রেমব্রান্ট ও ভারমিয়ার : সপ্তদশ শতকের দুই ডাচ শিল্পী



আন্দালিব রাশদী
ইউহানেস ভারমিয়ার┇রেমব্রান্ট

ইউহানেস ভারমিয়ার┇রেমব্রান্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

রেমব্রান্ট
১৬০৬-১৬৬৯

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114164805.jpg
◤ রেমব্রান্ট ◢


ছবি আঁকা শিখতে হলে কাকে গুরু মানবেন? রেমব্রান্ট বলেছেন, কেবল একমাত্র গুরু—প্রকৃতি। তিনি আরো বলেছেন পেইন্টিং হচ্ছে প্রকৃতির দৌহিত্র, এর সাথে ঈশ্বরের সম্পর্ক। কিংবা একটি পেইন্টিংকে তখনই সমাপ্ত বলা হয়েছে যখন এর ওপর ঈশ্বরের ছায়া পড়ে।

চিত্র-সমালোচকদের জন্য রেমব্রান্ট বলেছেন, পেইন্টিং নাকে শুকবার জন্য নয়। নতুন শিল্পীদের জন্য তাঁর কথা : যা জানো তার চর্চা করতে থাকো, এটাই তোমার কাছে স্পষ্ট করে দেবে তুমি কী জানো না। যে সব বড় শিল্পীর সাথে এক নিঃশ্বাসে রেমব্রান্টের নাম উচ্চারিত হয় তারা ইতালির। রেমব্রেন্ট ডাচ; হল্যান্ডের মানুষ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114291988.jpg

◤ মিনার্ভা ◢


 ১৬০৬ : জন্ম ১৫ জুলাই, লেইডেনে। বাবামার দশ সন্তানের অষ্টম। পুরো নাম রেমব্রান্ট হার্মেনসুন ভ্যান রিইন।
১৬১৩ : ল্যাটিন স্কুলে ভর্তি।
১৬২০ : ১৪তম জন্মদিনের ২ মাস আগে লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, তখনও ল্যাটিন স্কুলের পাঠ অব্যাহত।
১৬২৪ : ইতিহাস, অলঙ্কার-শাস্ত্র অধ্যয়ন।
১৬২৫ : লেইডেনে নিজস্ব স্টুডিও স্থাপন, দ্য স্টোনিং অব স্টেপেন অঙ্কন
১৬২৯ : প্রথম আত্মপ্রতিকৃতি অঙ্কন।
১৬৩৪ : সাস্কিয়া উইলেনবার্গকে বিয়ে।
১৬৪২ : সাস্কিয়ার মৃত্যু, শিশুপুত্র টাইটাসের জন্য গির্জে ডির্কসকে আয়া নিয়োগ; নাইট ওয়াচ অঙ্কন।
১৬৪৭-১৬৫০ : ডির্কসের সাথে শারীরিক সম্পর্ক, বিরোধ, সাস্কিয়ার অলঙ্কার বন্ধক দেওয়ার কারণে রেমব্রান্টের চেষ্টায় তাকে সংশোধনাগারে প্রেরণ।
১৬৫৪ : নতুন হাউসমেইড হেন্ডরিক স্টোফেলস-এর সাথে সম্পর্ক, কন্যা সন্তান কর্নেলিয়ার জন্ম, বাথশেইবা অ্যাট হার বাথ অঙ্কন।
১৬৫৬ : দেওলিয়া ঘোষণা, ক্রোক পরোয়ানা জারি।
১৬৫৮ : বাড়ি বেচে ভাড়া বাড়িতে গমন।
১৬৬৯ : মৃত্যু ২ নভেম্বর। ওয়েস্টরকার্ক সিমেট্রিতে ভাড়া করা অজানা কবরে সমাহিত। 」

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114473772.jpg

◤ আব্রহাম’স স্যাক্রিফাইস ◢


চিত্রশিল্পের ইতিহাসের দিকে যাদের নজর তারা খুব ভালোভাবেই জানেন সপ্তদশ শতকের ‘ডাচ গোল্ডেন এজ’-এর স্রষ্টাদের নাম বলতে শুরু করলেই রেমব্রান্টের নাম এসে যায় এবং প্রায় সকলে সেই সোনালি যুগে আঁকা নাইট ওয়াচ চিত্রটির উদাহরণ দেন। অথচ এ ছবিটির জন্য তিনি লাঞ্ছিত হয়েছেন। ছবির বিষয় রাতের প্রহরা, অর্থের বিনিময়ে যাদের জন্য এটি আঁকতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন তারা কেউই রেমব্রান্টের কাজটি পছন্দ করেননি।

