সালিশে নির্যাতনের অপমানে বৃদ্ধার বিষপান

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সালিশে ইউপি সদস্যের নির্যাতনের অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী বৃদ্ধা আয়রা বেগম/ ছবি: বার্তা২৪.কম

সালিশে ইউপি সদস্যের নির্যাতনের অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী বৃদ্ধা আয়রা বেগম/ ছবি: বার্তা২৪.কম

সাতক্ষীরার দেবহাটায় সালিশি বৈঠকে ডেকে এক বৃদ্ধ নারীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। অপমান ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন নির্যাতনের শিকার ঐ নারী।

স্থানীয়রা জানান, দেবহাটার সখিপুর ইউপির সদস্য নির্মল কুমার মন্ডল সালিশে একই ইউনিয়নের আয়রা বেগম (৭৫) নামের এক বৃদ্ধাকে বাঁশ দিয়ে পেটান। অপমান সহ্য করতে না পেরে আয়রা বেগম সালিশেই বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় আয়রা বেগমের ছেলে আয়ুব হোসেন ও মেয়ে মাফুরা খাতুনকেও পিটিয়ে জখম করে ইউপি সদস্য নির্মল।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের কাজীমহল্যা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে আয়রা বেগমকে তার পরিবারের সদস্যরা সখিপুর হাসপাতালে ভর্তি করতে যান। কিন্তু অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আয়রা বেগমকে সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয় ঈদগাহ বাজারের গ্রাম্য ডাক্তার ইসলামের চেম্বারে নিতে বাধ্য করেন।

বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন বৃদ্ধা আয়রা বেগম। তিনি সখিপুরের কাজীমহল্যা গ্রামের পঙ্গু দলু গাজীর (৮৫) স্ত্রী। 

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় ইউপি সদস্য নির্মল কুমার মন্ডল ও কাজীমহল্যা গ্রামের বাবর আলীর ঘরজামাই শাহিনকে আসামি করে দেবহাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধার ছেলে আয়ুব হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে বৃদ্ধার ছেলে আয়ুব হোসেন ও তার স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। গত রোববার স্থানীয় বাবর আলীর ঘরজামাই শাহিন আয়ুব হোসেনকে নিজের বাড়িতে ফেলে পিটিয়ে জখম করলে আয়ুব হোসেন নির্মলের কাছে বিচার দেন।

এর মধ্যে নির্মল শাহিনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শাহিনের বাড়ির উঠানে সালিশ চলাকালে আয়ুব হোসেনকে বাঁশ দিয়ে পেটানো শুরু করেন।

এ সময় আয়ুব হোসেনের বৃদ্ধা মা আয়রা বেগম ও বোন মাফুরা খাতুন বাধা দিতে যান। তখন আয়রা বেগমকে মাটিতে ফেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো ও লাথি মারার পাশাপাশি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন নির্মল। মারধরের এক পর্যায়ে আয়রা বেগম বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

অভিযোগ দায়েরের পর থানার উপ-পরিদর্শক জুয়েলকে তাৎক্ষণিক তদন্তপূর্বক আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ আয়রা খাতুনকে সখিপুরস্থ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দেন দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সাহা।

এদিকে থানায় অভিযোগ দেওয়ায় নির্মল কুমার মন্ডল ক্ষিপ্ত হয়ে বৃদ্ধার ছেলে আয়ুব হোসেন, মেয়ে মাফুরা খাতুন ও নাতি সিরাজুল ইসলামকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারটির।