দেশের তিন শতাংশ মানুষ কোনো প্রকার অসংক্রামক ঝুঁকিতে নেই, ফলে ৯৭ শতাংশ মানুষই অসংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। ‘বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকিসমূহের জরিপ-২০১৮’ এর প্রকাশিত ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (২৯ মে) দুপুর সাড়ে ৩টায় সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকির ব্যাপ্তি নিরূপণে স্টেপস জরিপের (ওয়াইজ অ্যাপ্রোচ টু কমিউনিকেবল ডিজিজ রিস্ক ফ্যাক্টর সার্ভিলেন্স) ফলাফল জাতীয়ভাবে প্রকাশ করা হয়। জরিপের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন। এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।
জরিপে উঠে আসা অসংক্রামক রোগের সামগ্রিক ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দৈনিক ৫ প্রমাণ মাপের (নির্দিষ্ট কৌটা পরিমাণ) কম ফল ও সবজি গ্রহণ, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, তামাক ব্যবহার, প্রতিদিন ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চমাত্রার রক্তের চর্বি অথবা বর্তমানে যারা ঔষধ গ্রহণ করছে।
৯ হাজার ৯০০ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষকে জরিপের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী ১৮ থেকে ৬৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এই ছয় ধরনের মধ্যে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই এমন মানুষের শতকরা হার মাত্র ৩ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষের ১ দশমিক ৯ ও নারীর হার ৪ শতাংশ।
উপরের ঝুঁকিগুলোর মধ্যে একটি বা দুটি ঝুঁকি রয়েছে এমন হার ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ (পুরুষ ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ ও নারী ৭৩ দশমিক ১ শতাংশ) ও দুই বা ততোধিক ঝুঁকি রয়েছে ৪০ দশমিক ১ শতাংশ (পুরুষ ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ ও নারী ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ) মানুষের।
জরিপে আরও উঠে এসেছে, উপরের ছয়টির মধ্যে তিনটি বা এর বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ২৬ দশমিক ২ শতাংশ (পুরুষ ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ ও নারী ২২ দশমিক ৮ শতাংশ) মানুষ।
পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা আছে। স্বাস্থ্যহানির ক্ষেত্রে সবসময় মন্ত্রণালয় সবক্ষেত্রে সেটা ফেরাতে পারবে না। বায়ু দূষণ হলে, পানি দূষণ হলে, খাবারে ভেজাল রং মেশালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছু করতে পারবে না। এটা অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাহলে আমরা সুস্থ থাকব। ২৫ দশমিক ২ ভাগ মানুষের ব্লাড প্রেসার আছে। এটি হলে মানুষ অসুখে ভোগেন। শাক-শবজি, ফল খেলে ও ব্যায়াম করলে সবাই ভালো থাকবে।’
এ সময় জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে দেশব্যাপী সারা বছর ফল ও শাকসবজির সহজলভ্যতা ও সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করাসহ ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।
স্টেপস সার্ভে-২০১৮ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের এনসিডিসি বিভাগের আর্থিক সহায়তায় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কারিগরি সহায়তায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনাটভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসম) কর্তৃক পরিচালিত হয়।