মেসার্স গঘ ব্রাদার্স



শফিকুল কবীর চনদন
অলঙ্করণ শতাব্দী জাহিদ

অলঙ্করণ শতাব্দী জাহিদ

  • Font increase
  • Font Decrease

‘তুমি ছাড়া সত্যিই আমার কোনো বন্ধু নেই, এবং অসুস্থ হলেও তুমি সর্বদাই আমার ভাবনা জুড়ে থাকো।’১

কী ছিল ভ্যান গঘের অনুপ্রেরণা? কিভাবে তিনি আধুনিক চিত্রশিল্পী হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন? কারা তাঁর এই যাত্রার সহযোগী ছিলেন? তিনি তাঁর বহুবিধ সীমাবদ্ধতাকে কিভাবে অতিক্রম করেছিলেন? তিনি কি ভাগ্যবান প্রেমিক বা চিত্রশিল্পী ছিলেন? এমনই নানাবিধ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে ভিনসেন্টের এই নাতিদীর্ঘ জীবনজুড়ে খানাতল্লাশী দেওয়া যায়।

বিশ্ব-শিল্পের ইতিহাসে সবচে দৃঢ় ভ্রাতৃত্ব ‘ভ্যান গঘ ভাই’। একদিকে এক ছাদের নিচে ভ্ৰাতৃদ্বয়ের বসবাস যখন বিরক্তির চরমে তখনও বড়ভাই ভিনসেন্টের অনুপস্থিতি থিও’র কাছে অকার্যকর ও অসম্পূর্ণ যাপন হয়ে উঠেছিল। অবিচল পত্রালাপ আমাদের দেখিয়ে দেয়, তাঁরা শারীরিক সংস্থানে পৃথক হলেও সর্বদাই তাঁদের জীবনের জমা খরচের হিসাব নম্বর যেন যৌথই ছিল।

‘পরস্পরের কাছে আমাদের একনাগাড়ে চিঠি লিখে যেতে হবে।’২

থিও ছিলেন ভিনসেন্টের সর্বশ্রেষ্ঠ সমর্থক। উভয় ভাইয়েরই ছিল অস্থির জীবনযাপন। তাঁদের সম্পর্কের পরতে পরতে দৃষ্টি দিলে যে কারো চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠতে বাধ্য। তা আনন্দ বেদনার এক সমূহ তাৎপর্যে। সর্বকালের অন্যতম সেরা চিত্রকর হয়েও তিনি ছিলেন উদ্বেগাকুল ও বিষণ্ণ। তার সময়ে অনালোচিত। প্রথাগত প্রজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করেই তারা যে লড়েছিলেন সেসব নির্যাস নিয়েই একটি অভিসন্দর্ভ হয়ে ওঠে। থিও ভাইদ্বয়ের গল্প ছাড়া যা অসম্পূর্ণ।

এক ‘গঘ’ ঋণদাতা আরেক ‘গঘ’ ঋণ গ্রহীতা। একজন চিত্রকলা ব্যবসায়ী আরেকজন চিত্রকর্ম নির্মাতা। কেনা বেচার হিসাব মাথায় রেখেই যত আগাম দেনা পাওনা ‘গঘ ব্রাদার্সের’। যদি এই ব্যবসায় লক্ষ্মী হতো তাহলে গোপীল এন্ড কোং গঘ ব্রাদার্সে রূপ নিতে পারত! তবে এই ‘মেসার্স গঘ ব্রাদার্স’ তাদের অব্যবসায়িকতার শিল্পঋণ দিয়ে অনাগত ভবিষ্যত্বের জন্য দুনিয়াকে যে ঋণে আবদ্ধ করেছেন তা বলাই বাহুল্য।

