(পর্ব-১)

তৈমুর লঙ : ঘোড়ার পিঠে বিশ্ববিজয়



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
মায়ের দিক থেকে ধরলে তৈমুরের শিরায় ছিল চেঙ্গিসের রক্ত

মায়ের দিক থেকে ধরলে তৈমুরের শিরায় ছিল চেঙ্গিসের রক্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

চেঙ্গিস খানের মৃত্যুর পর একশ বছর পেরিয়ে গেছে। তার সাম্রাজ্য খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে আছে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে। অনেকেই রীতিমতো তখতবিহীন। চেঙ্গিসের এক পুত্রের নাম চাগতাই, তার মৃত্যুর পর বংশধররা ১২২৭ সাল থেকে ১৩৬৯ সাল পর্যন্ত মধ্য এশিয়ায় শাসন অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল। তার নাম অনুসারেই বংশধরদের নাম হয় চাগতাই বংশ।

চাগতাইয়ের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসে তার নাতি কারা হালাকু। কিন্তু এ দফায় বেশিদিন টিকতে পারেননি। মোঙ্গল নেতা কুয়ুক খান তাকে সরিয়ে চাগতাইয়ের পঞ্চম পুত্র ইসু মসুকিকে সিংহাসনে বসান। মোঙ্গল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রভূমি কারাকোরামে স্থিত মঙ্গু খানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে হত্যা করা হয় ইসু মসুকিকে। ফলে আবার ক্ষমতায় আসেন কারা হালাকু। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী ওরগানা সাময়িকভাবে শাসনকার্য চালাতে থাকেন। সময় হলে ১২৬৬ সালে মসনদে বসেন কারা হালাকুর পুত্র মোবারক শাহ।

চাগতাই সাম্রাজের তারুণ্যে তার অবস্থান


চাগতাইদের মধ্যে তিনিই প্রথম গ্রহণ করে ফেলেছিলেন ইসলাম ধর্ম। ফলে শাসন ব্যবস্থাতে আগাগোড়া পরিবর্তন আসে। আগেকার অভিজাত ও প্রতিষ্ঠিতদের বিষয়টা না মেনে নেওয়াই স্বাভাবিক। শীঘ্রই তাকে সরিয়ে দিয়ে সামনে আসলেন চাচাত ভাই বুরাক খান। বুরাক খানের পর পুত্র দুয়া খান এবং তারও পরে দুয়া খানের তিন পুত্র ইসেন বুকা, কাবাক এবং তারমাশিরিন একের পর এক গদিতে বসেন। সর্বশেষ জনের নাম তারমাশিরিন, যিনি ক্ষমতায় ছিলেন ১৩২৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৩৪৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে আলাউদ্দীন নাম নেন।

তৈমুর পর্ব

আলাউদ্দীনের মৃত্যুর পর চাগতাই সাম্রাজ্য চরম গোলযোগে পতিত হয়। তখন চাগতাই মোঙ্গলদের সাথে তুর্কিদেরও যোগাযোগ বেড়ে গেছে। ঠিক সেই রকম এক বংশধর তরুণী তাকিনাহ খাতুন, যার বিয়ে হয়েছিল আমীর তুরঘাই নামের তুর্কি দলপতির সাথে।

আট দশটা বিয়ের মতো এই বিয়েটাও সাধারণ হতে পারত; কিন্তু হয়নি। কারণ তাদের ঘরে এমন এক সন্তান জন্ম নেয়, যার হাতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন ইতিহাস। আমৃত্যু রহস্যময় মানুষটির নাম তৈমুর; জীবনের প্রত্যেকটি ঘটনায় তার বিস্ময়কর নাটকীয়তা সাহিত্যিকের কল্পনাকেও হার মানায়। শত্রু শিবিরের ধ্বংসস্তূপের ওপর তার নৃশংস উল্লাস আর একই সাথে শিল্পের প্রতি অপরিসীম মমত্ববোধ—বিপরীত বৈশিষ্ট্য খাপ খেয়েছিল তার সাথে। শত্রুকে যুদ্ধের মাঠে রেখেই মজে থাকতে পারতেন দাবা খেলায়। ইতিহাসের অনেকেই তাকে ‘এ ম্যান অব প্যারাডক্স’ বলে ডাকতে পছন্দ করেন।

তার রহস্যময়তার জন্যই ঐতিহাসিকদের কাছে তিনি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু


১৩৩৬ সালে মধ্য এশিয়ার কেস নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আমীর তুরঘাই ছিলেন বারলাস গোত্রের গুরগান শাখার প্রধান। গুরগান শব্দের মানে গৌরবময় আর তৈমুর মানে লৌহ। নিজের জীবনে নামের অর্থ ভালোভাবেই প্রমাণ করেছেন আমীর তৈমুর গুরগান।

