অ্যাপোলো হাসপাতাল হতাশ করল



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
অ্যাপোলো হাসপাতাল / ছবি: সংগৃহীত

অ্যাপোলো হাসপাতাল / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অ্যাপোলো হাসপাতালে (ঢাকা) রোগীর সঙ্গে সারাদিন অবস্থানের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমার এই লেখা। আগে কখনো এত লম্বা সময় ধরে এই হাসপাতালে অবস্থান করতে হয়নি। সম্প্রতি অ্যাপোলো হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে ভিন্ন রকমের এক অভিজ্ঞতা হয়েছে।

বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ প্রতিবেশি দেশ ভারতের বেশ কিছু হাসপাতাল পরিদর্শন করার সুযোগ হয়েছিল। কখনো রোগীর স্বজন হিসেবেও গিয়েছি। সেসব হাসপাতালের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করে শুধু হতাশাই বেড়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্বনামধন্য এই হাসপাতালটির ব্যাপারে। বিশেষ করে অন্দরের ব্যবস্থাপনা খুব একটা সুখকর হলো না। বলা চলে প্রত্যাশার সিকি ভাগ পূরণেও ব্যর্থ

হাসপাতালটির ব্যয়বহুল ভিভিআইপি সুইট রুমে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে হয়। অপারেশন পরবর্তী এই রুমে অবস্থানের সময়টা জুড়ে কখনো মনে হয়েছে গ্রামীণ কোনো রেস্টুরেন্টে আছি, কখনোবা মনে হয়েছে মাছ বাজারে আছি। টিনের চালা মেরামত করার সময় যেমন গ্রামের অপর প্রান্ত থেকে শব্দ পাওয়া যায়। এখানেও তেমনি শব্দ কানে এসে বাজতে থাকে।

অবাক করা ব্যাপার এসব শব্দ বাইরের গাড়ির হর্ন কিংবা অন্য কিছুর নয়। বরং খোদ হাসপাতালের বয়, ক্লিনার ও স্টাফদের সৃষ্ট। তাদের চলনে বলনে কোনো সাবধানতা নেই, ক্ষিপ্ত গৃহিণী যেমন কাজের সময় হাড়ি-বাসন আছড়ে আছড়ে কাজ করে অনেকটা তেমনই চিত্র এখানকার। সাইলেন্স জোন হওয়ায় সেই শব্দ কানে বিঁধছিল শুলের মতো। রোগীর কাতরতা আরো উদ্বিগ্ন করে তুলছিল।

খাবার পরিবেশন করতে আসা বয়রা তো যেন কয়েকধাপ বেশি। ধড়াশ ধড়াশ শব্দে প্লেট গ্লাস রাখছিলেন খাবারবাহী স্টিল শিটের ট্রলিতে। এত বিদঘুটে শব্দ হচ্ছিল, যেটা যে কারো বিরক্তির কারণ হতে বাধ্য। আবার নার্সদের উচ্চস্বরে হাঁকডাক রুমে বসেও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল। গ্রামীণ হাটবাজারে হাঁক ছেড়ে যেভাবে একে অন্যকে ডাকাডাকি করেন অনেকটা তেমন পরিবেশ। আবার টিফিন আওয়ারে স্কুলের কমন রুম থেকে যেমন গমগম শব্দ আসে এখানেও সারাক্ষণ তা বিদ্যমান।

অথচ তখন কেবিনে কেবিনে অনেক রোগী ঘুমাতে না পারায় ঘুমের ওষুধ প্রদান অব্যহত। জেগে উঠলেই যন্ত্রণা কাতর, স্বজনদের উদ্বিগ্ন অবস্থান। রোগী ও স্বজনদের সেই যন্ত্রণার বিষয়ে না আছে বয় বেয়ারাদের দৃষ্টি, না আছে নার্সদের কোনো ভাবান্তর। ভাবছিলাম ডাক্তার ও ম্যানেজমেন্ট বোধহয় বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। কিন্তু সেই ভুল ভাঙতেও বেশি সময় লাগল না। বিকেলে সার্জারি ডাক্তার এসে বন্ধ দরজায় যেভাবে নক করছিলেন মনে হলো ডাকাত পড়েছে, দরজা না খুললে ভেঙে ফেলতে পারে।

