কফি বন্দনা!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
কফি, ছবি: সংগৃহীত

কফি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা বিশ্বে প্রতিদিন কমপক্ষে ১.৬ বিলিয়ন কাপ কফি পান করা হয়, যা অলিম্পিক-সাইজের তিন শ’ সুইমিং পুল ভরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। পাণীয় হিসাবে কফি শুধু মজাদারই নয়, সৌন্দর্যপ্রিয়তা ও শৈল্পিকতারও পরিচায়ক। বিশ্ববরেণ্য লেখক জোনাথন সুইফট মনে করেন, ‘কফি পান ফিলসফিকাল কালচার’।

সম্ভবত এসব কারণেই কফি এখন গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি। কসমোপলিটন শহরগুলোতে কফিশপের ছড়াছড়ি। ইয়ং জেনারেশনের ক্রেজ হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে কফি।

শুধু তাই নয়, কমোডিটি বা পণ্য হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানের অধিকার লাভ করেছে কফি। অর্থাৎ বিশ্বের মানুষের দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের তালিকায় রন্ধন তেলের প্রথম স্থানটির পরেই রয়েছে কফির জায়গা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309590456.jpeg

১২০০ বছর আগেও মানুষ শরীর-মন চাঙ্গা করার অতুলনীয় পাণীয় কফির কথা জানতো না। কঠোর পরিশ্রমের পর ঝিমিয়ে কাটতো তাদের দিন ও রাত। অকস্মাৎ আফ্রিকার প্রত্যন্ত জনপদের এক তৃণভূমিতে ঘটলো অভূতপূর্ব একটি ঘটনা।

খালিদ নামের একজন আরব ইথিওপিয়ার তৃণভূমিতে ছাগল-মেষ চড়ানোর সময় এক অদ্ভূত বিষয় খেয়াল করলেন। আফ্রিকার এই নতুন জায়গাটি সদ্য-মুসলিম আরবদের অধীনে এসেছে। ইসলামের বাণী নিয়ে আরবরা তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিজয় কেতন উড়াচ্ছে।

নতুন দেশের অনেক কিছুই অজানা-অচেনা। খালিদ দেখলেন একটি বিশেষ ধরনের গাছের পাতা ও ফল খেয়ে তার পশুদল অনেক বেশি উৎফুল্ল ও চনমনে। জাম বা বেরি আকারের ফলটি চারণভূমির যেদিকে আছে, সেখানকার ছাগল-মেষগুলোকে দলের অন্য পশুদের চেয়ে অনেক তরতাজা ও স্বতঃস্ফূর্ত দেখাচ্ছে।

খালিদ এই গাছটির নাম দিলেন আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া। আরবি থেকে অনুবাদে এর নামই কফি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309612719.jpeg

নামের এই বৈচিত্র্য প্রসঙ্গে মনে রাখা ভালো যে, ইংরেজি ভাষা যেমন ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় একসেন্ট বা উচ্চারণ বদলিয়েছে, আরবি ভাষাও মূল আরব জাহান ও উত্তর আফ্রিকায় খানিক বদলে গেছে। যেমন, গাদ্দাফি। তাকে কাদ্দাফিও বলা হয়। গাম্বিয়া/জাম্বিয়া, ক্বাওয়া/গাওয়া, নাগিব/নাজিব, খলিল/কাহলিল ইত্যাদি একই শব্দের ভিন্ন উচ্চারণ মাত্র।

অচিরেই দেখা গেলো, আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া নামের গাছের জাম-সদৃশ্য শক্ত ফলটি ইয়েমেনেও পাওয়া যাচ্ছে এবং সেখানকার সুফি সম্প্রদায়ের তপস্যারত মুসলিমরা তা জ্বালিয়ে পান করছেন। নিজেকে সজাগ, সচল ও ক্রিয়াশীল রাখার ক্ষেত্রে কঠোর ব্রতচারী সুফিদেরকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি যোগাচ্ছে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া তথা কফি।

কিছুদিন পরেই দেখা গেলো, মধ্যরাতের তাহাজ্জুদ নামাজের আগে-পরে কিংবা যিকর বা ধ্যানের সময়ে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া পান করে শক্তি ও উদ্যম পাওয়া যাচ্ছে। পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া হজ্জপালনকারী, পর্যটক, বণিক, ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের আরব ও আফ্রিকা ছাড়িয়ে পৌছে যায় পারস্য ও তুর্কিস্তানের অন্যান্য মুসলিম জনপদে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309647784.jpeg