বাল্যকাল থেকেই তার দাপুটে স্বভাবের পরিচয় পাওয়া যেতে থাকে। সামরিক বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন মাত্র বারো বছর বয়সেই। পিতার মৃত্যুর পর থেকেই মূলত নানা বিপদ আর প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে থাকেন। তখন ট্রান্সঅক্সিয়ানার সিংহাসন নিয়ে গোলযোগ চলছে। মঙ্গোলীয় শাসনকর্তা তুঘলক তৈমুর খানের আক্রমণের কারণে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন তৈমুর। সন্তুষ্ট হয়ে তুঘলক খান প্রথমে শাসক এবং পরে পুত্রের উপদেষ্টা মনোনীত করেন। কিন্তু শীঘ্রই ষড়যন্ত্রের কারণে সমরকন্দ ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।

এক ভাগ্যবিড়ম্বিত জীবন

চরম সহায়হীন অবস্থায় এক হতভাগ্যের জীবন কাটছে তখন তৈমুরের। ভাগ্যান্বেষণে কী না করেছেন? খিভার শাসনকর্তার কাছে সাহায্যের আবেদন করলে তিনি মুখে হ্যাঁ করলেও বাস্তবে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। অবস্থা বুঝতে পেরে মরুভূমিতে পলায়ন করেন তৈমুর। সময়টা ছিল আসলে তার পরীক্ষার, অন্তত ভাগ্যবিধাতা তাকে প্রস্তুত করছিলেন এভাবেই। নাহলে বিপদের পরে আরো বিপদে কেন পড়বেন? একদল তুর্কি তাকে বন্দী করলে তিনি আরো একবার কঠিন কৌশলে সেখান থেকে পলায়ন করলেন।

ভাগ্য বিড়ম্বিত তৈমুর এখানে-সেখানে ঘুরে ক্লান্ত। কোথাও আশার কোনো বাতি নেই। তারপরেও তিনি অধৈর্য হননি। ইতোমধ্যে সিস্তানের শাসনকর্তা জালালউদ্দীন মাহমুদ এক বিদ্রোহ দমনের জন্য তার কাছে সাহয্য প্রার্থনা করল। তিনি সাড়া দিলেন। অধিকৃত হলো বিদ্রোহীদের দূর্গ।

এত দ্রুত কি আর ভাগ্য বদলায়? দ্রুত পাল্টে গেল দাবার ছক। শত্রুরা যাবার আগে জালালউদ্দীনকে তৈমুরের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে যায়। তাছাড়া তৈমুরের সম্ভাবনা এবং ব্যক্তিত্বের জন্য তিনি তাকে ভবিষ্যৎ বিপদ হিসাবে গণ্য করলেন। ফলে আক্রমণ করলেন তৈমুরকে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করলেও পায়ে গুরুতররূপে আঘাত পান। সারাজীবন আর সেই পা ভালো হয়ে ওঠেনি। এই খোঁড়া পায়ের জন্যই তার নামের সাথে ‘লঙ’ যুক্ত হয়।

পরবর্তী-জীবনে আর পা-টা ঠিক হয়নি


সিস্তান বিজয়ের পর তার চোখ পড়ল সাম্রাজ্য বৃদ্ধির দিকে। ধীরে ধীরে কুনদুজ থেকে কেস পর্যন্ত দখল করে আধিপত্য বৃদ্ধি করলেন তৈমুর। ততদিনে তুঘলক খানের মৃত্যু হয়ে পুত্র খাজা ইলিয়াস পরবর্তী শাসক হিসাবে সমরকন্দের গদিতে বসেছেন। সুযোগ পাওয়া মাত্রই আক্রমণ করে সমরকন্দ দখল করে নেন তৈমুর। এবার যেন পা রাখার একটা জায়গা হলো।

ক্ষমতায় আরোহণ

এতদিন এতগুলো অভিযানে তৈমুরের সাথে আরো এক ব্যক্তি সবসময় পাশে ছিলেন—আমীর হুসাইন। ক্ষমতার প্রবেশদ্বারে এসে তাদের বন্ধুত্বে ফাটল ধরল। আমীর হুসাইন সাবেক শাসনকর্তার পুত্র বলে দুজনের সমান যোগ্যতার অর্জনকেও তিনি নিজের হাতে রাখলেন। উপরন্তু বারলাস বা তৈমুরের গোত্রের ওপর কর বাড়িয়ে দিলেন। মনঃক্ষুণ্ণ তৈমুর তার সীমাবদ্ধ ক্ষমতাকে মেনে নিলেন উদারভাবে।