অথচ ঘণ্টা তিনেক আগে সেই রোগীর অপারেশন হয়েছে। তার যে তখন পূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন সেদিকে যেন কারোরই কোনো মনোযোগ নেই। বেশি হতাশ লাগল যখন দেখা গেল ডাক্তার পরিদর্শনের সময়েও নার্সদের আচরণে কোনো রকম ভাবান্তর হলো না।

রাত সাড়ে ৯টায় রোগীর স্যালাইন চলছে। রোগী যেতে চাইলেন টয়লেটে, বয়কে ডাকা হলো। নার্স জানালেন নিচে গেছে ফোন করা হয়েছে এলেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে দফায় দফায় খবর দিলে নার্স বারবার একই উত্তর দিচ্ছিলেন।

এভাবে ৩০ মিনিট অতিবাহিত হয়, নার্স জানালেন বয়ের ডিউটি ১১টা থেকে। রোগীর ত্রাহি অবস্থা দেখে ডিউটি অফিসারকে অভিযোগ দেওয়ার হুমকি দিলে আরো কয়েক মিনিট পর দেখা দিলেন বয়।
দেয়ালে দেয়ালে টানানো ডিউটি ম্যানেজারের নম্বর, আবার সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে মাঝে মাঝেই ভেসে আসছিলে মহীরূহ মুশকিল আসান ডিউটি ম্যানেজারের নম্বর। যে কোনো সমস্যায় তাকে জানানোর জন্য অনুরোধ। কিন্তু সেই ডিউটি ম্যানেজারকেও পাওয়া গেল কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর।

তাকে জানানো হলো বয়ের সংক্ষিপ্ত সার। প্রথমে বললেন অভিযোগ দেন ব্যবস্থা নিচ্ছি। জানতে চাইলেন নার্সের নামও। সাক্ষাতে বিস্তারিত জানানোর আগ্রহ দেখিয়ে বলা হলো আপনি কোথায় আছেন দেখা করতে চাই। তখন বললেন, আমিই আসছি। রাত পৌনে ১০টায় কথা হয়, আর ডিউটি ম্যানেজার এলেন রাত ১টার দিকে। যখন রোগী, স্বজন সবাই ঘুমাচ্ছে।

আমাদের রোগীরা গণহারে বিদেশগামী হচ্ছে। এ বিষয়ে ডাক্তারদের বক্তব্য হচ্ছে বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে অন্যদেশের বেসরকারি হাসপাতালের তুলনা করা হয়। যে কারণে হতাশ হয় রোগীরা। ডাক্তারের এই বক্তব্যের যুক্তি খুঁজে মনকে সান্ত্বনা দেওয়া যেত এতদিন। কিন্তু দেশের একমাত্র জেএমআই সার্টিফায়েড হাসপাতালের এমন করুণ হাল মনকে বড়ই হতাশাগ্রস্ত করল।

বাইরে বেরিয়ে দেখি পার্কিংয়ে রাখা বাইকের ওপর থেকে হেলমেট উধাও। সিকিউরটিকে জানালে তিনি বললেন, পরদিন দেখা করতে। কথা অনুযায়ী পরদিন দেখা হলে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রুহুল আমিন প্রথম চোটেই বলে দিলেন, সামান্য কয়টা টাকা দাম, এটার খোঁজ করে আর কী করবেন। আপনি হাসপাতালে ছিলেন প্রায় ১২ ঘণ্টা, সিসি ক্যামেরার রেকর্ড দেখতে হলে ১২ ঘণ্টা লাগবে। এতক্ষণ সময় দেওয়া কঠিন। টেনে টেনে দেখলেও অনেক সময় লাগবে।

পাশে দাঁড়ানো সহকারী মুবিন বললেন, আপনি কি মনে করতে পারবেন কখন চুরি হয়ে থাকতে পারে। সবিনয়ে তাকে জানালাম, এইটা যদি জানতাম তাহলে তো চোরকেই পাকড়াও করতে পারতাম। এবার সিকিউরিটি অফিসার বললেন, দেখে কী করবেন, আপনার মতো কোনো বাইকার হয়ে নিয়ে গেছে। তাকে জানালাম, হ্যাঁ সেই বাইকারের নম্বর হলেই তাকে পাওয়া সম্ভব।

