ফুটবলার হতে না পেরে নাট্যকার হলেন বৃন্দাবন দাস



নজরুল ইসলাম তোফা
নাট্যকার বৃন্দাবন দাস/ ছবি: সংগৃহীত

নাট্যকার বৃন্দাবন দাস/ ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। তবে সফলতার সীমা পরিসীমা নেই। যে যার মতো সফল হয়ে তুষ্ট থাকেন। আবার কেউ সফলতার সীমানা নির্ধারণ করতে পারেন না, অসন্তুষ্টি নিয়ে তারা সারা জীবন পার করেন। প্রকৃত ও যথার্থ পরিশ্রম একটি মানুষের জীবনে ‘সৌভাগ্যের লক্ষ্মী’ ডেকে আনে। বলতে চাই বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী নাট্যকারের কথা।

ভালো ফুটবল খেলতেন। তার স্বপ্নও ছিল তিনি সেরা ফুটবলার হবেন। কিন্তু দেশসেরা ফুটবলার তিনি হতে পারেননি। হয়তো বা সেই সফলতার জায়গা তার জন্য নয়। তার জায়গা হলো- নাটক লেখা, নাটক করা আবার তা পরিচালনা করা। তিনি হলেন প্রখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা ও পরিচালক পাবনা জেলার কৃতী সন্তান বৃন্দাবন দাস। দেশসেরা ফুটবলার হতে না পারলেও দেশসেরা নাট্যকার হলেন বৃন্দাবন।

তার ইচ্ছা ছিল ফুটবলে জাতীয় দল তথা আবাহনীর হয়ে আকাশি-নীল রঙের জার্সি গায়ে দিয়ে খেলবেন। ১৯৮১ সালে এই স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে অচেনা শহর ঢাকায় এলেন। আবাহনী ক্লাবে হাজির হয়ে স্বপ্নের সেই কথাগুলো জানান কিংবদন্তিতূল্য ফুটবলার অমলেশ সেনের কাছে।

কিন্তু মনোবাসনার কথা জানানোর পর সেখান থেকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে গিয়েছিলেন পাবনার চাটমোহরে। অমলেশ সেন তাকে বুঝে উঠতে না পারলেও তিনি ১৯৮৪ সাল হতে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত চাটমোহর সবুজ সংঘের এক অন্যতম সংগঠক ও কৃতী ফুটবল খেলোয়াড় হয়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/20/1561049201040.jpg
যমজ দুই সন্তানের সাথে বৃন্দাবন দাস/ ছবি: সংগৃহীত

 

পাবনা জেলা যুব ফুটবল দলসহ পাবনা মোহামেডান ক্লাব ও পাবনা ফুটবল ক্লাবের খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে অংশগ্রহণসহ ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লীগের সিটি ক্লাব, আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব ও আদমজি জুট মিলস এর অন্যতম খেলোয়াড় মনোনীত হয়েছিলেন।

কিন্তু অনুশীলনের সময় আহত হয়ে অনেক দিন মাঠের বাইরে থাকতে হয় বৃন্দাবন দাসকে। বিভিন্ন জেলায় টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে বেশ কয়েকটিতে শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৪-৮৬ সাল পর্যন্ত পর পর তিন বছর চাটমোহর উপজেলার বর্ষসেরা ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে সবুজ-পদকে ভূষিত হয়েছিলেন।

পাবনায় ফুটবল খেলার মাঠের পাশেই ছিল চাটমোহর সাংস্কৃতিক পরিষদ। নাটক করা যায় কিনা! যথারীতি সেখানে তিনি উপস্থিতও হয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালের কথা। সাংস্কৃতিক পরিষদের পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ ফারুককে ঠাট্টা করে বলেছিলেন, ‘নাটকে অভিনয়ের সুযোগ দিতে হবে।’ এ কথা শুনে গোলাম মোহাম্মদ ফারুক তাকে সালাম সাকলায়েন রচিত 'চোর’ নাটকে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। সেখান থেকেই তার সৃষ্টিশীলতার শুরু।

এরপর সেখানেই বাংলাদেশ মুক্ত-নাটক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। সেই সুবাদে ‘আরণ্যক নাট্যদল’-এর কর্ণধার- মামুনুর রশীদের সঙ্গে পরিচয় এবং ঢাকার আরণ্যক নাট্যদলের সদস্য পদ লাভ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মামুনুর রশীদের সহকারী হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/20/1561048993690.jpg
স্ত্রী শাহনাজ ফেরদৌস খুশি ও দুই ছেলের সাথে বৃন্দাবন দাস/ ছবি: সংগৃহীত

