আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ করতে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞ দুই চিকিৎসকসহ চারজনের একটি টিম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রবেশ করেছেন।
সোমবার (০৪ মার্চ) সকাল ৯ টায় তারা বিএসএমএমইউতে প্রবেশ করেন।
বিএসএমএমইউ সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের এই টিমটি ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ করছেন। পর্যবেক্ষণ শেষে তারা বিএসএমএমইউ'র চিকিৎসকদের সঙ্গে সকাল ১০ টায় একটি বোর্ড মিটিংয়ে বসবেন।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সিঙ্গাপুর থেকে আগত টিমটি ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ করছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত সকাল ১১ টায় একটি সংবাদ ব্রিফিং এর মাধ্যমে জানানো হবে।’
এর আগে রোববার (৩ মার্চ) রাত পৌনে ৮ টার দিকে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের চার সদস্যদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল বিএসএমইউ হাসপাতালে যান।
তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
জাতীয়
জুতার বাক্সভর্তি কালো সদৃশ্য জিনিস। ছবি ও ভিডিওতে দূর থেকে প্রথমে দেখে কেউ কেউ ভেবেছেন ময়লা-আবর্জনা। কেউবা আবার মনে করেছেন চা পাতা। তবে আরও কাছাকাছি থেকে দেখতেই ভাঙে সবার ভুল। আসলে স্তূপ করে রাখা হয়েছে মশা। চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের এ ব্লক জামে মসজিদে দরজা জানালা বন্ধ করে স্প্রে করার পর মারা যায় এসব মশা। পরে সেগুলো একজায়গায় জড়ো করে ছবি ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেন মো মুছা নবী নামের এক ব্যক্তি। মুহূর্তেই সেই ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
সেই ভিডিও এবং ছবি দেখে নগরীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে থাকেন। সবাই বলতে থাকেন, মশার যন্ত্রণায় বাইরে কোথাও এক মিনিট শান্তিতে দাঁড়ানো কিংবা বসা যায় না। ঘরেও দিনরাত মশারির নিচে থাকতে হয়। এখন প্রায় সব বাসা-বাড়ি কিংবা অফিসের সব মশা মারলেও এমন স্তূপ পাওয়া যাবে বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ। কিন্তু মশা নিধনের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) যেন কোনো হুশ নেই। দিনে দিনে মশার যন্ত্রণা বেড়ে চললেও দৃশ্যমান তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে এই সংস্থার। সেজন্য মশার সেই ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে অনেকে মেয়র মো. রেজাউল করিমের সমালোচনা করেন। কেউবা বলছেন, মশাগুলো প্যাকেটভর্তি করে সিটি করপোরেশনে পাঠানো হোক, তাতেই হয়তো সম্বিত ফিরবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের।
চট্টগ্রামে গত এক বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১০ জন। মারা যাওয়াদের মধ্যে গড়ে পাঁচজনের একজন শিশু। সবমিলিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ সহস্রাধিক মানুষ। ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু ও আক্রান্ত নিকট অতীতে আর দেখেনি চট্টগ্রাম। ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়লে মশা তাড়াতে চসিকের কিছু তোড়জোড় দেখা যায় বটে, কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই আবার ‘ঘুম’। সর্বশেষ গত বছরের ২ অক্টোবর ডেঙ্গু মশার উৎসস্থল ধ্বংসে অভিযান চালিয়েছিল সংস্থাটি। এরপর প্রায় সাত মাস কেটে গেলেও নেই কোনো কার্যক্রম। আর সিটি করপোরেশনের এমন নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বেড়ে গেছে মশার উপদ্রব। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন শুধু মশার প্রাদুর্ভাব হলেই তৎপরতা চালিয়ে মশা নিধন করা সম্ভব নয়, এ জন্য দরকার বছরজুড়ে মশক নিধন কার্যক্রম।
তোপের মুখে মেয়র:
রমজানে গরিবদের সঙ্গে ইফতার গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়নকাজের চিত্র নিজের ফেসবুক পেজে তুলে ধরছেন সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। কিন্তু মেয়রের এসব ‘ভালো’ কাজও প্রচার পাচ্ছে কম, উল্টো সেসব ছবির নিচে বেশিরভাগই মন্তব্য করছেন মশার যন্ত্রণা নিয়ে। সবারই যেন একটাই চাওয়া, মশা থেকে মুক্তি। সেজন্য কেউ কেউ লিখেছেন, ‘মেয়র মহোদয় উন্নয়ন করতে করতে মশা মারার কথা ভুলে গেলে গেলে চলবে না, নগরবাসীকে বাঁচান। মশা থেকে উদ্ধার করেন।’ কেউবা আবার বলছেন, ‘চীনের দুঃখ হোয়াংহো, চট্টলার দুঃখ মশা।’ কেউ কেউ মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সিটি করপোরেশনকে চিঠিও দিচ্ছেন। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। এখন কোথাও কোথাও ঘরে ঘরে জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। জ্বর হলেই মানুষদের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক কাজ করছে।