অচিরেই মুসলিম বিশ্বের জনপ্রিয় পাণীয় রূপে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া-এর একচ্ছত্র আধিপত্য ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মধ্যযুগের পপুলার বেভারেজ বলতে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

মিশর ও উত্তর আফ্রিকা দিয়ে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ইউরোপে প্রবেশ করে। যোদ্ধা ও বণিকরা রাস্তাটি খুলে দেয় ইউরোপীয়দের কাছে।

১৬৪৫ সালে ইউরোপের প্রথম কফিশপ চালু হয় ভিয়েনা শহরে। পাসকোয় রোসি নামে একজন তুর্কি ১৬৫০ সর্বপ্রথম কফি নিয়ে যায় বিলাতে। তিনি জর্জইয়ার্ড, ল্যাম্ববার্ড স্ট্রিট, লন্ডন ঠিকানায় একটি কফিশপ শুরু করেন।

আট বছর পর জনপ্রিয়তা বাড়ায় লয়েডে আরেকটি কফিশপ চালু হয়। ১৭০০ সালে ‘এডওয়ার্ড লয়েড কফি হাউস’ নামের একটি চেইনশপ চালু হয়। এখনো যাদের অসংখ্য শাখা রয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309676660.jpeg

কফি তৈরির আদি ধরণটি মুসলিম প্রবর্তিত, যাতে কফির পাউডার, পানি ও চিনি একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে না ছেঁকেই পরিবেশন করা হয়। কষা স্বাদ ও কড়া গন্ধের এই কফি ট্র্যাডিশনাল কফিপ্রেমীদের কাছে অদ্যাবধি প্রিয়।

যদিও কয়েক বছর পর কফি তৈরির নিয়ম ও শৈলীতে কিছুটা পরিবর্তন আসে, যার নাম ক্যাপাচিনো। তার পেছনেও রয়েছে অভিনব কাহিনী।

১৬৮৩ সালে ভিয়েনার মার্কো ডি এভিয়ানো নামের একজন খ্রিস্টান প্রিস্ট বা ধর্মযাজক তুর্কিদের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন। তখন ইউরোপের পূর্বাঞ্চল ছিল তুর্কি শাসনাধীন। তিনি তুর্কি-আরবদের মতো করে তৈরি কড়া কফি পানের বদলে ক্রিম ও মধু দিয়ে একটু নরম ও সুমিষ্ট কফির রন্ধনশৈলী উপস্থাপন করেন। কালো কফির রঙও বদলে বাদামী রঙ ধারণ করলো আর স্বাদও হলো অনেক সহনীয়।

এখন বিশ্বের দেশে দেশে নানা রকমের কফি দেখতে পাওয়া গেলেও কড়া ও সহনীয় ধরন দুটিই প্রধান। চা আবিষ্কারের এবং কোমল পাণীয় আসার আগে কফি যে দাপট ও প্রাধান্য অর্জন করেছিল, তা এতো শত বছরের ব্যবধানে মোটেও কমে নি। ফলে বিশ্বের এক নম্বর পাণীয় এখনো কফি এবং বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধান ভোগ্যপণ্যের স্থান কফির দখলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309865244.jpeg

মজার ব্যাপার হলো, বর্তমানে কফি উৎপাদনে লাতিন আমেরিকা সমগ্র বিশ্বের নেতৃত্ব দিলেও কফি পানের উদ্ভাবক ও বিস্তারক হিসাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন আরব-মুসলিমরা। মুসলিমরা কফিকে একটি বৈশ্বিক পাণীয়তে পরিণত করেছেন এবং নিজেরা শ্রেষ্ঠতম কফিপ্রেমী হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

ফলে আরব জাহানের যে কোনও দেশে বা শহরে কফির মৌতাত এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। পবিত্র মক্কার বায়তুল্লাহ এবং মদিনা নগরীর মসজিদে নববীতে নামাজের শেষে আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া দিয়ে ঐতিহ্যবাহী আরব আতিথিয়তা করার রেওয়াজ এখনো চলছে।

আরব দেশে যে কোনও গৃহে মেহমান আসার সঙ্গে সঙ্গে খেজুর আর আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া মেহমানের সামনে চলে আসে। তার পেছনে আসে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য। বস্তুত আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া ছাড়া আরব জাহানের আপ্যায়ন অসম্পূর্ণ।