প্রায় ২০ মিনিট ধরে বোঝাতে চাইলেন, এটা জটিল বিষয়, আর দেখেই বা লাভ কী। আপনি তো আর হেলমেট ফিরে পাচ্ছেন না। আমিও নাছোড়বান্দা, তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখবই। পরে জানালেন, এই ফুটেজ থাকে বড় অফিসারের রুমে। সেখানে যখন তখন যাওয়া যাবে না। আমি দেখছি কী করা হয়। বিকেলে ফোন দিয়ে জানালেন, ভাই, যেখানে বাইক ছিল সেই জায়গায় লাইট কম ছিল, সিসি ক্যামেরায় বোঝা যায় না। বললেন, ছয় জনের একটি গ্রুপ আপনার হেলমেট চুরি করেছে। এবার জবাব দিলাম তাহলে তো বিষয়টি সহজ। ওরা যখন মেইন গেট দিয়ে বের হয়েছে সে সময়ের ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেন।

এবার যেন আগ্রহ কমে গেল রুহুল আমিনের। আবোল তাবোল বলা শুরু করলেন, সাদা কালো দেখলেও চেনা যায় না। আপনার হেলমেট চুরি হয়েছে রাত সাড়ে ১১টায়। একটু আগে যে সন্ধ্যা ৭টার কথা বললেন। এরপর বললেন, আমরাতো হেলমেটের দায়িত্ব নিই না। নোটিশ দেওয়া আছে।

তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু এ রকম একটি উচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকায় চুরির ঘটনা নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। উল্টো জানালেন, মাঝেমধ্যেই নাকি এমন হেলমেট চুরি হয়। তাদের এই নীরবতা চরম হতাশ করল। অনেকে মনে করেন নিরাপত্তা কর্মীরাও কেউ কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। সে কারণে এ বিষয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখান না।

   

হিট স্ট্রোক এড়াতে আরএমপি’র স্বাস্থ্য বার্তা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহীসহ দেশের সবগুলো জেলাতে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। তৈরি হচ্ছে, অসহনীয় পরিস্থিতি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামীতে তাপমাত্রা আরো বাড়বে।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপ ও দাবদাহ বেড়ে যাওয়ার ফলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে, ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর।

দাবদাহে তীব্র মাথাব্যথা, ত্বক লাল হওয়া, অবসন্ন বা অবসন্ন ভাব, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, মাংশপেশীর খিঁচুনি এবং হিট স্ট্রোকের শিকার হচ্ছে অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) নাগরিকদের হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার জন্য বিশেষ বার্তা জারি করেছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের শরীরের ভেতরে নানান রাসায়নিক ক্রিয়ার কারণে এমনিতেই সব সময় তাপ সৃষ্টি হতে থাকে। ঘামের সাহায্যে সেই তাপ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তবে তীব্র গরমে দীর্ঘ সময় অবস্থান করলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যায় এবং শরীর নিজ থেকে এই অতিরিক্ত তাপ বের করতে পারে না। শরীরের এই তাপজনিত গুরুতর অসুস্থতাই হলো, হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোক।

তিনি বলেন, তীব্র গরমে রোদে দীর্ঘ সময় অবস্থান করা ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করার কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করলে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে লবণ ও তরল বেরিয়ে যাওয়ায় পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এতে শরীর হয়ে যায় অবসন্ন ও পরিশ্রান্ত। তাছাড়া কিছু ওষুধ, যেমন; মূত্রবর্ধক, বিটা-ব্লকার্স কিংবা এন্টি-কলিনার্জিক্স, অতিরিক্ত মদ্যপান বা মাদক সেবনও শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

এই ঝুঁকি শিশু, বয়স্ক মানুষ (৬৫ বছরের বেশি বয়স), স্থূল ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী এবং হৃদ্‌রোগ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বেশি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, হিট স্ট্রোক সাধারণত ‘ক্ল্যাসিক’, ‘এক্সারজেশন-অ্যাসোসিয়েটেড হিট স্ট্রোক’ এবং ‘হিট স্ট্রোক ফ্রম হিট ইলনেস’- এই তিন ধরনের হয়ে থাকে।