সম্প্রতি এক গবেষণার হিসাবে দেখা যায় অনুজ ভ্রাতঃ থিও তাঁর জীবদ্দশায় আনুমানিক ১৮০০০ ডলার ভিনসেন্টের জন্য অকাতরে খরচ করেছেন। যার পুরোটাই সহায়তার মোড়কে। অসাধারণ তাই না? আমরা যদি আজকের মুদ্রাস্ফীতির হিসেবে কষে দেখি তাহলে সে অঙ্ক দাঁড়ায় চার লক্ষ ডলারের কাছাকাছি। আমরা এখানে সেই সত্যিকার ভ্রাতৃত্বের ভালোবাসার বন্ধনের কথাই আলাপে নিচ্ছি। অবশ্যই থিও সব সময় আলাপে এই অর্থকে দাতব্য হিসাবে নয়—বিনিয়োগ হিসাবেই দেখেছে। কিন্তু সংবেদনটা হলো, এমন ভাইয়ের সন্ধান সহজলভ্য নয় নিশ্চয়ই যে কিনা শিল্পলগ্নি থেকে অর্থ সমাগমের সম্ভাবনা নেই জেনেও ‘বিনিয়োগে’ ব্রতী হয়।

‘আমার কাজের অর্থমূল্য আছে কিনা সে বিষয়ে বলতে চাই যে, আমাকে তা খুবই বিস্মিত করবে যদি অন্যদের কাজের মতো আমার আঁকা ছবিগুলিও সময়মত  বিক্রয়যোগ্য হয়ে না ওঠে, ব্যাস এর বেশি আমার আর কোনো ভড়ং নেই।’৩

একসময় গঘ ভাইদের যৌথ প্রকল্প হিসাবেই ভিনসেন্টের চিত্রশিল্পী হিসাবে প্রতিষ্ঠাকল্পে থিও মানসিক, আর্থিক, শিল্প পরামর্শক হিসাবে স্বনিয়োজিত হন। অস্বীকার করার জো নেই যে আজকের বিশ্ববরেণ্য শিল্পীর প্রতিষ্ঠার পেছনে থিও’র নিরন্তর প্রণোদনাই মুখ্য হয়ে আছে। ভিনসেন্টের কাজের উদ্ভাবনী বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করেও শিল্প-ব্যবসায়ী থিও কোনো সংগ্রাহককেই উৎসাহী করে তুলতে না পারার ব্যর্থতা সত্ত্বেও, ছবি বিক্রি করতে না পারার অযোগ্যতা সত্ত্বেও নিঃসন্দেহে থিওই ভিনসেন্টের এক নম্বর সমর্থক হয়ে হাজির থেকেছেন সারাজীবন।

দুই দশকের চ্যালেঞ্জ-মুখর সময়ের মধ্যে দুই ভাইয়ের লেখা অসংখ্য চিঠি। ভিনসেন্টের হৃদয়ের কোরক থেকে উৎসারিত পত্রপুঞ্জের অধিকাংশ এমনকি আসন্ন মৃত্যুর অব্যাবহিত পূর্বে লেখা পত্রটিরও প্রাপক ছোটভাই থিও। থিও তাঁর ভাইয়ের হৃদয় নিঙড়ানো এসব শিকড় সমাচারের প্রাপক। ভিনসেন্ট নিজেরই গরজে তার অন্তর্জীবন ব্যক্ত করেছিলেন ভাই থিওর কাছে।

‘তোমার কাছে সেসব সুযোগ পেয়েছি তার সমতুল্য তত ভালো ছবি আমি এখনো এঁকে উঠতে পারিনি। কিন্তু বিশ্বাস করো, একদিন যদি সেটা করে উঠতে পারি তাহলে যেন তুমিও তাদের রচনা করেছো, কেননা আমরা দুজনেই সেসব ছবি এঁকে তুলেছি।’৪

‘থিও এই প্রশংসার উপযুক্ত পাত্র; নিজেকে করে তুলেছিলেন নিমিত্ত মাত্র আধার। সেজন্যেই ভাইয়ের শতপ্লাবী সৃষ্টির শরিক হিসেবে নিজেকে কখনোই দাবি করেননি। একমাত্র অহংকার ছিল তার; ভিনসেন্টের কাছ থেকে তিনি যত চিঠি পেয়েছেন এমন সৌভাগ্য আর কারো হয়নি।’৫