এই ছবিতে আলো পড়েছে ঠিক মাঝখানে, দুজন অফিসারের উপর আর বর্ষাধারী রক্ষীরা সব আঁধারে অস্পষ্ট। ফরমায়েশটা তাদেরই, অথচ তাদের ভালো করে দেখা যাবে না আর তারা চাঁদা তুলে শিল্পীর টাকা দেবে এটা তো হতে পারে না। খুব বদনাম হলো শিল্পীর। ছবি আঁকার ফরমায়েশ পাওয়া মারাত্মক হ্রাস পেল। স্বচ্ছল পরিবার থেকে আসা একটু বেহিসেবি গোছের এই শিল্পী দেওলিয়া হয়ে গেলেন, বাড়ি বিক্রি করলেন, পারিবারিক অশান্তিও তাঁকে ছাড়ল না। সেই নাইট ওয়াচ-এর দাম এখন কত মিলিয়ন ডলার হতে তা গবেষণার বিষয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114622015.jpg
◤ দ্য নাইট ওয়াচ ◢


রেমব্রান্টের স্মরণীয় উক্তি : ওরা আমাকে নিয়ে যেভাবে ছবি আঁকাতে চায় আমি সেভাবে আঁকতে পারি না, এটা ওরাও জানে।

শিল্পীদের বিশ্বাস নেই
রেমব্রান্ট জেনোয়া থেকে দুটি ছবির ফরমায়েশ পেয়েছিলেন, একটি বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন ভিভিয়ানো দরদাম এবং সরবরাহের তারিখ ঠিক করেন। তিনি এসে দেখেন কাজ শেষ হয়নি, অধিকন্তু শিল্পী বেশি দাম হাঁকছেন। ক্যাপ্টেন পোর্ট অব আমস্টার্ডাম থেকে ক্রেতাকে লিখলেন : কাজের গতি অত্যন্ত মন্থর, শিল্পীরা সাধারণত তাই করে থাকে, তাছাড়া এই লোকটির বিশ্বাস নেই। এখন দুটি ছবির জন্য ৩০০০ গিল্ডার চাইছেন, অথচ আমার সাথে দর ঠিক হয়েছিল ১২০০ ডলার। তার উপর ভরসা রাখা যায় না।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114664684.jpg

◤ বাথশেইবা অ্যাট হার বাথ ◢


রেমব্রান্টের ছবির ওপর চোরের নজর, গবেষকেরও
১৬৩০-এ আঁকা রেমব্রান্টের বাবার পোর্টেট—‘পোর্ট্রেট অব দ্য ফাদার’ ২০০৬ সালে জাদুঘর থেকে চুরি হয়; সাত বছর পর সার্বিয়ার একটি গির্জায় ৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ছবিটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে একবার চুরি হয়েছিল, ১৯৯৬ সালে, উদ্ধার হয় স্পেনে।

রেমব্রান্টের মাস্টারপিস ‘ওল্ডম্যান ইন মিলিটারি কস্টিউম’ ছবিটির ওপর ইনফ্রারেড আলো, নিউট্রন ও এক্স-রে প্রয়োগ করে গবেষণা ২০১৩ সালে নিশ্চিত হয়েছে অন্য একটি ছবি রঙ দিয়ে ঢেকে রেমব্রান্ট এটি এঁকেছেন। নিচের ছবিটিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114702139.jpg

◤ দ্য অ্যানাটমি লেসন অব ডক্টর নিকোলাস টাল্প ◢


বার্ধক্য ও যৌবন
রেমব্রান্ট ৬৩ বছর বেঁচে ছিলেন। বার্ধক্যের সঙ্কট তিনি মোকাবেলা করেছেন, তবুও বলেছেন : বার্ধক্য সৃজনশীলতার অন্তরায় কিন্তু বার্ধক্য আমার যৌবন-স্পৃহাকে দমিয়ে রাখতে পারে না।

