চোখ জুড়ানো বৃক্ষমেলা



রেজা উদ দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চলছে মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা/ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চলছে মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'শিক্ষায় বন প্রতিবেশ, আধুনিক বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী বৃক্ষমেলা। বৃক্ষ মেলাকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে বিশাল মাঠে তৈরি হয়েছে ঘন সবুজের সমারহ। মেলায় স্থান পাওয়া নানা প্রজাতির গাছ, থোকায় থোকায় ধরে থাকা চেনা-অচেনা ফল, প্রস্ফুটিত ফুলের সৌন্দর্য্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। বনজ, ফলজ, ঔষধি গাছ কিংবা ঘর সাজানোর অর্কিড, বনসাই-কী নেই মেলায়!

নানা বয়সী, শ্রেণি পেশার ক্রেতাদের পদচারণায় বেশ জমে উঠেছে বৃক্ষমেলা। আষাঢ়ের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও ঢাকার আকাশে রোদের তেজ এখনও প্রখর। ভ্যাপসা গরমে তাই সকালের দিকে মেলায় ক্রেতা দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম থাকলেও দুপুরের পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে। এই সময় ক্রেতা-দর্শনার্থীরা মেলায় থেকে যতটা না গাছ কিনছেন তার চেয়ে বেশি ঘুরে দেখছেন। কারো পছন্দ হলে গাছ কিনে খুশিমনে বাড়ি ফিরছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/27/1561614680905.jpg

বুধবার (২৬ জুন) বৃক্ষ মেলা ঘুরে এ চিত্রই দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্টলগুলো অর্কিড, বনসাই, বীজ, সার, ছোট কৃষিযন্ত্রপাতি দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। স্টলের সামনের জায়গায় থরে থরে সাজানো নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি গাছ। ফলের চারাগুলোতেও ধরেছে মৌসুমী ফল। বিশেষ করে গাছে ঝুলনো রসালো টসটেস আম চোখে পড়ার মত। এছাড়াও পাকা কাঁঠাল, জাম্বুরা, কমলা, বেদেনা, মাল্টার -ঘ্রাণ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। গোলাপ, গাঁদা, কনকচাঁপা, নয়নতারা, টুগর, জুঁই আপনাকে সম্ভাষণ জানাবে। দমকা বাতাসের তালে পাতা, ফুল ও ফলের দুলে ওঠা যেকোনো বৃক্ষপ্রেমীর মনকেও দুলিয়ে যাবে। স্টলের ডিসপ্লেতে সাজানো ক্যাকটাস আর অর্কিডও নজর কেড়ে নিবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/27/1561614696708.jpg

মেলা ঘুরে চেনা অচেনা নানা প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ দেখতে পাওয়া যাবে। এদের মধ্যে আছে-ডুরিয়ান, অলিভ, কাউ, পিচ, কিউই ফল, অ্যাভোকেডো, আলমন্ডা, ড্রাসিনা, চেরী ফল, পার্সিমন ফল, ড্রাগন, ট্যাং ফল, অ্যাপ্রিকট ফল, আদা জামির, স্ট্রবেরি পেয়ারা, বিলাতি গাব, রাম্বুটান, জয়ফল, সাদা নাশপতি, রাবাবা, মাল বেরি , লোকাট ফল, এবিউ ফল কালোজাম, সাতকরা, সফেদা, কদবেল, আতা, কুল, বড়ই, ডালিম, করমচা, বেল, জাম্বুরা, কাঁঠাল, লাল কাঁঠাল, চাম কাঠাল, ডুমুর, কাজু বাদাম, জবা ফুল, ম্যান্ডেভিলা, ফুল, হাসনাহেনা, পলাশ, কনকচাপা, বাসন্তি, মালতী, নয়নতারা, আঁশফল, ঘৃতকুমারী, লটকনসহ নাম জানা-অজানা হাজারো  ফল ও ফলের দেশি-বিদেশি গাছ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/27/1561614739933.jpg

মেলায় স্টলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেলায় দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির গাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর দাম প্রজাতি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন। ২০ টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকার চারা এখানে স্থান পেয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বনসাইয়ের। চায়না প্রজাতির কোনো কোনো বনসাইয়ের সর্বোচ্চ দাম ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। এরপর ফলজ উদ্ভিদের চারা যেগুলোতে ফল ধরে আছে সেগুলোর সর্বোচ্চ দাম ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা, ফুলের চারা, ওষধি গাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যেই।

খাঁন নার্সারির ম্যানেজার সোহেল শিকদার বার্তা২৪.কম’কে জানান, ‘তাদের স্টলে সর্বনিম্ন ৩০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকা দামের গাছের চারা আছে। বেশি দামের চারার বিক্রি কিছুটা কম।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/27/1561614802324.jpg

মেলায় ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা সকলেই ঘুরতে এসেছেন। নারায়নগঞ্জ থেকে মেলায় গাছ কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘বাগান করব বলে এখানে গাছ কিনতে এসেছি। এখানে এসে নানা প্রজাতির গাছ দেখতে পাচ্ছি। ভালো জাতের গাছ পেলে কিছু গাছ কিনে নিয়ে যাব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অহিদুজ্জামান অভি বলেন, গাছ আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এই মেলায় এলে আমরা নানা প্রজাতির গাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারি। তাই সময় পেলেই প্রতিবছরই বৃক্ষ মেলায় আসি।

আশুলিয়া গার্ডেন সেন্টারের মালিক সানী সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৃক্ষপ্রেমীরা বছরজুড়ে এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। এত বড় বৃক্ষমেলা আর কোথাও হয় না। বৃক্ষমেলা ঘুরে দেখতে অনেকেই দেশ বিদেশ থেকে মেলায় আসেন। এবারের বিক্রি এখন পর্যন্ত ভালোই।

উল্লেখ্য, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী এই বৃক্ষমেলা চলবে আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত। মেলায় মোট ১০৫ টি স্টল রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য বৃক্ষমেলায় প্রবেশ একদম ফ্রি।

   

রাস্তায় জমা পানিতে হারানো শৈশব খুঁজে পেয়েছে তারা



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
জমে থাকা পানি শৈশবের উল্লাস এনে দিয়েছে তাদের মনে

জমে থাকা পানি শৈশবের উল্লাস এনে দিয়েছে তাদের মনে

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় জমেছে পানি। দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের। রিকশা বা ভ্যানে চড়ে কোমর সমান পানি ডিঙ্গিয়ে যাতায়াত করছে মানুষ। পানির উপর ভাসছে ড্রেন আর রাস্তার ময়লা। ময়লা-আবর্জনার সাথে রাস্তার সেই নোংরা পানিতে আপন মনে ভাসতে দেখা যায় দুই শিশুকে। এ যেন শৈশবের উল্লাস এনে দিয়েছে তাদের মনে। ভেসে আসা ড্রাম আর ককশিটকে পুঁজি করে আপন মনে খুনসুটিতে মেতেছে তারা।

জমা পানিতে উল্লাসে মেতেছে তারা

বলছি রাজধানীর নিউ মার্কেটের সামনে রাস্তায় জমে থাকা নোংরা পানিতে সাঁতার কাটা শিশু রাবেয়া ও মিমের কথা। ইট পাথরের শহরে বসবাসকারী শিশুরা জানে না দুপুরবেলা পুকুরে লাফালাফি করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে সাঁতারের আনন্দ। তাই তো বছরের রেকর্ড গড়া এই বৃষ্টি যেন আনন্দের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে তাদের মনে। সুযোগ পেয়ে রাস্তায় জমে থাকা নোংরা পানিতেই সাঁতারের সখ মেটাচ্ছিলো তারা।

খুনসুটির ব্যস্ততার মাঝে কথা হয় রাবেয়া ও মিমের সাথে। রাবেয়া জানায়, নিউ মার্কেট এলাকায় মায়ের সাথে থাকে সে। মিম তার প্রতিবেশি। এক সাথেই খেলে তারা। গ্রামে থাকতে সাঁতার শিখেছিল রাবেয়া। মায়ের সাথে শহরের এসে আর সাঁতার কাটতে পারেনি। তাই মিমকে রাস্তায় জমে থাকা পানিতে সাঁতার শিখিয়ে একেই সাথে সাঁতার কাটছে তারা।

টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় জমেছে পানি, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

নোংরা পানিতে সাঁতার কাটা দেখে অনেকেই শিশু রাবেয়া ও মিমের দিকে চোখ বাঁকা করে তাকালেও বাস্তবতা ভিন্ন। ইট পাথরের শহরের সুইমিং পুল কিংবা টাকা দিয়ে সাঁতার কাটার সুযোগ নেই তাদের। তাই ইচ্ছা যখন সাধ্যের কাছে জিম্মি তখন রাবেয়া মিমদের সাঁতার এই শহরের বড় সৌন্দর্যই বটে।

;

চুলের কারণে দু'বার স্কুল থেকে বরখাস্ত



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য মানুষ চুলের কতই না স্টাইল করে থাকেন। কিন্তু, সেই স্টাইল করা চুলই যুক্তরাষ্ট্রের এক তরুণের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। চুলের স্টাইলের জন্য তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত হতে হয়েছে, তাও একবার নয়, দুইবার। বরখাস্ত হওয়া ছাত্রটির নাম ড্যারিল জর্জ (১৭)। সে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মন্ট বেলভিউয়ের বারবারস হিল হাই স্কুলে পড়াশোনা করে। সিএনএন, এনবিসির বরাত দিয়ে এমন খবর প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।

এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মন্ট বেলভিউয়ের বারবারস হিল হাই স্কুলের ছাত্র ড্যারিল জর্জকে চুলের স্টাইলের (ড্রেডলকস স্টাইল) জন্য দুইবার স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এতে বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এই স্টাইলে প্রথমবার স্কুলে যাওয়ার পর তাকে দুই সপ্তাহের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছিল। দু’সপ্তাহের শাস্তি শেষ করে সে আবার চুলের একই স্টাইল করে স্কুলে আসে। পরে তাকে দ্বিতীয়বারের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় জর্জের মা দারেশা জর্জ অনেক কেঁদেছিলেন বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।   

জর্জের মা দারেশা জর্জ সিএনএনকে জানান, আমার ছেলেকে শিক্ষার সাথে অপ্রাসঙ্গিক কিছুর জন্য শাস্তি পেতে হয়েছে। সে এই পরিস্থিতির কারণে হতাশা বোধ করছে।

দারেশা জর্জ আরও জানান, আমাদের পূর্বপুরুষ সবার ড্রেডলক স্টাইল ছিল এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই নিয়ম সবাই মেনে আসছে। আমাদের কাছে চুলের এই স্টাইলটির সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। ড্রেডলক স্টাইল আমাদের শক্তি এটাই আমাদের শিকড়।

সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুল কর্তৃপক্ষ ড্যারিলকে বলেছিল ছোট ছোট বেনি বাঁধা চুল তার চোখের নিচে, কানের নিচে এসে পড়ে, যা তাদের প্রতিষ্ঠানের পোশাকবিধির লঙ্ঘন।  

দারেশা এনবিসি নিউজকে বলেন, চুলের কারণে ড্যারিলকে স্কুলে শাস্তি দেয়া হয়েছে। সেই শাস্তির কথা শুনে আমি নিজেই কান্না করি। দারেশা বলেন, একটি ছোট্ট ঘরে বেঞ্চে আট ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এটি খুবই অস্বস্তিকর। প্রতিদিন সে বাড়িতে এসে বলে, দীর্ঘ সময় টুলে বসে থাকার কারণে তার পিঠে খুব ব্যথা হয়।

দারেশা জর্জ এই ঘটনার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে বলেও গণমাধ্যমে জানানো হয়।

;