ভাই ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের জীবন ও রচনার ভাণ্ডারী হবার অধিকার তারই। ১৮৭৩ সাল থেকে পত্র বিনিময় ভাইয়ের সাথে। আত্মবিশ্বাসের বুনিয়াদ গড়ে ওঠে সেই থেকে ধীরে ধীরে। আর কখনো যে বনিবনার কোনো পরোয়াও করেনি তার লক্ষণও আছে পত্র চালাচালিতে। থিও মনে করেছিলেন তার ভাইয়ের মধ্যে দুটি পরস্পর বিরোধী সত্তা বিরাজিত—‘একজন বিস্ময়কর প্রতিভাদীপ্ত, পরিমার্জিত, দয়ালু এবং অন্যজন স্বার্থপর ও অনুভূতিহীন।’

কিন্তু ভিনসেন্ট তার জীবনের সমুদয় কর্জ করেছেন ভাই থিও’রই কাছ থেকে। তিনি প্রশান্তির জন্য মাথাও গুঁজেছেন ভাইয়েরই মমত্বের কাছে তার মুরোদকে ফিরিয়ে আনতে।

গরিমা, লালসা, ছলনা ছিল না, দুর্ভাগার পরনির্ভরশীলতার আশ্রয় যেমন হয়, তেমনি খ্যাতি, অর্থলিপ্সার জন্য নয়, এক অনন্যোপায় ভাবি-চিত্রীর মর্ম প্রকাশের একমাত্র উপায় হয়ে ওঠেন থিও। সেও নিষ্কলুষ ভ্রাতৃপ্রেম চিত্ত বিজড়িত পরিপূর্ণ অনুভব সাদা-নীল-হলুদের তারা ভরা রাতের মাহাত্ম্যকে রঙ চুবিয়ে টাঙিয়ে দেন ভবিষ্যতের প্রদর্শন দেয়ালে।

‘জীবনে কোনো মহৎ ঘটনায় আকস্মিকভাবে ঘটতে পারে না, তাকে ইচ্ছাশক্তিতেই ঘটাতে হয়।’৬

গঘ ভাইদ্বয় তাঁদের জবানে চিত্রশিল্পের সাথে ভ্রাতৃত্বের সহযোগিতার এমন এক প্রবল শক্তি ও আকর্ষণ দান করেছেন যা অনাগত ভবিষ্যৎ জুড়ে অসংখ্য শিল্পপ্রেমীদের হৃদয়কে আলোড়িত করবে।

ভিনসেন্টের জীবন-গগন জুড়ে নিনাদিত রং রেখার অবয়বচিত্রের থিও—বাস্তবের মনোজগতের মোহনচিত্র আঁকানোরও কারিগর। ভিনসেন্টের জীবনানুসন্ধান যে মগ্ন চৈতন্যের গভীরে তার কিনার ঘেঁষে অবস্থান থিও’র। রক্তক্ষরণের দাগে প্রকৃতি এঁকেছেন ভিনসেন্ট, তার ভাইকে এঁকেছেন শত শত পত্রের অসংখ্য বর্ণ  শব্দ ও বাক্যের মোহনীয় বিস্তারে।

‘আমার আশা তোমার সাহায্য ও সহানুভূতি কোনোভাবেই প্রত্যাহৃত হবে না এবং আমরা ভ্রাতৃত্ববোধে একে অপরের হাত ধরে থাকব বরাবরের মতো, যতই থাকুক না কেন সেসব জিনিস “জগৎ” যাদের বিরোধিতা করে।’৭

থিও ভিনসেন্টের আশ্রয়ের প্রতীক। প্রশ্রয়ের নীড়। প্রেমের জানালা। ক্ষরণের দাগ মেখে জীবনকে চেতনার সামর্থ্যে বাগে রাখার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, নিজেদের বোধ ও উপলব্ধির জাগরণে।

আর্থিক শূন্যতায় হাত রেখে প্রকরণে চোখ রেখে এঁকেছেন ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ। সহনস্বরের প্রত্যয়ে লেখা পত্র থিওকে, অথচ প্রতিকৃতি? নিজের পঁয়ত্রিশটি আত্মপ্রতিকৃতির সন্ধান পাওয়া গেলেও থিওকে এঁকেছেন মাত্রই একবার। যা আবার আবিষ্কৃত হয়েছে ২০১১ সালে। এতদিন যা আত্মপ্রতিকৃতি হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছিল। কেন প্রতিকৃতি রচনায় থিও বিষয় হয়ে উঠে আসেনি? নাকি নিজেকে আরো পরিশীলিত করে থিওকে আঁকার কোশেশের বাসনা ছিল?