অপরাপর আরব ও অনারব মুসলিম দেশেও আল ক্বাওয়া বা আল গাওয়া তথা কফি অপ্রতিরোধ্য গতিতে জনতুষ্টি লাভ করে চলেছে। তবে আরব সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে গণ্য করা হয় কফিকে। বিশ্বে যত কফি পান করা হয়, তার সিংহভাগই আরবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309899440.jpeg

বৃহত্তর আরব জাহানের সর্ব-পশ্চিম প্রান্ত মরক্কোর ফেজ বা রাবাত শহর থেকে পূর্ব প্রান্তের পার্শিয়ান গাল্ফ কিংবা আরব সাগর তীরের ইয়েমেনের এডেন বন্দর পর্যন্ত কফির জয়জয়াকার। পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ায় কাবাব আর রুটির পাশে কফির ছোট ছোট কাপ খাদ্য সংস্কৃতির অপরিহার্য অঙ্গ। যে কফির ঢেউ আরও পূর্বে পাকিস্তান-ভারত-বাংলাদেশ ছাড়িয়ে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।

আড্ডা, আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের লীলাভূমি কায়রোর ক্যাফেগুলো কফি ছাড়া অচল। নীল নদের তীরের খোলামেলা দোকানগুলোতে রয়েছে কফির ছড়াছড়ি। নোবেল বিজয়ী মিশরীয় লেখক নাগিব/নাজিব মাহফুজের লেখার বার বার এসেছে কফির কথা।

কফির কথা এসেছেন তুর্কি নোবেল বিজয়ী লেখক ওরহাম পামুকের লেখাতেও। বসফরাস প্রণালীর পাশে ইউরোপ ও এশিয়া এসে মিশেছে যে অনিন্দ্য ভূগোলে, সেই ইস্তাম্বুলের নাগরিক জীবনে কফি মিশে আছে প্রাত্যহিক জীবনের অঙ্গ হয়ে।

পানের অভ্যাসের সঙ্গে বিচিত্র-বিভিন্ন পেয়ালায় পরিবেশিত কফি ইসলামী শিল্প ও রুচির বিকাশেও পালন করেছে অনন্য ভূমিকা। ইসলামিক মৃৎশিল্প সঞ্জীবিত হয়েছে কফির স্পর্শে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/12/1560309957396.jpeg

কফি পান, চর্চা ও বিকাশের পাশাপাশি আরব মুসলিমরা একে সাহিত্য ও গবেষণার বিষয়েও পরিণত করেছেন। সর্বপ্রাচীন কফি বিষয়ক গ্রন্থের প্রণেতাও একজন মুসলিম। তার নাম শেখ আবু আল কাদির। ১৫৮৮ সালে তিনি কফি বিষয়ক একটি গবেষণা গ্রন্থ প্রণয়ন করেন, যাতে এর এনসাইক্লোপেডিক সকল তথ্যই রয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই হচ্ছে কফি নিয়ে লেখা পৃথিবীর সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রাচীন বই।

ঋপদী কফি গবেষক শেখ আবু আল কাদির অনেক তথ্য ও বিবরণের সঙ্গে সঙ্গে একটি চসৎকার অনুভূতির কথাও বলেছেন। তার সেই উক্তি এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে। তিনি জানাচ্ছেন: ‘Coffee is the common man’s gold, and like gold it brings to every person the feeling of luxury and nobility’. 

সত্যিই, প্রকৃত কফি পানের ক্ষেত্রে যে স্বাদের মজা আর অনুভূতির ছোঁয়া পাওয়া যায়, তা অতুলনীয়, অপূর্ব ও অতি মহার্ঘ্য।

আরও পড়ুন: পৃথিবী বিখ্যাত পাঁচ ব্যয়বহুল কফি!

আরও পড়ুন: কতটা উপকারী প্রিয় পানীয় কফি?

   

রমজানে যেসব কাজ এড়িয়ে যাবেন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রমজান মাসে করা ভুল / ছবি: সংগৃহীত

রমজান মাসে করা ভুল / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজান সবচেয়ে পবিত্র মাস। ইবাদতের এই মাসে কেবল ভালো কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা জানেন রমজান মাসে কি করা উচিত। তবে অনেকেই জানেন না, এই এক মাস কোন কাজগুলো একেবারেই এড়িয়ে যাওয়া উচিত। জেনে নেওয়া যাক সেগুলো-     