ভাস্কর্যে চড়ে জরিমানা গুনলেন ২০ লাখ টাকা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হাতি, ঘোড়ার পিঠে চড়ার শখ নাই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। সেটা ছোটবেলা হোক কিংবা বড় হলেও। হাতি, ঘোড়ার পিঠে চড়ার সুযোগ থাকলে সেই সুযোগ সহজে কেউ হারাতে চায় না। তবে, বাস্তবে উঠতে না পারলেও অনেকেই 'দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান'। ইট-পাথরের তৈরি বাঘ, সিংহ, হাতি ও ঘোড়ার পিঠে বসে ছবি উঠাতেও কেউ কার্পণ্য করে না। কিন্তু, এমন শখ পূরণ করতে গিয়ে এক আইরিশ পর্যটককে জরিমানা গুনতে হয়েছে। তাও আবার সেই জরিমানার পরিমান ১০০ বা ২০০ টাকা নয়, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২০ লাখ টাকা (১৯ হাজার মার্কিন ডলার)। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এমন ঘটনা ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইর্য়ক পোস্টের বরাত দিয়ে এমন বিচিত্র খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

এ ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (আগের নাম টুইটার) ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, আইরিশ ওই পর্যটক এক ব্যক্তি সিংহের মাথায় একটি হাত দিয়ে রেখেছে ও তার আরেক হাতে একটি টর্চ—এমন একটি ভাস্কর্যের সিংহের পিঠে চড়ে নামতে গিয়ে ভাস্কর্যের একটি অংশ ভেঙে ফেলেন।

নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক আইরিশ পর্যটক বেলজিয়ামের ব্রাসেলস স্টক এক্সচেঞ্জে ‘দ্য বোর্স’ নামে একটি সিংহের ভাস্কর্যে চড়ে নামার সময় ভাস্কর্যের হাতে থাকা মশালটি ভেঙে ফেলেন। যার কারণে ওই ব্যক্তিকে ১৯ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ওই পর্যটক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। ভেঙে ফেলা ভাস্কর্যটি সংস্কারের একদিন পরই এমন ঘটনা ঘটেছে। ভাস্কর্যটি সংস্কার করতে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছিল বলেও জানানো হয়। 

গণমাধ্যমটির খবর অনুযায়ী, পুলিশ ওই পর্যটককে কাছের একটি ফাস্ট-ফুড রেস্তোরাঁ থেকে গ্রেফতার করে। পর্যটক তার ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানেন না বলে দাবি করেছেন।

সংস্কার প্রকল্পের ব্যবস্থাপক নেল ভ্যানডেভেনেট গণমাধ্যম ভিআরটি নিউজকে বলেন, ব্রাসেলস স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন এবং এই ভাস্কর্যগুলো আমাদের তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যে। আমরা দ্রুত এটি সংস্কার করতে চাই, তবে এতে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসও লাগতে পারে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পুরো ভবনটির আগের সৌন্দর্য মাত্রই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভবনের দুটি সিংহের ভাস্কর্যসহ অনেক ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হয়েছে।

নেল আরও বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, ভাস্কর্যগুলোকে মানুষ অনেক গুরুত্ব দেবে। কিন্তু যা হয়েছে, তা খুবই দুঃখজনক।’

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভাস্কর্য মেরামত করতে বেলজিয়াম সেই আইরিশ পর্যটকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চাইছে। 

;

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা



সাহিদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা

  • Font increase
  • Font Decrease

যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত জামালপুরের ইসলামপুরের চরাঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। প্রতি বছর রবি মওসুমে ইসলামপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়ে থাকে। স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচের বেগুন চাষে অধিক টাকা আয় করে থাকেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তাই স্থানীয় কৃষকরা বেগুন গাছকে নাম দিয়েছেন টাকার গাছ।

চলতি বছর বন্যা না হওয়ায় বেগুন চাষিরা তাই আগে ভাগেই আগাম বেগুন চাষে মাঠে নেমেছেন। ইসলামপুরের চরাঞ্চলে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের বেগুন, শীতের সবজি হিসাবে দেশ-বিদেশে ব্যাপক কদর ও সুখ্যাতি রয়েছে। ইসলামপুরের উৎপাদিত সাদা, কালো ও বল বেগুন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। এছাড়া বেগুন চাষে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় বাড়ছে চাষীর সংখ্যা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরের ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছে ৪২ হাজার ২৪০ মেক্টিক টন বেগুন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন উৎপাদন হয়েছে ৪৫ হাজার ৭২৫ মেক্ট্রিক টন বেগুন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ১ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে ৫০ হাজার ৭৮০ মেক্ট্রিক টন বেগুন উৎপাদন হয়েছে।

