দুশ্চিন্তা দূরে রাখুন!
জীবনে দুশ্চিন্তা থাকবেই।
তবে তার কাছ থেকে নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা বহাল রাখতে হবে। প্রয়োজনে তো বটেই, অপ্রয়োজনেও দুশ্চিন্তা এসে ভর করে মনে ও মাথায়। এই দুশ্চিন্তা কিংবা উদ্বেগ সুস্থিরতা আনতে দেয় না জীবনে ও প্রতিদিনের কাজে।
নিজেকে এই দুশ্চিন্তার কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখা প্রয়োজন মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার খাতিরেই। প্রতিদিনের হাজারো কাজের চাপ, পারিপার্শ্বিক অস্থিরতার মাঝেও দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখা সম্ভব।
সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দূরে রাখতে হবে
খুব সূক্ষ্মভাবেই ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো মনের উপর প্রভাব ফেলে। যা থেকে দেখা দেয় মানসিক দুশ্চিন্তা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বন্ধুদের সঙ্গে নিজেকে ও নিজের বর্তমান অবস্থাকে নিজের অজান্তেই আমরা তুলনা করি। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অকারণ উদ্বেগের উদ্রেক করে। বন্ধুর সিক্স প্যাক আছে, বান্ধবী জমকালো শাড়ি কিনেছে কিংবা ভ্যাকেশন কাটাতে থাইল্যান্ডে গিয়েছে- এর মাঝে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা, নিজের জন্য মনঃকষ্টে ভোগা ও উদ্বেগের মুখোমুখি হওয়ার মতো ঘটনা নতুন কিছু নয়। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিরতি নিন একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর।
দুশ্চিন্তা সাধারণ জীবনের একটি অংশ
একেবারে চিন্তামুক্তভাবে জীবনযাপন করা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। এই অসম্ভব বিষয়টিকে মেনে নিতে হবে। জানতে ও মানতে হবে, দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হওয়া নিত্য জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুশ্চিন্তার বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে তাকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা শিখতে হবে। কীভাবে দুশ্চিন্তাকে যথাসম্ভব কমিয়ে ও নিজেকে পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে, তার পরিকল্পনা করতে হবে।
কাজটি করে ফেলতে হবে
ইংলিশে খুব সুন্দর একটি শব্দ আছে, প্রক্র্যাস্টিনেশন (Procrastination). যার অর্থ আগত কোন ঘটনাকে আগে থেকে ভেবে ও নিজের মতো করে চিন্তা করে অহেতুক মানসিক দুশ্চিন্তায় ভোগা। এই সমস্যাটি সবার মাঝে আছে কম কিংবা বেশি। কোন কাজ নিয়ে খুব বেশি সময় চিন্তা করলে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ দেখা দিবে। তাই আগে থেকে অহেতুক দুশ্চিন্তা না করে, যত দ্রুত সম্ভব কাজটি করে ফেলতে হবে। অহেতুক দুশ্চিন্তা পরিকল্পনা নষ্ট করে দিতে পারে ক্ষেত্র বিশেষে।
দুশ্চিন্তার শারীরিক লক্ষণগুলো বোঝার চেষ্টা করতে হবে
হুট করে দুশ্চিন্তা দেখা দিলে মানসিক চাপের প্রভাব দেখা দেয় শরীরের উপরেও। দুশ্চিন্তার সঙ্গে অনেকের হাতের তালু ঘামে, অনেকের তেষ্টা পায়, অনেকে চোখে ঘোলা দেখা শুরু করে। আপনার ক্ষেত্রে কোন লক্ষণটি প্রকাশ পায় সেটা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। যখনই কোন লক্ষণ দেখা দিবে নিজেকে শান্ত করতে হবে, মাথা থেকে অহেতুক দুশ্চিন্তা বাদ দিতে হবে।
নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে
অলস সময়েই সাধারণত উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তাগুলো মাথায় জট পাকাতে শুরু করে। নিজেকে তাই ব্যস্ত রাখতে হবে। ছোট কিংবা বড় যেকোন ধরণের কাজের সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখার চেষ্টা করতে হবে। সেটা হতে পারে কারোর সঙ্গে দেখা করা, নিজের পছন্দের কোন কাজ করা, রান্না করা, গান শোনা ইত্যাদি। মূল কথা, পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর নির্ভর করে নিজেকে কাজের সঙ্গে জড়িত রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: ক্লান্তিটা যখন শারীরিক নয়, মানসিক!
আরও পড়ুন: রাগ থাকুক নিয়ন্ত্রণে