অকারণে রোজা ভাঙা: রমজানে রোজা রাখা বাধ্যতামূলক এবং প্রধান নির্দেশনা। সংযমের মাসে রোজা রেখে সংযম চর্চা করা হয়। রমজান মাসে শেহরির পর এবং ইফতারের আগে কিছুই খাওয়া যাবেনা। রোজা রেখে ভেঙে ফেলা একদমই উচিত নয়। তাই খুব বিশেষ কারণ ছাড়া রোজা ভাঙবেন না।     

ঝগড়া-বিবাদ: সকল খারাপ অভ্যাস কমিয়ে ফেলা বা নিয়ন্ত্রণে রাখা রমজানের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য। যেকোনো ধরনের খারাপ আচরণ, ঝগড়া, তর্ক এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে রমজান মাসেস একদমই এসব করা যাবে না। এমনকি অহংকারও অত্যন্ত খারাপ একটি অভ্যাস। কোনো বিষয় নিয়েই অহংকার করে অথবা কাউকে ছোট করে কথা বলা উচিত না।   

দানশীলতার অভাব: দান দক্ষিণা প্রদান খুবই ভালো কাজ। নিজেদের কাছে থাকা অতিরিক্ত জিনিসগুলো, যাদের অত্যন্ত প্রয়োজন তাদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া উচিত। সকলেরই সাধ্য অনুযায়ী টাকা, খাবার, পোশাক- এসব গরীবদের দেওয়া উচিত।   

ইফতারের পর অপকর্মে লিপ্ত: অনেকে মনে করেন, রমজান মাসে শুধু দিনের বেলা ইবাদত আর ভালো করতে হয়। ইফতারের পরই পরই অনেকে মদ, সিগারেটের মতো নেশাজাত দ্রব্য সেবন শুরু করে। এসব কাজ রমজানের শিক্ষাকে ব্যর্থ করে দেয়।   

অলস সময় পার করা: সারাদির না খেয়ে রোজা থাকার ফলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্ত থাক। অনেকে এই বাহানায় কাজ করতে চান না। তারা মনে করেন রোজা রেখে সারাদিন শুয়ে, বসে, ঘুমিয়ে কাটালে কোনো অসুবিধা নেই। আদতে এমন নয়। নিতান্ত নড়াচড়া করতে পারেনা অথবা খুব অসুস্থ মানুষ ছাড়া সকলেরই প্রতিদিনেরই রুটিন অনুসারেই কাজ করে যেতে হবে।  

নামাজ না পড়া: মুসল্লীদের মধ্যে অনেকেই রোজা রাখলেও নামাজ পড়েন না। নামাজ না পড়লে রোজা রাখার মাহাত্ম্য নেই। রমজান মাসে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে সওয়াব বেশি হয়। তাই একবেলাও নামাজ বাদ দেওয়া ঠিক না।  

তথ্যসূত্র: গ্রিণটেক

;

রমজানে অপচয় করার অভ্যাস ত্যাগ করুন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
টাকার অপচয়

টাকার অপচয়

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজান মাস ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র মাস। হযরত মোহম্মদ (সা.) এর নির্দেশনায় মুসল্লীগণ রোজা রাখার মাধ্যমে সংযম করেন। এই এক মাস সর্বাঙ্গে আরও ভালো একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার চর্চা করে তারা। অনেকে মনে করেন, রোজার অর্থ শুধু না খেয়ে থাকা। তবে রোজা মূলত সংযম শেখানোর উদ্দেশ্যে রাখা হয়। এই সংযম শুধু খাদ্যের নয়, মনুষ্যের সকল ধরনের নেতিবাচক দিকের।   

অনেকে না জেনেই এমন কিছু কাজ করেন যা রমজান মাসে একদমই করা উচিত নয়। তার মধ্যে অন্যতম হলো অকারণে টাকা নষ্ট করা। রমজান মাসে পরিপূর্ণভাবে ঈমান রক্ষাকারী কাজই করা উচিত। অপচয় করার অভ্যাস একদমই ভালো নয়। রমজান মাসে অপচয় করা একেবারে কমিয়ে ফেলতে হবে।  

অনেককেই দেখা যায় ইফতারে অনেক বেশি পদের খাবার আয়োজন করার চেষ্টা করেন। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে এখন অনেকেই ইফতারে দামি খাবারের ব্যবস্থা করেন। রমজান মাসে নিজের প্রয়োজনকে সংযত করা আবশ্যক। অপ্রয়োজনে খাবারের পেছনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা এবং অতিরিক্ত খাবারের আয়োজন করে তা না খেয়ে নষ্ট করা- দুটোই অপচয় ঘটায়। তাছাড়া, বেশি খাবারের চাহিদার কারণে রান্নার কাজে যা ব্যয় থাকেন তাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম হয়। এতে তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

