জিমে নতুন? জেনে নিন প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য

  • ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চিত্র: সংগৃহীত

চিত্র: সংগৃহীত

বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এবং শরীরকে সঠিক মাপে ধরে রাখার জন্য এবং পেশী তৈরিতে জিমে শরীরচর্চা করার কোন বিকল্প নেই। তবে ঝোঁকের বশে জিম শুরু করে কিছুদিন পর জিমে যাওয়া ছেড়ে দিলে খুব একটা উপকার পাওয়া সম্ভব নয়। নিয়মিত জিমে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে, অবশ্যই ভালোভাবে পরিকল্পনা করে এরপর জিমে যাওয়া শুরু করতে হবে।

সম্প্রতি যদি আপনি জিমে জয়েন করার সিদ্ধান্ত  নিয়ে থাকেন, তবে শুরুর দিকে কিছু ব্যাপার নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। তেমন ছোটখাটো কিছু বিষয় এখানে তুলে ধরা হলো।

বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: অস্বাস্থ্যকর এই ‘অভ্যাস’গুলো অসুস্থ করে তুলছে আপনাকে!

কোন সময়ে জিম করলে ভালো হবে

নতুন জিমে জয়েন করলে প্রথমেই এই বিষয় নিয়ে দ্বিধা দেখা দেয়। পুরো দিনের মাঝে কোন সময়ে জিমে শরীরচর্চা করলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। সঠিক উত্তর হলো, দিনের মাঝে যেকোন সময়েই সঠিক নিয়মে জিমে শরীরচর্চা করলে উপকার পাওয়া সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে একটি ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সেটা হলো ধারাবাহিকতা। অর্থাৎ প্রতিদিন ঠিক একই সময়ে জিমে শরীরচর্চা করতে হবে। নিজের প্রাত্যহিক কাজের রুটিনের সাথে মিল রেখে জিমে যাওয়ার জন্যএকটি নির্দিষ্ট সময় নির্বাচন করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে জিমে শরীরচর্চা শুরু করতে হবে। সেটা হতে পারে খুব সকালে, দুপুরের পর, বিকাল কিংবা সন্ধ্যা। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দিকে।

শুরুতে কি ধরণের যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে

জিমে শরীরচর্চা শুরু করার প্রথম দিকে খুব ভারী ধরণের কোন যন্ত্র ব্যবহার করা এড়িয়ে যাওয়া শ্রেয়। কারণ শরীর তখনো ভারী কোন যন্ত্রের ভার নেবার জন্য প্রস্তুত হয়নি। বিশেষ করে একদম শুরুতেই ওয়েট লিফটিং বা ভার উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অসাবধানতার ফলে যেকোন ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জিমে জয়েন করার পর একদম শুরুতে দৌড়ানো জন্য ট্রেডমিল, পায়ের জন্য লেগ প্রেস ও লাইং লেগ কার্লস, হাতের পেশী সুগঠিত করতে ম্যাশিন বাইসেপ কার্ল ও ট্রাইসেপ পুশডাউন, কাঁধের জন্য ম্যাশিন শোলডার প্রেস এবং পেটের মেদ কমাতে অ্যাব ক্রাঞ্চ মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/01/2018-Aug-01_14_52_09_news_post.jpg

পেশীর ব্যথা দেখা দিলে কি একদিন বিশ্রাম করা যাবে?

জিমে শরীরচর্চা শুরু করার প্রথমকিছুদিন পুরো শরীরের পেশীতে ব্যথাভাব দেখা দেয়। এই ব্যথাভাবের ফলে জিমে শরীরচর্চা করতে যাবার ইচ্ছা ও আগ্রহ অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। খেয়াল রাখতে হবে যে, হালকা ঘরানার শরীরচর্চার ফলে শরীরের পেশী সংকুচিত-প্রসারিত হয় এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়। অনেক সময় কিছুটা ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ করলেও পেশীর ব্যথাভাব কমে যায়। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, এই ব্যথাভাব যদি হালকা থেকে মাঝারি ধরণের হয়ে থাকে  তবে বিশ্রাম না করে হালকা ঘরানার শরীরচর্চা করতে হবে। অপরদিকে ব্যথাভাব যদি প্রবল হয়ে থাকে এবং পেশীতে টান পরে, তবে একদিন বিশ্রাম নিলে উপকার পাওয়া যাবে।

জিমে শরীরচর্চা শুরু করার আগে কী খাওয়া উচিত

এমন চিন্তাভাবনা সাধারণত সবার মাথাতেই ঘুরপাক খাবে। সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, হালকা ঘরানার কোন  শরীরচর্চার জন্য বাড়তি খাদ্য বা ক্যালরি গ্রহণের কোন প্রয়োজন নেই। তবে ভারী ধরণের শরীরচর্চার ক্ষেত্রে বাড়তি শক্তি ও ক্যালরি প্রয়োজন হবে। এমন ধরণের শরীরচর্চার তিন ঘন্টা আগে শর্করা ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।

প্রতিদিন কি জিমে শরীরচর্চা করতে হবে

চেষ্টা করতে হবে প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চারদিন জিমে যাওয়ার জন্য। বাকি দিন জিমে শরীরচর্চা করা না হলেও ঘরে ফ্রি-হ্যান্ড এক্সসারসাইজ করা যেতে পারে অথবা ঘন্টাখানেক সময়ের জন্য দৌড়ানো যেতে পারে। এতে শরীরচর্চার যে ধারাবাহিকতা সেটা বজায় থাকে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মাঝেই ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সম্ভব হয়।

আরও পড়ুন: শারীরিক অসুস্থতার কারণ, অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণ

নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে

অনেকেই হুট করে ঝোঁকের বশে জিমে জয়েন করার কিছুদিন পরেই জিম ছেড়ে দেন। সেক্ষেত্রে কখনোই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব হয় না। তবে যদি নির্দিষ্ট পরিমান ওজন কমানো, শরীরকে সুগঠিত করে গড়ে তোলার ইচ্ছা থাকে তবে অবশ্যই লক্ষ্য সুপরিকল্পিত ও নির্দিষ্ট করতে হবে। খুব বড় কোন লক্ষ্য নির্ধারণ করে, ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করে সেইরূপ কাজ করতে হবে। এতে ফলাফল দ্রুত পাওয়া যাবে।

নিয়ম মেনে জিমে শরীরচর্চা করা হয়তো অনেকের ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। কাজের ব্যস্ততা ও পরিবারকে সময় দেওয়ার ফাঁকে জিমে সময় দেওয়া অনেকের কাছেই দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সেক্ষেত্রে কি ওজন কমানোর কোন উপায় একেবারেই নেই?অবশ্যই আছে। ঘরেই হাঁটুন, দড়িলাফ খেলুন, ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ অথবা ইয়োগা করুন। নিজেকে কর্মক্ষম ও নিয়মের মাঝে ধরে রাখার সুঅভ্যাসটি গড়ে উঠলে, স্বাস্থ্য ও পুরো জীবন ব্যবস্থার উপরেই ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে।