সাপ ও পোকামাকড়ের সঙ্গে অসহায় ‘মুক্তিযোদ্ধার’ বসবাস
যৌবনের সময় মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন আবুজেল। বয়স এখন ৬৩। জরাজীর্ণ শরীর। পরিশ্রম তো দূরের কথা চলাফেরা করাই দায়। তবুও পেটের জ্বালায় দিনমজুরি করতে হয়। পরিবার-পরিজন নেই। রঙিন দুনিয়ায় শুধুই একা। এ যেন আলোর মধ্যেও অন্ধকার। বেড়া ঘেরা ভাঙাচোরা একটি খুপরির মধ্যেই তার বসবাস।
স্থানীয়রা জানান, সাপ ও পোকামাকড়ই তার জীবন সঙ্গী। টাকা দিতে না পারায় বৃদ্ধ বয়সেও মিলছে না বয়স্ক ভাতা।
বলছিলাম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা গ্রামের বৃদ্ধ আবুজেলের কথা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ইয়ুথ ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তরুণ আবুজেল। দেশ স্বাধীনের পর তার বন্ধুরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে তার ভাগ্যে আজো জোটেনি সেই স্বীকৃতি। দাম্পত্য জীবনে নিঃসন্তান। স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন অনেক আগেই। সহায় সম্বলহীন, তাই মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে রাস্তার পাশে সরকারি এক টুকরো জায়গায় খুপরি ঘরে তার বসবাস। শারীরিক সক্ষমতা অনুযায়ী মাঝে মাঝে দিনমজুরি করে কোনো রকমে বেঁচে আছেন তিনি।
আবুজেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো কোনো স্বীকৃতি মেলেনি। অন্যদিকে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের টাকা দিতে পারিনি বলে বয়স্ক ভাতার কার্ডও জোটেনি। তাছাড়া ভিজিএফ বা ভিজিডি সহায়তাও মেলেনি জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে।’
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক রেজাউল ইসলাম ও আবুল হোসেন বলেন, ‘তিনি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন তা আমরা সবাই জানি। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করছেন। একজন বীরের এমন অসহায় করুণ জীবন আমাদের খুব কষ্ট দেয়।’
বিষয়টি গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের দৃষ্টিগোচর করলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে আমার সাধ্যমতো কিছু করার চেষ্টা করব।’