বিড়ি সতিন, আর সিগারেট কি দুলাভাই?

  • স্পেশাল  করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আইইবি মিলনায়তনে বিড়ি শ্রমিকদের সমাবেশ/ছবি: বার্তা২৪.কম

আইইবি মিলনায়তনে বিড়ি শ্রমিকদের সমাবেশ/ছবি: বার্তা২৪.কম

‘বিড়ি সতিন আর সিগারেট কি দুলাভাই? সিগারেট রেখে বিড়ি বন্ধ করতে চান কেন? বিড়ি বন্ধ হলে পুরুষরা রিকশা-ভ্যান চালাবে, আমরা মহিলারা কী করব? কী করে পেটের ভাত জোগাব?’

‘আমাদের পিঠে লাথি মারেন সহ্য করব। কিন্তু পেটে লাথি মারবেন না, সহ্য করব না।’

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) আইইবি মিলনায়তনে বিড়ি শ্রমিক সমাবেশে এমন আক্ষেপ ঝরে বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা মায়া বেগম।

তিনি বলেন, ‘ধূমপান বন্ধের কথা বলেন, আমরাও ধূমপান বন্ধের পক্ষে। কিন্তু সিগারেট রেখে বিড়ি বন্ধ করতে চান কেনো। সিগারেট টানেন ৭০ শতাংশ লোক। আর বিড়ি মাত্র ৩০ শতাংশ। তাহলে সিগারেট রেখে ধূমপান বন্ধ করা কতটুকু যৌক্তিক। আগে সিগারেট বন্ধ করতে হবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/30/1559201543099.jpg

বিড়ি শ্রমিক নেতা আবুল হাসনাত লাবলু বলেন, ‘ধূমপান বন্ধ করতে হলে আগে সিগারেট বন্ধ করা উচিত। কিন্তু ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দালাল কিছু আমলা বিড়ি বন্ধ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা এটা হতে দিতে পারি না। প্রয়োজনে রাজপথে জীবন দিতে বাধ্য হবো। আমাদেক সেদিকে যেতে বাধ্য করবেন না।’

বিড়ি শ্রমিক এসএম ফকির বলেন, ‘দেশে ১৮ লাখ বিড়ি শ্রমিক রয়েছে। একটি জরিপে এসেছে ২৮ শতাংশ শ্রমিক বিধবা, ৩২ শতাংশ শারীরিকভাবে অক্ষম। যাদের অন্য কোনো কাজ করার ক্ষমতা নেই। যত গজব বিড়ির উপর কেনো! ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো খবরদারি করছে। তাদের কথামতো চলছে কিছু আমলা।’

প্রধানমন্ত্রী আপনি ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বলেছিলেন, "বিড়ি তৈরি করে গরিব মানুষ, পান করেন গরিব মানুষ এটার উপর বেশি কর বাড়ানো যাবে না"। আপনার কাছেই আবেদন, আপনি আমাদের বেকার করে দিবেন না। বিড়ির উপর ট্যাক্স বাড়াবেন না। ভারতের ন্যায় বিড়িকে কুটির শিল্প ঘোষণা করুন।

যশোরের বিড়ি শ্রমিক খাদিজা বেগম বলেন, " প্রধানমন্ত্রী আমরা কাজ করি খেতি চাই। খেটি খেতি চাই। আমাদের কাজ বন্ধ করে দিবেন না।

বিড়ি শ্রমিক শিল্পী বেগম বলেন, আমাদের আর কোনো কাজের সুযোগ নেই। আমরা সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে চাই। সন্তানদের নিয়ে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চাই। আমাদের রিজিক বিড়ি কারখানা বন্ধ করে দিবেন না। 

বিড়ি শ্রমিক ঈশ্বরদী গার্লস স্কুলের ছাত্রী দিশা বলেন, আমি বিড়ির কারখানায় কাজ করে নিজের পড়ালেখা চালায়। বিড়ি বন্ধ হয়ে গেলে আমার পড়ার খরচ বন্ধ যাবে। আমার মতো দিশাদের পড়ালেখার পথ বন্ধ করে দিবেন না।

বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এমএ বাঙালির সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার শ্রমিক যোগদেন। বিড়িকে কুটির শিল্প ঘোষণা ও কর প্রত্যাহারের দাবিতে এই শ্রমিক সমাবেশ আয়োজন করে বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন।