সংসদীয় দলের নেতার প্রশ্নে জাপায় মতপার্থক্য



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদীয় দলের নেতা ও রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারছে না জাতীয় পার্টি। রওশন এরশাদ চান, নিজেই সংসদীয় দলের নেতা হতে। আর জিএম কাদের-ই হোক দলটির সংসদীয় তথা বিরোধীদলীয় নেতা এমনটাই চাচ্ছেন তার অনুসারীরা।

কাদের অনুসারীরা এখানে পার্টির গঠনতন্ত্রকেও টেনে আনছেন ঢাল হিসেবে। পার্টির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানই হবেন সংসদীয় দলের প্রধান। প্রয়াত এরশাদের একচ্ছত্র নির্দেশনায় চলা দলটির গঠনতন্ত্রে এই ধারা যুক্ত করা হয় দলের অষ্টম কাউন্সিলে (২০১৬ সাল)। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসতে রাজি ছিলেন না প্রয়াত এরশাদ। সেই সুযোগে বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছিলেন তখনকার দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

প্রথমে বিষয়টি সহজভাবে নিলেও পরে বিষয়টি এরশাদের জন্য নানা রকম বিড়ম্বনার সৃষ্টি করেছিল। বিশেষ করে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা এলে প্রটোকল অনুযায়ী রওশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর উল্টো ঘটতো এরশাদের ক্ষেত্রে, সাক্ষাৎ চেয়ে উল্টো ধরনা দিতে হয়েছে দু-একটি ক্ষেত্রে।

নানা কারণে বছর খানেক পরে এরশাদ নিজেই বিরোধীদলীয় নেতা হতে চেয়েছিলেন। তখন বেঁকে বসেছিলেন রওশন এরশাদ। সে সময়ে দলের সংসদ সদস্যরাও রওশনের পেছনে একাট্টা ছিলেন। এরশাদ চাইলেও সরাতে পারেননি রওশনকে। দশম সংসদের শেষদিন পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতার চেয়ারে ছিলেন রওশন।

সেই ক্ষোভ থেকেই ২০১৬ সালের কাউন্সিলে দলের গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে পার্টির চেয়ারম্যানকে পদাধিকার বলে সংসদীয় দলের নেতা বানানো হয়। এখন সেই সংশোধনীকে সামনে আনা হচ্ছে সংসদীয় দলের নেতা প্রশ্নে।

কিন্তু রওশন এরশাদের কাছে গঠনতন্ত্র কি পাত্তা পাবে? তিনি ইতোমধ্যেই সংসদীয় দলের নেতা হতে চান বলে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এরশাদের মৃত্যুর পর জিএম কাদের তার বাসায় দেখা করতে গেলে খোদ রওশনই এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, 'তুমি পার্টির চেয়ারম্যান হয়ে দলকে সংগঠিত কর। আমি আর কয়দিন বাঁচব। বিরোধীদলীয় নেতা হই। আমি মরে গেলেতো তুমিই সব দেখবে'।

জানা যায়, প্রথমদিকে জিএম কাদেরেরও নাকি এতে তেমন আপত্তি ছিল না। কিন্তু এই নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে উভয় সংকট দেখতে পাচ্ছেন তার অনুসারীরা। রওশন যদি সংসদীয় দলের নেতা হন, তখন সংসদ সদস্যরা হবেন রওশনমুখী। এতে দলের মধ্যে নেতৃত্বের সংকট তৈরি হতে পারে। এমনিতেই অনেক সিনিয়র নেতা জিএম কাদেরের ডাকে সেভাবে সাড়া দিচ্ছেন না। আবার বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা বাংলাদেশ সফরে এলেও প্রটোকল পাবেন না জিএম কাদের।

এ কারণে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন জিএম কাদেরের অনুসারীরা। কিন্তু ভাবলেই কি সব হয়ে যাবে? এমনটি ভাবতে পারছেন না অনেকে। রওশন বেঁকে বসলে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। তাতে সলতে জোগান দেওয়ার জন্য অনেক সিনিয়র নেতাই গোঁফে তা দিচ্ছেন। অনেক সংসদ সদস্যও রয়েছেন এই দলে। আবার কেউ কেউ রওশনের সঙ্গে রয়েছেন ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য করার কৃতজ্ঞতা থেকে।

জোর করে কিছু করতে গেলে হিতের বিপরীত ঘটতে পারে। বিশেষ করে গঠনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে জিএম কাদের বিরোধীদলীয় নেতা হতে চাইলে। রওশনের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন তার একাধিক অনুসারী। এ জন্য বিশেষ ব্যক্তিত্বের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছেন উভয় শিবির। এরই প্রেক্ষিতে যোগাযোগ রক্ষা করেও চলছেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।

একই রকম সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে। এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হয়ে পড়া এই আসনে রওশন এরশাদ তার ছেলে সা'দ এরশাদকে (রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ) প্রার্থী করতে চান।