এদিকে মেয়রের বিভিন্ন পোস্টের নিচে নগরবাসীর ক্রমাগত মশা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যের পর যেন কিছুটা সতর্ক হয়েছে সিটি করপোরেশন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ১টা ২৯ মিনিটে মেয়রের পেজে ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন ভবন ও নালায় মশক নির্ধন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মানুষ এমন কার্যক্রমের প্রশংসা করলেও ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলেছেন, শুধু দেখানোর জন্য নয়, শহরের অলি-গলিতে এমন দৃশ্যমান কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চালাতে হবে। তাহলেই মানুষ মশার যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাবে।
তবে মশার লার্ভা মারার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের মশক ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অ্যাডাল্টিসাইডের কিছুটা সংকট আছে। অবশ্য ২০ হাজার লিটার অ্যাডাল্টিসাইড কেনার প্রক্রিয়া চলছে।’
কেন মশক নিধন কার্যক্রমে গতি নেই:
গত বছর ডেঙ্গুতে বড় ধাক্কার পরও এবার মশক নিধন কার্যক্রমে তেমন একটা গতি দেখা যাচ্ছে না। এই সুযোগে মশার প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। কিন্তু কেন গতি কমে আমছে মশক নিধন কার্যক্রমে সেটি খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, মশক নিধন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের ব্যস্ত রাখা হয়েছে অন্য কাজে। এর ফলে মশক নিধন কার্যক্রম বলতে গেলে থেমেই আছে।
সিটি করপোরেশনের মশা মারার কাজ কী কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে, তার বিস্তারিত তুলে ধরে ১১ মার্চ অফিস আদেশ দিয়েছে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ। প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমীর সই করা ওই আদেশে বলা হয়, মশার লার্ভা মারার ওষুধ ছিটানো এবং মশা মারার ধোঁয়ার ওষুধ ছিটানোর কাজে নিয়োজিত সেবকদের মূল কাজ থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। তাদের দিয়ে আবর্জনাবাহী গাড়ি, নালা পরিষ্কার এবং ঝাড়ু দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে। এতে সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কাজ মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে।
তবে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মোবারক আলী বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘জনবল মশক নিধন কার্যক্রমের জন্য পর্যাপ্ত জনবল ছিল না। সেজন্য ওয়ার্ড পর্যায়ে নালা-নর্দমা পরিষ্কার ও বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে যুক্ত সেবকদের মশা মারার কাজে নিয়োজিত করা হয়েছিল।’
নগরবাসী অবশ্য আর কোনো ‘অজুহাত’ শুনতে রাজি নন। তাদের এখন একটাই চাওয়া-‘মশা থেকে আমাদের বাঁচান।’
নিজের হাতে থাকা বোমা বিস্ফোরণে ছিন্নবিচ্ছিন্ন যুবকের দেহ
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, শরীয়তপুর
জাতীয়
শরীয়তপুরের জাজিরায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় নিজের হাতে থাকা বোমা বিস্ফোরণের এক যুবকের দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পেটের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসে। আহত সজিব মুন্সী (২৫) বিলাসপুর ইউনিয়নের মিয়া চান মুন্সী কান্দি এলাকার মোহাম্মদ আলী মুন্সির ছেলে।
বুধবার (২৭ মার্চ) রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে বিলাসপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মুমূর্ষ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাজিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কবির আলম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান আ. কুদ্দুস ব্যাপারী গ্রুপ এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আ. জলিল মাদবর গ্রুপের মধ্যে এর আগেও দফায়-দফায় সংঘর্ষ হয়। এ বিষয়ে জাজিরা থানায় সর্বমোট ১০টি মামলা রয়েছে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে মিয়া চান মুন্সী কান্দি গ্রামের দুই চাচাত ভাই জমি নিয়ে মারামারি করে। বিকেলে ওই ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুস ব্যাপারী ও জলিল মাদবর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লুটপাট করা হয়।
এতে উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়। খবর পেয়ে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম পাহাড়ায় থাকলেও বুধবার সন্ধ্যায় আবার ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় ককটেল বহন করা বালতি নিয়ে যাওয়ার সময় কাঁদায় পিছিলে যায় তখন বালতিসহ ককটেল গুলোর বিস্ফোরণ ঘটে সজিব মুন্সী নামে একজন গুরুতর আহত হন।
জাজিরা থানার ওসি হাফিজুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, "আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে বোমা বিস্ফারণ হয়ে সজিব নামে এক যুবক আহত হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ঘটনায় মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয়