ক্লাসিক হিট স্ট্রোকের সবচেয়ে সাধারণ ধরন, যা গরমের পরিবেশে দীর্ঘ সময় অবস্থানের কারণে হয়। গরম পরিবেশে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের কারণে এক্সারজেশন-অ্যাসোসিয়েটেড হিট স্ট্রোক হতে পারে এবং হিট স্ট্রোক ফ্রম হিট ইলনেস হিট স্ট্রোকের একটি জটিলতা, যা হালকা হিট ইলনেসের পরেও ঘটে। হিট স্ট্রোকের ফলে রোগী বা রোগীর মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, কিডনি, যকৃত, পেশি ও ত্বকের নানাবিধ ক্ষতি হয়।

আরএমপির এই চিকিৎসক বলেন, হিট স্ট্রোকের তীব্র তাপমাত্রা মস্তিষ্কের কোষ এবং কিছু কিছুক্ষেত্রে রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং এমনকী মৃত্যুও হতে পারে।

হিট স্ট্রোক হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। হিট স্ট্রোক কিডনি ও যকৃতের রক্ত নালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং এইসব অঙ্গগুলো বিকল করে দিতে পারে।

তাছাড়া হিট স্ট্রোক রোগীর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। মনে রাখতে হবে, হিট স্ট্রোক একটি জরুরি অবস্থা, যার দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। তা না হলে হিট স্ট্রোক মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে।

হিট স্ট্রোক এড়াতে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যতটা সম্ভব তীব্র তাপদাহ বা অতিরিক্ত গরমের সময় বাইরে কম বের হতে হবে। প্রচুর পরিমাণে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করতে হবে। হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। একটানা পরিশ্রম না করে থেমে থেমে কাজ করতে হবে।
এছাড়া ছাতা, টুপি, কালো চশমা এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেন ডা. মো. নজরুল ইসলাম।

;

তীব্র গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে করণীয়



অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া
অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। দেশজুড়ে চলমান এই তাপপ্রবাহের কারণে এরই মধ্যে হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে এবং দেশের সকল কলেজ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তীব্র গরমে মানুষের অতিরিক্ত ঘাম, অস্বস্তি ও ত্বক পোড়ানো অনুভূতিতে হাঁসফাঁস এবারের গ্রীষ্মে বাংলাদেশের জনজীবনে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে কয়েক গুণ।

একদিকে তীব্র দাবদাহ, অন্যদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ ও কোন কোন স্থানে সুপেয় পানির তীব্র সংকটে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এই পরিস্থিতিতে গুরুতর অসুস্থ, শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ পুরো স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে। তীব্র গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলোর মধ্যে পানি শূন্যতা, ত্বকের নানা রকম রোগ, যেমন-ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ছাত্রাক ইত্যাদি, অতিরিক্ত ঘাম, মাথা ঘুরানো, মাথা ব্যাথা, মানসিক চাপ-খিটখিটে মেজাজ, এলোমেলো কথা, অস্থিরতা, অবসাদগ্রস্থতা, ক্লান্তি ও দুর্বলতা, মাংসপেশীতে টান অনুভব করা, বুকে ধড়ফড়, পেটের পীড়া-ডায়ারিয়া, জ্বর-ঠাণ্ডা-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিবাহিত রোগ, টাইফয়েড-জণ্ডিস, খিচুনি, হিট-স্ট্রোক, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মত সমস্যাগুলো অন্যতম। কিছু নিয়ম মেনে চললে বা সাবধানতা অবলম্বন করে চললে তীব্র গরমেও ভালো ও নিরাপদ থাকা সম্ভব।

অতিমাত্রার তাপ থেকে রক্ষায় করণীয়

এক. প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে না যাওয়ার চেষ্টা করা।

দুই. যাঁরা হৃদরোগ, লিভার, কিডনী, ক্যান্সার ও স্ট্রোকের রোগী-খুব প্রয়োজন ছাড়া সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