অনেকদিন ধরেই ছেলে সা'দকে রাজনীতিতে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন রওশন। বিগত সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম সদর আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে দাবি তুলেছিলেন। রওশন এরশাদ চান, সা’দই হোক জাতীয় পার্টিতে এরশাদের উত্তরসূরি।

মালয়েশিয়া প্রবাসী সা’দ বিগত নির্বাচনের আগে থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এরশাদ যখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অন্তিম শয্যায়, সরব দেখা গেছে তাকে। মা রওশন এরশাদের সঙ্গে প্রায় হাসপাতালে যেতেন। ছবি তুলে তা মিডিয়ায় পাঠানো হতো। বাবা এরশাদের মরদেহের সঙ্গে রংপুর চলে যান। পরদিন সেখানে কবর জিয়ারত করেন। এবার ঈদের নামাজও পড়েছেন রংপুরে।

কিন্তু রওশন এরশাদের এই অভিপ্রায়ে ছাড় দিতে রাজি নন রংপুরের স্থানীয় নেতারা। কাদেরপন্থী বলে পরিচিত রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সেক্রেটারি এসএম ইয়াসির নিজেও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। এছাড়া আরও হাফ ডজন আগ্রহী প্রার্থী রয়েছেন জাপার দুর্গ খ্যাত এই আসনে।

অসুস্থ এরশাদ যখন কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদ ও বিরোধীদলীয় উপনেতার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন তখন প্রকাশ্য আন্দোলনে নেমেছিলেন ইয়াসিররা। আগে যে গ্রুপিং কিছুটা গোপন ছিল ওই আন্দোলনে তা প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। রংপুরের নেতাদের কাঁধে সওয়ার হয়ে জাতীয় পার্টির মসনদে ফেরেন জিএম কাদের। তবে ভাবির মন যোগাতে গিয়ে জিএম কাদের কি পারবেন অন্যদের উপেক্ষা করতে?

রংপুর জাপার নেতারা মনে করেন, এটা করলেও আসনটি হারাতে হতে পারে। কারণ সা'দের বিষয়ে রংপুরের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এমনকি রওশনের বিষয়েও অনেকের অ্যালার্জি রয়েছে। ২০০৮ সালের উপ-নির্বাচনে রংপুর থেকে নির্বাচিত হলেও রংপুরবাসী তাকে সেভাবে কাছে পায়নি।

শনিবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যের যৌথসভায় বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। বৈঠক শেষে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, 'রংপুর উপ-নির্বাচনের প্রার্থী প্রশ্নে একটি কমিটি করে দেওয়া হবে। তারাই চূড়ান্ত করবেন প্রার্থী। এর আগে স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে চার জনের নাম প্রস্তাব চাওয়া হবে। সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন প্রশ্নেও ওই কমিটি সিদ্ধান্ত দেবেন'।

তবে দলের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই বলেও দাবি করেন জাপা মহাসচিব।

   

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্দেশনায় মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক। এতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া মন্ত্রী ও সাংসদদের স্বজনদের তালিকা করারও নির্দেশনা দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন প্রভাব মুক্ত রাখার যে কঠোর নির্দেশনা তা সবাইকে তিনি অবগত করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৈঠকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, ভাই বা নিকটাত্বীয়রা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী যেনো না হয় তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের জানিয়েছেন।

;

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বারিধারায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ অংশ নেন। ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন সারাহ কুক।

এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দুপুরের দিকে বৈঠক হয়েছে বলে আমি জানি। তবে, বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানা নেই।

;

জামিন না দেওয়া প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিথ্যা মামলায় দলের নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোকে আওয়ামী সরকার তাদের প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাকসুদ হোসেন এবং সদস্য মোহাম্মদ আরিফ হাসানকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ কয়েকজন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর দখলদার আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক জোরালোভাবে শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম—নির্যাতন। ডামি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিরোধী দল ও মতের মানুষদের ঘায়েল করতে লাগামহীন গতিতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের মাধ্যমে আদালতকে দিয়ে ফরমায়েশি সাজা দিচ্ছে। জামিন নামঞ্জুর করে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

;

গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই বিএনপির: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতবৃন্দ লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, একদিকে তারা অগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিরোধীদল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাত অপশক্তি সারাদেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে। সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না। বরং সন্ত্রাস ও সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে এবং জামিনে মুক্তিও পাচ্ছে। তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে- জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা ও মহামান্য আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে কারণে বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই, সে যে দলেরই হোক না কেন সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্হিভূত বক্তব্য প্রদান করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন গুরুত্ব অপরিসীম। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বরাবরের ন্যায় নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয় সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের ন্যায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

বিবৃতিতে তিনি বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

;