নয় মাস গ্রাম ছাড়া পরিবারগুলোকে ফিরিয়ে আনলো পুলিশ
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পার-মল্লিকপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে দুই শতাধিক পরিবার দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস ধরে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো। সেই পরিবারগুলোকে ফিরিয়ে আনল পুলিশ। গ্রাম্য কোন্দলের জের ধরে ঘর ছাড়া পরিবারগুলোকে ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় পুলিশ প্রশাসন। এ উপলক্ষে শনিবার বিকেলে উপজেলার পার-মল্লিকপুর মাঠে বিরোধ নিরসণে সম্প্রতি বন্ধনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ শরফুদ্দিন, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ আরাফাত হোসেন, লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
এ সময় বক্তরা বলেন, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পার-মল্লিকপুর গ্রাম দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি এই বিরোধে হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়ে প্রতিপক্ষকে হত্যা করে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে। এতে কেউ স্বজন হারিয়েছেন কেউ বাড়ি-ঘর হারিয়েছেন। তবে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় যে অন্যায় করবে আইন তাকে সাজা দিবে। আপনারা ভবিষ্যতে আর কোন্দলে না জড়িয়ে কোন সমস্যা হলে আইন শৃংখলা রক্ষকারী বাহিনীকে জানাবেন তাৎক্ষণিকভাবে তারা ব্যবস্থা নেবে। সকলকে শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থানে বসবাস করার আহ্বান জানান বক্তরা।
প্রসঙ্গত, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের পারমল্লিকপুর গ্রামে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে ২০১৬ সালে নূর ইসলাম ও ইকবাল মৃধা নামে দুজন নিহত হন। সর্বশেষ ২০১৮ বছরের ২১ এপ্রিল এই গ্রামের মাতব্বুর উজ্জ্বল ঠাকুর এবং হেমায়েত হোসেন হিমু পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উজ্জ্বল ঠাকুরের সমর্থক খায়ের মৃধা নামে একজন খুন হয়। এর পর খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উজ্জ্বল ঠাকুরের লোকজন আসামিপক্ষ হেমায়েত হোসেন হিমুর সমর্থকদের অন্তত ২০০ বাড়িঘর ভেঙে ফেলে বলে অভিযোগ রয়েছে। খুলে নেয়া হয়েছে জানালা, দরজা সহ মুল্যবান জিনিসপত্র। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ২২টি পাকা ভবন, ৭৫টি আধাপাকা ঘর ও শতাধিক টিনের ঘর ভেঙে ফেলে দিয়েছে। নষ্ট করে ফেলা হয়েছে টিউবয়েল, বাথরুম সহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র। এরপর থেকে প্রায় ৯মাস বাড়ি ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিল তারা।