‘রাজাকারকে’ নির্দোষ প্রমাণে আ. লীগ এমপির সংবাদ সম্মেলন!

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হামদর্দের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ হারুন ভূঁইয়ার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

হামদর্দের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ হারুন ভূঁইয়ার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

হামদর্দের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কথিত 'রাজাকার' ইউসুফ হারুন ভূঁইয়াকে নির্দোষ প্রমাণ করতে লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল সংবাদ সম্মেলন করেছেন। শাহজাহান কামাল সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের ব্যানারে শহরের ফুড গার্ডেন পার্টি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

রাজাকারদের বিরুদ্ধে জেলার রায়পুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত চলার খবরে ‘হামদর্দের অর্থায়নে’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারজন মুক্তিযোদ্ধা জানায়, আওয়ামী লীগের কয়েক ব্যক্তি পকেট ভারি করে জামায়াত নেতা ইউসুফ হারুনকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। তারা হামদর্দে চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করে আসছেন বলেও বলাবলি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক জানায়, অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে রাজাকার প্রশ্ন সামনে আসলে এমপি শাহজাহান কামাল বিব্রতবোধ করেন। এ সময় সাংবাদিকদের সব প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি তড়িঘড়ি অনুষ্ঠান শেষ করে দেন। সেখানে কয়েক অনুসারিকে নিয়ে উপস্থিত থাকা হামদর্দের এমডির ছেলে মো. আজাদ ভূঁইয়াকে দ্রুত চলে যেতে দেখা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উল্যা মনা বাকশাল, রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, সার্জেন্ট (অব.) আবুল খায়ের প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ইউসুফ হারুন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কিনা আমরা জানি না। তিনি রাজাকার ছিলেন কিনা তাও জানা নেই। কারণ রাজাকারের তালিকায় এ নাম কখনও আমরা দেখিনি। মুক্তিযোদ্ধারা সবসময় সত্য কথা বলে। শহীদ আবদুল হালিম বাসুকে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার শাহ আলম ও নজরুল গুলি করে হত্যা করেছে। তখন মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে ঘটনাস্থলে তারাও মারা যায়। ইউসুফ হারুন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন রাজাকারদের বিরুদ্ধে তদন্তে আসেন। এ সময় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ‘রাজাকার’ ইউসুফ হারুনের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেন ও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ প্রদান করেন।

রায়পুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার নিজাম উদ্দিন পাঠান বলেন, আমি ইউসুফ হারুনকে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম বাসুকে গুলি করতে দেখেছি। তার গুলিতেই বাসু শহীদ হয়। আমরা রাজাকার ইউসুফ হারুনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।

প্রসঙ্গত, রায়পুর উপজেলা কমান্ডারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধারা হামদর্দের এমডি ইউসুফ হারুনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ তোলে। এ নিয়ে সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়।