ঈদ-উল আযহা দেশে দেশে



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
দেশভেদে ঈদ-উল আযহাকে বরণ করাতে রয়েছে পার্থক্য

দেশভেদে ঈদ-উল আযহাকে বরণ করাতে রয়েছে পার্থক্য

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি মুসলিম। ৬১০ সালে ইসলামের নবী মুহম্মদ (সা.)-এর নবুয়্যত প্রাপ্তির মধ্যদিয়ে যে আদর্শ জন্মলাভ করে, আজ তা বিস্তৃত পৃথিবীর প্রত্যেকটি কোণে। শুধু আলাদা বিশ্বাসব্যবস্থা না, ইসলাম নিয়ে এসেছিল স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, জীবনবোধ এবং ভাবধারা। আচার আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি তাই দিয়েছে উৎসবের ধারণাও। মুসলিম জাতির বৃহত্তম উৎসবের দিন হিসাবে গণ্য করা হয় ঈদ-উল আযহাকে।

কুরবানির ঈদ বা পল্লীবাংলায় বড় ঈদ নামে পরিচিত ঈদ-উল আযহা। পালিত হয় হিজরি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ। মুসলিম জাতির পথিকৃৎ ইবরাহিম (আ.) মহান আল্লাহর কাছে নিজের ইচ্ছাকে সমর্পণ করার মধ্যদিয়ে আদর্শ স্থাপন করেছেন। উদ্ধত হয়েছিলেন নিজের পুত্রকে কুরবানি করতে। মুসলিম জাতি মূলত সেদিনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা হিসাবেই পালন করে এই দিন। গ্রহণ করে নিজেদের মতো করে উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে।

তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঈদ-উল আযহাকে বরণ করাতেও রয়েছে পার্থক্য। কিছুটা স্থানীয় সংস্কৃতির প্রভাব আর কিছুটা সময়ের বিবর্তন। নানান দেশের প্রেক্ষাপটে ঈদ-উল আযহাকে কিভাবে উদযাপন করা হয়, তা নিয়েই আজকের আয়োজন।

ইরান

প্রত্যুষে উঠে নতুন পোশাক পরিধান করে প্রস্তুত হয় ইরানের মানুষ। স্থানীয় মসজিদ কিংবা মাঠে হাজির হয়ে আদায় করে ঈদের নামাজ। ধর্মগ্রন্থ পাঠ এবং আলোচনা চলে দেশব্যাপী। পিতা ইবরাহিমের ঘটনাকে স্মরণ করে কুরবানি করা হয় বিভিন্ন ধরনের পশু। গরিব, পরিবার, বন্ধু এবং আত্মীয়দের সাথে ভাগাভাগি করা হয় খাবার। বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে সুষম বিলি-বণ্টন করা হয়। এই বিলি বা দান মূলত কুরবানির শিক্ষা। শিশু আর আত্মীয়রা পায় উপহার। যাদেরকেই কুরবানি দিতে দেখা যায়, আহবান করা হয় গরিব ও অভাবীদের জন্য এগিয়ে আসতে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565571863250.jpg
◤ ইরানে কুরবানির দৃশ্য◢


খাদ্যদ্রব্যের জন্য ইরানে ঈদ-উল আযহা নোনতা ঈদ বলেও অভিহিত হয়। কুরবানি পশুর গোশত দিয়ে নানান কিসিমের মুখরোচক খাদ্য প্রস্তুত করা হয়। বিশেষভাবে বলতে গেলে বিভিন্ন ধরনের কাবাব এবং হালিম। বাঘালির মতো স্থানীয় খাবারেরও প্রাচুর্য থাকে এই সময়।

আরব আমিরাত

ঈদ-উল আযহায় দশ দিন আগে চাঁদ দেখে দিন নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ উৎসবের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেবার সময় পান সবাই। তার জন্য ঈদের দিনের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত সুপার মার্কেটগুলোতে ভিড় লেগে থাকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে কমপক্ষে তিন দিন সরকারি বন্ধ দেওয়া হয়। সবথেকে গুরুত্ব দেওয়া হয় ঠিক আগের দিন অর্থাৎ আরাফাতের দিন।

হজ্ব না করলেও মুসলমানরা এদিন ইবাদতে অংশগ্রহণ করে। আরাফাতের দিন রোজা রাখার কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত বলে এই দিনটা বেশ আড়ম্বরের সাথে পালিত হয়।

