৯০ বছরেও সরব দার্শনিক হেবারমাস



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
দার্শনিক জার্গেন হেবারমাস, ছবি: দ্য রিডার্স বুরে্য'র সৌজন্যে

দার্শনিক জার্গেন হেবারমাস, ছবি: দ্য রিডার্স বুরে্য'র সৌজন্যে

  • Font increase
  • Font Decrease

তিনি বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক আশ্রয় ব্যক্তি মানুষের মৌলিক মানবাধিকার’। গণতন্ত্র, আইনের শাসন, নাগরিক অধিকার, মিডিয়া ও জনপরিসর নিয়ে কথা বলেছেন বার বার। ৯০ বছর পেরিয়েও সরব রয়েছেন জার্মান দার্শনিক জার্গেন হেবারমাস, যাকে গণ্য করা হয় সমকালীন বিশ্বের জীবিত দার্শনিকদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী একজন হিসাবে।

ফিলসফি, পলিটিক্স, সোসিওলজি, মিডিয়া ও কমিউনিকশেনের কনটেম্পোরারি থিওরি রূপে তার বক্তব্য পড়ানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ক্লাসে। কিন্তু ১৯২৯ সালের ১৮ জুন জন্ম গ্রহণকারী এই দার্শনিক পাঠ্যপুস্তকের অক্ষরে সীমাবদ্ধ থাকতে নারাজ। যে কোনও আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে এই অশীতিপর পণ্ডিত বিতর্ক করতে ওস্তাদ। নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের প্রশ্নে সোশ্যাল ডিবেট করতে তিনি কখনো পিছপা হন না।

জীবনীকার ক্রিস্টান নিপ ও সেবাইন ওয়েইজ দার্শনিক হেবারমাসের ৯০ বছরের কর্মময় জীবন ঘেঁটে দেখেছেন, নাৎসি নিপীড়ন থেকে উদ্বাস্তু সমস্যা পর্যন্ত বিশাল ক্ষেত্রে তিনি কাজ করেছেন। লেখালেখি ও গবেষণার পাশাপাশি পালন করেছেন অ্যাক্টিভিস্টের ভূমিকা। নব্য জাতীয়তাবাদের উগ্রতা উত্থানকে ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে মানবিকতা ও মানবাধিকারের পক্ষে থাকতে বার বার সতর্ক করেছেন।

‘এ কারণেই নিৎসে, হেগেল, মার্কস, ওপেনহেইমার প্রমুখ বিশ্ববিশ্রুত জার্মান দার্শনিকের তালিকার সর্বশেষ রত্ন রূপে চিহ্নিত করা হয় তাকে’, বলেছেন জীবনীকারদ্বয়। তিনি পরিচিত জার্মান ফিলসফির যথাযোগ্য উত্তরাধিকার রূপেও।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/21/1561122057228.jpg

৯০ বছর পেরিয়ে ১৭০০ পৃষ্ঠা ও তিন খণ্ডে লিখিত ‘হিস্ট্রি অব ফিলসফি’ বা ‘দর্শনের ইতিহাস’ নামক পাণ্ডুলিপিটি প্রকাশে ব্যস্ত আছেন হেবারমাস। শুধু দর্শনের ইতিহাস বা ইতিবৃত্ত নয়, দর্শন মানব সভ্যতার পক্ষে ও বিপক্ষে কেমন ভূমিকা রেখেছে, সে মূল্যায়ন করেছেন তিনি তার বিশালায়ন গবেষণায়, যাতে দর্শনের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলোও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

ইউরোপের চিন্তাজগতে জার্মান ফিলসফিকে বলা হয় সর্বশ্রেষ্ঠ আর ফরাসিরা এগিয়ে নন্দনতত্ত্বের দিক থেকে। জার্মান ফিলসফির শক্তিশালী স্তম্ভ হলো ‘ফ্র্যাঙ্কফুট স্কুল অব থট’, যার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। শিক্ষকতা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে এখনো বসবাস করছেন জার্মানির এই শহরেই। শহরের বৌদ্ধিক প্রতীক বা আইকন তিনি, যিনি বিশ্বকে নাড়া দিয়েছেন এ শহর থেকে, শহরবাসী এমনটিই বিশ্বাস করে।