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা 

এছাড়াও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে বেগুন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছেন স্থানীয় কৃষি অফিস। এতে ৫২ হাজার ৩৯০ মেক্ট্রিক টন বেগুন উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যে এক কেজি বেগুন ৫০ টাকা।

ফলে ১ মেক্ট্রিক টন বেগুনের দাম দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা। আর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বেগুন উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষমাত্রা অনুযায়ী ৫২ হাজার ৩৯০ মেক্ট্রিক টন বেগুনের মূল্য ৫০ টাকা দরে আনুমানিক বাজার মূল্যে ২৬১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৪০ শতাংশের এক বিঘা জমিতে সাড়ে ৪ হাজার বেগুনের চারা রোপণ করা যায়। ফল আসতে ৪৫ দিন সময় লাগে। এসময় পর্যন্ত কৃষকদের খরচ হয় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার মতো। আবহাওয়া ও জমির উর্বরতা ভালো হলে ৪৫ দিন পর থেকে টানা তিন মাস প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ মণ বেগুন তুলে বাজারে বিক্রি করতে পারেন কৃষকরা। গড় হিসাবে এ তিন মাসে বিঘা প্রতি উৎপাদন হয়ে থাকে ২২০ মন বেগুন। পাইকারি গড় হিসাবে ২০ টাকার দরে বাজার মূল্যে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৪নং চরের কৃষক শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘তার গত বছরের এক বিঘা জমিতে মোট খরচ হয়েছে ৩৬ হাজার টাকার মতো। আর বেগুন বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো। কম খরচে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় এবছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে বেগুনের চারা রোপণ করেছেন’।

বেগুন চাষে ব্যস্ত জামালপুরের চাষিরা 

একই এলাকার কৃষক আমজাদ মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বেগুনে আরও লাভ বেশী হতো । সঠিক সময়ে যদি কৃষি অফিসাররা আমাদের সঠিক পরামর্শ দিতো। তারা আমাদের কোন খোঁজ-খবরই রাখেন না। আমরা গ্রামের মানুষ চাষাবাদ করেই সংসার চালাই। সব সময় মাঠেই পড়ে থাকি। গত ১৫ দিন হলো সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বেগুনের চারা গাছ লাগিয়েছি। মাঝে খেতের কিছু চারা গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।’

গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতেরচর এলাকার সোহাগ মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা কৃষক মানুষ। এই যে আমি এক বিঘা জমিতে বেগুন গাছের চারা লাগিয়েছি, এটাকে আমি চারা গাছ মনে করি না , মনে করি টাকার গাছ। আশা করছি গত বছরের মতো এবছরেও ভালো ফলন হবে। তাই দিন রাত রোদে পুড়ে পরিশ্রম করে যাচ্ছি কিছু-টাকা লাভের আশায়।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ ও ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান আকন্দ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘চলতি বছর বন্যা না হওয়ায় কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছি বেগুন চাষে। তাই তারা আমাদের পরামর্শে আগে ভাগেই আগাম বেগুন চাষে মাঠে নেমেছেন। এ উপজেলায় বারি-১ জাতের বেগুন বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়া বোম্বাই বেগুন, লম্বা বেগুন ও বাগলতি (ফম বেগুন) বেগুন নামে আরও তিন জাতের বেগুনের চারা রোপন করা হয়েছে।;

জামালপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এ উপজেলার মাটি পলি দো-আঁশ হওয়ায় এখানে বেগুন চাষ বেশি হয়। আমরাও কৃষকদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করি ও বেগুন চাষের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। সারা দেশে এ বেগুনের চাহিদা রয়েছে।’

;