এছাড়া সবাই ঈদে সকলেই নতুন পোশাক কেনে। তবে কারো মধ্যে সাধ্যের বাইরে গিয়ে পোশাক কেনা প্রবণতাও দেখা যায়। অনেকে কেনাকাটা করার জন্য শপিংমলে অতিরিক্ত সময় কাটান। রমজান মাস ইবাদত করার মাস। এই সময় যত বেশি সম্ভব ধর্মীয় কাজে এবং মসজিদে সময় কাটানো উচিত।

অনেক মানুষ আছে যারা প্রয়োজনীয় জিনিসও কিনতে পারে না। সম্ভব হলে তাদের সাহায্য করুন। এতে তাদের জীবনও ‍কিছুটা সহজ হবে, আপনারও মানসিক শান্তি মিলবে। 

তথ্যসূত্র: গ্রিণটেক

;

ঈদের ফ্যাশনে দেশীয় পোশাকের সমাহার নিয়ে এলো 'মিরা'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলছে মুসলিম ধর্মাবলম্বী অন্যতম ইবাদতের মাস পবিত্র রমজান। এরই মধ্যে চলে এসেছে ঈদ উৎসবের আমেজ। প্রস্তুত হচ্ছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো হাল ফ্যাশনের পণ্য সম্ভার নিয়ে। প্রতি বছর ঈদকে কেন্দ্র করে বাজার ছেয়ে যায় নানারকম বিদেশী পোশাকে। এর ভিড়েও দেশীয় পোশাককে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ও জনপ্রিয় করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান। তেমনি একটি দেশীয় লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড 'মিরা'।

দেশজ ও পরিবেশবান্ধব সব পণ্য নিয়ে ফ্যাশন হাউজ মিরা ইতোমধ্যেই নজরকাড়তে শুরু করেছে রুচিশীল ও ফ্যাশন সচেতন মানুষের। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে পান্থপথের মোড় কিংবা সাইন্স ল্যাবরেটরির মোড় যে কোন একদিক থেকে গেলেই গ্রিন রোডে কমফোর্ট হাসপাতালের পাশেই ১৬৭/এ নম্বর ভবনের তৃতীয় ফ্লোরে কাজ চলছে মিরা-র প্রথম নিজস্ব আউটলেট এর। সেখানেই কথা হয় মিরা ব্র্যান্ড এর কর্ণধারদের অন্যতম শুভ্রা কর এর সাথে।



শুভ্রা কর বলেন, এবার ঈদ এবং বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ প্রায় একই সময়ে। ঈদ এবং বর্ষবরণ দুটোই খুব বড় উৎসব। তাই এই উৎসবের সময়কে সামনে রেখে মিরা তার সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে। কিন্তু এই উৎসবে আয়োজনে দেখা যায় আমাদের বাজার ছেয়ে যায় সব ভিনদেশী পণ্যে। নিজের দেশের তৈরি সুন্দর সব পোশাক, গহনা বা অন্যান্য পণ্য ছেড়ে আমরা বিদেশি পণ্য খুঁজি। অথচ তার চেয়ে মানসম্মত ও সুন্দর কিছু দেশেই পাওয়া যায়, আমরা জানিই না! বিদেশী পণ্যের ভিড়ে মিরা তাই নিয়ে এসেছে দেশীয় সব পণ্য ও ডিজাইনের সমাহার। আমাদের কাছে পাচ্ছেন সঠিক কাউন্টের অথেটিক জামদানি শাড়ি, আমাদের নিজস্ব হ্যান্ডব্লক ডিজাইনে করা কাপল সেট বা ফ্যামিলি কম্বো। থাকছে হ্যান্ডপেইন্ট এর পাঞ্জাবি, পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরী নিজস্ব ডিজাইনের গহনা, অলঙ্কার। এছাড়া ছোট বড় সবার জন্য টিশার্টও পাচ্ছেন।