‘তোমার আন্তরিক সাহায্য যতটুকুই পাই না কেন, তা আমি যতটা ভালো করে পারি কাজে লাগাব, কাজে উন্নতি ঘটাবার জন্য আমি সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালাব।’৮

গঘ ভাতৃদ্বয়ের সজীব ধারাভাষ্য তাঁদেরই মর্জির নিরীক্ষণের অনপনেয় স্বাক্ষর। তাতে সম্পর্ক জড়িয়ে রাখার মেহন্নত আছে। যা একজনকে টপকে গিয়ে আরেকজনকে প্রত্যক্ষ করার জো নেই। আছে বিবেকের যথোচিত প্রশ্রয়ের দাগ। যা মুদ্রিত হয়ে থাকে ভ্রাতৃপ্রেমের উজ্জ্বলতার আখরে। তাঁর শিল্পেরই মতো ভাই সম্পর্কের সমস্ত পূর্বধার্য্য সীমানাকে মানবিক উচ্চতায় সম্পর্কের অপাপবরণে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে স্থাপন করেন।

নিজেকে তিনি কোনোদিন সস্তা শ্রমে বিক্রয় করেননি। যদিও তাঁর সাধ ছিল চিত্রিত আলেখ্য যেভাবেই হোক বিক্রিবাট্টা করে আহার সংস্থান। এমনই ছিল তাঁর মর্জি। সৃষ্টিরাও তো চূড়ান্ত মর্জি মাফিক। তাঁর গোটা জীবন জুড়ে মেহন্নতের অনপনেয় স্বাক্ষর। শিল্পের নতুন ধারার পূর্বগামী হতে গিয়ে পত্রলেখক, ভ্রাতৃপ্রেম, সহোদরের সাথে চুক্তি, এসবই আসলে আপাত অস্থিরচিত্তের মানুষটার সৃষ্টিকাজের বৈভব মেনে নেওয়ার পথে অন্তরায় নয়।

‘....আঁকাচর্চা আরো আন্তরিকভাবে যদি করতে পারি সেটাই হবে বেশি কাজের, অন্তত তাঁর ওইসব বিক্রিযোগ্য অবিক্রিযোগ্য ইত্যাদি কথাবার্তার চাইতে কাজের কাজ। ওইসব বিক্রিটিক্রি ব্যাপার নিয়ে তাঁর যা মনে হচ্ছে সেসব জ্ঞান ট্যান আমার না শুনলেও চলবে।’৯

চিত্রকলা সমঝদার ব্যবসায়ী হয়েও থিও’র—ভাইয়ের প্রতি পক্ষপাত তো ছিলই, উপরন্তু যৌথ জীবন কারবারের এক প্রতিনিধির প্রতি ভালোবাসার শক্তির এক অন্তর্গত প্রবর্তনাও কি থিও’র দান নয়? ফলে এসব বাণিজ্য কায়কারবার ছাপিয়ে সহানুভূতি সেখানে কালান্তরে প্রসারিত হয়ে গিয়েছে। ফলত ‘মেসার্স গঘ ব্রাদার্স’-এর শিল্প পূর্বধার্য্য সীমানা চুরমার করে দিয়ে আত্মিক শিল্পায়নের দিকে তাঁদের যাত্রাপথের নিশানা সাব্যস্ত করেন।

‘প্রিয় ভাই, এটা তোমার কাছে পরিষ্কার করে দেওয়া ভালো যে, তোমার বিশ্বস্ত সাহায্যের জন্য কত দৃঢ় ও তীব্রভাবে অনুভব করি যে তোমার কাছে আমি বিশালভাবে ঋণী।’১০