তিন. ঘরে থাকলে দরজা-জানালা খুলে দিন, যাতে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে, তবে জানালার পর্দা টেনে দিন যাতে রোদ সরাসরি ঘরে প্রবেশ না করে।

চার. ঘরে থেকে বের হলে ছায়াপথ অনুসরণ করুন এবং মাথায় ক্যাপ, টুপি, গামছা, স্বার্ফ, কাপড় ব্যবহার করুন।

পাঁচ. ভারী-কালো কাপড় পরিহার করে হালকা-পাতলা ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতি কাপড় পরিধান করুন।

ছয়. বাড়ির বাইরে বেরুবার সময় অবশ্যই ছাতা নিয়ে বের হবেন।

সাত. বেরুবার সময় অবশ্যই এক বোতল খাবার পানি বা স্যালাইনযুক্ত খাবার পানি সঙ্গে নিন।

আট. বাড়ির বাইরে সুযোগ মত পানির ঝাপটা মুখে দিন এবং ঘাড়ে ঠাণ্ডা পানি দিন।

নয়. ত্বকে ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষায় প্রয়োজনে সানস্ক্রিণ ক্রিম ব্যবহার করুন।

দশ. চোখে রোদ থেকে রক্ষায় প্রয়োজনে সানগ্লাস ব্যবহার করুন।

এগারো. শরীরে পানি স্বল্পতা এড়াতে অতিরিক্ত নিরাপদ পানি, শরবত, লেবু পানি, ডাবের পানি, ফলের জুস, লাচ্ছি, খাবার স্যালাইন, লবন মিশ্রিত পানি পান করুন এবং টক দই, স্যুপ ও তরল খাবার গ্রহণ করুন।

বারো. পানি ও রসালো গ্রীষ্মকালীন ফল শসা, তরমুজ, বাঙ্গি, ডালিম ইত্যাদি বেশি পরিমাণ খাবার চেষ্টা করুন।

তেরো. প্রয়োজনে দিনে দু’বার গোসল করুন।

চৌদ্দ. প্রয়োজনে হাতপাখা, সামর্থ্য অনুযায়ী ফ্যান ও এসি ব্যবহার করুন।

পনেরো. আপনার ফ্রিজে পর্যাপ্ত ঠাণ্ডা পানি ও বরফ মজুদ করুন।

ষোলো. দিনমজুর বা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কাজের ফাঁকে কিছুক্ষণ পর পর ছায়াযুক্ত জায়গায় বিশ্রামের সুযোগ সৃষ্টি করা, মানবিক কারণে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করা উচিত।

সতেরো. ডাই ইউরেটিক্স, বিটা ব্লাকার জাতীয় ওষুধ ও অ্যালকোহল খাবেন না।

আঠারো. গরমে ব্যায়াম থেকে বিরত থাকুন।

গরমে কি কি খাওয়া উচিত আর কি উচিত নয় তা জানা অত্যন্ত জরুরি।

যেসব খাবার পরিহার করা বাঞ্ছনীয়

গরু-খাসি ও হাঁশের মাংস, ডিম, বেশি মসলাযুক্ত খাবার, তেলে ভাজা খাবার, পোলাও-বিরিয়ানি-কাচ্চি, তেহারী, স্টেক, ফাস্টফুড, ফুচকা, চা-কফি, বাইরের খাবার, বোরহানী, আইসক্রিম ও কোমলপানীয় ইত্যাদি।

খাদ্য তালিকায় যা রাখবেন

শাক-সবজি, শসা, টমোটো, লাউ, ডাল, আম-ডাল, ভিটামিন ‘সি’ সম্বৃদ্ধ খাবার, পাতলা স্যুপ, রসযুক্ত ফল, নিরাপদ পানি, ডাবের পানি, লেবু পানি, স্যালাইন পানি, লবন সরবত, ফলের জুস, কাঁচা আমের শরবত, ডিটক্স ওয়াটার (পানি, লেবু, গাজর ও পুদিন রস সমন্বয়ে তৈরী) ও মাছ।