কয়েকটি সেরা ছবি : সেল্ফ পোর্ট্রেট সিরিজ, দ্য নাইট ওয়াচ, দ্য রিটার্ন অব দ্য প্রডিগাল সান, দ্য অ্যানাটমি লেসন অব ডক্টর নিকোলাস টাল্প, দ্য জুইশ ব্রাইড, দ্য স্টর্ম অব দ্য সি অব গ্যালিলি, মিনার্ভা, আব্রহাম’স স্যাক্রিফাইস, বেলথাজার্স ফিস্ট, ডায়ানা, ফিলোসোফার ইন মেডিটেশন, বাথশেইবা অ্যাট হার বাথ, দ্য ব্লাইডিং অব স্যামসন, দ্য কন্সপিরেসি অব ক্লডিয়াস সিভিল, লুক্রেশিয়া।

 ✨

ইউহানেস ভারমিয়ার
১৬৩২-১৬৭৫

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114784531.jpg
◤ ইউহানেস ভারমিয়ার ◢


‘যে প্রভাতে পৃথিবী সৃষ্টি হয়, তখন ঈশ্বরের সামনে নিশ্চয়ই ভারমিয়ারের শিল্পকর্মগুলো ছিল’—ফ্রেডেরিক সোমার এভাবেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ডাচ চিত্রশিল্পের স্বর্ণযুগের শিল্পী ইউহানেস ভারমিয়ারকে। অথচ এই শিল্পীর কাজের খবর তাঁর জীবদ্দশায় নিজ শহর ডেলফট-এর বাইরে কোথাও পৌঁছেনি। তিনি ইয়ান বা ইউহান ভারমিয়ার নামেও পরিচিত। তাঁর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কিংবা কোনো শিল্পগুরুর কাছে শিক্ষালাভ করার সুযোগ হয়নি, তিনি নিজেও কোনো স্কুল খোলেননি বা নিজ হাতে অনুগত আঁকিয়ে শিষ্যও তৈরি করেননি। অন্যদিকে তাঁর ছবিগুলো কেবল একজন ক্রেতাই নিজ সংগ্রহে রাখায় শিল্প-সমঝদারদের অন্য কেউ তাঁর সম্পর্কে জানতেও পারেননি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114892303.jpg

◤ গার্ল উইথ অ্যা ইয়ার রিং ◢


১৬৩২ : অক্টোবরে জন্ম, ৩১ অক্টোবর ব্যাপটাইজড।
১৬৫২ : বাবার মৃত্যু।
১৬৫৩ : ক্যাথরিনা বোলনেসকে বিয়ে এপ্রিলে; বিয়ের আগে ক্যাথলিক চার্চে দীক্ষা গ্রহণ; চিত্রশিল্পী সংসদে যোগদান।
১৬৫৭ : পিটার ভ্যান রুভেন নামক একজন প্যাট্রন লাভ।
১৬৬১ : পেইন্টার্স গিল্ডের সভাপতি নির্বাচিত ; ১৬৬৩ ১৬৭০, ১৬৭১-এ পুনর্নির্বাচিত।
১৬৭২ : কিছু ইতালীয় চিত্রকলার যথার্থতা সনাক্ত করতে হেগ গমন।
১৬৭৫ : আর্থিক দুরবস্থা কাটাতে ১০০০ গিল্ডার ধার গ্রহণ, সে বছরই মৃত্যু। ১৫ ডিসেম্বর ওল্ড চার্চে সমাহিত। 」

গার্ল উইথ এ পার্ল ইয়াররিং
গার্ল উইথ এ পার্ল ইয়াররিং-কানে মুক্তোর দুল পরিহিত এ ছবিটি ভারমিয়ারের সবচেয়ে বিখ্যাত কাজ। সপ্তদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই ছবিকে বলা হয় ‘দ্য মোনালিসা অব দ্য নর্থ’ কিংবা ‘ডাচ মোনালিসা’। কারো ফরমায়েশে তিনি এ ছবিটি এঁকেছেন বা নিজস্ব কোনো নারীকে চিত্রায়িত করেছেন তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

১৮৮১ সালে হেগে অনুষ্ঠিত একটি নিলামে মাত্র দুই গিল্ডার ৩০ সেন্টে ছবিটি বিক্রি হয়ে যায়। ক্রেতার কোনো উত্তরাধিকার না থাকায় শেষ পর্যন্ত আজকের এ বিশ্বখ্যাত ছবিটি ১৯০২ সালে মরিতসুইস জাদুঘরে দান করে দেওয়া হয়।