ফলে আলাদা নজর দেওয়ার কথা ওঠানোই পরিমিত জ্ঞান কেননা ঘনিষ্ঠ পরিসরে এক চিত্রকলা ব্যবসায়ী আরেক চিত্রকর্মী শরিককে কী-রকম প্রসন্ন উদ্বেগে প্রত্যক্ষ করেছেন সেদিকে আমাদের দরদ-মন যেমন আদ্র হয়, উষ্ণতায়ও ছাপিয়ে সেদিকে মন পড়ে থাকে। আর ‘গঘ ব্রাদার্স’-এর সর্বব্যাপী অস্তিত্বের সংগ্রাম ভাবসঙ্গে জেগে থাকে।

‘থিও না থাকলে আমার কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করা কখনোই সম্ভব হতো না।’১১

ভিনসেন্টের মৃত্যুর পর থিও ভাই হারানোর বেদনায় তাঁর মৃত্যুর দায় অনুভব করেছিলেন? নিজেকে দোষী ভেবেছিলেন? একজনের গৃহী ব্যবসায়ী জীবন অন্যজনের শিল্পী জীবনের আপাত ভিন্ন জীবন হলেও গঘ ভাইদের জীবন এক সমাবৃত্তে এসে মীমাংসিত হয়ে যায়! থিও’র সমর্থন জারি থাকে। আওভারসের অদূরে বিস্তীর্ণ তৃণভূমির সবুজ কোমলে ঘেরা সমাধিক্ষেত্রে পাশাপাশি অন্তিম শয়নের মধ্য দিয়ে যৌথ যাপন, যৌথ হিসাব, যৌথ শিল্প প্রকল্প ‘মেসার্স গঘ ব্রাদার্স’-এর শহিদত্বের এজমালি স্মারক হয়ে।

কর্জ স্বীকার
০১. থিও ভ্যানগঘ, ২২ জুলাই, ১৮৮৩ হেগ
০২. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, ১৩ ডিসেম্বর ১৮৭২
০৩. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, জুলাই ৩১, ১৮৮২ হেগ  
০৪. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, পত্র সংখ্যা ৫৩৮
০৫. ট্রুডবার্টা দাশগুপ্ত, আলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত
০৬. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ
০৭. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, মে ১৮৮২, হেগ
০৮. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, মার্চ ১৮৮৩, হেগ
০৯. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, মার্চ ১৮৮২, হেগ
১০. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, মার্চ ১৮৮৩, হেগ
১১. ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ, অক্টবর ১৮৮৭, প্যারিস

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাকালে বন্ধ থাকার পর আবারো 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কার্যক্রমে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ রচিত 'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের একশত কপি শুভেচ্ছামূলক প্রদান করা হবে। 

উল্লেখ্য, আগেও ইংরেজি নববর্ষে এবং ভাষার মাসে শত বিশিষ্টজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রন্থ উপহার দিয়েছিল ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ. এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প-সাহিত্য-সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আনসার বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত 'শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশন'। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল স্থানীয় নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, বরকতময়, নেয়ামতপূর্ণ মাহে রমজানের সঙ্গে অন্য কোনো মাসের তুলনা চলে না। রোজা হলো মাহে রমজানে অবশ্য পালনীয় ফরজ আমল, যার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা নিজে দেবেন। মানবজীবনে রোজা একজন বান্দার আত্মীক ও শারীরিক কল্যাণের ও উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ পন্থা। তদুপরি, রমজান মাসকে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা তাঁর অপার ক্ষমা, দয়া আর অপরিসীম করুণা দিয়ে বান্দাদেরকে উপহার দিয়েছেন। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা সঠিকভাবে পালন করলে রোজাদার নবজাতক শিশু মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রোজা রাখবে তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মানব জীবনে ও সামাজিক ব্যবস্থায় রমজান মাস ও রোজার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হয়েছে ফাউন্ডেশন প্রদত্ত গ্রন্থে। এ গ্রন্থ রমজান মাসের তাৎপর্য এবং রোজার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পাঠকদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে ৩০টি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের মাধ্যমে।