 

তারপর ১৯৯৪ সালে বৃন্দাবন দাস বেশ কিছুদিন অবশ্য কাজ করেছিলেন ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে জুনিয়র অফিসার পদে। ১৯৯৭ সালে আরণ্যক ছেড়ে তিনি ‘প্রাচ্যনা্ট’ গঠন করেন। তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘কেয়ার বাংলাদেশে’ কাজ করেন ২০০৬ সাল পর্যন্ত।

বৃন্দাবন দাস জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৬৩ সালে ৭ ডিসেম্বর- পাবনা জেলার চাট মোহর উপজেলার সাঁরোড়া গ্রামে। বৃন্দাবন দাসের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চাটমোহরে। ফুটবল খেলোয়াড় হওয়ার চিন্তা এখনো তিনি নাটকেই যেন ব্যবহার করেন। তিনি পড়াশোনাতেও খুব মনোযোগী ছিলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সম্পন্ন করার পরে চাটমোহর রাজা চন্দ্রনাথ ও বাবু সম্ভুনাথ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি আর চাটমোহর ডিগ্রি কলেজ অর্থাৎ বর্তমানে চাটমোহর সরকারি কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন।

পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে জগন্নাথ কলেজও পড়াশোনা করেন। সেখান থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএসএস (সম্মান) ও এম এস এস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে চাটমোহরের মেয়ে শাহনাজ ফেরদৌস খুশির সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। খুশিও একজন প্রখ্যাত অভিনেত্রী। তাদের 'যমজ পুত্র সন্তান দিব্য জ্যোতি আর সৌম্য জ্যোতি এখন অধ্যয়নরত এব উভয়েই অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং এখন পুরো পরিবার মিডিয়া জগতের সঙ্গে যুক্ত।

বৃন্দাবন দাসের গুণাবলির মূল উত্তরসূরি তার বাবা স্বর্গীয় দয়াল কৃষ্ণ দাস। তিনি ১৯২৫ সাল হতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত একজন প্রখ্যাত কীর্তন শিল্পী; পদাবলী কীর্তন এবং সাহিত্যে যেন 'অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী' ছিলেন। দয়াল কৃষ্ণ দাস প্রায় ৫০ বছর কীর্তন গেয়ে ছিলেন। তার মাতা ময়নারানী, তিনিও সংস্কৃতিমনা ছিলেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/20/1561049161788.jpg

প্রাচ্যনাটের প্রয়োজনে ছোট একটি মঞ্চ নাটক 'কাঁদতে মানা' লিখেছিলেন বৃন্দাবন। মূলত এ নাটকটি মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে প্রাচ্যনাটের শুভ যাত্রা হয়। এরপর প্রখ্যাত নাট্য-পরিচালক সাইদুল আনাম টুটুলের পরিচালনায় নির্মিত হলো বৃন্দাবন দাসের লেখা প্রথম টেলিভিশন ধারাবাহিক-নাটক ‘বন্ধুবরেষু’। নাটকটি ১৯৯৯ সালে একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত ও দর্শকনন্দিত হয়।

পাবনার আঞ্চলিক ভাষাকে বৃন্দাবন তার নাটকে শক্তিশালী এক বৃহৎ স্থান করে দিয়েছেন। তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটক: বন্ধুবরেষু, মানিক চোর, বিয়ের ফুল, ঘরকুটুম, পাত্রী চাই, হাড় কিপটে, গরু চোর, আলতা সুন্দরী, সার্ভিস হোল্ডার, ভালোবাসার তিন কাল, সাকিন সারি সুরি, লেখক শ্রীনারায়ণ চন্দ্রদাস, কতা দিল্যেমতো, মোহর শেখ, ওয়ারেন, টক শো, পত্র মিতালী, ফিরে পাওয়া ঠিকানা, সম্পত্তি, সম্পর্ক, উঁট, ডায়রী, কাসু দালাল ও তিন গেদাসহ প্রায় দুই শতাধিক নাটক রচনা করেছেন। তার লেখা মঞ্চ নাটক : কাঁদতে মানা, দড়ির খেলা, অরণ্য সংবাদ, কন্যা ইত্যাদি।