ট্র্যাসি ক্যাভেনিয়র এ ছবিটিকে নিয়ে একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস রচনা করেন গার্ল উইথ এ পার্ল ইয়াররিং (১৯৯৯) নামে। ২০০৩ সালে চলচ্চিত্রায়িত হলে তা গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।

গার্ল উইথ এ রেড হ্যাট-লাল টুপি পরা এই মেয়েটিও এখন শিল্পরসিকদের কাছে পরিচিত মুখ। ভারমিয়ারের ছোট আকৃতির তেলচিত্রগুলোর একটি হয়ে ওঠে এই লাল টুপির মেয়ে। উনবিংশ শতকেই অল্প কটি ছবির শিল্পী হলেও ভারমিয়ারের প্রভাব নবীন শিল্পীদের ওপর পড়তে শুরু করে।

সালভাদর দালি ভারমিয়ারের দ্য লেসমেকার নিজের মতো করে এঁকেছেন। দালির ১৯৩৪ সালের একটি অমর কাজ-‘ভারমিয়ারের প্রেতাত্মা, যা টেবিল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।’

অঙ্কনই জীবনের ব্রত
অর্থনৈতিক মন্দা, মহামারি প্লেগ এবং ছবি আঁকার পেছনে ব্যয়—পনের সন্তানের জনক ভারমিয়ারের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে। তারপরও তিনি সেকালের সবচেয়ে দামি রঙ কিনে ছবি আঁকতেন। দারিদ্র্য জর্জরিত অবস্থায় মাত্র তেতাল্লিশ বছর বয়সে মৃত্যু, তবুও তিনি বিস্মৃত হয়ে গেলেন। তাঁর শাশুড়ির বাড়িতে দুটি কক্ষে ছবিগুলো পড়ে থাকে। গুস্তাভ ফ্লেডরিখ ভাগান ও থিওফাইল থোর-বার্জার তাঁকে পুনরাবিষ্কার করেন এবং ৬৬টি ছবি সনাক্ত করেন। তবে এর মধ্যে ৩৪টি ছবি নিয়ে সার্বজনীন সম্মতি রয়েছে যে এগুলো তাঁরই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566114986807.jpg

◤ দ্য মিল্কমেইড ◢


২০০ বছর পর
তখনকার চিত্রশিল্পের ইতিহাসে তিনি প্রায় সম্পূর্ণভাবে অনুল্লিখিত ও উপেক্ষিত রয়ে যান। মৃত্যুর ২০০ বছর পর ভারমিয়ারের পুনর্জাগরণ ঘটে এবং শিল্পবোদ্ধারা স্বীকার করেন তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের একজন। গুস্তাফ ফ্রেডরিখ ভাগান এবং থিউফাইল থোরে-বার্জার পুনরাবিষ্কৃত ভারমিয়ারের ওপর প্রবন্ধ রচনা করেন। তখন থেকেই ভারমিয়ার পুনর্মূল্যায়িত হতে শুরু করেন এবং কার্যত তাঁর পুনর্জাগরণ ঘটে। তিনি হয়ে ওঠেন ডাচ স্বর্ণযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী।

তাঁর প্রায় সব ছবিই ক্যানভাসে তৈল রঙ। অত্যন্ত দামি ল্যাপিস লাজুলাই, প্রাকৃতিক আলট্রামেরিন এবং অ্যম্বর রঙ ব্যবহার করতেন। সপ্তদশ শতকের কোনো শিল্পী রঙের পেছনে এত ব্যয় করতেন না, তাঁর দারিদ্র্যের সাথে এটা মেলানো যায় না। রঙের ঔজ্জ্বল্য তাঁর ছবি চিনিয়ে দেয়।

