চিলিতে বিক্ষোভ অব্যাহত, নিহত ৮
চলমান বিক্ষোভে উত্তাল চিলি। মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে ১৪ অক্টোবর থেকে রাস্তায় নামে চিলির জনগণ, এর বেশিরভাগই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। চলমান বিক্ষোভে আন্দোলনকারীরা কয়েকটি রেল স্টেশনে হামলা চালিয়েছেন। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন এবং বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করেন। এমনকি রাতের বেলায়ও বিক্ষোভ করেন তারা।
বিক্ষোভের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোর নিকটবর্তী অঞ্চলে একটি পোশাক কারখানায় বিক্ষোভকারীদের দেওয়া আগুনে পাঁচ জন নিহত হন। আর গত রোববার (২০ অক্টোবর) একটি সুপার মার্কেটে বিক্ষোভকারীদের দেওয়া আগুনে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সান্তিয়াগোর গভর্নর।
সরকারের পক্ষ থেকে মেট্রোরেলের ভাড়া কমানো হলেও বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে আন্দোলনকারীরা। তাদের মতে, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও জীবনযাত্রার চড়া মূল্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন তারা।
এদিকে, বিক্ষোভ থামাতে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে জরুরি অবস্থা জারি করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা। বিক্ষোভ না থামায় তিনি নতুন করে দেশটির আরও ছয় শহরে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
রোববার এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দেশটির সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ রক্ষার্থে জরুরি অবস্থা ডাকা হয়েছে। আমরা একটি শক্তিশালী শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি, যারা কোনো সীমা ছাড়াই সহিংসতা বাড়াতে ইচ্ছুক। এটা কোনো আন্দোলন নয়। এটা হল ধ্বংসযজ্ঞ। আর এটা অপরাধের সমতুল্য।’
চিলির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেস চ্যাডউইক তিনি বলেন, ‘চলমান বিক্ষোভে দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রায় ৪০টি সুপার মার্কেটে লুটপাট হয়েছে। আরও ৭০টি স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।’
বিক্ষোভে স্থবির হয়ে আছে চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো। শহরটির দোকানপাট সব বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্রায় সব ধরনের গণপরিবহন। এছাড়া কয়েকটি আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে।
আন্দোলন দমাতে চিলির সামরিক বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করছে। দেশটির রাস্তায় প্রায় দশ হাজার ৫০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা যায়।
সরকারি তথ্য মতে, প্রায় ১ হাজার ৪০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দু'জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।