'মিরা'র নিজস্ব হ্যান্ডব্লক ডিজাইনের দেশীয় শাড়ি

তিনি বলেন, আমাদের অনেক পণ্য দেখে অনেকে অবাক হন এবং প্রশ্ন করেন যে এগুলো দেশে তৈরি কিনা, কারণ দেশে এত সুন্দর বা ভালো পণ্য তৈরি হয় তাদের ধারণা ছিল না। মিরা-র মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের এই নিজস্ব ঐতিহ্য ও শিল্পকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া ও জনপ্রিয় করে তোলা। একইসাথে ফ্যাশনকে যথাসম্ভব পরিবেশবান্ধব রাখা। আমাদের সব পণ্য আমাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধায়নে কারিগর দ্বারা প্রস্তুত করা এবং সেখান থেকেই সংগ্রহ করা এবং মানের দিক থেকে আমরা কোন আপোষ করি না। আমি আশা করবো এদেশের মানুষ আরো বেশি দেশীয় পণ্য ক্রয়ে আগ্রহী হবে এবং উৎসবে আয়োজনে আমাদের নিজস্ব শিল্পকে গর্ব করে সবার কাছে তুলে ধরবে।

মিরা-র যেকোনো পোশাক কিনতে ভিজিট করতে পারেন তাদের ফেসবুক পেজ www.facebook.com/mirabrandbd অথবা ইন্সটাগ্রাম আইডি www.instagram.com/mirabrandbd/-এ। অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনে শীঘ্রই মিরা-র প্রথম আউটলেট শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকার গ্রিন রোডে।

;

ইস্টার উৎসব ডিম দিয়ে কেন পালিত হয়?



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খ্রিস্টানদের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ইস্টার। এই উৎসব মৃত্যুপুরীর মধ্য থেকে যিশু খ্রিস্টের পুনরুত্থান উদযাপন করে। গুড ফ্রাইডের পরে তৃতীয় রোববার পালিত হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে যিশু খ্রিস্টের পুনর্জন্ম হয়েছিল এবং তিনি আবার তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে বসবাস শুরু করেছিলেন, কিন্তু মাত্র ৪০ দিনের জন্য, তারপরে তিনি চিরতরে স্বর্গে চলে গিয়েছিলেন। এ কারণেই ইস্টারকে পুনরুত্থান দিবস বা পুনরুত্থান রোববারও বলা হয়।

ইস্টার উদযাপন

খ্রিস্টান সম্প্রদায় জুড়ে ইস্টারের ঐতিহ্য ব্যাপক। কেউ কেউ এই দিনে যিশুকে অভিনন্দন জানাতে ইস্টারের দিনে ডিম সাজিয়ে থাকেন। কেউ কেউ আবার ইস্টার প্যারেডগুলিতেও অংশগ্রহণ করে থাকেন। আসলে ইস্টারের বেশিরভাগই ছুটি থাকে। কিন্তু যেখানে ছুটি নেই সেখানে তিন ঘণ্টা কাজ বন্ধ থাকে কারণ যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল ৩টার সময়। এছাড়াও ইস্টার সানডে উদযাপনের জন্য খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের রাতে গির্জায় জড়ো হয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে রাতভর যিশু খ্রিস্টের নাম এবং তাঁর দেওয়া বাণীকে স্মরণ করেন।

ইস্টারে ডিমের ব্যাপক ভূমিকা

ইস্টার উদযাপনের প্রধান প্রতীক হল ডিম। ইস্টার নবায়ন, উদযাপন, পুনরুজ্জীবন, পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের জন্য অগ্রগতির প্রতীক। এই দিনে ডিম সজ্জিত করে একে অপরকে উপহার দেওয়া হয় যা একটি শুভ চিহ্নর ইঙ্গিত দেয়। তাই রঙিন ডিম ছাড়া ইস্টারের মজা নেই। ঐতিহ্যগতভাবে এই ডিম বাবা-মায়েরা লুকিয়ে রাখেন এবং বাচ্চাদের খুঁজে বের করতে হয়। খ্রিস্টধর্মে, ডিম পুনরুত্থানের প্রতীক। এটি বসন্তের সঙ্গে জড়িত।

ইস্টারে ডিমের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে কারণ পাখি প্রথম যেভাবে তার নীড়ে ডিম দেয়। এর পরে, এটি থেকে ছানা বেরিয়ে আসে। এই কারণেই, ডিমকে একটি শুভ স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং ইস্টারের সময় এটি বিশেষ সম্মানের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। কোথাও পেইন্টিং করে, কোথাও অন্যভাবে সাজিয়ে একে অপরকে উপহার হিসেবেও তাই ডিম দেওয়া হয়। রাশিয়া এবং পোল্যান্ডের মতো দেশে, ইস্টার ডিম একটি নতুন জীবনের প্রতীক।

ইস্টারের তারিখ প্রতি বছর পরিবর্তিত হয়। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ৩১ মার্চ পালিত হবে ইস্টার।

;