ঈদের দিন সবাই মিলিত হয় ঈদগাহে। নামাজের পরে পরস্পর কোলাকুলি ও ঈদ মোবারক জানিয়ে পরস্পরকে অভিবাদন জানায়। এর মধ্যদিয়েই শুরু হয় তিন দিনব্যাপী উৎসব। বিনিময় ঘটে উপহারের। শিশুরা দিনটাতে নতুন কাপড় পরে প্রতিবেশিদের ঈদ বিস্কুট বিলি করে। বাড়িকে সাজানো হয় ঈদের ব্যানারে। দুধ খুরমো এবং শির খুরমো নামে সুস্বাদু খাবার তৈরি হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572011736.jpg
◤ আরব আমিরাতে ঈদের রাত্রি ◢


আগের রাতে মেহেদী পড়ার সংস্কৃতি আরব আমিরাতে বেশ ভালোভাবেই আছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যে বিশেষ ছাড় এবং অফার দেওয়া হয়। এজন্য অনেকেই সুযোগটাকে হাতছাড়া হতে দেয় না। তাছাড়া পরিবার নিয়ে বিভিন্ন রিসোর্টে ভ্রমণ কিংবা রেস্টুরেন্টে খাবার-দাবারের দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক। 

কানাডা

দিনটাকে উদযাপন করার জন্য কানাডার মুসলমানরা একত্রিত হয়। কানাডার মুসলিমদের সংগঠন The Muslim Association of Canada (MAC) এই দিনকে উৎসবমুখর করে তোলার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। নানা রকম রাইড, শো কিংবা টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। চলে বিভিন্ন রান্নাও। উপস্থিত থাকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গও তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572131932.jpg
◤ ঈদ-উল আযহার শুভেচ্ছা জানাতে ট্রুডো ◢


ঈদ-উল আযহা কানাডায় সরকারি বন্ধ হিসাবে স্বীকৃত নয়। তবে কর্মস্থলে মুসলমানদের চাপ দেওয়া হয় না। বিশেষ করে মুসলিম সংগঠনগুলো স্বেচ্ছায় এদিন বন্ধ বা কর্মবিরতি পালন করে। মসজিদ কিংবা ঈদের নামাজের স্থলে দেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। 

ভারত

ভারতীয় উপমহাদেশে ঈদ-উল আযহা পরিচিত বকরি ঈদ নামে। নামটি মূলত বকরি কুরবানির ধারণা থেকেই গৃহীত। বৃষ্টি না হলে এদিনের বিশেষ নামাজ ঈদগাহেই পড়া হয়। সেখান থেকে ফিরে কুরবানি। সাম্প্রতিক সময়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদের উত্থানে মুসলিমরা একটু কোণঠাসা হবার দরুন গরু কুরবানি বিশেষভাব ভীতিকর হয়ে পড়েছে। তাই ঈদের দিন সাধারণত ছাগল বা ভেড়ার প্রাধান্য বেড়ে যাচ্ছে দিনকে দিন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572279972.jpg
◤ ভারতে ঈদের জামাত ◢


যারা কুরবানি করে তারা দরিদ্র এবং আত্মীয়দের দাওয়াত করে একবেলা খাওয়ানোর জন্য। ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা-দর্শনের উদ্দেশ্যে অনেকেই বেড়িয়ে পড়ে। যেহেতু ভারতের মাটি সুদীর্ঘকাল ধরে মুসলিম সাম্রাজ্যের কেন্দ্রভূমি ছিল, তাই তা থেকে নিজেদের পূর্বপুরুষের চিহ্নে খুঁজে পায় নতুন প্রেরণা। 

পাকিস্তান

পাকিস্তানে ঈদ-উল আযহা চার দিনব্যাপী উৎসব হিসাবে পালিত হয়। বেশিরভাগ স্থানীয় দোকান এবং শপিং সেন্টারগুলো বন্ধ হয়ে যায়। নামাজের মধ্যদিয়েই শুরু হয় উৎসবের আমেজ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572397201.jpg
◤ ঈদের দিনে পাকিস্তান ◢


সামর্থ্যবান প্রতিটি পরিবার তাদের সাধ্যমত পশু কুরবানি করে। যারা কুরবানি করতে পারেনি কিংবা যারা অক্ষম, তাদের নিমন্ত্রণ করা হয়। টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে চালু করে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। 