নাটকে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ 'বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি' ও 'বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন' কর্তৃক সেরা নাট্যকারের পুরস্কার পেয়েছেন বৃন্দাবন দাস। তাছাড়া তিনি বিনোদন বিচিত্রা, টেনাশিনাস, ট্যাব, আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড, প্রতিবিম্ব (অস্ট্রেলিয়া) সহ বহু সম্মাননা ও পুরস্কার লাভ করেন।

লেখক: নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও প্রভাষক।

   

শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সম্পাদক ডিপজল



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে (২০২৪-২৬) সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

সভাপতি পদে মিশা সওদাগর পেয়েছেন ২৬৫ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহমুদ কলি পেয়েছেন ১৭০ ভোট। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুন আক্তার পেয়েছেন ২০৯ ভোট।

মিশা-ডিপজল ছাড়াও সহ-সভাপতি পদে ২৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব ২৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আলেকজান্ডার বো, দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কলি-নিপুণ প্যানেলের মামনুন ইমন এবং কোষাধ্যক্ষ পদে কমল বিজয়ী হয়েছেন।

এছাড়া কার্যনির্বাহী পরিষদের ১১ জন সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন- সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমীন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু এবং কলি-নিপুণ প্যানেলের পলি ও সনি রহমান।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন ৪৭৫ জন শিল্পী। 

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫৭০ জন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের মধ্যে একটি জোটে ছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে দুই অভিনেতা মিশা ও ডিপজল। আরেক প্যানেল থেকে লড়েন সোনালি দিনের নায়ক মাহমুদ কলি ও নায়িকা নিপুণ আক্তার।

এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন- খোরশেদ আলম খসরু এবং সদস্য হিসেবে ছিলেন এ জে রানা ও বিএইচ নিশান। শনিবার সকাল ৭টায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

;

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে চলছে ভোট গণনা, আসেননি অনেক তারকা



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফেরদৌস আহমেদ, মৌসুমী, শাকিব খান ও পপি

ফেরদৌস আহমেদ, মৌসুমী, শাকিব খান ও পপি

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে বিএফডিসি প্রাঙ্গণে চলছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক (২০২৪-২৬) নির্বাচন। সকাল সাড়ে ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি ছিল, ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে বিকেল সাড়ে ৫টায়। এখন চলছে ভোট গণনা। 

ভোট দিতে সকালে তেমন কোন ভোটার উপস্থিত না থাকলেও জুমার নামাযের পর কিছু তারকা এফডিসি প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। ভোট গ্রহণের সময় শেষ দিকে চলে এলেও দেখা যায়নি চলচ্চিত্রের অনেক জনপ্রিয় তারকাদের। জানা গেছে, তাদের অনেকেই ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যার কারণে ভোট দিতে পারছেন না।

এরমধ্যে রয়েছেন ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। তিনি বর্তমান নতুন সিনেমার শুটিংয়ে ভারতের হায়দরাবাদে অবস্থান করছেন।

গত নির্বাচনে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে জয়ী হলেও এবার ভোটের মাঠ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন অরুণা বিশ্বাস। দেশে না থাকার কারণে এবার ভোট দিতে আসতে পারছেন না।

৮ বছর পর এফডিসিতে ভোট দিতে এলেন কাজী মারুফ

এছাড়াও এদিন ভোট দিতে পারছেন না এমন তালিকায় রয়েছেন সুপারস্টার শাবনূও, চিত্রনায়ক ও সাংসদ ফেরদৌস আহমেদ, প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী, পপি, পূর্ণিমা, শাহরিয়ার নাজিম জয়, আজিজুল হাকিম, আনিসুর রহমান মিলন, রেসি, বিপাশা কবির, সোহানা সাবাসহ বেশ কয়েকজন শিল্পী।

২১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এই নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুইটি প্যানেল থেকে ৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একটি মিশা-ডিপজল পরিষদ, অন্যটি কলি-নিপুণ পরিষদ।

এর মধ্যে সভাপতি পদে লড়ছেন একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি ও দাপুটে খল-অভিনেতা মিশা সওদাগর। আর সাধারণ সম্পাদক পদে গেল আসরের মতো এবারও প্রার্থী হয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৭০ জন। নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন খোরশেদ আলম খসরু।

;

নতজানু হয়েও কোন পক্ষের সমর্থন পেলেন না জোভান



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
ভিডিও বার্তায় জোভান ও ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্য

ভিডিও বার্তায় জোভান ও ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্য

  • Font increase
  • Font Decrease

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান পড়েছেন দারুণ ঝামেলায়। তার একটি নাটককে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একপক্ষের সমালোচনায় অবশেষে নতজানু হয়ে ভিডিও বার্তা দিলেন তিনি। তাতেও সেই পক্ষের মন গলাতে পারলেন না। উল্টো তারা জোভানের বাকী নাটকগুলোকেও বয়কটের সুর তুলছে!

