আজান দিতে ভালোবাসেন অজি উল্যা
বেহেশতের চাবি নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে মসজিদে আজান দেয়া হয়। এর জন্য প্রতিটি মসজিদেই মুয়াজ্জিন নিয়োগ দেওয়া হয়। যিনি মাস শেষে বেতন পান। তবে টাকা না নিয়েই ৬০ বছর ধরে আজান দিয়ে আসছেন অজি উল্যা চৌধুরী। কারণ তিনি আজান দিতে ভালোবাসেন। মধুর সুরে আজান দিয়ে মুসল্লিদের ডাকতে ভালোবাসেন। যতদিন সামর্থ্য থাকবে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ততদিন আজান দেবেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, অধিকাংশ সময় অজি উল্যা মাইক ছাড়াই আজান দিয়েছেন। যতদূর তার আজানের সুর শোনা যেত, মানুষ মুহূর্তেই বুঝতে পারত অজি উল্যা আজান দিচ্ছেন। ৮০ বছর বয়সেও বন্ধ করেননি আজান দেয়া। তবে বয়সে ভারে এখন তার কণ্ঠস্বর কিছুটা অস্পষ্ট।
অজি উল্যার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র মক্কা শরিফে আজান দেয়া তার শখ ছিল। ২০০৫ সালে হজ করতে গিয়ে সেই শখ পূরণ করতেও চেয়েছিলেন। তবে সৌদির বাদশার অনুমতি ছাড়া মক্কা শরিফে আজান দেয়ার রেওয়াজ নেই। তাই তার শখ পূরণ হয়নি। তার ছেলেমেয়েরা ঢাকায় থাকেন। সেখানে গেলেও স্থানীয় মসজিদে আজান দেন তিনি।
জানা গেছে, অজি উল্যা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের উত্তর টুমচর গ্রামের মৃত মৌলভী আলি আহম্মদের ছেলে। ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন অজি উল্যা। ১৯৫৬ সালে এসএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে টুমচর ইউনিয়ন পরিষদে দুই মেয়াদে সদস্য (মেম্বার) ছিলেন। বর্তমানে উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছ, ১৯৯৮ সালে সদর উপজেলার উত্তর টুমচর জালাল পাটওয়ারী জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২১ বছর আজান দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি শাকচর গনুমিয়া মৌলভীর জামে মসজিদ, উত্তর টুমচর আব্দুল মজিদ জামে মসজিদ ও শাকচর ছহি মিজি জামে মসজিদে আজান দিয়েছেন। বর্তমানে স্থানীয় মসজিদে নিয়মিত আজান দেন। এছাড়া ছেলেমেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় গেলে স্থানীয় মসজিদেও আজান দেন তিনি।
অজি উল্যা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আজান দিতে আমার ভালো লাগে। ২০ বছর বয়স থেকেই আমি আজান দিয়ে আসছি। দেশের যে স্থানে গিয়েছি, সেখানে স্থানীয় মসজিদে আজান দেয়ার সুযোগ করে নিয়েছি। আল্লাহর পথে মানুষকে ডেকে আনা অনেক সওয়াবের কাজ। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই আমার উদ্দেশ্য। অন্য কোনো চাহিদা আমার নেই। যতদিন সামর্থ্য থাকবে, ততদিন আজান দেব।’