সময় তো আর একরকম যায় না। হঠাৎ তৈমুরের প্রিয়তমা স্ত্রী আলজাই মৃত্যুবরণ করলেন। আলজাইয়ের আরেক পরিচয় ছিলে আমীর হুসাইনের বোন হিসাবে। মূলত আলজাইয়ের কারণে আত্মীয়তার বন্ধন হেতু এতদিন সংঘর্ষ হয়নি। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তা সম্ভব হলো। তৈমুর এবার ক্ষমতা হাতে নেবার জন্য সচেষ্ট হলেন।

আরো পড়ুন ➥ চেঙ্গিস খান : রহস্যময় এক বিশ্ববিজেতা

প্রথম দিকে আমীর হুসাইন মোটামুটি নিশ্চিন্ত ছিলেন নিজের শক্তির অধিকতার কারণে। কিন্তু জাঠ বিদ্রোহ দমনের জন্য দীর্ঘ ছয় বছর ব্যস্ততার দরুন শক্তি অনেকটাই ক্ষয়ে এসেছিল তার। এই সুযোগটাই নিলেন কৌশলী তৈমুর। দু্ই পক্ষের মধ্যকার সিদ্ধান্তমূলক যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হলেন হুসাইন। দীর্ঘ হতভাগ্য জীবনের শেষে ১৩৬৯ সালে সিংহাসনে আরোহণ করলেন আমীর তৈমুর। রাজধানী হলো সমরকন্দ। যেন অন্ধকারের বুক ছিঁড়ে সবেমাত্র ভোর হলো।

পারস্য বিজয়

তৈমুরের বিশ্বাস ছিল—“আসমানে যেমন একজন খোদা, জমিনেও তেমনি একজন বাদশাহ থাকবে।” তাই সিংহাসন লাভের সাথে সাথেই রাজ্য বিজয়ে মনোনিবেশ করেন। মধ্য এশিয়ার রাজনৈতিক গোলযোগ তাকে উক্ত অঞ্চল জয় করতে প্ররোচিত করে। ১৩৬৯ সাল থেকে ১৩৮০ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময় জাঠ এবং খাওয়ারিজম রাজ্যের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকেন তিনি। তারপর নজর ঘুরান পারস্যের দিকে। ১৩৮০ সালে তৈমুর খোরাসান আক্রমণ করে শাসক গিয়াসউদ্দীন পীর আলিকে পরাজিত করেন। তারপর একে একে দখল করেন হেরাত, কান্দাহার এবং কাবুল। কালাত-ই নাদিরী এবং তুরশীজ নামে দুটি দুর্গ বিজয় করেন।

সমসাময়িক শিল্পীর আঁচড়ে তৈমুরের পারস্য আক্রমণ


তৈমুরের পরের লক্ষ্য সিস্তান। সিস্তানের যুবরাজ কুতুবউদ্দীন শাহের নিকট সন্ধিপ্রস্তাব পাঠানো হলো। তারা প্রস্তাবে তেমন কোনো গুরুত্ব দিল না। বরং নতুন গজিয়ে ওঠা শাসক ভেবে আক্রমণ করে বসল। তার মাশুল গুনতে হলো শীঘ্রই। তৈমুর প্রবল প্রতাপে তাদের পরাজিত করলেন। পরাজিত সিস্তানিরা আরো বড় ভুল করল পরে রাতের অন্ধকারে আবার আক্রমণ করে। এবার তৈমুরের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। শুধু বিজয় অর্জন করেই থেমে গেলেন না; নিলেন চরম প্রতিশোধ। ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তা পরিণত হলো জনমানবহীন শ্মশানে। এই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে পি সাইক্স বলেছেন, “নগরটি এখন হিংস্র জন্তু ও পেঁচাদের আবাসে পরিণত হয়েছে।”

খোরসান ও সিস্তান বিজয় নিশ্চিত হলে তৈমুর বের হন উত্তর পারস্য বিজয়ের উদ্দেশ্যে। ১৩৮৪ সালে অতিক্রম করলেন অক্সাস নদী। দীর্ঘ একমাস অবরোধের পর দখলে এলো অস্ত্রাবাদ। নিজের রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করলেন রাই, মাজেনদারান, সুলতানিয়াসহ একের পর এক নগরী। এক ভাগ্য বিড়ম্বিত তরুণ থেকে এখন একটা সম্ভাবনাময় রাজ্যের অধিপতি।

কিন্তু তখনও তৈমুরের গল্পের মূল আখ্যান শুরুই হয়নি। গোল্ডেন হোর্ড থেকে অটোম্যান সুলতান অব্দি তার কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হয়েছে সিনেমার মতো। সেই গল্প আসবে পরবর্তী পর্বে।

● পর্ব-২ পড়তে ক্লিক করুন

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;