গণআন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের গণতান্ত্রিক অভিমুখকে বার বার জারিত করেছেন তিনি তার চিন্তা, তত্ত্ব ও দর্শন নিয়ে। মিডিয়া ডিসকোর্সে তিনি ‘জনপরিসর তত্ত্ব’ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ-পাণ্ডিত্যপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

হেবারমাস ঐতিহাসিক পর্যালোচনা করে দেখিয়েছেন যে, সতেরো ও আঠারো শতকের ইউরোপের সেলুন, কফিশপ মুক্ত আলোচনার ক্ষেত্র ছিল। সেসব জনপরিসরে রাষ্ট্র ও সমাজের নানা আলোচনা অবাধে হয়েছে, সংবাদপত্রে পক্ষে-বিপক্ষে লেখা হয়েছে, যা বুর্জোয়া মতাদর্শ বিকাশে সহায়ক ছিল। কিন্তু করপোরেট যুগে সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন ও পণ্যবাণিজ্যের খপ্পরে পড়ে গেছে। জনপরিসরের গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডার বদলে এখন বিজ্ঞাপনদাতা ও মালিক পক্ষের স্বার্থচর্চা করা হচ্ছে।

হেবারমাসের চিন্তায় মিডিয়া কাঠামো ও মালিকানায় যে অবক্ষয়চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে পাবলিক ইন্টারেস্ট ও পাবলিক স্ফিয়ার নষ্ট হয়ে গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারের জায়গাটিও সঙ্কুচিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে নাগরিক ও সামষ্টিকভাবে জনগণ। আরও যে বিপদ এর ফলে আসতে পারছে, তা হলো, মালিকানার হাত ধরে মৌলবাদ, উগ্রতা, শোষণ ও অর্থের দাপট, যাতে ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক-জাতিগত সংখ্যালঘু, নারী, শিশু, অবহেলিত প্রান্তিকজনের স্বার্থ ও অধিকারের আলোচনা কমছে এবং এদের এজেন্ডা উপযুক্ত গুরুত্ব পেতে ব্যর্থ হচ্ছে।

জার্মান দার্শনিক হেবারমাস, যিনি সমকালের বরিষ্ঠ চিন্তক হিসাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি, তিনি ব্যক্তিগত কর্মপ্রবণতা ও সচলতার যে অনন্য উদাহরণ ৯০ বছর স্পর্শ করেও সকলের সামনে উপস্থাপন করেছেন, তা তার তত্ত্বসমূহের মতোই অনুপ্রেরণাদায়ী, দৃষ্টান্তমূলক ও প্রণোদনায় ভরপুর।

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর সম্মাননা পেলেন ছয় কীর্তিমান



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীতকিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর সম্মাননা পেলেন ছয় কীর্তিমান

ছবি: সংগৃহীতকিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর সম্মাননা পেলেন ছয় কীর্তিমান

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিষ্ঠ চিকিৎসক, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব ডা. এ. এ. মাজহারুল হক এবং রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ ছয় কীর্তিমানকে সম্মাননা প্রদান করেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকালে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লাইজু আক্তার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান।

এতে সম্মাননা বক্তৃতা করেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ।

বক্তব্য রাখছেন ড. মাহফুজ পারভেজ

অনুষ্ঠানে ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননাপ্রাপ্তদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের আইনপেশার কৃতীজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হক।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ পেয়েছেন ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, প্রবীণ সাংবাদিক মু আ লতিফ ও আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন এবং প্রয়াত শাহ আজিজুল হকের পরিবারের পক্ষে ভাতিজা এডভোকেট শাহ আশরাফ উদ্দিন দুলাল ও মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবীর পক্ষে তার মেয়ে গৌরি রাণী দেবী সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন।

 এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক বাদল রহমান।


অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও সমাজকর্মী আবদুর রহমান রুমী, সাংবাদিক শেখ মাসুদ ইকবাল, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মননা অনুষ্ঠান শেষে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ২০১৫ সাল থেকে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে।

;

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্য রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা রয়েছে: ড. মাহফুজ পারভেজ



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বক্তব্য রাখছেন ড. মাহফুজ পারভেজ