হিট স্ট্রোক: কিভাবে বুঝবেন

যদি শরীরে তাপমাত্র ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তারচেয়ে বেশি ও সঙ্গে তীব্র মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরা, অতিমাত্রায় ঘাম, প্রচণ্ড তৃষ্ণা, পানি শূণ্যতা অনুভব করা, ডিহাইড্রেশন, দ্রুত হৃদস্পন্দন, বমি বমি ভাব হওয়া, প্রলাপ বকা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, মাংসপেশীতে টান পড়া, ঘাম না হওয়া, ক্লান্তি ও চরম দুর্বল হয়ে যাওয়া, গাঢ় রঙের প্রশ্রাব, চামড়া ফ্যাকাসে হওয়া, চামড়ার রঙ লালচে হওয়া, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, শ্বাসকষ্ট বা ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া, খিচুনী ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

হিট স্ট্রোকে করণীয়

হিট স্ট্রোকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন। সময় মত চিকিৎসা না করলে হিট স্ট্রোকে মস্তিষ্ক, মাংসপেশী, হৃদপিণ্ড, কিডনীর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে। চিকিৎসার দীর্ঘসূত্রিতায় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। সাধারণত বয়স্কদের এবং দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এটি বেশী ঘটে থাকে। এছাড়াও যাঁরা প্রচণ্ড রোদে কায়িক পরিশ্রম করে থাকেন-যেমন-কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, রিক্সাচালকরা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

হিট স্ট্রোক হলে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে। তবে তার আগে আক্রান্ত ব্যক্তির যতটুকু সম্ভব গায়ের কাপড় খুলে ফেলুন। দ্রুত শীতল স্থানে নিয়ে যান। রোগীর আশেপাশে ভিড় না থাকাই বাঞ্ছনীয়। হাত পাখায় বাতাস করুন। সম্ভব হলে ফ্যান বা এসি রুমের মধ্যে নিতে হবে। ঠাণ্ডা পানিতে সারা শরীর ভিজিয়ে মুছে ফেলুন। অজ্ঞান হলে দুই পা উপরের দিকে রাখুন।

জ্ঞান থাকলে ঠাণ্ডা পানি, খাবার স্যালাইন-শরবত খাওয়ান, সম্ভব হলে বগলে, কুচকিতে, কাঁধে ও কপালে বরফের প্যাক দিন। খেয়াল রাখা প্রয়োজন, আক্রান্ত রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও নাড়ীর স্পন্দন চলছে কিনা। মাথায় ঠাণ্ডা পানি ঢালতে পারেন। উন্নতি না হলে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। শিশু, বয়স্ক ও দুরারোগ্য রোগীদের প্রতি সতর্কতা ও সচেতনতা প্রয়োজন। একমাত্র সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করলেই হিট স্ট্রোকসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব।

লেখক: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, সাবেক পরিচালক; সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।

;

তীব্র গরমে কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান তাপদাহে কুষ্টিয়ার হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। তীব্র গরমে এ অঞ্চলের শিশুরা ডায়রিয়া ও সর্দি-জ্বরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

শনিবার রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ও ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ শয্যায় দুজন করে রোগী রয়েছেন। বারান্দা ও ওয়ার্ডের মেঝেতেও বিছানা করে আছেন অনেক রোগী। বেডে জায়গা নেই। ঠাঁই হচ্ছে মেঝে ও বারান্দায়।

এদিকে, শনিবার বিকেলে কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৩ শতাংশ। চলতি মাসের শুরু থেকেই কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এক সপ্তাহ আগে থেকে এ তীব্র তাপদাহ শুরু হয়।

তীব্র গরমে হাসপাতালে রোগীর চাপ অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এতে করে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতেও চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। তবে গরমে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদেরও বেগ পেতে হচ্ছে হাসপাতালের গরমের কারণে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ৪ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে ২০টি শয্যা। তবে এখানে এখন রোগী থাকছেন ২শ ১৫ জন। একটি বেডেই দুই থেকে তিনজন করে রোগী এবং ১৫ শয্যা বিশিষ্ট ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি আছেন ৭১ জন। এসব অতিরিক্ত রোগীদের অনেককে রাখা হচ্ছে, হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায়।

হাসপাতালের ৪ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্স রূপালী খাতুন বলেন, গত সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রচণ্ড দাপদাহের কারণে ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