ঝামেলা এখানেই শেষ নয়। জোভান নতজানু হয়ে দুঃখ প্রকাশ করায় আরেকপক্ষ তাকে দারুণভাবে করছেন সমালোচনা। এই পক্ষে আবার রয়েছেন তারই সহকর্মীরা। তারা জোভানের সাহস ও শিনদাঁড়ার শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত গেল ঈদুল ফিতরে প্রচারিত জোভানের নাটক ‘রূপান্তর’ নিয়ে। রাফাত মজুমদার রিংকু পরিচালিত এই নাটক প্রচারের পরই এটি নিয়ে অন্তর্জালে ফুঁসে ওঠে একাংশ দর্শক। নিরুপায় হয়ে নাটকটি ইউটিউব থেকেও নামিয়ে ফেলা হয়।

 ‘রূপান্তর’ নাটকের দৃশ্যে সামিরা খান মাহি ও জোভান

কিন্তু রেহাই মেলেনি তাতেও। অগত্যা অভিনেতা জোভান নিজেই গা ঢাকা দেন, বন্ধ করে রাখেন নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল। অবশেষে আজ ১৯ এপ্রিল ভোর রাতে দেখা দিয়েছেন তিনি। একটি ভিডিও বার্তা নিয়ে হাজির হলেন। যেখানে আকুতিভরা কণ্ঠে ক্ষমা চেয়েছেন দর্শকের কাছে।

আতঙ্ক আর অসহায়ত্বে ভরা চাহনিতে জোভান বলেন, ‘এই ঈদে আমার বেশ কিছু নাটক এসেছে। প্রথম দিন থেকেই ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। এই ঈদটা আমার খুব সুন্দর ঈদ হতে পারতো আপনাদের ভালোবাসায়, সাপোর্টে। কিন্তু সেটা হয়নি। একটা অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে আপনারা যেমন কষ্ট পেয়েছেন, আমিও কষ্ট পাচ্ছি। আমি কিন্তু একদমই ভালো নেই।’

‘রূপান্তর’ নাটকের প্রসঙ্গে জোভানের জবাবদিহি এরকম, “রূপান্তর’ নাটককে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা একদমই অপ্রত্যাশিত। এই নাটকের মাধ্যমে কারও ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। আমি নিজেও একটা মুসলিম পরিবারের ছেলে। আমি জানি, ধর্মকে কতটা বিশ্বাস করি, আল্লাহকে শ্রদ্ধা করি। এই নাটকের মাধ্যমে আমরা কোনও কিছুকে নরমালাইজ করা বা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করিনি। কেবল একটি চরিত্র উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটার মাধ্যমে এতগুলো মানুষকে কষ্ট দিয়েছি, এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সবার কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”

ফারহান আহমেদ জোভান

সবশেষে অনুরোধের সুরে জোভান বলেছেন, ‘দীর্ঘ এগারো বছর যাবত নাটক করছি। আজকে আমার যে অবস্থান, এর পেছনে আমার একার নয়, অবশ্যই দর্শকের ভালোবাসা ও সাপোর্ট ছিল। আমার কাজ করার মূল উদ্দেশ্য হলো দর্শককে একটু বিনোদন দেওয়া, সেজন্যই এত কষ্ট। এরপর থেকে আরেকটু বেশি সচেতন থাকবো চরিত্র বাছাই করতে। যাতে তাদের মনঃক্ষুণ্ণ না হয়, কষ্ট না পায়। আমার যে কাজগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে, তার চেয়েও ভালো কাজ উপহার দেবো। শুধু একটাই অনুরোধ, আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না। আমার জন্য দোয়া করবেন।’

যদিও জোভানের ভিডিও বার্তার কমেন্ট বক্স দেখলে আঁচ করা যায়, তার এই আর্তনাদ গলাতে পারছে না নেটিজেনদের মন। গণহারে তার নাটক বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে তারা। বিপরীতে অনেকেই জোভানের এই পরাজিত কণ্ঠ ও মুখ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বলছেন, প্রকৃত শিল্পী কখনোই এতোটা নতজানু হয় না।