লক্ষীমন্ত নারী ক্যাথরিনা বোলনেসকে বিয়ে করেন। তাদের চৌদ্দটি সন্তানের মধ্যে দশজন বেঁচে থাকে। আর্থিক সংকটের কারণে ক্যাথরিনা স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে তার মায়ের বাড়ি ওঠেন। সে বাড়িরই দোতলার সামনের একটি কক্ষ হয়ে ওঠে ভারমিয়ারের স্টুডিও। সেই বাড়ির একেবারে গা ঘেঁষা একটি চার্চও ছিল, তাঁর ল্যান্ডস্কেপে চার্চের উপস্থিতি দেখা যায়। ভারমিয়ারের কেবল তিনটি ছবিতে অঙ্কনের সময়কাল লেখা হয়েছে : দ্য প্রোকিউরেস (১৬৫৮), দ্য অ্যাস্ট্রোনোমার (১৬৮৮) এবং দ্য জিওগ্রাফার (১৬৬৯)।

দারিদ্র্যের ভার
দারিদ্র্য ঘোচাতে তিনি রাতভর সরাইখানাও চালিয়েছেন, কিন্তু দারিদ্র্য ঘোচেনি। সন্তানদের ভার ও দারিদ্র্যের চাপ তাকে নিঃশেষ করে দিয়েছে। স্ত্রী ক্যাথরিনা বলেছেন, অর্থকষ্টের চাপ সহ্য করতে না পেরে মাত্র দেড় দিনের প্রচণ্ড উন্মত্ত আচরণের পর তাঁর স্বামী মৃত্যুবরণ করেছেন। সে সময় ক্যাথরিনা ও তাঁর মায়ের দখলে এসে যায় তার ১৯টি ছবি। এর মধ্যে দুটো ছবি বিক্রি করে ঋণ শোধ করা হয়।

‘ভারমিয়ারের মতো আর কেউ নেই’—জোনাথান রিচম্যানের এই গানটি সংগীত প্রেমিকদের কাছে একজন চিত্রশিল্পীকে পৌঁছে দিয়েছে। ট্রান্সট্রোমারের কবিতাও ভারমিয়ারকে নতুন করে চিনিয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/18/1566115170809.jpg

◤ গার্ল উইথ অ্যা রেড হ্যাট ◢


কয়েকটি সেরা ছবি : ডিউ ফ্রম ডেলফ্ট, দ্য ক্যাপটিভ, গার্ল উইথ অ্যা ইয়ার রিং, গার্ল ইন অ্যান্টিক কস্টিউম, গার্ল উইথ অ্যা রেড হ্যাট, দ্য গিটার প্লেয়ার, ওমেন রিডিং, অ্যা লেটার, ডায়ানা অ্যান্ড হার নিম্ফস, ইয়াং ওমেন উইথ অ্যা পিচার, দ্য লাভ লেটার, দ্য মিল্কমেইড।

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাকালে বন্ধ থাকার পর আবারো 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কার্যক্রমে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ রচিত 'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের একশত কপি শুভেচ্ছামূলক প্রদান করা হবে। 

উল্লেখ্য, আগেও ইংরেজি নববর্ষে এবং ভাষার মাসে শত বিশিষ্টজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রন্থ উপহার দিয়েছিল ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ. এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প-সাহিত্য-সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আনসার বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত 'শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশন'। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল স্থানীয় নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, বরকতময়, নেয়ামতপূর্ণ মাহে রমজানের সঙ্গে অন্য কোনো মাসের তুলনা চলে না। রোজা হলো মাহে রমজানে অবশ্য পালনীয় ফরজ আমল, যার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা নিজে দেবেন। মানবজীবনে রোজা একজন বান্দার আত্মীক ও শারীরিক কল্যাণের ও উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ পন্থা। তদুপরি, রমজান মাসকে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা তাঁর অপার ক্ষমা, দয়া আর অপরিসীম করুণা দিয়ে বান্দাদেরকে উপহার দিয়েছেন। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা সঠিকভাবে পালন করলে রোজাদার নবজাতক শিশু মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রোজা রাখবে তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মানব জীবনে ও সামাজিক ব্যবস্থায় রমজান মাস ও রোজার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হয়েছে ফাউন্ডেশন প্রদত্ত গ্রন্থে। এ গ্রন্থ রমজান মাসের তাৎপর্য এবং রোজার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পাঠকদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে ৩০টি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের মাধ্যমে।