শহরের হাউজিং থেকে দুই বছরের শিশু রহমানকে হাসপাতালের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন তা মা আনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, চারদিন ধরে ভর্তি আছি। বেড পাইনি। ডায়রিয়াও ভালো হয়নি। গরমের কারণে বাচ্চার ডায়রিয়া হয়েছে। হাসপাতালের গরমের মধ্যেও গাদাগাদি করে থাকতে গিয়ে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

মিরপুর থেকে আমেনা বেগম তার ছোট ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে বাচ্চার ডায়রিয়া হয়েছে। ভালো হচ্ছে না। পাঁচদিন ধরে ভর্তি রয়েছে।

চৌড়হাস এলাকার হাবিবা চারদিন হাসপাতালের মেঝেতে ছিলেন তার ছেলে হাবিবুর রহমানকে নিয়ে। তিনি বলেন, বেড পাইনি। রোগীর অনেক চাপ।

শিশু হুমায়রাকে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় চারদিন ধরে ভর্তি আছেন, শহরের কাটাইখানা এলাকার সুরভী বেগম। তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরম! গরমে বাচ্চার ডায়রিয়া হয়েছে। এখনও ভালো হচ্ছে না। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। প্রচুর রোগী। সবাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে কোনো জায়গা নেই।

হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান ডা. নাজিম উদ্দীন বলেন, প্রচণ্ড গরমে শিশুদের ডায়রিয়া ও সর্দি-জ্বর বেড়ে গেছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়। এ রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। তাদের কোনোভাবেই রোদে যেতে দেওয়া যাবে না। বিশেষ করে সকাল ৯টার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একদম রোদে যাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, শীতল জায়গায় তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বেশি বেশি পানি ও বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। গোসল করাতে হবে। এছাড়া সুতির হালকা জামা-কাপড় পরাতে হবে। ফ্রিজের ঠান্ডা পানি বা খাবার শিশুকে দেওয়া যাবে না। গরমে হঠাৎ ঠান্ডা পানি বা খাবার খেয়ে বাচ্চারা সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, গত কয়েকদিনের গরমে শিশুরা নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই গরমের কারণে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।

এক্ষেত্রে অন্যান্য বয়সীদের তুলনায় শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। বর্তমানে আমার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেশি। শিশু ওয়ার্ডে ২০টি শয্যা হলেও এখানে এখন রোগী আছে ২শ ১৫ জন এবং ১৫ শয্যা বিশিষ্ট ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি আছে ৭১ জন।

এসব অতিরিক্ত রোগীদের অনেককে রাখা হচ্ছে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায়। এছাড়া জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়ার রোগী তো আছেই। অন্যান্য সময়ের তুলনায় আক্রান্তের এ হার আমরা অস্বাভাবিক বলছি।

;

ঈদের ছুটিতেও স্বাস্থ্যসেবায় প্রভাব পড়েনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের লম্বা ছুটিতেও দেশের কোনো হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবায় প্রভাব পড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঈদে লম্বা ছুটিতে দেশ। এর মধ্যেও দেশের কোনো হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার ব্যাঘাত ঘটেনি। মন্ত্রী হিসেবে এটা আমার প্রথম ঈদ। আমি আশা করছি দেশের মানুষ খুব সুন্দরভাবে ঈদ পালন করছেন।

তিনি বলেন, আমি বুধবারও কয়েকটা হাসপাতালে গিয়েছি। আজকে আরও কয়েকটি হাসপাতালে যাব। বুধবার দুটি হাসপাতালে গিয়েছি, দুই জায়গায়ই আমি পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স পেয়েছি। আমি সন্তুষ্ট। রোগীদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

হাসপাতাল পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং পয়লা বৈশাখের ছুটি চলাকালে দেশের হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থা নিজে মনিটরিং করার ঘোষণা দেন। এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসাসেবা যাতে ব্যাহত না হয়, সে জন্য ছুটির সময় নিজে মনিটরিং করব। না জানিয়ে হাসপাতালে যাব। শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরের হাসপাতালেও মনিটরিং করা হবে বলেও জানান তিনি।

;