বক্তব্য রাখছেন ড. মাহফুজ পারভেজ

  • Font increase
  • Font Decrease

বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ও কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন'র নির্বাহী পরিচালক ড. মাহফুজ পারভেজ বলেছেন, 'বাংলার গৌরবদীপ্ত জনপদ কিশোরগঞ্জের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিকাশ ও রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা রয়েছে।'

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকালে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম স্মরণ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি সম্মাননা বক্তব্য প্রদানকালে আরো বলেন, 'অবক্ষয়, অন্ধকার ও অজ্ঞানতার বিরুদ্ধে আলোকিত সমাজ গঠনে ইতিহাস-ঐতিহ্যের শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।'

বরিষ্ঠ চিকিৎসক, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব ডা. এ. এ. মাজহারুল হক এবং রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক স্থানীয় ছয় কীর্তিমানকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লাইজু আক্তার।

মাজহারুন-নূর সম্মাননা অনুষ্ঠান

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক বাদল রহমান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আবদুর রহমান রুমী, সাংবাদিক শেখ মাসুদ ইকবাল, সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, মহিলা পরিষদ সম্পাদক আতিয়া রহনান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এতে জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও নানা শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, মহিলা পরিষদ সভাপতি অ্যাডভোকেট মায়া ভৌমিক, সাহিত্য সম্পাদক বাবুল রেজা, ছড়াকার সামিউল হক মোল্লা, ঈসাখাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান বদরুল হুদা সোহেল, কিশোরগঞ্জ নিউজ প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননাপ্রাপ্তদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের আইনপেশার কৃতীজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হক।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ পেয়েছেন ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট নাসিরউদ্দিন ফারুকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, প্রবীণ সাংবাদিক মু আ লতিফ ও আলীমুদ্দীন লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন এবং প্রয়াত শাহ আজিজুল হকের পরিবারের পক্ষে ভাতিজা এডভোকেট শাহ আশরাফ উদ্দিন দুলাল ও মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ উষা রাণী দেবীর পক্ষে তার মেয়ে অধাপিকা গৌরি রাণী দেবী সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন।

সম্মননা অনুষ্ঠান শেষে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগমের মৃত্যুতে স্মরণ সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতারের পূর্বে দোয়া পরিচালনা করেন জেলা গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অ্যাডভোকেট গাজি এনায়েতুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু। অনুষ্ঠানে স্পন্সর হিসাবে যুক্ত ছিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড।

প্রসঙ্গত, ‘মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন’ কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ২০১৫ সাল থেকে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

;

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান



কনক জ্যোতি,  কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

কলকাতায় বিশ্ব কবিতা দিবসের অনুষ্ঠান

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক কবিতা দিবসে ছায়ানট (কলকাতা) এবং লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস যৌথভাবে আয়োজন করে একটি কবিতা সন্ধ্যার। অনুষ্ঠানটি হয় কলকাতায় অবস্থিত একটি স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট তাপাস্তে - তে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছায়ানট (কলকাতা)-এর সভাপতি সোমঋতা মল্লিক এবং পরিকল্পনা করেন  লা কাসা দে লোস পলিগ্লোতাস-এর প্রতিষ্ঠাতা শুভজিৎ রায়।

এই বিশেষ দিনে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করা হয় বাংলা এবং স্প্যানিশে। বিশ্ব কবিতা দিবসে কবিতার ভাষায় এক হয়ে যায় বাংলা এবং স্পেন। এক করলেন কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলা এবং স্প্যানিশ দুই ভাষাতে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে এই আয়োজন।

বাংলায় কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি করেন সৌভিক শাসমল, তিস্তা দে, দেবলীনা চৌধুরী এবং স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ ও পাঠ করেন শুভজিৎ রায়। অনুষ্ঠানটি দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে।

বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষ্যে ছায়ানট (কলকাতা) এবং কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্র যৌথভাবে আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শরৎচন্দ্র বাসভবনে। প্রায় ৫০ জন কবি এবং বাচিক শিল্পী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন কবির কবিতা এই অনুষ্ঠানে শোনা যায়।

;

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;