধ অবস্থা লক্ষ করতে পারেন, তবে সে যাত্রায় আপনি তার সেই তুমুল কান্নার দমক এড়াতে পারবেন।

পিঠ বাঁকানো : এটা সাধারণত ২ মাসের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যখন শিশুর পেটে পীড়া হয় তখন সাধারণত সে এটা করে। কিন্তু এটা যদি সে খাওয়ার পরে করে, তবে বুঝতে হবে যে তার পেট ভরে গেছে। আর যদি খাওয়ানোর সময় করে, অর্থ হলো সে খেতে চাচ্ছে না। এক্ষেত্রে শিশুর বয়স যদি ২ মাসের বেশি হয়, তবে এটা কিছুটা তাদের খামখেয়ালিপনা কিংবা ক্লান্তি নির্দেশ করে।

মাথা ঘুরানো : অধিকাংশ শিশুদের জন্য এটা হলো একপ্রকার প্রশান্তিময় নড়াচড়া। এভাবে হয় তারা ঘুমিয়ে যায়, অথবা ধীরে ধীরে শান্ত হয়।

পা ছোঁড়া : এটা পেটের পীড়া নির্দেশ করে। পা ছুঁড়ে তারা তাদের ব্যথা কমানোর চেষ্টা করে।

হাত ঝাঁকানো : যখন শিশুরা বিকট কোনো শব্দ শুনে, উজ্বল আলো দেখে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে যায়; তখন তারা তাদের বাহু ঝাঁকায়, এটা বোঝানোর জন্য যে তারা ভয় পেয়েছে।

কান ধরে রাখা : কান ধরা সাধারণত একটা শিশুসুলভ বৈশিষ্ট্য। কিন্তু যদি আপনি দেখেন যে আপনার শিশু লাগাতরভাবে তার কান আঁকড়ে ধরে রাখছে, তবে আপনি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন।

উপায় ৩ | শিশুর তৈরিকৃত শব্দ

নেহ—জিহ্বা তালুর উপরিভাগে ঠেলে তারা একজাতীয় শব্দ তৈরি করে, এরমাধ্যমেও তারা এটা প্রকাশ করার চেষ্টা করে যে তারা ক্ষুধার্ত।

আও—যদি শিশু ঠোঁট ভাঁজ করে এ জাতীয় শব্দ করে তবে বুঝতে হবে সে ক্লান্ত এবং ঘুমে কাতর।

এহ—যদি শিশু ঢেঁকুর তোলে, তবে বুঝতে হবে তার অন্ননালীতে আর কোনো অতিরিক্ত গ্যাস নেই।

ইরররহ—যখন শিশু অস্বস্তির মাঝে থাকে, যেমন ব্যথা কিংবা পেটে ফাঁপা; এই শব্দ তৈরি করে সে তখন তার বিরক্তি দূর করার চেষ্টা করে।

হেহ—যখন শিশু স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না, অসন্তুষ্ট থাকে, তখন সে এই শব্দ তৈরি করবে। অস্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করবে এবং হাত পা ছুঁড়বে।

এগুলি হয়তো সবসময় সব পরিস্থিতিতে মনে রাখাও সম্ভব নয়। তবে ভাষা রপ্ত করার আগে নবজাতকের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় বিকল্প ভাষা হিসেবে এসবের কার্যকারিতা রয়েছে বলে অনেক মা বাবা অন্তত একমত।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;