তুরস্ক

মুসলিম সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু তুরস্ক। ঈদ সেখানে সবচেয়ে পুরাতন উৎসবের মধ্যে একটা। আনাতোলিয়ার তুর্কি বেলিক এবং পরবর্তীদের অটোম্যান সাম্রাজ্যের উত্থানে তুরস্কে ঈদকে অন্যরকম মর্যাদায় উন্নীত করেছে সবার মধ্যে।

পুরাতন বিশ্বাস মতে, এই দুইদিনের মধ্যে বিয়ে কিংবা নতুন কোনো ব্যবসা শুরু করা ঠিক না। প্রত্যেক বাড়ি থেকে ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়া হয়। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে ঈদের বিশেষ নামাজের পর শুরু হয় কুরবানি। কোনো কোনো অঞ্চলে পশুকে মেহেদি এবং কাপড় দিয়ে সাজানো হয়। অন্যান্য অঞ্চলের মতোই কুরবানির গোশত বণ্টন করে আত্মীয় ও অভাবীদের মধ্যে বিলি করা হয়। পশু হিসাবে থাকে সাধারণত মেষ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572544630.jpg
◤ তুরস্কের মাটিতে ঈদের আমেজ ◢


সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কে কেউ কেউ পশু কুরবানি না করে সমপরিমাণ অর্থ দরিদ্র তহবিল কিংবা মুসলিম উন্নয়ন সংস্থাতে দান করে। কেউ দরিদ্রদের বিশেষ দেখাশোনার ভারও গ্রহণ করে। ছুটির প্রথম দিনটা থাকে মূলত প্রতিবেশি ও আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে যাবার জন্য। বয়স্কদের হাতে চুমু দেওয়া সম্মান জানানোর নামান্তর। বন্ধ থাকে মোটামুটি চার দিন। 

মরক্কো

ঈদ-উল আযহা মরক্কোতে ঈদ-উল কাবির নামে স্বীকৃত। সাধারণত অন্যান্য দেশের মতোই দিনটা শুরু হলেও স্থানীয় সংস্কৃতির আমেজ দেখা যায়। ঈদের নামাজের পর পশু কুরবানিকে গণ্য করা হয় আল্লাহর উদ্দেশ্যে ত্যাগ। পশু গরু, ছাগল কিংবা ভেড়া থাকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572690748.jpg
◤ মরক্কোতে ঈদ পালিত হয় উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে ◢


মরক্কো একসময় মুসলিম সাম্রাজ্যের অন্যতম বিচরণভূমি থাকায় ইসলামী প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে। ঈদের দিন তারা স্থানীয় মসজিদ ও স্থাপত্য পর্যবেক্ষণে সময় দিতে পছন্দ করে। তাছাড়া কুরবানির পশু এবং তাজিনের মতো স্থানীয় খাবার আত্মীয় ও দরিদ্রদের সাথে ভাগাভাগি করা হয়। 

মিশর

“ক্বুল সানা ওয়া ইনতা তায়েব” বলে মিশরীয়রা একে অপরকে অভিনন্দন জানায় পবিত্র ঈদ-উল আযহায়। ঈদকে ঘিরে আয়োজন করা হয় হরেক কিসিমের খাবারের। প্রতিবেশি এবং আত্মীয়দের মধ্যে দরিদ্রদের সাথে ভাগ করা হয় ঈদের আনন্দ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573155325.jpg
◤ মিশর ঈদ উদযাপনে পিছিয়ে নেই ◢


শহরব্যাপী অভাবীরা দিনটার জন্য অপেক্ষায় থাকে। ধনী কিংবা মুসলিম সংস্থাগুলো থেকে যেন পর্যাপ্ত সাহায্য সহযোগিতা পায়। 

যুক্তরাজ্য

কয়েকটি ব্রিটিশ শহরে ঈদ-উল আযহা বেশ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে পালিত হয়। কিছু কিছু মসজিদে ইসলাম এবং ইসলামের ইতিহাস নিয়ে লেকচারের আয়োজন করা হয়। সাধারণত হিথ পার্ক ব্রিটিশ মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান বলে বিবেচ্য।

২০১৭ সালে ইউরোপের সবচেয়ে বড় জমায়েত হয়েছে বার্মিংহামে। ১০৬০০০ জন মুসলিম ২৫ জুন একসাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে। জ্যামের কথা মাথায় রেখে জনতাকে সাড়ে সাতটার ভেতরে হাজির হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। যদিও নামাজ শুরুর কথা থাকে সাড়ে আটটার দিকে। তবে আবহাওয়া যদি বিরূপ হয়, তবে নামাজ স্থানীয় মসজিদেই আদায় করা হয়। এই দিক মাথায় রেখে গ্রিন লেন মসজিদে নামাজের সময় দেওয়া হয়েছে সাড়ে আটটা, সাড়ে নয়টা এবং সাড়ে দশটা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573289817.jpg
◤ ইউরোপের মাটিতে বৃহত্তম জমায়েত হয় যুক্তরাজ্যে ◢