উল্লেখ্য, নীহার আহমেদের চিত্রনাট্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটি নির্মিত হয়েছে। এর গল্পটি মূলত একজন তরুণ চিত্রশিল্পীকে ঘিরে। যিনি শৈশবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। যার ফলে তিনি জানতেই পারেননি তার বাবা-মা কে কিংবা কোন ধর্মের মানুষ। বড় হয়েছেন শিশু আশ্রমে। বড় হয়ে হয়েছেন চিত্রকর। পেয়েছেন খ্যাতিও। এর মধ্যে একজন ধনীর দুলালী তার আঁকায় মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন। বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয় চিত্রকরকে। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাকে দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। এরপর তার চিকিৎসকের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি আসলে একটি হরমোন জনিত বিরল জটিলতায় ভুগছেন। তিনি দেখতে পুরুষের মতো হলেও মানসিকভাবে তিনি একজন নারী।

ফারহান আহমেদ জোভান

গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি উন্মুক্ত করা হয় ইউটিউবে। রাতে বেশ কিছু দর্শকের পক্ষ থেকে আপত্তি পেয়ে সেটি ১৬ এপ্রিল সকালে তুলেও নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। একই নাটক ডাউনলোড করে অসংখ্য ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করছে সমালোচনাকারীদের একটা বড় অংশ। তারাই আবার এমন নাটক নির্মাণ ও প্রচারণার প্রতিবাদ করছেন! এমনকি নির্মাতা-শিল্পীদের হুমকিও দিচ্ছে অনেকে। যা নিয়ে আতঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

;

আগামী মাসেই সোহেল-নীলা জুটির ‘শ্যামাকাব্য’



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘শ্যামাকাব্য’র জুটি সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

‘শ্যামাকাব্য’র জুটি সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

গুণী নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত দ্বিতীয় সিনেমা ‘শ্যামাকাব্য’ নিয়ে দর্শকের আগ্রহ রয়েছে। এই ছবির মাধ্যমে বড়পর্দায় প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন সদ্য ভারতের ফিল্মফেয়ার পুরস্কারজয়ী অভিনেতা সোহেল মণ্ডল ও জনপ্রিয় লাক্স তারকা নীলাঞ্জনা নীলা। তারা ছাড়াও এক ঝাক তারকা শিল্পীকে নিয়ে নির্মিত সরকারি অনুদানের এই সিনেমাটি গত ২৪ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা ছিল।

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

কিন্তু সে সময় ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। তখন নির্মাতা সৌদ জানিয়েছিলেন, ‘‘দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যই এই সিদ্ধান্ত। চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম, এমন পরিস্থিতিতে দর্শক সিনেমা হলে এসে ছবি দেখতে চাইবেন না। দর্শকের জন্যই তো আমাদের সিনেমা। তাদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করা জরুরী। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ‘শ্যামাকাব্য’ জাতীয় নির্বাচনের পরেই মুক্তি দেব।’’

নীলাঞ্জনা নীলা ও সোহেল মণ্ডল। ছবি : নূর এ আলম

অবশেষে ছবিটি মুক্তির নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ছবিটির নায়ক সোহেল মণ্ডল জানান, ‘‘আসছে ৩ মে আপনার নিকটস্ত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘শ্যামাকাব্য’।’’

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ধাচের ছবিটিতে প্রেমের বিষয়টিও বেশ স্পষ্ট। এতে নীলাকে দেখা যাবে শ্যামা’র চরিত্রে। আর সোহেল মণ্ডল রয়েছেন আজাদ নামের একটি চরিত্রটি।

নীলাঞ্জনা নীলা ও সোহেল মণ্ডল। ছবি : নূর এ আলম

নায়ক-নায়িকা দুজনই বললেন, তাদের চরিত্র দুটি একেবারেই নতুন। তাদের রসায়নও দর্শকের মন ছুঁয়ে যাবে বলে তারা আশাবাদী। নীলার ভাষায়, শ্যামা মেয়েটি খুব শান্ত। দেখলে চোখে আরাম দেবে। আর সোহেল এখনই তার চরিত্রের কোন গোমর ফাঁস করতে চান না।

সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলা। ছবি : নূর এ আলম

ছবিতে একটি মাত্র গান রয়েছে। নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদের লেখা ‘পাখি যাও যাও’ শিরোনামের সেই গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক ইমন সাহা। চমকপ্রদ বিষয় হলো সেই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতের বিখ্যাত দুজন শিল্পী। একজন হিন্দুস্তানি ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকের কিংবদন্তি পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, অন্যজন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ইমন চক্রবর্তী।

;