'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের লেখক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ। তাঁর পিতা: ডা. এ.এ, মাজহারুল হক, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মাতা: নূরজাহান বেগম, সমাজসেবী। ড. মাহফুজ পারভেজের জন্ম: ৮ মার্চ ১৯৬৬, কিশোরগঞ্জ শহরে। পড়াশোনা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচ,ডি)। পেশা: অধ্যাপনা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখি, গবেষণা ও সাহিত্য সাধনায় ব্রতী। প্রকাশিত গ্রন্থ কুড়িটি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- গবেষণা-প্রবন্ধ: বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, দারাশিকোহ: মুঘল ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো। দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর। উপন্যাস: পার্টিশনস, নীল উড়াল। ভ্রমণ: রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে। গল্প: ইতিহাসবিদ, ন্যানো ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্প। কবিতা: মানব বংশের অলংকার, আমার সামনে নেই মহুয়ার বন, গন্ধর্বের অভিশাপ। অধ্যাপনা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি বাংলাদেশের শীর্ষতম মাল্টিমিডিয়া পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর এবং কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা কিশোরগঞ্জ নিউজ'র উপদেষ্টা সম্পাদক রূপে সংযুক্ত রয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের  'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজিত হবে রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ কার্যক্রম সমন্বয় করবেন কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক, ইতিহাসবিদ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ। সমন্বয় কমিটিতে আরো রয়েছেন কিশোরগঞ্জ নিউজ'র প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ ইসকান্দার আলী স্বপন, সাংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু ও চিকিৎসক নেতা ডা. গোলাম হোসেন।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে আরো জানানো হয় যে, ইতিপূর্বে ঘোষিত ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর সম্মাননা বক্তৃতা ২০২০ এবং ২০২১ করোনাকালের বিরূপ পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকায় তা যৌথভাবে মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এএ মাজহারুল হক এবং সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কর্তৃক কিশোরগঞ্জের জীবিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জীবনব্যাপী বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন করতে ২০১৫ সাল থেকে এ সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করা হচ্ছে, যা বক্তৃতা ও লিখিত আকারে প্রদান করেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' গতানুগতিক সম্মাননার বদলে ব্যক্তির কর্ম ও কীর্তির বিশ্লেষণমূলক-মূল্যায়নভিত্তিক সম্মাননা বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করে এবং এরই ভিত্তিতে জ্ঞাপন করা হয় যথাযথ সম্মান। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি লিখিত আকারে বক্তৃতা-পুস্তিকায় চিত্রিত হন সম্মাননা প্রাপ্তগণ। মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এই বুদ্ধিবৃত্তিক-একাডেমিক আবহে ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে, যা কিশোরগঞ্জে তো বটেই, বাংলাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। শুরু থেকে সম্মাননা বক্তৃতা প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী ড. মাহফুজ পারভেজ, যিনি কিশোরগঞ্জে পাবলিক লেকচার সিরিজের মাধ্যমে গণবুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর তৈরির পথিকৃৎ।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান শিক্ষাবিদ প্রাণেশ কুমার চৌধুরী, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান দীপ্তিমান শিক্ষকদম্পতি: অধ্যক্ষ মুহ. নূরুল ইসলাম ও বেগম খালেদা ইসলাম, ২০১৭ সালে তৃতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘প্রজ্ঞার দ্যুতি ও আভিজাত্যের প্রতীক: প্রফেসর রফিকুর রহমান চৌধুরী’ এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘ঋদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র: শাহ্ মাহতাব আলী’। ২০১৯ সালে পঞ্চম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা দেয়া হয় 'স্বাস্থ্যসেবা-শিক্ষায় পথিকৃৎ চিকিৎসক-দম্পতি' প্রফেসর ডা. আ ন ম নৌশাদ খান ও প্রফেসর ডা. সুফিয়া খাতুনকে। ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয় নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে। এ উপলক্ষে ‘কিশোরগঞ্জে আইন পেশার নান্দনিক বিন্যাস’ শীর্ষক সম্মাননা বক্তৃতা বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয়েছে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ,  মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে, যারা কিশোরগঞ্জের সামাজিক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিন্যাসে স্বকীয় কৃতিত্বের প্রভায় উজ্জ্বল। জীবনব্যাপী কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের জন্য শৈল্পিক দ্যোতনায় নান্দনিক বর্ণালী সৃজন করেছেন এই তিন গুণান্বিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ জানান, ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২০ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২১ একসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা মার্চ মাসের শেষ দিকে আয়োজিত হবে।

;