'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের লেখক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ। তাঁর পিতা: ডা. এ.এ, মাজহারুল হক, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মাতা: নূরজাহান বেগম, সমাজসেবী। ড. মাহফুজ পারভেজের জন্ম: ৮ মার্চ ১৯৬৬, কিশোরগঞ্জ শহরে। পড়াশোনা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচ,ডি)। পেশা: অধ্যাপনা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখি, গবেষণা ও সাহিত্য সাধনায় ব্রতী। প্রকাশিত গ্রন্থ কুড়িটি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- গবেষণা-প্রবন্ধ: বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, দারাশিকোহ: মুঘল ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো। দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর। উপন্যাস: পার্টিশনস, নীল উড়াল। ভ্রমণ: রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে। গল্প: ইতিহাসবিদ, ন্যানো ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্প। কবিতা: মানব বংশের অলংকার, আমার সামনে নেই মহুয়ার বন, গন্ধর্বের অভিশাপ। অধ্যাপনা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি বাংলাদেশের শীর্ষতম মাল্টিমিডিয়া পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর এবং কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা কিশোরগঞ্জ নিউজ'র উপদেষ্টা সম্পাদক রূপে সংযুক্ত রয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের  'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজিত হবে রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ কার্যক্রম সমন্বয় করবেন কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক, ইতিহাসবিদ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ। সমন্বয় কমিটিতে আরো রয়েছেন কিশোরগঞ্জ নিউজ'র প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ ইসকান্দার আলী স্বপন, সাংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু ও চিকিৎসক নেতা ডা. গোলাম হোসেন।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে আরো জানানো হয় যে, ইতিপূর্বে ঘোষিত ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর সম্মাননা বক্তৃতা ২০২০ এবং ২০২১ করোনাকালের বিরূপ পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকায় তা যৌথভাবে মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এএ মাজহারুল হক এবং সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কর্তৃক কিশোরগঞ্জের জীবিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জীবনব্যাপী বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন করতে ২০১৫ সাল থেকে এ সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করা হচ্ছে, যা বক্তৃতা ও লিখিত আকারে প্রদান করেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' গতানুগতিক সম্মাননার বদলে ব্যক্তির কর্ম ও কীর্তির বিশ্লেষণমূলক-মূল্যায়নভিত্তিক সম্মাননা বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করে এবং এরই ভিত্তিতে জ্ঞাপন করা হয় যথাযথ সম্মান। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি লিখিত আকারে বক্তৃতা-পুস্তিকায় চিত্রিত হন সম্মাননা প্রাপ্তগণ। মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এই বুদ্ধিবৃত্তিক-একাডেমিক আবহে ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে, যা কিশোরগঞ্জে তো বটেই, বাংলাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। শুরু থেকে সম্মাননা বক্তৃতা প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী ড. মাহফুজ পারভেজ, যিনি কিশোরগঞ্জে পাবলিক লেকচার সিরিজের মাধ্যমে গণবুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর তৈরির পথিকৃৎ।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান শিক্ষাবিদ প্রাণেশ কুমার চৌধুরী, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান দীপ্তিমান শিক্ষকদম্পতি: অধ্যক্ষ মুহ. নূরুল ইসলাম ও বেগম খালেদা ইসলাম, ২০১৭ সালে তৃতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘প্রজ্ঞার দ্যুতি ও আভিজাত্যের প্রতীক: প্রফেসর রফিকুর রহমান চৌধুরী’ এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘ঋদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র: শাহ্ মাহতাব আলী’। ২০১৯ সালে পঞ্চম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা দেয়া হয় 'স্বাস্থ্যসেবা-শিক্ষায় পথিকৃৎ চিকিৎসক-দম্পতি' প্রফেসর ডা. আ ন ম নৌশাদ খান ও প্রফেসর ডা. সুফিয়া খাতুনকে। ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয় নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে। এ উপলক্ষে ‘কিশোরগঞ্জে আইন পেশার নান্দনিক বিন্যাস’ শীর্ষক সম্মাননা বক্তৃতা বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয়েছে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ,  মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে, যারা কিশোরগঞ্জের সামাজিক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিন্যাসে স্বকীয় কৃতিত্বের প্রভায় উজ্জ্বল। জীবনব্যাপী কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের জন্য শৈল্পিক দ্যোতনায় নান্দনিক বর্ণালী সৃজন করেছেন এই তিন গুণান্বিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ জানান, ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২০ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২১ একসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা মার্চ মাসের শেষ দিকে আয়োজিত হবে।

;