গোটা যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মুসলমানদের জীবনযাপনের মান আরো উন্নত করার দিকটা তাদের কাছে প্রাধান্য পায়। তাছাড়া পশু কুরবানি, প্রতিবেশিদের সাথে ভাব বিনিময় এবং বিশেষ স্থানসমূহে ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। 

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী মুসলিমরা সাধারণত বিক্ষিপ্ত। ঈদ তাদের জন্য একত্রিত হবার সুযোগ করে দেয়। বিশেষ করে শিকাগো এবং ফ্লোরিডাতে ভিড় জমে মধ্যপ্রাচ্য, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং আফ্রিকা থেকে আসা মানুষের। নিজ ঐতিহ্যের পোশাক এবং খাবার দিয়ে তার ঈদকে বৈচিত্র্য দান করে।

২০১৬ সালের ঈদ-উল আযহাতে নিউ ইয়র্কের সরকারি স্কুলগুলি বন্ধ ছিল। টেক্সাসে ঈদের সালাতের আয়োজন হয় জর্জ আর ব্রাউন কনভেনশন সেন্টারে। আয়োজন করেছিল Islamic Society of greater Houston (ISGH)।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573468503.jpg
◤ আমেরিকান মুসলিমদের জন্য ঈদ অন্যমাত্রা নিয়ে আসে ◢


কেউ আবার নিজ দেশে টাকা প্রেরণ করে কুরবানি করার জন্য। কেউবা অভাবীদের সহযোগিতার আশায়। ঈদ-উল আযহা তিন দিন স্থায়ী হয়। 

তিউনিশিয়া

অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর মতো ঈদ-উল আযহা তিউনিশিয়াতে সরকারি ছুটি হিসাবে গণ্য হয়। ঈদের দিন পুরুষেরা সকাল সকাল ঈদগাহের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। নারীরা বাসায় অবস্থান করে প্রস্তুত করেন খাবার-দাবার। 

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573633894.jpg
◤ ঈদ পুরনো সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে তিউনিশিয়ায় ◢


পুরুষেরা ফিরে এলেই কুরবানি পর্ব শুরু। তিনভাগের একভাগ পরিবারের জন্য, একভাগ আত্মীয় এবং একভাগ গরিবদের জন্য রাখা হয়। ঈদের জন্য বিশেষ ধরনের পিঠা ও বিস্কুট তৈরি হয় তিউনিশিয়ায়। তাছাড়া শিশুদের জন্য থাকে মিষ্টি এবং খাবার।

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ঈদ-উল আযহা কুরবানির ঈদ বা বকরি ঈদ নামে পরিচিত। ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় দুইভাবেই পালন করা হয় এখানে। প্রায় একমাস আগে থেকে সারা পড়ে যায়। দোকান কিংবা সুপার মার্কেটগুলো জমজমাট হয়ে পড়ে ক্রেতার ভিড়।

কুরবানির পশু ক্রয়ের জন্যও চলে প্রায় পনের দিন আগে থেকেই তোড়জোড়। কেউ কেউ বাইরে থেকে উট আনলেও গরু, ছাগল এবং মহিষই এখানে বেশি মাত্রায় কুরবানি দেওয়া হয়। সপ্তাহব্যাপী চলে টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান। পার্ক এবং দর্শনীয় স্থানগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভিড়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573823933.jpg
◤ বাংলাদেশের শোলাকিয়াতে ঈদের জামাত ◢


গ্রাম বাংলায় বাহারি ধরনের পিঠা, সেমাই, ফিরনি এবং পায়েশ রান্না হয়। আত্ময় স্বজনদের বাড়ি ঘুরতে যাওয়া কিংবা দাওয়াত করে বাসায় এনে একসাথে উপভোগ করা হয় ঈদের আনন্দ। দরিদ্র ও অভাবীদের পাশে সাধ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসেন সামর্থ্যবানেরা। 

আরো পড়ুন ➥ উপমহাদেশের প্রসিদ্ধ যত ঈদগাহ

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;