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে কমিটির সভাপতি হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ সভাপতিত্ব করেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কেবিনেট কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য ফয়জুর রহমান, মো. জাহিদ মালেক, ফজিলাতুন নেসা, সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, নূর মোহাম্মদ, এস. এ. কে একরামুজ্জামান, মো. রেজাউল হক চৌধুরী ও মো. নজরুল ইসলাম অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে আলোচ্য সূচিতে অন্তর্ভুক্ত নিরীক্ষা, নিরীক্ষার ধরণ ও প্রতিবেদন, অনালোচিত আর্থিক হিসাব, উপযোজন হিসাব, ফাইন্যান্সিয়াল অডিট রিপোর্ট, কমপ্লায়েন্স অডিট রিপোর্টের বিষয়ে অবহিতকরণ, আলোচিত পারফরম্যান্স অডিট রিপোর্টের বিষয়ে অবহিতকরণ এবং অডিট অধিদপ্তরগুলোর কার্য-পরিধি ও কার্য পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশের মহা-হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) এবং সিএজি কার্যালয়ের কার্যপরিধি, হিসাব মহা-নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সম্পর্কে অবহিতকরণ, সরকারী আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সরকারী ব্যয় ও আর্থিক জবাবদিহিতায় সরকারী হিসাব কমিটির ভূমিকা এবং তাৎপর্য সম্পর্কে অবহিতকরণ বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অডিট অধিদপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কে সারসংক্ষেপ করা হয় এবং কমিটির সদস্যরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে সিএজি কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর, পূর্ত অডিট অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অডিট অধিদপ্তর, সিভিল অডিট অধিদপ্তর, প্রতিরক্ষা অডিট অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অডিট অধিদপ্তর, সিজিডিএফ কার্যালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জায়গা দেখে সন্তুষ্ট ভুটানের রাজা, আবারও আসতে চেয়েছেন কুড়িগ্রাম
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
জাতীয়
উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামে 'ভুটান বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল' পরিদর্শনে আসেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। এটি ছিলো বিদেশি কোন রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম কুড়িগ্রাম সফর।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১টা ২০ মিনিট থেকে ১টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত কুড়িগ্রাম শহরের নিকটবর্তী ধরলা পাড়ের মাধবরাম গ্রামের 'ভুটান বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে' অবস্থান করেন ভুটানের রাজা।
ভুটানের রাজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিদর্শন শেষে স্থান ত্যাগের পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। তিনি বলেন, ভুটানের রাজা এই জায়গাটিকে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। জায়গাটি পরিদর্শনে এসে তাঁর পছন্দ হয়েছে। তিনি (ভুটানের রাজা) এটিও বলেছেন যে, যখন কাজ শুরু হবে তখন আমি নিজে আরও একবার এখানে আসবো। তিনি এখানকার জায়গা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে সন্তুষ্ট হয়েছেন।
ভুটানের রাজার বরাত দিয়ে ইউসুফ হারুন আরও বলেন, রাজা বলেছেন, স্থানীয় লোকজনের চাহিদা এবং বিনিয়োগকারীদের চাহিদার সমম্বয়ে এখানে কলকারখানা গড়ে উঠবে। বিশেষ করে কৃষিভিত্তিক এবং উৎপাদনশীলতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
রাজার কুড়িগ্রাম সফরে তাঁর সাথে ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, কুড়িগ্রাম ২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার, কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক সহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ভারতের আসাম রাজ্যের গোলকগঞ্জে প্রবেশ করেন বিকেল ৩টার দিকে। সেখানে তাঁকে বিদায় জানান বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এর মধ্য দিয়ে ভুটানের রাজার বাংলাদেশে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষ হলো।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে ধরলা ব্রিজের পূর্বে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পূর্ব পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এরপর ২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রানির সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় সভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভুটান সরকার এগিয়ে আসে। এর প্রেক্ষিতে কুড়িগ্রামে একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ভুটানকে ১৯০ একর জমি দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ভুটানের রাজার চলমান বাংলাদেশ সফরে কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা বিষয়ে একটি চুক্তিও সাক্ষরিত হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের সাথে।